শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

সম্পাদকীয়

পোস্ট হয়েছে: মে ৯, ২০১৭ 

হযরত ফাতেমা (সা.আ.)-এর জন্মবার্ষিকী ও বিশ্ব নারী দিবস
২০শে জমাদিউস সানী খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমা (সালামুল্লাহি আলাইহা)-এর জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পক্ষ থেকে এ দিনটিকে বিশ্ব নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে; ইরানি জনগণ, বিদেশস্থ ইরানি কূটনৈতিক মিশনসমূহ এবং বিশ্বের দেশে দেশে বিভিন্ন ইসলামি সংস্থা-সংগঠন এ দিনটিকে যথাযথ দ্বীনী মার্যাদা সহকারে উদযাপন করছে।
যে কোনো আদর্শের জন্যই কেবল তাত্ত্বিক ভিত্তি, নৈতিক শিক্ষা ও বিধি-বিধানই যথেষ্ট নয়; বরং তার অনুসরণযোগ্যতার মূর্ত প্রতীক অপরিহার্য। একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ও অবিকৃত আদর্শ ইসলামের মূর্ত প্রতীক রাসূলে আকরাম হযরত মুহাম্মাদ (সা.)। আর নারীদের জন্য এ আদর্শের মূর্ত প্রতীক হলেন তাঁর কন্যা বেহেশতে নারীকুলনেত্রী হযরত ফাতেমা (সা. আ.)। আর এ ব্যাপারে বিতর্কের অবকাশ নেই যে, তাঁরই জন্মদিন বিশ্ব নারী দিবস হিসেবে উদযাপিত হবার জন্য সর্বাধিক উপযোগী।
আমরা হযরত ফাতেমা (সা.আ.)-এর জন্মবার্ষিকী ও বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে সমগ্র বিশ্ববাসীকে, বিশেষত মুসলিম উম্মাহ্কে এবং আরো বিশেষভাবে নিউজলেটারের পাঠক-পাঠিকাদেরকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্র দিবস
পয়লা এপ্রিল ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্র দিবস।
ইরানি জনগণের অবিসংবাদিত নেতা হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্.)-এর নেতৃত্বে ১৯৭৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি ইসলামি বিপ্লবের বিজয় এবং স্বৈরাচারী রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার পতন ঘটে। এরপর ইরানের ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা কেমন হবে তা নির্ধারণের লক্ষ্যে হযরত ইমামের (রহ্.) নির্দেশে ৩০ ও ৩১শে মার্চ গণভোট অনুষ্ঠিত হয় এবং ইরানের জনগণ তাদের বিপ্লবকালীন স্লোগান ‘এস্তেক্বলাল, আযাদী, জোম্হুরিয়ে এস্লামি’ (স্বাধীনতা, মুক্তি, ইসলামি প্রজাতন্ত্র) সহকারে এতে অংশগ্রহণ করে এবং শতকরা ৯৮ দশমিক ২ ভাগ ভোটার দেশকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র করার সপক্ষে রায় প্রদান করে। এর ভিত্তিতে পয়লা এপ্রিল গণভোটের রায় ঘোষণার দিনেই হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্.) ইরানকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকে প্রতি বছর ইরানি জনগণ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা সহকারে এ দিনটি উদ্যাপন করে আসছে।
আমরা ইরানের ৩৮তম ইসলামি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নিউজলেটারের পাঠক-পাঠিকাসহ ইরান ও বাংলাদেশের জনগণকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি।

নওরোয ও বাংলা নববর্ষ : জাগরণের উৎসব
২১শে মার্চ ইরানি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন পয়লা র্ফার্ভাদীন- যা একই সাথে প্রকৃতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চারকারী বসন্তের প্রথম দিন। এ দিনটি নওরোয নামে সারা বিশ্বে পরিচিত। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে ইরানি জনগণ ও মধ্য এশিয়ার দেশসমূহের জনগণ অত্যন্ত ধুমধামের সাথে এদিনে উৎসব পালন করে আসছে। প্রাগৈতিহাসিক কালে এ দিনে জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন পারস্যে (বর্তমানে যা ইরান) একজন স্বৈারাচারী যালেম বাদশাহকে উৎখাত করে সুবিচারের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এবং এ উপলক্ষেই নওরোয উৎসব প্রবর্তিত হয়। আর এ নওরোযেরই তিন সপ্তাহ্ পরে ১৪ই এপ্রিল বাংলা সনের প্রথম দিন- যা নববর্ষ হিসেবে সুপরিচিত- যে দিনটিকে বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত ধুমধামের সাথে পালন করে থাকে।
নওরোয উৎসব প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে চলে এলেও বর্তমান ইরানি বর্ষপঞ্জি একটি হিজরি সৌরবর্ষের বর্ষপঞ্জি। ইরানি জনগণ নওরোযের সূচনায় কোরআন তেলাওয়াত করে ও বর্ষবরণের বিশেষ দোআ পাঠসহ দু’হাত তুলে মহান আল্লাহর কাছে নিজেদের, জাতির ও বিশ্বমানবের জন্য একটি সুন্দর এবং সুস্থতা ও সমৃদ্ধিপূর্ণ নতুন বছর কামনা করে। এভাবে নওরোয উৎসব ইরানি সমাজের জন্য নৈতিক ও সামগ্রিক শিক্ষার সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।
একইভাবে বাংলা বর্ষপঞ্জি ইরানি বর্ষপঞ্জির ন্যায় একটি হিজরি সৌর বর্ষপঞ্জি।
ফসল তোলা সমাপ্ত হওয়ার পর পরই নতুন বছরের শুরু হিসেবে এক সময় বাংলা সনকে ফসলি সনও বলা হতো। খাজনা আদায় ছাড়াও এ সময় ব্যবসায়ীরা তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া পাওনা আদায় করতো এবং উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন বছর শুরু করতো। এভাবে বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন- বাংলা নববর্ষ একটি উৎসবের দিনে পরিণত হয় এবং সেই শুরু থেকেই মিলাদ-অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতাসহ এ দিনটি উৎসব হিসেবে পালন করা হয়ে আসছে।
ইরানি নওরোয ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আমরা নিউজলেটারের পাঠক-পাঠিকাসহ সবাইকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
এছাড়া ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আমরা বাংলাদেশের গণমানুষের কল্যাণ, সমৃদ্ধি ও সুস্বাস্থ্য এবং উন্নততর ভবিষ্যৎ কামনা করছি।