শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

সংবাদ বিচিত্রা (বিদেশী সংবাদ)

পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ১, ২০১৬ 

কোরআনের শক্তির কাছে অপশক্তিগুলো অচল : সর্বোচ্চ নেতা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, কোরআনের শিক্ষাগুলো মানবজাতির কাছে তুলে ধরা হলে ও তা বাস্তবায়ন করা হলে ইহুদিবাদী ইসরাইলসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর অস্ত্র ও শক্তি মুসলমানদের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না।
তিনি গত ৭ জুন ২০১৬ পবিত্র রমযানের প্রথম দিনে পবিত্র কোরআনের-অনুরাগ মাহফিলে এই মন্তব্য করেন। পবিত্র কোরআনের ভাষা ও শব্দের সৌন্দর্য এক অলৌকিক বিষয় এবং এর মধ্য দিয়ে এ মহাগ্রন্থের উচ্চতর ও সারগর্ভ নানা বার্তার দিকে আকৃষ্ট হওয়া যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, পবিত্র কোরআনের অর্থ বা বার্তার সঙ্গে পরিচয়ের অন্যতম কল্যাণ ও বরকত হলো আত্মিক এবং ধর্মীয় প্রশান্তি লাভ। আর এই প্রশান্তি মহান আল্লাহ ও খোদায়ী শক্তির প্রতি মানুষের ঈমান বাড়ানোর পরিবেশ গড়ে তোলে।
হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, নানা সংকট, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও জটিলতায় ভরপুর বর্তমান বিশ্বে কোরআনের অর্থ ও শিক্ষা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোরআনের উচ্চতর বা গভীর অর্থ যদি সহজ ভাষায় মানুষের কাছে তুলে ধরা হয় তাহলে তা মানুষের ওপর খুব বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে এবং এর মাধ্যমে মানবজাতির প্রকৃত উন্নতির পথ খুলে যাবে। কারণ, সম্মান, শক্তি, বস্তুগত কল্যাণ, আধ্যাত্মিক উন্নতি, চিন্তা ও বিশ্বাসের বিকাশ, আত্মিক আনন্দ ও প্রশান্তি পবিত্র কোরআনের বাণী বাস্তবায়নের ওপরই নির্ভরশীল।
তিনি ইরানে কোরআন বিষয়ক কার্যক্রম, বিশেষ করে ইরানি যুব সমাজের মধ্যে কোরআন চর্চা বিস্তারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, যদিও পবিত্র কোরআনের ভাষা ও শব্দের সৌন্দর্য এক অলৌকিক বিষয়, কিন্তু এর লক্ষ্য হলো এই মহাগ্রন্থের উচ্চতর ও সারগর্ভ নানা বার্তা এবং কল্যাণে ভরপুর জগতে প্রবেশের পথ খুলে দেয়া।
বর্তমান বিশ্বে চিন্তা, বিশ্বাস ও পরিচিতির সংকটের দিকে ইঙ্গিত করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, বর্তমান যুগেও মানবজাতি কোরআনের শিক্ষার মুখাপেক্ষী, তাই ঈমানের ভিত্তিগুলোকে আরও মজবুত করতে হবে এবং কোরআনের শিক্ষা মানুষের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরার কৌশল আয়ত্ত করে এইসব শিক্ষা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর তা সম্ভব হলেই বিশ্বের ওপর কোরআনের প্রকৃত প্রভাব পড়বে এবং এ অবস্থায় নানা পরাশক্তি আর ইহুদিবাদী ইসরাইলের নানা অস্ত্র ও শক্তি মানুষের কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না।

তেহরানে ৩৩তম আর্ন্তজাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
ইরানের আওকাফ ও জনকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘এক গ্রন্থ, এক উম্মাহ্’ শিরোনামে গত ১১ মে থেকে ১৭ মে ২০১৬ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় কোরআন প্রতিযোগিতা।
তেহরানে অনুষ্ঠিত ৩৩তম আন্তর্জাতিক এ কোরআন প্রতিযোগিতায় কিরাত বিশ্বের ৭৫টি দেশের ১৩০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন।
কিরাত বিভাগে প্রথম হন ইরানের হামেদ ওয়ালিজাদেহ। দ্বিতীয় হন আফগানিস্তানের মোহাম্মাদ জাভিদ আকবারি এবং তৃতীয় হয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার বাহর আদ দিন সায়িদ। জার্মানির সাইয়্যেদ আব্বাস আলী ও নেদারল্যান্ডের মুস্তাফা আলী যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম হয়েছেন।
আর হিফ্য বিভাগে প্রথম হন ইরানের মুজতাবা ফারদেফানি, মিশরের আবদুল আজিজ আহমেদ দ্বিতীয় ও অস্ট্রেলিয়ার মুহাম্মাদ আলী আবদুল্লাহ তৃতীয় এবং আইভরিকোস্টের খালিদ সানকারাই ও নাইজারের মুহাম্মাদ তাহা হাসান যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
এদিকে ইরানে এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা। এতে প্রথম হয়েছেন ইরানের প্রতিযোগী আবদুল গাফুর জওহারচি। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করেন যথাক্রমে তুরস্ক (আহমাদ সারিকায়া) ও তিউনিসিয়ার প্রতিযোগী। এ বিভাগে মোট ১৬ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। ইরানই বিশ্বে প্রথমবারের মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করল। বাংলাদেশের ১৮ বছর বয়স্ক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেয তানভীর হোসাইনও এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে কিরাত ও হিফ্য বিভাগে অংশগ্রহণ করেন যথাক্রমে ক্বারী মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও হাফেয মোঃ শরীফ আল আমিন সিদ্দিকী।

১৮ বছরের চেষ্টায় ইরানে তৈরি হলো সবচেয়ে অলঙ্কৃত ও সুসজ্জিত কোরআন
ইরানের একদল শিল্পী দীর্ঘ ১৮ বছরের চেষ্টায় পবিত্র কোরআনের সবচেয়ে সুসজ্জিত ও অলঙ্কৃত একটি সংকলনের কাজ শেষ করেছেন। এ সংকলনটি তৈরির কাজে ব্যয় হয়েছে ইরানি মুদ্রায় ৬০ বিলিয়ন রিয়াল (সাড়ে ১৩ কোটি টাকা)।
ইসফাহানের জানফাজা পরিবার এককভাবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে। ওই পরিবারের বড় পুত্র মেহেদি জানফাজা এ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। মেহেদি জানফাজা তাঁর বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী এই মহৎ কাজটি স¤পন্ন করেছেন বলে খবর দিয়েছে ইরানের ইংরেজি দৈনিক তেহরান টাইম্স।
ইরানের খ্যাতিমান খোদাই শিল্পী রেজা কাদেরান ও মোহাম্মদ আলী সায়েই, আলোকচিত্রী মাজিদ সাদেকযাদেহ এবং ক্যালিগ্রাফার গোলামরেজা মাহুরিসহ বিখ্যাত শিল্পীরা গত ১৮ বছর ধরে কোরআনটির সংকলনে নিজেদের মেধা ও দক্ষতা ব্যয় করেছেন। কোরআনটির সংকলনে হাতে তৈরি সোনালি কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৪শ’ মণিমুক্তা। দৈর্ঘ্যে ৫৭ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থে ৪২ সেন্টিমিটার আকারের এ পবিত্র কোরআনের পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৭৫টি। যার প্রতিটি পৃষ্ঠা আলাদাভাবে সুসজ্জিত ও অনন্য নকশায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে।
১৩ থেকে ২৮ জুন তেহরানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক পবিত্র কোরআন প্রদর্শনীতে এ কোরআন শরীফটি প্রদর্শিত হয়। এ কোরআনটি বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যাবে তা দিয়ে একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানিয়েছে জানফাজা পরিবার।

একজন ইমাম ও বিপ্লবী নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
গত ৩ জুন ২০১৬ পালিত হয়েছে মহান সংস্কারক ও হাজার বছরের সেরা বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেইনী (র.)-এর ইন্তেকালের ২৭তম বার্ষিকী। এ উপলক্ষে অন্তত দশ লাখ ইরানি তেহরানের অদূরে ইমামের মাযার প্রাঙ্গণে সমবেত হন। তাঁদের অনেকেই আসেন দূরদূরান্তের নানা প্রদেশ ও জেলা থেকে। ইরানের শীর্ষস্থানীয় রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দ, ধর্মীয় নেতা ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত হন তাঁর মাযার প্রাঙ্গণে। এ সমাবেশে যোগ দেন নানা দেশের অনেক চিন্তাবিদ, আলেম ও সমাজকর্মী এবং তেহরানস্থ বিদেশি কূটনীতিকরা।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইমাম খোমেইনীর মাযার-প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ বিশাল জন-সমাবেশে বলেন, ইমাম খোমেইনী (র) খোদায়ী লক্ষ্য এবং জনগণের প্রতি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। মহান ইমাম ইরানের জনগণকে নানা ধরনের কঠিন সংকটের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করেছেন ও তাদেরকে আল্লাহর ধর্মের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথে পরিচালিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ইমাম খোমেইনীর ইন্তেকালের পর ইরানিরা যেসব ক্ষেত্রে বিপ্লবী ভূমিকা রেখেছে সেইসব ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়েছে। আর যেসব ক্ষেত্রে বিপ্লবী ও জিহাদি ভূমিকায় শৈথিল্য দেখিয়েছে সেসব ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে গেছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী সতর্ক করে দিয়ে বলেন, স্বাধীনতা হারানো বলতে কেবল এটা বোঝায় না যে, বাইরের কোনো সরকার ইরানকে শাসন করছে; ইসলামি ইরান যদি নতজানু হয় এবং শত্রুদের খেলার শরিক হয় তাহলে আর রাজনৈতিক স্বাধীনতা থাকে না।
এর আগে গত ২ জুন রাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি ইমাম খোমেইনী (র.)-এর মাযার প্রাঙ্গণে দেয়া ভাষণে ইসলামি বিপ্লব, ইসলামি জনশাসনব্যবস্থা ও সর্বোচ্চ ধর্মীয় আইনবিদের নেতৃত্ব তথা বেলায়াতে ফকিহ ব্যবস্থাকে এই মহান ইমামের তিনটি বড় অবদান বলে মন্তব্য করেন।
ইমাম খোমেইনীর ইসলামি জনশাসনব্যবস্থা বিশ্বের সব দেশ ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর জন্য সফল আদর্শ বা মডেল হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মরহুম ইমাম খোমেইনীর নাতি সাইয়্যেদ হাসান খোমেইনীও ওই মহাসমাবেশে বলেন, ইমাম খোমেইনীর ইসলামি বিপ্লব সম্মান, ভালোবাসা ও ঐক্য উপহার দিয়েছে।
অন্য এক সমাবেশে ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আলী আকবর বেলায়েতি বলেন, ইমাম খোমেইনী (র.) ছিলেন একাধারে আলেম, ফকীহ, দার্শনিক ও আরেফ। সর্বোচ্চ খোদাভীতি ও খোদা-নির্ভরতার কারণে তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের পরাশক্তিগুলোকে উপেক্ষা করে ইসলামের পতাকা উঁচু করেছেন।
আধুনিক যুগে ইরানের ইসলামি বিপ্লব ও ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের প্রভাবে ধর্মের প্রভাব বৃদ্ধিসহ বিশ্বব্যাপী ইসলামি জাগরণ ও ইসলামি মূল্যবোধের পুনরুজ্জীবন ঘটানোর মতো বিষয়গুলো ইমাম খোমেইনী (র.)-এর কাছে চিরঋণী।

ইসলামি বিপ্লব ‘বিশেষ ও অনন্য’ সম্পদ : সর্বোচ্চ নেতা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, প্রায় ৩৮ বছর আগে যে চেতনা নিয়ে শত্রুদেরকে দেশ থেকে তাড়ানো হয়েছিল সেই বিপ্লবী চেতনা সমুন্নত রাখতে হবে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেইনী (র.)-এর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে এ আহ্বান জানান আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী। রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে দশ লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেন। ১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইমাম খোমেইনীর নেতৃত্ব ইরানে ইসলামি বিপ্লব চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয় এবং আড়াই হাজার বছরের রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে।
ইমাম খোমেইনীর নেতৃত্বে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবকে ইরানের জনগণের জন্য ‘বিশেষ ও অনন্য’ স¤পদ হিসেবে উল্লেখ করে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বিপ্লবের পথ থেকে যেকোনা রকমের বিচ্যুতির বিরুদ্ধে জাতিকে সতর্ক করেন।
গত বছরের জুলাই মাসে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে পরমাণু সমঝোতার পর পশ্চিমা দেশগুলোর আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করার বিষয়ে সর্বোচ্চ নেতা ইরানের সরকারি কর্মকর্তাদেরকে সতর্ক করেন।
তিনি বলেন, ‘শত্রুরা সবসময় হুমকি-ধমকির ভাষা ব্যবহার করবে তা নয়; বরং কখনো কখনো তারা চিঠি লিখে বা সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাতে পারে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান যদি তাদের দ্বারা প্রতারিত হয় তাহলে বুঝতে হবে ইরানের সরকার শত্রুদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে দিচ্ছে।’

ইমাম খোমেইনী (র) ছিলেন ইসলামি আইনের ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীল মহান সংস্কারক- কাযেম সিদ্দিকি
ইরানের বিশিষ্ট আলেম ও তেহরানের জুমআ নামাযের অস্থায়ী খতিব হুজ্জাতুল ইসলাম কাযেম সিদ্দিকি ইমাম খোমেইনীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ইমাম খোমেইনী ছিলেন ফিকাহ বা ইসলামি আইনের ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীল এক মহান সংস্কারক ও ইতিহাসনির্মাতা। রাজনীতি হতে ধর্মের পৃথক থাকার দাবিটি যে এক বিপজ্জনক অপবাদ তাও ইমাম খোমেইনী (র.) তুলে ধরেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি গত ৩ জুন তেহরানের জুমআ নামাযের খুতবায় এইসব মন্তব্য করেন।
হুজ্জাতুল ইসলাম কাযেম সিদ্দিকি বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেইনী (র) ইসলামের চেহারা থেকে আমেরিকার চাপানো ময়লা ও নানা মহলের কূপম-ূকতা দূর করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ইমাম ছিলেন একজন বিজ্ঞ দার্শনিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক যুক্তিবাদী। তিনি শক্তিশালী, সম্মানজনক, স্বাধীন ও জাগরণকামী এবং যুলুম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামী ইসলামের পুনর্জাগরণ ঘটিয়েছেন।

ইরানের জনগণ ইমামের আদর্শ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর : রুহানি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, তাঁর দেশের জনগণ ইমাম খোমেইনী (র.)-এর আদর্শ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের স্থপতি ইমাম খোমেইনী (র.)-এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর মাযারে সমবেত লাখো মানুষের সমাবেশে দেয়া বক্তব্য একথা বলেন রুহানি।
তিনি বলেন, ইরানি জনগণ ইসলামি বিপ্লবে বিশ্বাস করে এবং নিজেদের বিপ্লবী পরিচয়ে গর্বিত। এ ছাড়া, তারা এই বিপ্লব সমুন্নত রেখে একে পূর্ণতায় পৌঁছে দিতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, ইমাম খোমেইনী এই বিপ্লবের সহযোগিতায় ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন যা অন্যান্য মুসলিম দেশের জন্য আদর্শ হতে পারে। ইমামের মৃত্যুর পর গত ২৭ বছরে তাঁর প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও আনুগত্য দিন দিন বেড়েছে বলে উল্লেখ করে রুহানি বলেন, একটি চরম কঠিন সময়ে ইমাম ইরানে ইসলামি বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সে সময়ে ইরানের শাহ সরকার দেশ থেকে ইসলামের নাম-নিশানা মুছে ফেলতে চেয়েছিল এবং জনগণের দাবির প্রতিও ওই সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না। সেই চরম দুর্দিনে শাহ সরকার এবং তার পৃষ্ঠপোষক বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান ইমাম খোমেইনী (র.)।
প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, বিপ্লবপূর্ব সময়ে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো বিশেষ করে আমেরিকা ইরানকে নিজ ভূখ-ের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করত। এ বিষয়টি ইরানের জনগণ মেনে নিতে পারেনি বলেই তারা ইমামের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসলামি বিপ্লবে যোগ দেয়। ইসলামি বিপ্লবের আগে মানুষের কাছে মনে হতো শাহ সরকার চিরস্থায়ী এবং তাকে কেউ ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না। অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো মনে করত, তাদের অনুগত দেশগুলোর তালিকা থেকে কেউ বের হয়ে গেলে তাকে অবশ্যই সোভিয়েত ইউনিয়নের অনুগত দেশে পরিণত হতে হবে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদীদের এই চিন্তাধারাকে ব্যর্থ প্রমাণ করে ইমাম দেশে ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেই প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন।

বিশেষজ্ঞ পরিষদের প্রধান হলেন আয়াতুল্লাহ জান্নাতি
গত ২৫ মে ২০১৬ ইরানের বিশিষ্ট আলেম ও বর্ষীয়ান নেতা আয়াতুল্লাহ আহমাদ জান্নাতি দেশটির বিশেষজ্ঞ পরিষদের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তথা ইসলামি বিপ্লবের নেতা নির্বাচন এবং তাঁর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার কারণে এই সংস্থাটি ইসলামি এই দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিষদ হিসেবে বিবেচিত হয়।
আয়াতুল্লাহ জান্নাতি দুই বছরের জন্য এই পরিষদের প্রধান নির্বাচিত হলেন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি এই পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
এই পরিষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাঠানো এক বার্তায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, সরকারের বিপ্লবী ও ইসলামি পরিচিতিকে সার্বিকভাবে এবং সতর্কতার সঙ্গে রক্ষা করা এই পরিষদের দায়িত্ব। পর¯পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সরকারের নানা দিক আর বিভাগকে উচ্চতর লক্ষ্যগুলো অর্জনের দিকে পরিচালিত করা এই সংস্থার দায়িত্ব বলে তিনি মন্তব্য করেন। ইরানের অভিভাবক পরিষদের প্রধান হিসেবেও বহু বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বর্ষীয়ান নেতা আয়াতুল্লাহ জান্নাতি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীসহ বিভিন্ন নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে বাছাই করে এই পরিষদ।

আলী লারিজানি ইরানের দশম সংসদের ¯িপকার নির্বাচিত
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নবনির্বাচিত সংসদ, মজলিশে শুরার ¯িপকার হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন ড. আলী লারিজানি। গত ২৮ মে ২০১৬ ইরানের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশটির দশম সংসদের কার্যক্রম শুরু হয়। ¯িপকার নির্বাচনে আলী লারিজানির পক্ষে ১৭৩ ভোট পড়ে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ রেজা আরেফ ১০৩টি ভোট পান।
২৯০ আসনের মজলিশে শুরার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন ২৬৫ জন সংসদ সদস্য। এ বারের মজলিশে শুরায় সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন ১৮ জন নারী। এর আগে মজলিশ শুরায় এতো বিপুল সংখ্যক নারী আর নির্বাচিত হয় নি।
সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর বাণী পাঠ এবং প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির ভাষণের মধ্য দিয়ে নতুন সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। এ ছাড়া, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুর রেজা রাহমানি ফাজলিও বক্তব্য রাখেন। এরপরই নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আল্লাহর নামে শপথ নেন। মজলিশে শুরার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাঁদের নিজ নিজ ঐশী গ্রন্থ অনুযায়ী শপথ বাক্য পাঠ করেন।
১০= কৌশলগত চ-বাহার বন্দর নিয়ে চুক্তি করল ইরান, ভারত, আফগানিস্তান
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের চ-বাহার বন্দরকে পরিবহন ও ট্রানজিট মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্যে এ বন্দরের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ইরান, ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সাম্প্রতিক ইরান সফরকালে গত ২৩ মে ২০০১৬ তেহরানে তাঁদের ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির উপস্থিতিতে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি সইয়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, আজকের দিনটি তিন দেশের স¤পর্কের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। চ-বাহার বন্দর নিয়ে চুক্তি এই বার্তা দিচ্ছে যে, আঞ্চলিক দেশগুলো নিজেদের মধ্যকার সহযোগিতা ও সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম; চ-বাহার বন্দর হচ্ছে তেমন সহযোগিতার এক প্রতীক। তিনি এ চুক্তিকে সংশ্লিষ্ট তিন দেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বসন্ত স্বরূপ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, এ চুক্তি কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ ঘটনাকে ‘একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, আজ আমরা সকলে একটি ইতিহাসের সৃষ্টি পর্যবেক্ষণ করছি এবং তা শুধু আমাদের এই তিন দেশের জনগণের জন্য নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্য। তিনি বলেন, এটা একটা সংযুক্তির বন্ধন সৃষ্টি করবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এ চুক্তিটি হচ্ছে এ অঞ্চলে শান্তি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে নতুন নতুন রুট তৈরির জন্য যে প্রচেষ্টা চলছে তারই অংশবিশেষ। এ করিডোর অবাধ অর্থনৈতিক বিকাশের পথ খুলে দেবে এবং এর ফলে যুবকশ্রেণির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি আরো বলেন, এ সুবিধা মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতেও পৌঁছে যেতে পারবে। এছাড়া এটি একদিকে দক্ষিণ এশিয়াকে এবং অন্যদিকে ইউরোপকে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করতে সক্ষম হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ফারসি কবি হাফেযের একটি গযল থেকে কয়েকটি পঙ্ক্তি মূল ফারসি ভাষায় উদ্ধৃত করেন যাতে বলা হয়, ‘বিচ্ছিন্নতার দিনগুলো শেষ হয়েছে, অপেক্ষার রাত্রিও শেষ হতে চলেছে; আমাদের বন্ধুত্ব চিরস্থায়ী হবে।’
এর আগে প্রেসিডেন্ট রুহানি ও প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপকভিত্তিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য, ইরান, ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে পরিবহন ও ট্রানজিটের লক্ষ্যে চ-বাহার বন্দর উন্নয়নের জন্য যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তা ছাড়াও চ-বাহার থেকে কমনওয়েল্থ্ অব্ ইনডেপেন্ডেন্ট্ স্টেট্স্ (সিআইএস)-এর সদস্য দেশগুলোর সাথে রেল ও সড়ক পথে সংযোগের যে ব্যবস্থা রয়েছে তা-ও ব্যবহৃত হবে।
চ-বাহার বন্দর উন্নয়নের পর এ বন্দর ব্যবহার করে ভারত তার নিজের পণ্য ইরানের ভেতর দিয়ে আফগানিস্তানে পাঠাতে পারবে। তাতে পাকিস্তানের সীমানা পার হওয়ার জটিলতা এড়াতে সক্ষম হবে নয়াদিল্লি। অন্যদিকে, আফগানিস্তানও সমুদ্রপথে ভারতে প্রবেশের সুবিধা পাবে। এ ক্ষেত্রে ইরান বিশ্বস্ত মিত্র দেশের ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক স¤পর্ক আরও জোরদার করতে চায় ইরান : সংস্কৃতিমন্ত্রী
ইরানের সংস্কৃতি ও ইসলামি দিকনির্দেশনা বিষয়ক মন্ত্রী আলী জান্নাতি বলেছেন, বাংলাদেশ-ইরান সাংস্কৃতিক স¤পর্ককে গতিশীল করতে হবে। গত ২৯ মে ২০১৬ ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ কে এম মজিবুর রহমান ভূঁঞার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। ইরানি মন্ত্রী আরও বলেন, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। এ স¤পর্ক আরও জোরদার করা উচিত। তিনি আরও বলেন, দুই দেশ সিনেমাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পণ্য বিনিময় করতে পারে। বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে বলেও তিনি জানান।
সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, ফারসি ভাষা শিক্ষা দুই দেশের স¤পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। ইরানিরাও বাংলা ভাষা স¤পর্কে জানতে আগ্রহী বলে তিনি জানান।
এ সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশের স¤পর্ক জোরদারের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে দুই দেশ পর¯পরকে সহযোগিতা করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর কথাও বলেন তিনি।
এ কে এম মজিবুর রহমান ভূঁঞা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে ভালো স¤পর্ক রয়েছে এবং এ স¤পর্ক ক্রমেই আরও জোরদার হবে।

ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ডের সঙ্গে ইরানের ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ফিনল্যান্ড ও পোল্যান্ডের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে। ইরানের একটি প্রতিনিধিদলের দেশ দুটি সফরের সময় এ চুক্তি হয়েছে। ইরানের চেম্বার অব কমার্স, ইন্ডাস্ট্রি, মাইন অ্যান্ড এগ্রিকালচার-এর প্রধান মোহসেন জালালপুর রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনাকে জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরানের এ প্রতিনিধিদল পোল্যান্ডের সঙ্গে ৩০টি ও ফিনল্যান্ডের সঙ্গে ২০টি চুক্তি করেছে। এর মধ্যে পোল্যান্ডের সঙ্গে ৭০ কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছে।
জালালপুর জানান, পোল্যান্ডের সঙ্গে ২৪ কোটি ডলারের বিদ্যুৎ স্থাপনা ও ২০ কোটি ডলারের মৎস্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। আর ফিনল্যান্ডের সঙ্গে প্রধানত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক চুক্তি করা হয়েছে।

ইরানি ভাইস প্রেসিডেন্টের মস্কো সফর
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্ব পালনকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট সোরেনা সাত্তারী সম্প্রতি রাশিয়া সফর করেন এবং এ সফরকালে তিনি গত ১ জুন (২০১৬) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ও মহাশূন্য শিল্প বিষয়ক উপপ্রধানমন্ত্রী মি. রোগোযিন্-এর সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন। ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে গঠিত প্রযুক্তি সহযোগিতা সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের কমিশনের এ বৈঠকে উভয় নেতা কো-চেয়ারম্যান হিসেবে সভাপতিত্ব করেন।
এ ছাড়াও ভাইস প্রেসিডেন্ট সোরেনা সাত্তারীর সফরসঙ্গী হিসেবে মস্কো সফরকারী এ কমিশনের সাব-কমিটির ইরানি সদস্যবর্গ তাঁদের রুশ সমপক্ষের সাথে বৈঠকে মিলিত হন।
উল্লেখ্য, এটি ছিল উচ্চ পর্যায়ের এ কমিশনের তৃতীয় বৈঠক। কমিশনের এবারের বৈঠকে ইতিপূর্বে দু’পক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক (এম্ওইউ) সমূহ, যৌথ প্রকল্পসমূহ, প্রস্তাবনাসমূহ ও চুক্তিসমূহের আওতাধীন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নেয়া হয়।
বৈঠকের শুরুতেই বৈঠকের কো-চেয়ারম্যানদ্বয় সংশ্লিষ্ট সাব-কমিটিসমূহের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং স্বাক্ষরিত চুক্তি সমূহ অবিলম্বে বাস্তবায়িত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, উচ্চ পর্যায়ের এ কমিশনের এ তৃতীয় বৈঠকে যেসব সাব-কমিটি অংশগ্রহণ করে সেগুলোর মধ্যে ইরানি পক্ষের নেতৃত্বদানকারী সাব-কমিটিগুলো হচ্ছে নুছরাতুল্লাহ্ যারগ¦াম-এর সভাপতিত্বে মেগা-সায়েন্স সাব-কমিটি, সাইয়্যেদ হেসামুদ্দীন মাদানীর সভাপতিত্বে বায়ো-টেকনোলোজী সাব-কমিটি, সাইয়্যেদ র্সার্ক-এর সভাপতিত্বে ন্যানো-টেকনোলজি বিষয়ক সাব-কমিটি, মানুচেহ্র্ মানত্বেক্বীর সভাপতিত্বে অ্যারোনটিক্স্ সাব-কমিটি, মোহাম্মাাদ তেহ্রানচীর সভাপতিত্বে একাডেমিক কো-অপারেশন সাব-কমিটি এবং আলী র্মোতাযা বিরাঙ্গ্-এর সভাপতিত্বে আঞ্চলিক সহযোগিতা বিষয়ক সাব-কমিটি।

জাকার্তায় আন্তর্জাতিক ইসলামি প্রচার মাধ্যম সম্মেলন
ফিলিস্তিন ও আল্-কুদ্স্ সমস্যার সমাধান উদ্ভাবনের লক্ষ্যে গত ২৫ মে (২০১৬) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আন্তর্জাতিক ইসলামি প্রচার মাধ্যম সম্মেলন শুরু হয়।
এ সম্মেলনে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইরান, ফিলিস্তিন, লেবানন, ব্রিটেন, নাইজেরিয়া প্রভৃতি দেশ থেকে ইসলামি প্রচারমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। ইমাম সুলাইমানের কোরআন তেলাওয়াত ও ড. ইয়াখ্শাল্লাহ্ মানসূরের উদ্বোধনী ভাষণের মধ্য দিয়ে এ সম্মেলন শুরু হয়।
ইয়াখ্শাল্লাহ্ মানসূর তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে ইন্দোনেশীয় সরকার ও এ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং মুসলিম জাহানের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামি বৈশ্বিক প্রচারমাধ্যমকে তাদের প্রকৃত দায়িত্ব-কর্তব্য ও ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন করা।
জনাব ইয়াখ্শাল্লাহ্ মানসূর আরো বলেন, আমাদের জাতি সমূহের মধ্যে যেসব পারস্পরিক সমস্যা রয়েছে আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে সেগুলোর সমাধানের লক্ষ্যে আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের মধ্যকার অভিন্ন বিষয়গুলোর প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।
সম্মেলনের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর তিনটি প্যানেল ডিস্কাশন অনুষ্ঠিত হয়। এ প্যানেল ডিস্কাশনসমূহের বিষয়বস্তু ছিল : ‘মুসলিম জাহানের সঙ্কট ও বৈশ্বিক সঙ্কট সমাধানে ইসলামি প্রচার মাধ্যমের ভূমিকা’, ‘ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থের হেফাযতে বিশেষ করে ফিলিস্তিন ও আল্-কুদ্স্ প্রশ্নে ইসলামি প্রচারমাধ্যমের সহায়তা’ এবং ‘ইসলামি প্রচারমাধ্যম সমূহের মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্যে পরিকল্পনা উপস্থাপন’।

বিশ্ববাসী চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ইরানকে নতুন করে জানবে
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সিনেমা সংস্থার প্রধান হুজ্জাতুল্লাহ্ আইয়ূবী বলেন, বিশ্ববাসী এখন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ইরানকে নতুন করে জানবে। তিনি ৬৯তম কান্ চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণের পর গত ২৫ মে (২০১৬) দেশে ফিরে এসে এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
কান্ চলচ্চিত্র উৎসবে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরাট সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করে হুজ্জাতুল্লাহ্ আইয়ূবী বলেন, এ উৎসবে অংশগ্রহণ করে র্ফাহাদী নির্মিত ‘দ্য সেল্স্ম্যান’ চলচ্চিত্রটি বিশ্ববাসীকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ইরানকে জানার জন্য সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
হুজ্জাতুল্লাহ্ আইয়ূবী কান্ চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ শেষে ফ্রান্স থেকে তেহরান ফিরে বিমান বন্দরে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সাথে কথোপকথন কালে উক্ত উৎসবে ইরানের বিরাট সাফল্যের কারণে ইরানি জাতিকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, কান্ চলচ্চিত্র উৎসবে ইরানের ‘দ্য সেল্স্ম্যান’ সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কৃত হবার পর আমি বিভিন্ন টিভি নেটওয়ার্কের সংবাদ মনিটরিং করেছি এবং তার ফলে দেখতে পেয়েছি যে, ইউরোপের শ্রেষ্ঠ টিভি চ্যানেলগুলো তাদের সংবাদ শিরোনাম সমূহের মধ্যে ইরানের চলচ্চিত্রকে বিশেষ গুরত্ব সহকারে উল্লেখ করেছে।
জনাব আইয়ূবী বলেন, কিছু দেশ বিপুল অর্থ ব্যয় করে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চালিয়ে আসছে এবং ইরানকে সন্ত্রাস, যুদ্ধ ও বিভিন্ন অস্বস্তিকর সংবাদের দ্বারা পরিচিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের দেশ তার চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির জন্য বিশ্বের কাছে সুপরিচিত হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটা একটা বিরাট আনন্দের ব্যাপার।
সম্প্রতি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সরকারের সংস্কৃতি ও ইসলামি নির্দেশনা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ‘দ্য সেল্স্ম্যান’ চলচ্চিত্রটিকে ইরানে দেখাবার উপযোগী করার জন্য এতে কিছু পরিবর্তন আনা হবে বলে যে উল্লেখ করেছেন সে প্রসঙ্গে জনাব আইয়ূবী বলেন, চলচ্চিত্রের লাইসেন্স প্রদানের জন্য যে পরিষদ রয়েছে সে পরিষদই কোনো চলচ্চিত্র সংশোধনের সিদ্ধান্ত দেয়ার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি যে, ‘দ্য সেল্স্ম্যান’ চলচ্চিত্রটিতে কোনো সংশোধনের প্রয়োজন নেই। কারণ, চলচ্চিত্রটির নির্মাতা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য যেসব শর্ত রয়েছে সেগুলো পূরণ করেছেন।
উল্লেখ্য, জনাব আসগ¦ার র্ফাহাদী নির্মিত ‘দ্য সেল্স্ম্যান’ কান্ চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠতম চলচ্চিত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে এবং এ চলচ্চিত্রে অভিনয়কারী জনাব শাহাব হোসেইন এ বছরের শ্রেষ্ঠতম অভিনেতা হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন।

ইরানের গ্যাস উৎপাদন ২৩ বিলিয়ন ঘন মিটার ছাড়িয়ে গিয়েছে
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রের ১২তম, ১৫তম ও ১৬তম ফেসের উৎপাদনের ফলে ইরানের মোট গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ২৩ বিলিয়ন ঘন মিটার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সরকারের তেল মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও দক্ষিণ পার্সবিষয়ক গণযোগাযোগ দফতরের প্রধান জনাব হামিদরেযা আরাগ¦ী গত ২৫ মে ২০১৬ সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টারদেরকে জানান যে, দেশের তেল উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তা কাজে লাগানোর ফলে গত ২১ মার্চ সমাপ্ত বিগত ইরানি বছরে দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ হ্রাস পাওয়ায় জনকল্যাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রের ১৯তম ফেসে দক্ষিণ পার্স কোম্পানি, পার্স অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি ও পেট্রোপার্স কোম্পানির বিশেষজ্ঞগণকে ও সুদক্ষ শ্রমশক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে। এর ফলে জাতীয় সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।
জনাব আরাগ¦ী প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সরকারের প্রশংসা করে বলেন, এ সাফল্য ড. রুহানির দক্ষতারই পরিচয় বহন করে। কারণ, তাঁর সরকার প্রায় খালি হাতে এবং কেবল দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ ও সামর্থ্যরে ওপর নির্ভর করে দেশ পরিচালনা করেও এ বিরাট সাফল্যের অধিকারী হয়েছেন।
তিনি দক্ষিণ পার্স কোম্পানির সুদক্ষ জনশক্তিকে তাঁদের বহু বছরের অভিজ্ঞতাকে দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রের ১৯তম ফেসের উৎপাদনে ভালোভাবে কাজে লাগানোর এবং প্রকল্পটির জন্য গৌরবময় সাফল্য অর্জনের জন্য আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ৪৮০ কোটি ডলার ব্যয় সাপেক্ষ দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রের ১৯তম ফেসের উন্নয়ন ও অপারেশনের প্রকল্পটি গত ২০০৯ সালের জুন মাসে এ কোম্পানির ওপর অর্পণ করা হয়। ইতিমধ্যেই স্থল ভাগে ও সমুদ্রে এ প্রকল্পের কাজের শতকরা ৯৩.৩ ভাগ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে এবং আগামী সেপ্টেম্বরে (২০১৬) এ ফেসের উৎপাদন কাজ পুরোপুরি শুরু হবে।

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কর্তৃক সদ্য সমাপ্ত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত প্রকল্পের আবরণ উন্মোচিত
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেইন দেহ্কান গত ১ জুন (২০১৬) তেহরানের মালেক আশতার প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য সমাপ্ত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত প্রকল্পের আবরণ উন্মোচন করেন। এগুলো হচ্ছে ন্যাশনাল পজিশনিং সিস্টেমের একটি ওয়ান-এম্ডব্লিউ ট্রান্সমিটার, একটি রোবোটিক ভ্যাকুয়াম কোটিং মেশিন এবং ভ্যাকুয়াম র্আক্ রিমেল্টিং (ভিএর্আ) চুল্লি।
জনাব দেহ্কান বলেন, বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম দেশের প্রতিরক্ষা তত্ত্বের ওপর ভিত্তিশীল। আর আজ যে তিনটি জিনিসের আবরণ উন্মোচন করা হলো তাতে ঐ সব বৈশিষ্ট্য ছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, এগুলো একদিকে যেমন ‘প্রতিরোধমূলক অর্থনীতি’র প্রতীক, তেমনি তা শত্রুদের চাপিয়ে দেয়া নিষেধাজ্ঞাকে যে অকেজো ও ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে তা তাদেরকে প্রদর্শনের লক্ষ্যে বাস্তব ও কার্যকর পদক্ষেপ।
ন্যাশনাল পজিশনিং সিস্টেমের ওয়ান-এম্ডব্লিউ ট্রান্সমিটার সম্বন্ধে তিনি বলেন, আমাদের দেশের সকল পজিশনিং, নেভিগেশন ও টাইমিং সার্ভিস জিপিএস্-এর ওপর ভিত্তিশীল। আর যেহেতু এগুলোর দক্ষতা ও নির্ভুলতা, মান ও সংখ্যার ওপরে আমাদের কোনোরূপ নিয়ন্ত্রণ নেই এবং যেহেতু জরুরি অবস্থায় এসব সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার ঝুঁকি সব সময়ই রয়েছে সেহেতু দেশের অভ্যন্তরে উচ্চ মাত্রার নির্ভরযোগ্যতা ও দ্রুততম সময়ে পরিবর্তনযোগ্যতা বিশিষ্ট পজিশনিং সিস্টেম গড়ে তোলা অপরিহার্য হিসেবে অনুভূত হয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরো বলেন যে, ভবিষ্যতে দেশের ভেতরে যথোপযোগী স্থানসমূহে আরো পাঁচটি শক্তিশালী ট্রান্সমিটার স্টেশন প্রতিষ্ঠা করা হবে যেগুলো বৈশ্বিক মানের ন্যাশনাল জিপিএস্ নেভিগেশন অ্যান্ড টাইমিং সিস্টেম দিতে সক্ষম হবে।
রোবোটিক ভ্যাকুয়াম কোটিং মেশিন সম্বন্ধে তিনি বলেন, এ মেশিন সলিড্ ফুয়েল, ব্যালাস্টিক মিসাইল মায্ল্স্ এবং নিওবিয়াম্, ট্যান্টালুম্, টাংস্টেনক্রোমিয়াম্, মোলিবডেনাম্ প্রভৃতি ধাতব পদার্থের ওপর স্পেশাল কেমিক্যাল করোসিওন্ রেসিস্ট্যান্স কোটিংস হিসেবে ব্যবহার করা যাবে এবং বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল্ অ্যাপলিকেশন সহও কোটিং করা যাবে।
ভ্যাকুয়াম র্আক্ রিমেল্টিং (ভিএর্আ) চুল্লি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভিএআর চুল্লি থেকে একদিকে যেমন হস্তচালিত সার্ভিস নেয়া যাবে তেমনি এটাকে স্বয়ংক্রিয় হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া একে টাইটানিয়ামের সংমিশ্রণ গলানো ও বিশোধনের কাজে এবং সুপার এ্যালয় ও স্পেশাল স্টীল পুনঃগলানোর কাজে ব্যবহার করা যাবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিপূর্ণরূপে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে দেশের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের প্রয়োজন পূরণ করছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য রক্ষাকবচ হিসেবে সেবা প্রদান করছে।

বিশ্ব যোগাযোগ দিবসে ইরানের তিনটি আইসিটি প্রকল্পের পর্দা উন্মোচন
বিশ্ব যোগাযোগ দিবসে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান গত ১৫ মে (২০১৬) ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ সেন্টার অব্ ন্যাশনাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক এবং ন্যাশনাল পোর্টাল্ অব্ স্টার্ট গভর্নমেন্ট সার্ভিসেস্ সহ তিনটি আইসিটি প্রকল্পের পর্দা উন্মোচন করেছে।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সরকারের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মাহমূদ ওয়ায়েযী এবং সুপ্রিম কাউন্সিল অব্ সাইবারস্পেস্ (এসসিসি)-র সেক্রেটারি আবূল্ হাসান্ ফীরূযাবাদীর উপস্থিতিতে ‘সামাজিক প্রভাবের জন্য আইসিটি ব্যবসায়’ স্লোগান সহকারে বিশ্ব যোগাযোগ দিবসের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে আইসিটিবিষয়ক মন্ত্রী ন্যাশনাল পোর্টাল্ অব্ স্টার্ট গভর্নমেন্ট সার্ভিসেস্ প্রকল্পটির পর্দা উন্মোচন করেন। এ প্রকল্প জনগণকে তথ্য লাভে সহায়তা করবে এবং সেই সাথে এতদসংক্রান্ত অনুরোধের জন্য সময়ের সাশ্রয় ঘটাবে।
এছাড়া জনাব ফীরূযাবাদী জিএসবি প্রকল্পের পর্দা উন্মোচন করেন। এটি হবে সরকারের ইনফরমেশন শেয়ারিং সেন্টারÑ যা বিভিন্ন নির্বাহী সংস্থার মধ্যে পারস্পরিক ডাটাবেস্ যোগাযোগের কাজ করবে। এর কাজের নমুনা হিসেবে অনুষ্ঠান চলাকালে এটি আইআরআই পোস্ট্ কোম্পানির পোর্টালের সাথে সংযোগ প্রদান করে প্রথম ই-মেইলটি গ্রহণ করে।
এ অনুষ্ঠানে তৃতীয় যে প্রকল্পটির আবরণ উন্মোচন করা হয় সেটি হচ্ছে ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ সেন্টার অব্ ন্যাশনাল ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক, সংক্ষেপে এনআইএক্স। এটিকে ইরানের ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ নেটওয়ার্কের সমন্বিত প্লাটফর্ম হিসেবে গণ্য করা হয়।

ইরানের নাসে ড্রোনের পর্দা উন্মোচন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের খাতামুল্ আম্বিয়া বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি ‘নাসে’ নামে একটি ড্রোন্ তৈরি করেছে। গত ১০ মে (২০১৬) দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হোসেইন্ দেহ্কানের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে এর পর্দা উন্মোচন করা হয়।
উল্লেখ্য, নাসে ড্রোন্-এর পর্দা উন্মোচন ছাড়াও এ দিনে খাতামুল্ আম্বিয়া বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটির সর্বশেষ প্রতিরক্ষা সাফল্যসমূহের প্রদর্শনী করা হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দেহ্কান্ খাতামুল্ আম্বিয়া বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটির প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল র্ফাযাদ্ ইসমাঈলী সহ প্রদর্শনীস্থল পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, খাতামুল্ আম্বিয়া বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটি ইতিপূর্বে যে কম্ব্যাট্ ড্রোন্ তৈরি করেছিল নাসে হচ্ছে তার উন্নততর সংস্করণ।

কৃত্রিম উপগ্রহ ‘মিস্বাহ্’ কক্ষপথে প্রেরণের লক্ষ্যে ইরান ও ইতালির মধ্যে আলোচনা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কর্তৃক নির্মিত কৃত্রিম উপগ্রহ ‘মিস্বাহ্’ কক্ষপথে প্রেরণের লক্ষ্যে গত ৬ জুন (২০১৬) ইরান ও ইতালির মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে ইরানের মহাশূন্য সংস্থার প্রধান জনাব মোহ্সেন্ বাহ্রামী ঘোষণা করেন যে, ইতিপূর্বে ইতালি ইরানের ‘মিস্বাহ্’ নামক যে কৃত্রিম উপগ্রহটি আটক করেছিল তা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জনাব বাহ্রামী বার্তা সংস্থা মেহ্র্ নিউজ-এর সংবাদ প্রতিনিধিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইতিপূর্বে ইতালি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বাহানায় ইরানের ‘মিস্বাহ্’ কৃত্রিম উপগ্রহটি আটক করে রাখে এবং ইরানের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে সেটি ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমানে ইরান ইতালির সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ইরানি গবেষকগণ এখন এটিকে কক্ষপথে নিক্ষেপের বিভিন্ন সম্ভাবনার মধ্য থেকে কোন্টির আশ্রয় নেয়া হবে সে সম্বন্ধে চিন্তা-ভাবনা করছেন।
উল্লেখ্য, ইরানের ‘মিস্বাহ্’ কৃত্রিম উপগ্রহ ইতালির কোর্লো গাভায্যী স্পেস্ এস. পি. এ.-র সহযোগিতায় ১৯৯৮ সালে নির্মিত হয় এবং ২০০৫ সালে এটির আবরণ উন্মোচিত হয়। এটি হচ্ছে ভূ-কেন্দ্রিক নিম্ন অক্ষের টেলিযোগাযোগ উপগ্রহ। ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া ও ইতালি এ ব্যাপারে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে এটি কক্ষপথে স্থাপন করা সম্ভব হয় নি।

ইরানি কোম্পানি কর্তৃক বৃক্ষের ভঙ্গুরতা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণীকারী মোবাইল সেট তৈরি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের একটি মোবাইল কোম্পানি এমন একটি মোবাইল সেট তৈরি করেছে যা বৃক্ষের উৎপাটিত হওয়া ও ভেঙে পড়া সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম এবং ‘দেরাখ্ত্-বন্’ (বৃক্ষরক্ষক) নামক এ মোবাইলের ভবিষ্যদ্বাণী শতকরা ৮৭ ভাগ ক্ষেত্রে নির্ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
মোবাইল সেটটির নির্মাতা জনাব নোর্যা নোযারী বার্তা সংস্থা মেহ্র্ নিউজ-এর সংবাদ প্রতিনিধিকে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে বলেন যে, দেরাখ্ত্-বন্ মোবাইল সেট উদ্দিষ্ট যে কোনো বৃক্ষের অবস্থান ও তার আকার-আকৃতি সম্পর্কিত তথ্যাদি সংগ্রহ করতে এবং তা আবহাওয়া দফতরকে অবহিত করতে সক্ষম। সেটটি সংশ্লিষ্ট স্থানের বায়ুর চাপ ও প্রবাহ এবং বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার সংক্ষিপ্ত চার্ট তৈরি করে সরবরাহ করে। সেই সাথে সেটটি এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে বৃক্ষটি উৎপাটিত হওয়ার বা ভেঙে পড়ার সময় সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে। আর এটির কৃত ভবিষ্যদ্বাণী শতকরা ৮৭ ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক প্রমাণিত হয়ে থাকে।
জনাব নোর্যা নোযারী আরো জানান যে, তাঁর উদ্ভাবিত এ যন্ত্রটিতে জিওগ্রাফিক্যাল্ ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস্) সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে এবং এটি বাগান রক্ষককে গাছে থাকা খেজুরের ছত্রাক সম্বন্ধে জানিয়ে দিতে সক্ষম, আর এ তথ্য অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় নির্ভুলতার সাথে সরবরাহ করে থাকে।
তিনি আরো জানান, দেরাখ্ত্-বন্ মোবাইল সেট মাটির আর্দ্রতা সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে এবং কখন পানি সিঞ্চন করতে হবে সে সম্বন্ধে যথাযথ সময় নির্দেশ করে পরামর্শ দিতে পারে, ফলে জমিতে পানির ব্যবহার সর্বোচ্চ মাত্রায় যথাযথভাবে করা সম্ভবপর হয়।
দেরাখ্ত্-বন্ মোবাইল সেট গাছপালার বিভিন্ন ক্যাটেগরির তথ্য গ্রহণ করতে, কীট-পতঙ্গ চিহ্নিত করতে, গাছপালায় আরো যেসব সমস্যা দেখা দেয় সেগুলোও চিহ্নিত করতে এবং মালিকে তার সমাধান নির্দেশ করতে সক্ষম।
জনাব নোযারী জোর দিয়ে বলেন যে, এ ধরনের যন্ত্র তিনিই সর্বপ্রথম উদ্ভাবন করেছেন এবং এ পর্যন্ত অন্য কেউই এ ধরনের যন্ত্র উদ্ভাবন করেন নি।

হ্যানোভার আন্তর্জাতিক শুটিং প্রতিযোগিতায় ইরানি মহিলা শুটারদের পাঁচটি পদক লাভ
সম্প্রতি জার্মানির হ্যানোভারে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শুটিং প্রতিযোগিতায় (আইএসসিএইচ) ইরানি মহিলা শুটারগণের দক্ষতা দর্শকদেরকে অভিভূত করে এবং তাঁরা এ প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক সহ মোট পাঁচটি পদক জয় করেন। হ্যানোভারের ন্যাশনাল শুটিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় গত ২৪ মে (২০১৬) এলাহে আহ্মাদী, মাহালাগ¦া জাম্বোর্যোগ্ ও নাজমা খেদ্মাতীর সমন্বয়ে গঠিত ইরানি শুটিং স্কোয়াড্ মহিলাদের ৫০ মিটার রাইফেল্ প্রোন্ টীম্ কম্পিটিশনের শেষে একটি ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন।
এ প্রতিযোগিতায় সুইস্ ন্যাশনাল টীম চ্যাম্পিয়ন হয় এবং স্বাগতিক দেশ জার্মানির টীম দ্বিতীয় বা রানার্স আপ হয়। আর মহিলাদের ৫০ মিটার শুটিং-এ ইরানি টীম তৃতীয় স্থান দখল করে।
ইরানি টীমের সদস্যা এলাহে আহ্মাদী এ ইভেন্টে ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ পয়েন্ট লাভ করেন ও স্বর্ণপদক জয় করেন। অন্যদিকে নাজমা খেদ্মাতী রৌপ্য পদক লাভ করেন।
উল্লেখ্য যে, হ্যানোভারের আন্তর্জাতিক শুটিং প্রতিযোগিতায় জুনিয়র ও সিনিয়র সেকশনের প্রতিযোগিতা গত ৭ মে (২০১৬) শুরু হয় এবং ১৫ মে সমাপ্ত হয়।

গ্রেকো-রোমান বিশ্বকাপ কুস্তিতে ইরানের শিরোপা জয়
ইরানি জাতীয় টীম শীরাযে অনুষ্ঠিত গ্রেকো-রোমান কুস্তি বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় রাশিয়াকে পরাজিত করে শিরোপা অর্জন করেছে।
গত ১৯ মে (২০১৬) শীরাযে দু’দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং ইরানি কুস্তিগীরগণ ইউক্রেন, আযারবাইজান ও তুরস্ককে পরাজিত করে ফাইনালে উন্নীত হন এবং পরদিন রাশিয়াকে পরাজিত করে শিরোপা অর্জন করেন।
এ প্রতিযোগিতায় তুরস্ক তৃতীয় স্থান দখল করে এবং বেলারুস, আযারবাইজান, ইউক্রেন ও জার্মানি যথাক্রমে পরবর্তী স্থানগুলো লাভ করে।

ইরানের জাতীয় প্যারাশুটিং টীমের স্বর্ণ পদক বিজয়
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় প্যারাশুটিং টীম হ্যানোভারে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শুটিং প্রতিযোগিতা (আইএসসিএইচ) ২০১৬-তে ৫০ মিটার পিস্তল শুটিং প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণ পদক জয় করেছে।
এ প্রতিযোগিতায় ইরানের মাহ্দী যামানী, সারেহ্ জাভার্ন্মাদী ও আলীয়ে মাহমূদী যথাক্রমে ৫২৯, ৫৪৮ ও ৫২৮ পয়েন্ট লাভ করেন এবং এর ফলে এ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ইরান শীর্ষ স্থান অধিকার করতে সক্ষম হয়।
এ ছাড়াও ৫০ মিটার পিস্তলের ব্যক্তিগত পর্যায়ের শুটিং প্রতিযোগিতায় সারে জাভার্ন্মাদী স্বর্ণ পদক জয় করেন এবং আলীয়েহ্ মাহমূদী ও মাহ্দী যামানী যথাক্রমে ৫ম ও ৭ম স্থান অধিকার করেন। এভাবে ইরানি প্যারাশুটারগণ দলবদ্ধভাবে একটি স্বর্ণপদক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে আরো একটি স্বর্ণপদক জয় করলেন।
উল্লেখ্য, হ্যানোভারের আন্তর্জাতিক শুটিং প্রতিযোগিতা (আইএসসিএইচ) গত ৭ মে (২০১৬) শুরু হয় এবং ১৫ মে সমাপ্ত হয়।

৫২ বছর পর অলি¤িপকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল ইরানি ভলিবল দল
ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে অনুষ্ঠেয় আসন্ন গ্রীষ্মকালীন অলি¤িপকের টিকিট নিশ্চিত করেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পুরুষ ভলিবল দল। রিও অলি¤িপকের চূড়ান্ত আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে ইরানি দল প্রতিপক্ষ পোল্যান্ডকে ৩-১ সেটে হারিয়েছে। শনিবার জাপানের টোকিও মেট্রোপলিটন জিমনেশিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
এ আসরে ইরান ছয়টি দেশের মোকাবেলায় পাঁচটিতে জিতে রিও অলি¤িপকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। যেসব দেশের বিরুদ্ধে ইরান জয় পেয়েছে সেগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, চীন ও পোল্যান্ড। আর একমাত্র পরাজিত হয়েছে ফ্রান্সের কাছে। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়লাভের মাধ্যমে গ্রীষ্মকালীন অলি¤িপকে খেলার জন্য ৫২ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটালো ইরান। ১৯৬৪ সালে টোকিও অলি¤িপকে প্রথমবারের মতো ভলিবল ইভেন্ট হিসেবে যুক্ত হয়।
রিও অলি¤িপকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি নিজ দেশের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি তাঁর অভিনন্দন বার্তায় বলেছেন, ইরানি ভলিবল দল এ বিজয়ের মাধ্যমে আরো একবার দেশের জনগণের জন্য গর্ব ও আনন্দ বয়ে আনল। বিশ্বের বড় বড় এবং শক্তিশালী দলকে হারিয়ে ইরানের তরুণরা জাতির জন্য সোনালি অধ্যায় রচনা করল।