শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

সংবাদ বিচিত্রা (বিদেশী সংবাদ)

পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ৬, ২০১৬ 

‘তেলের মূল্যহ্রাস স্বাধীনচেতা দেশগুলোর ওপর চাপ তৈরির কৌশল’- রাহবার
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উযমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, আমেরিকার তাঁবেদারি করতে নারাজ দেশগুলোর ওপর চাপ তৈরির কৌশল হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমিয়ে রাখা হয়েছে। গত ২২ অক্টোবর ২০১৬ তেহরান সফররত ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।
তিনি বলেন, ‘চাপের মুখে যৌক্তিক প্রতিরোধ ও বিচক্ষণতার সঙ্গে লক্ষ্য অর্জনে অবিচল থাকার মাধ্যমে বিজয় অর্জন সুনিশ্চিত করা সম্ভব।’
পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর বিরুদ্ধে আমেরিকার সব পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এরই মধ্যে ব্যর্থ হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, কিন্তু তারপরও স্বাধীনচেতা দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টির অপকৌশল হিসেবে তেলের দাম কমিয়ে রাখা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অতীতে যখন কিছু মুসলিম দেশ ইহুদিবাদী ইসরাইলকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিত তখন পশ্চিমারা কান্নাকাটি শুরু করে দিত এই বলে যে, এসব দেশ তেলকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেই দেশগুলোই এখন ওপেকভুক্ত কিছু দেশকে সঙ্গে নিয়ে মার্কিন নীতির সঙ্গে সমন্বয় করে তেলকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, যৌক্তিক নীতি গ্রহণ এবং নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে স্বাধীনচেতা দেশগুলো এ ধরনের ষড়যন্ত্র ও বিদ্বেষের ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নীতির ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘কেউ কেউ মনে করে আমেরিকাকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। অথচ এটি একটি মস্ত বড় ভুল ধারণা।’ তাঁর মতে, গত ১৫ বছরে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার অবস্থান মারাত্মক নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ভেনিজুয়েলার প্রতিরোধকামী নীতির প্রশংসা করে বলেন, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের বর্তমান সভাপতি হিসেবে দেশটি এ সংস্থাকে শক্তিশালী করতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে পারে। সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট মাদুরো মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মার্কিন আগ্রাসন সত্ত্বেও ইরানের স্বাধীনচেতা নীতির প্রশংসা করে বলেন, এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে যখন যুদ্ধ ও রক্তপাত চলছে তখন ইরানি জনগণ পূর্ণ শান্তি ও নিরাপত্তা ভোগ করছে।
সাক্ষাতে ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসহাক জাহাঙ্গিরি উপস্থিত ছিলেন।

উন্নয়নই ইরান সরকারের প্রধান লক্ষ্য: প্রেসিডেন্ট রুহানি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। গত ২২ অক্টোবর ২০১৬ গ্রাম ও উপজাতি লোকদের জাতীয় দিবসে বক্তৃতা করার সময় তিনি বলেন, বিশেষ করে তরুণীদের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানের প্রতি প্রত্যেকের জোর দেয়া উচিত। তিনি বলেন, উন্নয়নই তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি জানান, তাঁর মন্ত্রিপরিষদ গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে যদিও এজন্য এখনো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। তবে বিষয়টিতে তিনি স¤পূর্ণ সচেতন রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন ড. রুহানি।
প্রেসিডেন্ট রুহানি গ্রামের মানুষের জন্য মাটি, পানি, বন, চারণভূমি, নদী ও জলজপ্রাণী রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। দেশ এখন পানির ঘাটতিতে ভুগছে বিধায় বর্তমান সময়ে জলজস¤পদের যথাযথ ব্যবহারে যতœবান হতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
পানি স¤পদ ব্যবস্থাপনার জন্য চলমান অনেক পরিকল্পনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে চারটি বাঁধ উদ্বোধন করা হয়েছে এবং চলতি বছর সরকার আরো ছয়টি বাঁধ খুলে দেবে।

আফ্রিকান দেশগুলোর সাথে স¤পর্ক বাড়াতে চায় তেহরান : হাসান রুহানি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, আফ্রিকান দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক বাড়ানো ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের অন্যতম নীতি। গত ১৭ অক্টোবর ২০১৬ তেহরান সফররত আইভোরি কোস্টের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদাল্লাহ আলবার্ট তইকেসুর সঙ্গে বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, ইয়ামোসুকরোর সঙ্গে সকল ক্ষেত্রে বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক বাড়ানোর ব্যাপারে তেহরান প্রস্তুত রয়েছে। রুহানি আরো বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে তেহরান এবং ইয়ামোসুকরো তাদের সক্ষমতাকে কাজে লাগানো উচিত।
প্রযুক্তি এবং প্রকৌশল ক্ষেত্রে ইরানের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে রুহানি আরো বলেন, পশ্চিম আফ্রিকান দেশগুলোর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সহযোগিতা দিতে তেহরান সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়া, বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে সব দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। সন্ত্রাসবাদকে বিশ্বের প্রধান হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ইসলাম ভালবাসা, শান্তি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে এবং এর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।
বৈঠকে সন্ত্রাস নির্মূলে সব দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়ে মাবরি বলেন, সব দেশের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি শান্তি এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার ওপর নির্ভর করছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে সকল ক্ষেত্রে বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক বাড়ানোর ব্যাপারে তার দেশের দৃঢ়তার কথা বৈঠকে উল্লেখ করেন আইভোরি কোস্টের এ কর্মকর্তা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট; সম্পর্ক উন্নয়নই মূল লক্ষ্য
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি গত ৫ অক্টোবর ২০১৬ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশ সফরের উদ্দেশে বের হন। এ সফরে তিনি ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড গমন করেন। যাত্রার আগে প্রেসিডেন্ট রুহানি তিন দেশ সফরের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য স¤পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় তিনি এ সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, একুশ শতক হবে এশিয়ার।
এ সফরে প্রেসিডেন্ট রুহানি প্রথমে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় যান। পরে তিনি মালয়েশিয়া এবং সবশেষে থাইল্যান্ড যান। ব্যাংককে এশিয়া কো-অপারেশন ডায়ালগ বা এসিডি’র শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। এ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট রুহানি বক্তব্য রাখেন। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য, সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এশিয়ার ভূমিকা বাড়ানোর লক্ষ্যে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনা করতে যাচ্ছে ইরান ও থাইল্যান্ড
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও থাইল্যান্ড সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনা করার কথা ঘোষণা করেছে। গত ৯ অক্টোবর ২০১৬ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে দ্বিতীয় এশিয়া কো-অপারেশন ডায়ালগ বা এসিডি সম্মেলনের অবকাশে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি ও থাই প্রধানমন্ত্রী প্রাইয়ুত চান-ও-চা এক বৈঠকে এ কথা ঘোষণা করেন।
প্রেসিডেন্ট রুহানি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। তেহরান ও ব্যাংককের মধ্যে এ সম্পর্ক দু দেশের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।’
প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, ইরান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মাঝে থাইল্যান্ড অর্থনৈতিক সেতু হিসেবে কাজ করতে পারে। তেহরান ও ব্যাংককের মধ্যকার সহযোগিতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে দু’ দেশের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। ইরান ও থাইল্যান্ডের মধ্যে অর্থনৈতিক স¤পর্ক জোরদার করার জন্য দু দেশের ব্যাংকিং চ্যানেল চালু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। তিনি জানান, ইরান এবং থাইল্যান্ড চুক্তি ও প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিগগিরি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দ্বিগুণ করবে। বর্তমানে দু দেশের মধ্যে বার্ষিক ৭৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের বাণিজ্য রয়েছে।
থাই প্রধানমন্ত্রীও তেহরান ও ব্যাংককের মধ্যে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে তার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একইভাবে জোরদার গতিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স¤পর্কও বাড়াবে দু’ দেশ।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিনটি দেশ সফরের শেষ পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট রুহানি থাইল্যান্ড সফর করেন।

ইসলামের শত্রুরা বিভেদের বীজ বপন করছে : প্রেসিডেন্ট রুহানি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ইসলামের শত্রুরা মুসলমানদের মধ্যে বিভেদের বীজ বপন করছে এবং ইরান ও মালয়েশিয়া এ ব্যাপারে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। গত ৭ অক্টোবর মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজয়ায় স্বাগতিক দেশের প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। রুহানি বলেন, ইরান ও মালয়েশিয়া মনে করে, ইসলামের সব মাজহাবের লক্ষ্য এক; পাশাপাশি অভিন্ন উৎস থেকে এগুলোর উৎপত্তি হয়েছে। কাজেই মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে স¤পর্কের ক্ষেত্রে মাজহাবগত মতপার্থক্যকে উপেক্ষা করতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বে চলমান জঙ্গিবাদকে দু’দেশের অভিন্ন উদ্বেগের জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সবগুলো দেশের উচিত সর্বশক্তি প্রয়োগ করা।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স¤পর্ক ও সহযোগিতা শক্তিশালী করার ওপরও জোর দেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। তিনি বলেন,ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রনীতিতে বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রতিম মালয়েশিয়াসহ এশিয়ার সব দেশের বিশেষ স্থান রয়েছে। মালয়েশিয়ায় ইরানি শিল্পপতিদের পুঁজি বিনিয়োগের দারুণ সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন হাসান রুহানি। তিনি বলেন,সেইসঙ্গে ইরানও তার তেল, গ্যাস ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতে মালয়েশিয় পুঁজি বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানায়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিন দেশ সফরের দ্বিতীয় পর্যায়ে শুক্রবার সকালে মালয়েশিয়া পৌঁছান প্রেসিডেন্ট রুহানি। এর আগে তিনি ভিয়েতনাম সফর করেন।

পোপের পত্রে মানবতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনকারী মূল্যবোধের অংশীদারিত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ
ক্যাথলিক খ্রিস্টান জগতের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আলেম ও ইসলামি চিন্তাবিদ হযরত আয়াতুল্লাহ্ নাসের মাকারেম শীরাযীর লেখা পত্রের জবাবে আয়াতুল্লাহর সাথে মতৈক্য প্রকাশ করে মানবতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনকারী মূল্যবোধের অংশীদারিত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
উল্লেখ্য, হযরত আয়াতুল্লাহ্ নাসের মাকারেম শীরাযী গত আগস্ট মাসে (২০১৬) পোপ ফ্রান্সিস বরাবরে একটি পত্র প্রেরণ করেন এবং এতে ইসলাম সম্পর্কে পোপের অবস্থানের প্রশংসা করেন। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পোপ এ পত্রের উত্তর দেন।
পোপ তাঁর পত্রে তাঁকে পত্র লেখার জন্য হযরত আয়াতুল্লাহ্ নাসের মাকারেম শীরাযীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
হযরত আয়াতুল্লাহ্ নাসের মাকারেম শীরাযী তাঁর পত্রে ইসলাম সম্পর্কে পোপের অবস্থানের কারণে এবং তিনি যে ইসলাম সন্ত্রাসবাদের সমার্থক নয় বলে উল্লেখ করেছেন সে কারণে পোপকে ধন্যবাদ জানান। তাঁর এ পত্রের জবাবে পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকান থেকে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র প্রেরণ করেন।
পোপের পত্রে বলা হয়, ‘পোপ ফ্রান্সিস হযরতের পত্র প্রাপ্তির কারণে খুশী হয়েছেন এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন।’ পত্রে আরো বলা হয়, হযরত আয়াতুল্লাহ্ মাকারেম অবশ্যই অবগত আছেন যে, সকল ধর্মের বাণী, বিশেষ করে সকল একেশ্বরবাদী ধর্মের বাণী হচ্ছে প্রথমত মানব প্রজাতি কর্তৃক ঈশ্বরের নিরঙ্কুশ আরাধনা এবং তদসহ আমরা যেসব মানুষের সাথে আন্তঃক্রিয়া করে থাকি তাদের সকলের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান পোষণ। সুতরাং যখন সহিংসতার আশ্রয় নেয়া হয়, বিশেষ করে যখন তা ঈশ্বর বা ধর্মের নামে করা হয় তখন এ কাজ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রতি অবমাননা হিসেবে পরিগণিত হয় এবং শুধু তা-ই নয়, বরং তা নিপীড়িত মানুষের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের যুলুম।’
পোপ তাঁর পত্রের শেষে বলেন, ‘সুতরাং বিশ্বের বর্তমান ধর্মীয় নেতাদের জন্য ইতিপূর্বেকার যে কোনো সময়ের চেয়েও এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করা এবং প্রতিটি মানুষের সম্মান, মর্যাদা ও বৈধ অধিকারসমূহের সমর্থনে সোচ্চার হওয়া অধিকতর আবশ্যক।’
উল্লেখ্য, পোপ ইতিপূর্বে তাঁর পোল্যান্ড সফরে জোর দিয়ে বলেন যে, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার সাথে ইসলামের কোনোই সম্পর্ক নেই এবং কোনো ঐশী ধর্মকেই এসব বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত করে দেখানো উচিত নয়।

ইউনেস্কোর আল-আকসা বিষয়ক প্রস্তাবকে স্বাগত জানালো ইরান
মুসলমানদের প্রথম ক্বিবলা আল-আকসা মসজিদের সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের কোনো স¤পর্ক নেই বলে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো যে রায় দিয়েছে তাকে স্বাগত জানিয়েছে ইরান। ইউনেস্কো সম্প্রতি এক প্রস্তাবে বাইতুল মোকাদ্দাস (জেরুজালেম) শহরে অবস্থিত ওই মসজিদ চত্বরে ইসরাইলের সব ধরনের তৎপরতাকে অবৈধ বলেও ঘোষণা করেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি ইউনেস্কোর এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে আল-আকসা মসজিদের ওপর মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো।
ইউনেস্কোর প্রস্তাবে বলা হয়, আল-আকসা মসজিদ এবং এর আঙিনা কেবল মুসলমানদের জন্যই পবিত্র। এছাড়া, এই মসজিদে মুসলমানদের অবাধ প্রবেশাধিকারে ইসরাইলি বাধাদানের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সেইসঙ্গে ‘দখলদার শক্তি’ ইসরাইলকে ঐতিহাসিক বাস্তবতা মেনে নিয়ে আল-আকসা মসজিদের ওপর যেকোনো আগ্রাসী তৎপরতা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
গত ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ইউনেস্কোতে আল-আকসা মসজিদ সংক্রান্ত প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় আলজেরিয়া, ব্রাজিল, চীন, ইরান, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ২৪টি দেশ। অন্যদিকে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, হল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও এস্তোনিয়া প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। এছাড়া, আলবেনিয়া, আলজেরিয়া, ফ্রান্স, গ্রিস, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ¯েপন ও সুইডেনসহ ২৬টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। আর সার্বিয়া এবং তুর্কমেনিস্তান ভোটাভুটিতে উপস্থিতই হয় নি।
এই ভোটাভুটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছেন পর্যবেক্ষকরা। কারণ, এর মাধ্যমে আল-আকসা মসজিদের ওপর ইহুদি ধর্মের আধ্যাত্মিক দাবি নস্যাৎ হয়ে গেছে। ইহুদিবাদীরা এই মসজিদকে ‘টে¤পল মাউন্ট’ হিসেবে অভিহিত করলেও ইউনেস্কোর প্রস্তাবে এটিকে আল-আকসা মসজিদ বা আল-হারাম আল-শরীফ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠনের এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পরের দিনই জাতিসংঘের এ সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে তেল আবিব।

‘জ্বালানি চাহিদা পূরণে ইরানের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ’
বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, ভ্রাতৃপ্রতিম দুই মুসলিম দেশ বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে বাণিজ্যিক স¤পর্ক আরও জোরদার হওয়া উচিত। গত ৪ অক্টোবর ইরানের ইসফাহান প্রদেশের গভর্নর রাসুল জারগারপুরের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, বিশ্বে গ্যাস মজুদের দিক থেকে ইরান দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আর বাংলাদেশের রয়েছে ব্যাপক জ্বালানি চাহিদা। ইরান বাংলাদেশকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। ইরানের সহযোগিতায় বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণ করা তাঁর এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।
মান যাচাইয়ের পর বাংলাদেশ ইরানের স্টিলজাত পণ্য আমদানির বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী ইসফাহান শহরের প্রশংসা করে বলেন, তিনি দেশে ফিরে বহু বাংলাদেশি পর্যটককে ইসফাহানে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করবেন।
ইসফাহানের গভর্নর এ সময় বলেন, প্রতি বছর বিশ্বের ৮৬টি দেশ থেকে বহু সংখ্যক পর্যটক ইসফাহান সফর করেন। এ শিল্পের উন্নয়নে ইরান সরকার বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

ইরানি শিল্পে অলঙ্কৃত হচ্ছে মালয়েশিয়ার ইসলামি শিল্প জাদুঘর
ইরানি ও ইসলামি শিল্পে আরো সুসজ্জিত ও অলঙ্কৃত হচ্ছে এশিয়ার অন্যতম সেরা জাদুঘর হিসেবে পরিচিতি মালয়েশিয়ার ইসলামি শিল্প জাদুঘর। ইরানের ইসলামি যোগাযোগ ও সংস্কৃতি সংস্থার জনসংযোগ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী মালয়েশিয়ার ইসলামি শিল্প জাদুঘরের প্রধান গম্বুজের পুনর্নির্মাণ এবং এই জাদুঘরের অভ্যন্তরীণ কিছু সংস্কার ও কারুকাজের জন্য ইরানি শিল্পী মোহাম্মদ কভান্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর মোহাম্মদ কভান্দ ইরানি ও ইসলামি শিল্পের ছোঁয়ায় মালয়েশিয়ার বিখ্যাত এই জাদুঘরকে নতুন ভাবে অলঙ্কৃত করতে কাজ শুরু করেছেন ।
সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার ইসলামি শিল্প জাদুঘরের প্রধান গম্বুজÑ যা এই ভবনটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে তা ইরানি শিল্পী মোহাম্মদ কভান্দের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৬ মাসের নিরলস পরিশ্রমে অত্যন্ত চমৎকারভাবে পুনর্নিমিত হওয়ায় জাদুঘর কর্তৃপক্ষ তাঁকে ইরানি ও ইসলামি নিদর্শনের আদলে একটি পানির ফোয়ারা নির্মাণের দায়িত্ব দেয়। কভান্দ ইরানি-ইসলামি শিল্পের আলোকে জাদুঘরের ভবনের প্রথম তলায় একটি পানির ফোয়ারা নির্মাণের পরিকল্পনা জমা দেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী খুব শিগগিরই এই ফোয়ারার কাজ শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়েছে।

মধ্য এশিয়ার চারটি দেশ ইরানের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট বৃদ্ধি করবে
মধ্য এশিয়ার চারটি দেশ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মধ্য দিয়ে পণ্য ট্যানজিট বৃদ্ধি করবে। এ দেশগুলো হচ্ছে তাজিকিস্তান, উযবেকিস্তান, তুর্কোমেনিস্তান ও কাযাকিস্তান। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রেলওয়ে কোম্পানির অপারেশন সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপ্রধান জনাব হোসাইন আশূরী গত ২২ অক্টোবর তেহরানে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
জনাব হোসাইন আশূরী জানান যে, এ ব্যাপারে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও ঐ দেশগুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী তারা ইরানের মধ্য দিয়ে ছয় ধরনের পণ্যের ট্রানজিট পরিবহন বৃদ্ধি করবে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও ঐ দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুজাতিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং সেসব বৈঠকে পণ্য পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
জনাব হোসাইন আশূরী আরো জানান, এসব বৈঠকে গন্ধক ও রাসায়নিক সার ট্রানজিট বৃদ্ধির ব্যাপারে তুর্কমেনিস্তানের সাথে, গম ও ইস্পাত ট্রানজিট বৃদ্ধির ব্যাপারে কাযাকিস্তানের সাথে এবং অ্যালুমিনিয়াম রেইল ট্রানজিট বৃদ্ধির ব্যাপারে তাজিকিস্তানের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
তিনি উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে ঐ তিনটি দেশের সাথে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে এবং সাম্প্রতিক কালে এ দেশগুলোর সাথে ইরানের যেসব চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তাতে শুল্ক হ্রাস ও সফরের সময় শাশ্রয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং সেই সাথে অধিক পরিমাণে পণ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে পরিবহন সক্ষমতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এছাড়াও ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও মধ্য এশীয় দেশ উযবেকিস্তানের মধ্যে কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে যাতে উভয় দেশ উযবেকিস্তান থেকে পারস্য উপসাগরের উপকূলবর্তী দক্ষিণ ইরানের বন্দরগুলোতে বছরে সাড়ে তিন লাখ টন তুলা ট্রানজিটের ব্যাপারে মতৈক্যে উপনীত হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর এর পরিমাণ ছিল তিন লক্ষ টন।
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, গত ইরানি বছরে কোনো অশোধিত অ্যালুমিনিয়াম ট্রানজিট করা হয় নি, কিন্তু চলতি বছরের (২১ মার্চ ২০১৬ Ñ ২০ মার্চ ২০১৭) বিগত কয়েক মাসে তাজিকিস্তান থেকে দক্ষিণ ইরানে অশোধিত অ্যালুমিনিয়াম ট্রানজিটের পরিমাণ পনর হাজার টনে উপনীত হয়েছে। তিনি জানান, উভয় পক্ষই চলতি বছরের শেষ নাগাদ অশোধিত অ্যালুমিনিয়াম ট্রানজিটের পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার টনে উপনীত করতে আগ্রহী।
জনাব আশূরী বলেন, আমদানি, রফতানি ও ট্রানজিট পণ্য স্থানান্তরের লক্ষ্যে ইরান ও ঐ দেশগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি চমৎকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সম্পাদিত চুক্তিগুলো যথাসম্ভব অচিরেই বাস্তবায়িত হবে।

ইরানের কোম ও মাশহাদে পাঁচ তারকা ট্রেন চালু
ইরান রেলওয়ে কোম থেকে মাশহাদে পাঁচ তারকা ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে। এ ট্রেনের নাম দেয়া হয়েছে ‘ফাদাক’। ইরানের বিখ্যাত এ দুটি শহরের মধ্যে মাযার যিয়ারত ও ধর্মীয় তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতে এ ট্রেন সার্ভিস বিশেষ সুবিধা দেবে। ‘ফাদাক’ ট্রেন প্রথমবারের মত কোম থেকে মাশহাদে পাঁচ তারকা মানের ট্রেনসার্ভিস। কোম থেকে মাশহাদে এবং মাশহাদ থেকে কোমে এ ট্রেন যাতায়াতে প্রতিবার সময় লাগবে ৭ ঘণ্টা।
এ ট্রেন সার্ভিসে উন্নত মানের সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুরো ট্রেনটিই তৈরি হয়েছে ইরানে। মাশহাদের পর কোম হচ্ছে ইরানের দ্বিতীয় পবিত্র শহর। কোমে হযরত মাসুমা (সা.আ.)-এর ও মাশহাদে হযরত ইমাম রেযা (আ.)-এর পবিত্র মাযার শরীফে লাখ লাখ ইরানি নাগরিক ছাড়াও বিদেশি পর্যটকরা যিয়ারত করতে যান। তাঁদের জন্য এ ট্রেন সার্ভিস চলাচলে সুবিধা এনে দেবে।

ইরান তিন মহাদেশের বিভিন্ন দেশে রেডিও ড্রাগ রফতানি করছে
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান বিশ্বের তিনটি মহাদেশের বিভিন্ন দেশে রেডিও ড্রাগ রফতানি করছে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (এইওই)-র প্রধান জনাব আলী আকবার সালেহী ঘোষণা করেন যে, ইরান বর্তমানে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপ মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে ২৫টিরও বেশি রেডিও ড্রাগ রফতানি করছে।
জনাব সালেহী বলেন, বর্তমানে আমরা পঁচিশটিরও বেশি রেডিও ড্রাগ উৎপাদন করছি এবং মিসর, ইরাক ও জার্মানিসহ তিন মহাদেশের আরো কয়েকটি কাছাকাছি দেশে সেগুলো রফতানি করছি। তিনি গত ১৫ সেপ্টেম্বর (২০১৬) তেহরানে এক অনুষ্ঠানের অবকাশে সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাতে এ তথ্য জানান।
তিনি অন্য এক প্রসঙ্গে জানান যে, যেসব রোগীর জন্য পারমাণবিক ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে তাদের জন্য তেহরানে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইরান ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবার পথে। তিনি বলেন, এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পূর্বে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণের লক্ষ্যে আমরা একদল ইরানি ডাক্তার ও নার্সকে অস্ট্রিয়ায় পাঠাব।
জনাব সালেহী আরো বলেন, এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার ফলে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধির ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলো এ ধরনের একটি চিকিৎসা কেন্দ্রের অভাব তীব্রভাবে অনুভব করছে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, ইরান যেসব রেডিও ড্রাগ রফতানি করছে সেগুলোর সাহায্যে এমন অনেক রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে যেসব রোগকে সুনির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরো জানান যে, বর্তমানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে প্রায় দশ লক্ষ লোককে রেডিও ড্রাগের দ্বারা চিকিৎসা করা হচ্ছে।

ইরান ও রাশিয়ার শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের মধ্যে ৩০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও রুশ ফেডারেশনের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে ৩০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সম্প্রতি তেহরানে অনুষ্ঠিত ইরান ও রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের চ্যান্সেলরদের শীর্ষ সম্মেলনে এসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। দু’পক্ষের মধ্যে এসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উদ্দেশ্য হচ্ছে উভয় দেশের বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি ও তাতে পারস্পরিক সহযোগিতা, ছাত্র ও শিক্ষক বিনিময়, যৌথ কোর্স অনুষ্ঠান ও যৌথ গবেষণা কার্য পরিচালনা।
উল্লেখ্য, এ শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জন চ্যান্সেলরসহ মোট ২৩ সদস্যের একটি রুশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। এতে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর অংশগ্রহণ করেন সেসবের মধ্যে রয়েছে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি, গুব্কিন্ ইউনিভার্সিটি, লোবাচেভস্কি ইউনিভার্সিটি, কাবার্ডিনো-বালকার স্টেট ইউনিভার্সিটি প্রভৃতি। তাঁরা শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের তেহরান ইউনিভার্সিটি, শহীদ বেহেশতী ইউনিভার্সিটি, শরীফ ইউনিভার্সিটি অব্ টেক্নোলজী, মাশ্হাদের ফেরদৌসী ইউনিভার্সিটি, শীরায ইউনিভার্সিটি এবং ইসফাহান ইউনিভার্সিটির সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। বিশেষ করে ইরান ইউনিভার্সিটি অব্ সায়েন্স্ অ্যান্ড টেক্নোলজী এবং সেন্ট পিটার্সবুর্গ স্টেট পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী এ দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে পরস্পরের সাথে সহযোগিতা করবে।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও রুশ ফেডারেশনের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের প্রথম যৌথ শীর্ষ সম্মেলন গত ২৮ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে লোমোন্সোভ্ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির সেন্ট্রাল লাইব্রেরি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দু’দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলন আগামী বছর মস্কোতে অনুষ্ঠিত হবে- যার তারিখ ও ভেন্যু পরে নির্ধারণ করা হবে।

ইরানের রফতানিকৃত অশোধিত তেলের শতকরা ৬২ ভাগ এশীয় দেশগুলোতে যাচ্ছে
বর্তমানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রফতানিকৃত অশোধিত তেলের শতকরা ৬২ ভাগ এশীয় দেশগুলোতে যাচ্ছে। ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি (এন্আইওসি)র আন্তর্জাতিক বিষয়াদি সম্পর্কিত নির্বাহী পরিচালক সাইয়্যেদ মোহ্সেন ক্বাসেমী গত ১৬ অক্টোবর (২০১৬) তেহরানে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
জনাব মোহ্সেন ক্বাসেমী ছোট আকারের চীনা শোধনাগারগুলোর কাছে ইরানের সাম্প্রতিক অশোধিত তেল বিক্রির কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, আমরা যে রফতানির কথা উল্লেখ করেছি তাতে এসব কোম্পানির কাছে বিক্রয়কৃত তেল অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। কারণ, এসব ছোট ছোট কোম্পানি উপস্থিতভাবে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে (নগদ মূল্যে) অশোধিত তেল ক্রয় করে থাকে।
জনাব মোহ্সেন ক্বাসেমী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, চলতি ইরানি বছরের শেষ (২০ মার্চ ২০১৭) নাগাদ ইরানের অশোধিত তেল রফতানির পরিমাণ বর্তমানের তুলনায় দৈনিক আরো দেড় লক্ষ ব্যারেল হতে তিন লক্ষ ব্যারেল পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ইরানের অশোধিত তেলের শতকরা ৬২ ভাগ এশীয় দেশগুলোতে এবং অবশিষ্ট শতকরা ৩৮ ভাগ ইউরোপে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় তেল রফতানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও এ অনুপাতে কোনোরূপ পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরো জানান, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা থাকাকালেও চীন ছিল ইরানি অশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। তখন ইরানের রফতানিকৃত অশোধিত তেলের শতকরা ৪০ ভাগই যেত চীনে- যার দৈনিক পরিমাণ ছিল চার লক্ষ ব্যারেল।
জনাব মোহ্সেন ক্বাসেমী এর আগে জানিয়েছিলেন যে, ইরানের অশোধিত তেলের দৈনিক মোট রফতানির পরিমাণ ২২ লক্ষ ব্যারেল, তবে বর্তমানে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দৈনিক সাড়ে ২৩ লক্ষ ব্যারেলে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে ইরানের অশোধিত তেল উৎপাদনের মোট পরিমোণ হচ্ছে দৈনিক ৩৮ লক্ষ ৫০ হাজার ব্যারেল। ইরান সরকার চলতি ইরানি বছরের শেষ নাগাদ তার অশোধিত তেল উৎপাদনের পরিমাণ ৪০ লক্ষ ব্যারেলে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

ইরান তার দৈনিক গ্যাসোলিন আমদানি ছয় মাসে এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে এনেছে
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান চলতি ইরানি বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তার দৈনিক গ্যাসোলিন আমদানির পরিমাণ এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় তেল কোম্পানি ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি (এন্আইওসি)-র আন্তর্জাতিক বিষয়াদি সম্পর্কিত নির্বাহী পরিচালক সাইয়্যেদ মোহ্সেন ক্বাসেমী গত ১৫ অক্টোবর (২০১৬) তেহরানে এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে ইরানের গ্যাসোলিন আমদানি হ্রাসের এ পরিমাণ হচ্ছে দৈনিক ৮০ লক্ষ লিটার। বর্তমানে ইরানের গ্যাসোলিন আমদানির পরিমাণ হচ্ছে দৈনিক ৪০ লক্ষ লিটার।
তিনি দেশের তেলজাত দ্রব্যাদি আমদানি-রফতানির সর্বশেষ পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, চলতি ইরানি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে (২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬-২০ মার্চ ২০১৭) দৈনিক গ্যাসোলিন আমদানির গড় পরিমাণ আরো হ্রাস পাবে।
ইরানি কর্মকর্তা আরো উল্লেখ করেন যে, গ্যাসোলিন আমদানি হ্রাসের পাশাপাশি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিভিন্ন ধরনের তেলজাত দ্রব্য রফতানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে ইরান থেকে গড়ে প্রতি মাসে ছয় লক্ষ টন গ্যাস অয়েল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হচ্ছে।
জনাব মোহসেন ক্বাসেমী জানান, বর্তমানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান থেকে জ্বালানি তেল এবং তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি)ও রফতানি করা হচ্ছে। বর্তমানে জ্বালানি তেল রফতানির পরিমাণ হচ্ছে মাসে বিশ লক্ষ টন।
তিনি উল্লেখ করেন যে, চলতি ইরানি বছরের প্রথমার্ধে (২১ মার্চ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬) ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গ্যাসোলিন আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক এক কোটি বিশ লক্ষ লিটারÑ যা অবশ্য এক বছর আগেকার তুলনায় চল্লিশ লক্ষ লিটার বেশি ছিল।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল রিফাইনারি অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (এন্আইওর্আডিসি)-র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব আব্বাস কাযেমী উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান গড়ে দৈনিক ৬০ লক্ষ লিটার গ্যাস অয়েল ও ফুয়েল অয়েল রফতানি করছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে পরিমাণ তেলজাত দ্রব্যাদি রফতানি করা হচ্ছে তার মধ্যে ইরানের রফতানির পরিমাণ হচ্ছে শতকরা সাড়ে তের ভাগ।

নতুন কিছু নিজস্ব রাডার-সিস্টেম চালু করল ইরান
ইরান তার নিজস্ব প্রযুক্তির নতুন কিছু রাডারের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে। ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার এইসব রাডারের মধ্যে রয়েছে ‘মাত্বলায়িল ফাজর-তিন’। ইরানের তাসনিম বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে প্রেসটিভি গত ২২ অক্টোবর জানায়, দেশটির শিরাজ অঞ্চলে এয়ার বা বিমান নেভিগেশন সিস্টেমের চারটি রাডার ও নেভিগেশন প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোতে রয়েছে ‘মেরাজ-চার’ ও ‘মাত্বলায়িল ফাজর’ বা ‘ভোরের উদয়-তিন’ নামের দুই রাডার সিস্টেম এবং দুটি ডিএমই সিস্টেম ও এয়ার বা বিমান ন্যাভিগেশন সিস্টেম প্রজাতির লেভেল-পরিমাপক রাডার সিস্টেম।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল হোসাইন দেহকান এইসব সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, মেরাজ বা ঊর্ধ্বগমন-চার রাডার সিস্টেমে রয়েছে প্রাথমিক সতর্ক বাণী দেয়া, নিয়ন্ত্রণ, দূরপাল্লার বিমান পর্যবেক্ষণ, ভূমিতে ব্যবহারযোগ্যতা ও ত্রিমাত্রিক শনাক্তকরণ ব্যবস্থা।
তিনি আরও বলেন, এই সিস্টেমে রয়েছে ইলেক্ট্রনিক যুদ্ধ মোকাবেলার অত্যাধুনিক নানা টেকনিক ব্যবহারের সুবিধা, ¯পষ্টীকরণের ক্ষমতা ও ২০০টি লক্ষ্যবস্তু বা টার্গেট সনাক্ত করার সুবিধা এবং রয়েছে কন্ট্রোল টাওয়ারের কমান্ডিং ব্যবস্থা।
জেনারেল দেহকান আরও বলেন, ‘মাত্বলায়িল ফাজ্র’ রাডারে রয়েছে দ্বিমাত্রিক টার্গেটগুলো চিহ্নিত করার ব্যবস্থা এবং এর পাল্লা ৫০০ কিলোমিটার।
ডিএমই সিস্টেম প্রসঙ্গে দেহকান বলেন, এটা রেডিও ন্যাভিগেশন সিস্টেমের সহায়ক ব্যবস্থা যা বেসামরিক বিমানবন্দরগুলোতেও পাইলটের সঙ্গে ভূমিতে থাকা কেন্দ্রের যোগাযোগের কাজে ব্যবহার করা হয়।
লেভেল-পরিমাপক রাডার সিস্টেম প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, মিলিমিটার তরঙ্গ ব্যবহার করে এই সিস্টেম তরল বস্তুর লেভেল পরিমাপ করে। এই সিস্টেমের পরিমাপণ ক্ষমতার যথাযথ অবস্থার মাত্রা বা অ্যাকিউরেসি এক থেকে পাঁচ মিলিমিটার।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, অতীতে এ ধরনের রাডার বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো, কিন্তু এখন ইরানি বিশেষজ্ঞদের হাতে এসবের পুরোপুরি স্থানীয়করণ করা হয়েছে। আর এই রাডার সিস্টেমগুলো গুণগত ও পরিমাপগত দিক এবং নৈপুণ্যের দিক থেকে বিশ্বের অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেমগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম বলে তিনি জানান।

ন্যানো-বিজ্ঞান উৎপাদনে ইরানের চতুর্থ স্থান লাভ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ২০১৫ সালে ন্যানো-বিজ্ঞান উৎপাদনের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়াকে পিছনে ফেলে বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিজ্ঞান, গবেষণা ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী জনাব মোহাম্মাদ ফারহাদী গত ১৬ অক্টোবর (২০১৬) তেহরানে এ খবর জানান।
জনাব ফারহাদী ন্যানো-বিজ্ঞান উৎপাদনে ইরানের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে জানান, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ন্যানো-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালে পাঁচ হাজার ১৮৭টি আর্টিকেল প্রস্তুত করে এবং এর ফলে বিজ্ঞান উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিমাণের দিক থেকে বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ দক্ষিণ কোরিয়াকে পিছনে ফেলে চতুর্থ স্থান অধিকার করতে সক্ষম হয়েছে।
উল্লেখ্য, ন্যানো-বিজ্ঞান উৎপাদনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যথাক্রমে ২০১২ সালে ৭ম, ২০১৩ সালে ৬ষ্ঠ ও ২০১৪ সালে ৫ম স্থান অধিকার করে।

ইরানি কোম্পানির এএসপিএ পুরস্কার লাভ
বৈজ্ঞানিক উপকরণাদি প্রস্তুতকারী একটি ইরানি কোম্পানি ‘এসিয়ান সায়েন্স্ পার্ক অ্যাসোসিয়েশন (এএসপিএ)’-এর ২০১৬ সালের পুরস্কার লাভ করেছে। গত ১৯ থেকে ২২ অক্টোবর (২০১৬) ভারতের হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে ইরানি কোম্পানিটি এ পুরস্কার লাভ করে।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ইসফাহান শহরের সায়েন্স্ এন্ড্ টেক্নোলজী টাউনে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক উপকরণাদি প্রস্তুতকারী এ কোম্পানিটিকে রিঅ্যাক্টিভ্ এক্স্ট্রুইশন টেক্নোলজী ও পলিমার ন্যানোকম্পোজিট্স্ উপস্থাপনে অসাধারণ সাফল্যের জন্য এ বিরাট পুরস্কার প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, এএসপিএ-র এ গ্রান্ড প্রাইজ সেই সব কোম্পানিকে দেয়া হয় যেসব কোম্পানির বাস্তবায়নযোগ্য আইডিয়াসমূহ বিভিন্ন টেকনিক্যাল বিজ্ঞান বাণিজ্যিক স্তরে উপনীত হয়েছে এবং এশিয়া মহাদেশে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এসিয়ান সায়েন্স পার্ক অ্যাসোসিয়েশন (এএসপিএ) একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা যা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্প ও অর্থনীতি ক্ষেত্রে যৌথ উন্নয়নের লক্ষ্যে জাপানে প্রতিষ্ঠিত হয়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১০টি দেশের ৫১৯টি সংস্থা এএসপিএ-র সদস্য। এসব সংস্থার মধ্যে রয়েছে সায়েন্স্ অ্যান্ড টেক্নোলজী পার্ক (এসটিপি), গবেষণা সংস্থা, বাণিজ্যিক উদ্যোগ সৃষ্টিকারী কেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয় ও একাডেমিক সংস্থা।
এএসপিএ-এর এ ২০তম সম্মেলনের চিন্তাগত বিষয়বস্তু (থিম্) ছিল ‘এশিয়া মহাদেশ ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ক্ষেত্রে উদ্ভাবনীতে অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতামূয়লক সুযোগ-সুবিধা’।
উল্লেখ্য, এএসপিএ-র পূর্ববর্তী সম্মেলনে ইসফাহানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি টাউনে অবস্থিত নয়টি কোম্পানি এএসপিএ-র গ্র্যান্ড প্রাইজ লাভ করেছিল।

ভেটের‌্যান্স্ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ইরানি অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘লিট্ল্ বয়’-এর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভ
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ভেটের‌্যান্স্ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে নির্মিত অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘লিট্ল্ বয়’ শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ‘রেড্ পপি’ লাভ করে। চলচ্চিত্রটির বিষয়বস্তু হচ্ছে যুদ্ধবিষয়ক গল্প। এছাড়া আরেকটি ইরানি চলচ্চিত্র ‘রেড্ লাইন্’ শ্রেষ্ঠ মিউজিকের ‘রেড্ পপি’ পুরস্কার লাভ করে।
উভয় চলচ্চিত্রেরই লেখক ও পরিচালক ছিলেন মোনা শাহী। ‘রেড্ লাইন্’ চলচ্চিত্রের মিউজিক স্কোর লিখেন হোসাইন জালীলী। মোনা শাহী ‘লিট্ল্ বয়’-এর পুরস্কার ও হোসাইন জালীলী ‘রেড্ লাইন্’-এর পুরস্কার গ্রহণ করেন।
‘লিট্ল্ বয়’ একটি শর্ট অ্যানিমেশন ফিল্ম। এ চলচ্চিত্রের গল্পটি হচ্ছে মোটামুটি এই যে, সামরিক বাহিনীর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে একটি শহরের সকল অধিবাসী শহর ত্যাগ করে গেলেও একটি ছোট্ট বালক তাদের সাথে শহর ছেড়ে যেতে চায় না, বরং তার নিজস্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সে শহরে থেকে যায় এবং এরপর তাকে ও একটি বোমাকে কেন্দ্র করে গল্পটি এগিয়ে যায়।

চেলসিয়া ফিল্ম ফেস্টিভালে ইরানি চলচ্চিত্র ‘প্যারাডাইজ’-এর শীর্ষ পুরস্কার লাভ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘প্যারাডাইজ’ সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত চতুর্দশ চেলসিয়া ফিল্ম ফেস্টিভালে তিনটি শীর্ষ পুরস্কার লাভ করেছে। বার্তা সংস্থা এমএনএ গত ১৭ অক্টোবর (২০১৬) তারিখে এ খবর প্রদান করে। উল্লেখ্য, চেলসিয়া ফিল্ম ফেস্টিভাল হচ্ছে নিউ ইয়র্কের তৃতীয় বৃহৎ চলচ্চিত্র উৎসব।
নিউ ইয়র্কের সিনেপোলিস মুভি থিয়েটারে অনুষ্ঠিত এ চলচ্চিত্র উৎসবে ইরানি ফিচার ফিল্ম ‘প্যারাডাউজ’-এর নির্মাতা আলী আত্শানী শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে, এ চলচ্চিত্রের অভিনেতা জাভাদ এয্যাতী শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে এবং মেহ্রান রাজাবী শ্রেষ্ঠ সাপোর্টিং অ্যাক্টর হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন।
‘প্যারাডাইজ’ চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু দু’জন তরুণ ইরানি আলেম যাঁরা জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মবিষয়ক একটি সেমিনারে যোগদানের জন্য সিদ্ধান্ত নেন।
এবারের চেলসিয়া ফিল্ম ফেস্টিভালে অংশগ্রহণকারী একমাত্র ইরানি চলচ্চিত্র হিসেবে ‘প্যারাডাইজ’ প্রধান প্রতিযোগিতা ক্যাটেগরিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আরো ২২টি চলচ্চিত্রের সাথে প্রতিযোগিতা করে। চলচ্চিত্রটি দর্শকদের কাছ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা লাভ করে এবং এর পর পরই এর পরিচালকের সাথে কিউ এন্ড্ এ সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, চেলসিয়া ফিল্ম ফেস্টিভাল হচ্ছে চার দিনব্যাপী একটি চলচ্চিত্র উৎসব যাতে উদীয়মান পরিচালকদের দ্বারা নির্মিত স্বতন্ত্র শর্ট ফিল্ম, ফিচার-লেন্থ ফিল্ম ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ইরানি চলচ্চিত্র ‘প্যারাডাইজ’, এর পর পরই গত ১৯ অক্টোবর টরোন্টো ফিল্ম ফেস্টিভালে এবং ২৯ অক্টোবর ইরানি ফিল্ম ফেস্টিভালে অংশগ্রহণ করে।

ইরানে উচ্চতর ফারসি ভাষা কোর্সে প্রথম হলেন দুই বাংলাদেশি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে বিদেশিদের জন্য আয়োজিত ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের উচ্চতর প্রশিক্ষণ কোর্সে দুই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী প্রথম হয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে প্রথম হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহীম খলিল এবং মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মেহজাবিন ইসলাম।
কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানের সা’দী ফাউন্ডেশন এর প্রধান ও সাবেক সংসদ ¯িপকার গোলাম আলী হাদ্দাদ আদেল। তিনি কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
ইরানে অনুষ্ঠিত একমাসব্যাপী উচ্চতর প্রশিক্ষণ কোর্সে ৪১টি দেশের দুইশ’র বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ছেলে ও মেয়ে-এ দুই ক্যাটাগরিতেই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা প্রথম স্থান অধিকার করেন যা বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের বিষয়।
প্রশিক্ষণ কোর্সটি গত ২ আগস্ট শুরু হয়ে ২৮ আগস্ট শেষ হয়। প্রতি বছরই ইরানে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হলেও এবারের আয়োজন ছিল বেশি জাঁকজমকপূর্ণ।

ইরানের মাইক্রো এয়ার ভেহিক্ল্ টীম চীনের প্রতিযোগিতায় প্রথম হলো
সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্র চীনের রাজধানী বেইজিং-এ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাইক্রো এর্য়া ভেহিক্ল্ প্রতিযোগিতায় (এমএভি ২০১৬) অংশগ্রহণ করে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের আমীর কাবীর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো এর্য়া ভেহিক্ল্ টীম গৃহবহির্ভূত উন্মুক্ত র্পার্ফম্যান্সে সর্বোত্তম দক্ষতা প্রদর্শন করে প্রথম পুরস্কার লাভ করেছে।
এ সেকশনের প্রতিযোগিতায় ১৬টি টীম ইনডোর কম্পিটিশনে এবং অপর ১৬টি টীম আউটডোর কম্পিটিশনে পরস্পরের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ৭টি টীম এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
আমীর কাবীর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএভি টীম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজকদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা লাভে সক্ষম হয় এবং ইর্ন্ডো ও আউর্ট্ডো উভয় ক্যাটেগরিতেই অংশগ্রহণের জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হয়। এছাড়াও আমীর কাবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএভি টীম এবারের এমএভি সম্মেলনের জন্য দু’টি প্রবন্ধ পেশ করে এবং উভয় প্রবন্ধই সম্মেলনের আয়োজকদের দ্বারা গৃহীত হয়।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আমীর কাবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত সদস্যবিশিষ্ট টীমের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন পিএইচডি, মাস্টার্স ও ¯œাতক পর্যায়ের ছাত্রগণ যারা এয়ারোস্পেস্ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশুনা করছেন।
আমীর কাবীর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এয়ারোস্পেস্ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. নাক্বক্বাশ্-এর নেতৃত্বাধীন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএভি টীম ইনডোর ও আউটর্ডো উভয় প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েকটি শীর্ষ র‌্যাঙ্কিং-এর অধিকারী হয়। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী টীমগুলোর মধ্যে চীন, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, পোল্যান্ড, ভারত, জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রাজিলের টীম ছিল অন্যতম।
আন্তর্জাতিক মাইক্রো এর্য়া ভেহিক্ল্ সম্মেলন ও প্রতিযোগিতা ২০১৬ (আইএমএভি ২০১৬) গত ১৭ থেকে ২১ অক্টোবর বেইজিং-এ অনুষ্ঠিত হয়। আইএমএভি হচ্ছে একটি বার্ষিক অনুষ্ঠান যাতে মাইক্রো এয়ার ভেহিক্ল্ সংক্রান্ত একটি বৈজ্ঞানিক সম্মেলন ও একটি প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা অন্তর্ভুক্ত থাকে।

বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ ইরানি শিপিং কোম্পানির অবস্থান ১৯তমে উন্নীত
ইরানের সরকারি শিপিং কোম্পানি ইসলামিক রিপাবলিক অব্ ইরান শিপিং লাইন্স্ (আইর্আআইএস্এল্) তার মালিকানাধীন কন্টেইনার শিপের সংখ্যা ও ধারণ ক্ষমতার বিচারে বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ ১৯তম অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী শিপিং ইন্টারেস্টসমূহের কাছে বাজার সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহকারী সংস্থা ক্ল্যার্কসন রিসার্চ সার্ভিসেস এ তথ্য জানিয়েছে।
ক্ল্যার্কসন রিসার্চ সার্ভিসেস তার সাম্প্রতিকতম কন্টেইর্না ইন্টেলিজেন্স্ মান্থলি রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে, ইসলামিক রিপাবলিক অব্ ইরান শিপিং লাইন্স্ (আইর্আআইএস্এল্) কন্টেইনার শিপের মালিক কোম্পানিসমূহের বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এর ক্ষেত্রে এক বছর আগের তুলনায় চার ধাপ এগিয়ে গিয়ে ১৯তম অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর একই সময় বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ আইর্আআইএস্এল্-এর অবস্থান ছিল ২৩তম।
ক্ল্যার্কসন্ রিসার্চ সার্ভিসেস্-এর বিগত দুই মাসের কন্টেইনার ইন্টেলিজেন্স্ মান্থলি রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে আইর্আআইএস্এল্-এর মালিকানাধীন কন্টেইনার শিপসমূহের মোট ধারণ ক্ষমতার পরিমাণ হচ্ছে বিশ ফুট সমপরিমাণ ইউনিট (টিইইউ) পরিমাপের হিসাবে ৯২ হাজার ৬৭৪ টিইইউ ইউনিট যার ভিত্তিতে বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এ আইর্আআইএস্এল্-এর অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১৯তমে।
পরিবহন সক্ষমতার ক্ষেত্রে সরকারি ইরানি শিপিং কোম্পানি আইর্আআইএস্এল্-এর বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং-এর এ উন্নতি এটাই নির্দেশ করে যে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হবার পরে ইরানের সামুদ্রিক পরিবহন বাণিজ্যের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে এবং ইরান মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের মধ্যে সর্বাধিক পরিমাণে সামুদ্রিক পরিবহন সক্ষমতার অধিকারী হয়েছে।

ইরানের মহিলা তায়কোয়ান্দো টীমের বিশ্ব পুমাসাই খেতাব লাভ
সম্প্রতি পেরুর রাজধানী লিমা-য় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড্ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন (ডব্লিউটিএফ্) কর্তৃক আয়োজিত ১০ম বৈশ্বিক তায়কোয়ান্দো ফাইনালে ত্রিশোর্ধ বয়সের মহিলা গ্রুপের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিরাট সাফল্যের কারণে ইরানি মহিলা তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগীদল স্বর্ণপদক বিজয় ছাড়াও ‘বিশ্ব পুমাসাই’ খেতাব লাভ করেছে।
প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিন ইরানিদের দ্বারা তিনটি পদক বিজয়ের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়।
আতুসা ফারাহ্মান্দ্, সোনা রায্যাক্বী ও ফারীবা নায্ম্দেহ্কে নিয়ে গঠিত ইরানি মহিলা তায়কোয়ান্দো টীম ৭.৯৭ পয়েন্ট লাভ করে ত্রিশোর্ধ বয়সী মহিলাদের গ্রুপের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে পডিয়ামের শীর্ষস্থানে দ-ায়মান হবার গৌরব অর্জন করে, অন্যদিকে আমেরিকান টীম রানার্স আপ্ হয় এবং ফিন্ল্যান্ড্ তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
এছাড়া এ প্রতিযোগিতায় ৪০ বছরের কম বয়স্ক পুরুষদের একক ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতায় ইরানের আলী সালেমী ৮.২ পয়েন্ট লাভ করে রৌপ্যপদক জয় করেন ও দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী হন। এ প্রতিযোগিতায় ফিলিপাইনের একজন প্রতিযোগী শীর্ষস্থান অধিকার করেন এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও আমেরিকার দু’জন প্রতিযোগী যৌথভাবে তৃতীয় স্থান লাভ করেন।
এছাড়া গ্রুপভিত্তিক ক্যাটেগরির প্রতিযোগিতায় ন্যাশানাল ইরানিয়ান্ মেন্স্ পুমাসাই দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে যৌথভাবে তৃতীয় স্থান অধিকার করে ব্রোঞ্জপদক লাভ করে। অন্যদিকে এ ক্যাটেগরিতে ফিলিপাইন স্বর্ণপদক জয় করে এবং তুরস্ক দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ইরানি টীমে ছিলেন মোহাম্মাদ তাক্বী হাতামী, আলী সাল্মানী ও মাহ্দী সামাদীয়ান। এ প্রতিযোগিতায় ইরানি টীম ৭.৮৪ পয়েন্ট অর্জন করে।
উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড্ তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন (ডব্লিউটিএফ্) কর্তৃক পেরুর রাজধানী লিমা-য় আয়োজিত ১০ম বৈশ্বিক তায়কোয়ান্দো পুমাসাই চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতা গত ২৯ সেপ্টেম্বর (২০১৬) শুরু হয় এবং ২ অক্টোবর সমাপ্ত হয়। এতে বিশ্বের সেরা তায়কোয়ান্দো অ্যাথলেট্গণ পাঁচটি বয়স ক্যাটেগরির সাতটি গ্রুপে স্বর্ণ জয়ের জন্য প্রতিযোগিতা করেন।

ইরানের পুরুষদের জাতীয় ভলিবল টীম-বি কর্তৃক এশিয়ান ভলিবল কনফেডারেশন কাপ অর্জন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পুরুষদের জাতীয় ভলিবল টীম-বি ৫ম এশিয়ান ভলিবল্ কনফেডারেশন (এভিসি) কাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ফাইনাল রাউন্ডে তাদের চীনা প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তৃতীয় বারের মতো চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করে এভিসি কাপ লাভ করেছে।
থাইল্যান্ডের কেন্দ্রীয় শহর নাখোন্ পাথম্-এর নাখোন্ পাথম জিমনেসিয়ামে আয়োজিত পুরুষদের ৫ম এশিয়ান ভলিবল্ কনফেডারেশন (এভিসি) কাপ প্রতিযোগিতার শেষ দিনে গত ২৬ সেপ্টেম্বর (২০১৬) ফাইনাল রাউন্ডে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পুরুষদের জাতীয় ভলিবল টীম-বি তার চীনা প্রতিদ্বন্দ্বীকে ৩-১ ব্যবধানে পরাজিত করে তৃতীয় বারের মতো ইরানের জন্য চ্যাম্পিয়নশীপ নিশ্চিত করে।
এ প্রতিযোগিতা গত ২২ সেপ্টেম্বর (২০১৬) শুরু হয় ও ২৬ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত হয়।

বিশ্ব কাপ প্রতিযোগিতায় ইরানের জাতীয় ফুটসাল টীমের তৃতীয় স্থান লাভ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় ফুটসাল টীম ৮ম ফিফা ফুটসাল ওয়ার্ল্ড কাপ প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান লাভ করেছে। ইরানি টীম পর্তুগালকে ৪-৩ ব্যবধানে পরাজিত করে এ অবস্থানের অধিকারী হয়।
কলোম্বিয়ার ক্যালি-র কোলিসেও এল্ পুয়েব্লো স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ইরানি টীম ছয় রাউন্ড পেনাল্টি শুটআউটের পরে তার প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দিয়ে গত পয়লা অক্টোবর (২০১৬) তৃতীয় স্থান অধিকার করে ও ব্রোঞ্জপদক লাভ করে।
এর আগে ইরানি টীম রাশিয়ার কাছে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় ফাইনালে ওঠার সুযোগ হারিয়ে ফেলে এবং প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে ৪-৩ ব্যবধানে জয়লাভ করে সেমি-ফাইনালে উন্নীত হয়।
এ প্রতিযোগিতায় পর্তুগালও আর্জেন্টিনার কাছে ৫-২ ব্যবধানে হেরে যাওয়ায় ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় এবং তৃতীয় স্থানের জন্য ইরানি টীমের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
উল্লেখ্য, ৮ম ফিফা ফুটসাল ওয়ার্ল্ড কাপ প্রতিযোগিতা গত ১০ সেপ্টেম্বর (২০১৬) শুরু হয় এবং পয়লা অক্টোবর আর্জেন্টিনা ও রাশিয়ার মধ্যে চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই এবং আর্জেন্টিনা কর্তৃক রাশিয়াকে ৫-২ ব্যবধানে পরাজিত করে শিরোপা লাভের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়; এটাই হচ্ছে ফিফা ফুটসাল ওয়ার্ল্ড কাপ প্রতিযোগিতায় আর্জেন্টিনার প্রথম শিরোপা বিজয়।

ইরানি বীচ রেসলার টীমের এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার
ফিফ্থ্ এসিয়ান্ বীচ্ গেম্স্ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ন্যাশনাল বীচ্ রেসলার টীম দু’টি স্বর্ণপদক ও একটি রৌপ্যপদক জয় করে প্রথম স্থানের অধিকারী হয়েছে। ভিয়েতনামের কেন্দ্রীয় এলাকার উপকূলীয় শহর দা নাং-এ গত ৩০ সেপ্টেম্বর (২০১৬) থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
৮০ কেজির কম ওজনের পুরুষদের ক্যাটেগরিতে ইরানি কুস্তিগীর উমিদ হাসান্তার্বা ১৬তম রাউন্ডে চীনা কুস্তিগীর নাইরিসিগাকে পরাজিত করে কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত হন এবং কোয়ার্টার ফাইনালে মঙ্গোলিয়ার আঙ্খ্বার্য়ে বাৎচুলুন্কে পরাজিত করে সেমি-ফাইনালে উপনীত হন। সেমি-ফাইনালে তিনি পাকিস্তানি কুস্তিগীর মুহাম্মাদ আসাদ বাট্-এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং তাঁকে পরাজিত করে ফাইনালে উন্নীত হন। তিনি ফাইনালে উন্নীত হয়ে থাইল্যার্ন্ডে চানউইট্ আউন্জাই-র সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং তাঁকে পরাজিত করে করে শিরোপা লাভ করেন ও পডিয়ামে সর্বোচ্চ স্থানে উপনীত হবার গৌরবের অধিকারী হন।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জন্য দ্বিতীয় স্বর্ণপদকটি জয় করেন ৭০ কেজি ওজন ক্যাটেগরির ইরানি কুস্তিগীর মোহাম্মাদ নাদেরী। তিনি ক্যাম্বোডিয়ার কুস্তিগীর মাকারা এন্গুয়ান্কে প্রথম দফা প্রতিযোগিতায়ই পরাস্ত করতে সক্ষম হন। এরপর তিনি মঙ্গোলিয়ার বীচ্ রেসর্লা বাৎযোরিগ্ বুইয়ান্জাভ্কে পরাজিত করে সেমি-ফাইনালে উন্নীত হন। তিনি সেমি-ফাইনালে আফগানিস্তানের মালেকজান্ আফ্যাল্যাদাকে পরাজিত করে ফাইনালে উপনীত হন। ফাইনালে তাঁকে পাকিস্তানী কুস্তিগীর নার্যি-এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয় এবং নার্যিকে পরাজিত করে তিনি ৭০ কেজির উর্ধ্ব ক্যাটেগরিতে চ্যাম্পিয়নশীপের অধিকারী হন।
অন্যদিকে ৯০ কেজির কম ওজন ক্যাটেগরিতে ইরানি কুস্তিগীর সাইয়্যেদ মোহাম্মাদ সাদাতী তাঁর পাকিস্তানি প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে পরাজয় বরণ করে পডিয়ামে তাঁর ক্যাটেগরিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। সাইয়্যেদ মোহাম্মাদ সাদাতী এর আগে যথাক্রমে তাঁর কিরগিযিস্তানী, ক্বাতারী, আফগান ও চীনা প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে ফাইনালে উপনীত হন।
এভাবে ইরানি বীচ্ রের্স্ট্লা টীম্ এ প্রতিযোগিতায় দু’টি স্বর্ণপদক ও একটি ব্রোঞ্জপদকের অধিকারী এশিয়া মহাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বীচ্ রেসর্লা টীমের গৌরবময় মর্যাদার অধিকারী হয়।
ফিফ্থ্ এশিয়ান্ বীচ্ গেম্স্ প্রতিযোগিতায় এশিয়া মহাদেশের ৪৫টি দেশ থেকে সাড়ে তিন হাজার অ্যাথ্লেট্ অংশগ্রহণ করেন। মোট ১৪টি স্পটে এ প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্ট্ অনুষ্ঠিত হয়।

ইরানের সিয়ামান্দ্ রহমান ভারোত্তোলনে নতুন বিশ্ব রেকর্ড করলেন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের হেভিওয়েট পাওয়ারলিফটিং চ্যাম্পিয়ন সিয়ামান্দ্ রহমান সম্প্রতি রিও প্যারালিমপিক্স্-এ তাঁর নিজের তিন তিন বারের বিশ্ব রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন রেকর্ড গড়লেন। তিনি এবার ৩১০ কেজি ওজন উত্তোলন করে নতুন রেকর্ড গড়ে স্বর্ণপদক জয় করেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর (২০১৬) রাতে বিশ্বের সর্বাধিক শক্তিশালী এ প্যারা অলিম্পিয়ান ভারোত্তোলনের ইতিহাসে এ নতুন পাতা সংযোজন করেন।
রিওসেন্ট্রো-২ প্যাভিলিয়নে অনুষ্ঠিত রিও-২০১৬ প্যারালিম্পিক্স্-এর দর্শকগণ শ্বাসরুদ্ধকর উত্তেজনা সহকারে দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলেন যে, ইরানের ২৮ বছর বয়স্ক ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়ন সিয়ামান্দ্ রহমান এ বিষয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৩০০ কেজির সীমারেখা অতিক্রমকারী প্রথম ব্যক্তি হতে সক্ষম হন কিনা এবং তিনি দর্শকদেরকে হতাশ করেন নি। বস্তুত ২০১৬-র প্যারা অলিম্পিক্স্-এর এ রেকর্ড হচ্ছে অ্যাথলেটিক্ পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঘটনা।
সিয়ামান্দ্ রহমান রিও-র রিওসেন্ট্রো প্যাভিলিয়ন-২-এ প্রথমে ১৭০ কেজি-র উর্ধ্ব গ্রুপে তাঁর প্রথম বারের প্রচেষ্টায় ২৭০ কেজি ওজন উত্তোলন করেন এবং প্যারা অলিম্পিক্স্-এর রেকর্ড ভঙ্গ করেন। এরপর তিনি যথাক্রমে ৩০০ ও ৩০৫ কেজি উত্তোলন করে তাঁর ইতিপূর্বেকার নিজের রেকর্ড ভঙ্গ করেন এবং ইরানের জন্য ষষ্ঠ স্বর্ণপদক জয় করেন। উল্লেখ্য, তিনি ইতিপূর্বে ২৯৬ কেজি উত্তোলন করে এ বিষয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।
সিয়ামান্দ্ রহমান তিন স্কোরের এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হবার পর তিনি ৩১০ কেজি ভারোত্তলনের আগ্রহ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ জন্য ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান এবং কর্তৃপক্ষ এতে সম্মতি প্রদান করলে তিনি বিস্মিত দর্শকম-লীর সামনে ৩১০ কেজি ভারোত্তোলন করে চতুর্থ রেকর্ড করে ইতিহাস গড়লেন।

প্যারা অলিম্পিক্স্ সিটিং ভলিবলে ইরানি টীমের স্বর্ণপদক জয় ও নিহত সাইক্লিস্টের স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সিটিং ভলিবল টীম ২০১৬ প্যারা অলিম্পিক্স্-এ অংশগ্রহণ করে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার টীমকে পরাজিত করে স্বর্ণপদক লাভ করে এবং এক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এর চব্বিশ ঘণ্টা আগে নিহত ইরানি সাইক্লিস্ট বাহ্মান্ গোর্ল্বানেযাদের স্মৃতির উদ্দেশে ইরানের সিটিং ভলিবল টীম এ স্বর্ণপদক উৎসর্গ করে।
উল্লেখ্য, স্বর্ণপদক জয়ের এ ম্যাচ শুরু হবার পূর্ব মুহূর্তে প্রতিদ্বন্দ্বী উভয় টীম এবং পুরো ক্রীড়াঙ্গন ইরানি সাইকেল চালক বাহ্মান গোর্ল্বানেযাদের স্মরণে নীরবতা পালন করে। রিও প্যারা অলিম্পিক্স্-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের খবর অনুযায়ী বাহ্মান গোর্ল্বানেযাদে গত ১৭ সেপ্টেম্বর (২০১৬) তারিখে সাইক্লিস্ট প্রতিযোগিতার সড়কে সংঘটিত এক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান।
সিটিং ভলিবল প্রতিযোগিতায় ইরানি টীম শুরু থেকেই খুব ভালো পারফর্ম্যান্স করতে থাকেন এবং প্রথম সেটে ২৫-২১ ব্যবধানে জয়লাভ করেন। অবশ্য দ্বিতীয় সেটের প্রতিযোগিতায় বসনীয় টীম যথেষ্ট ভালো করে এবং ফলাফলে টাই করতে সক্ষম হয়। তবে ইরানি টীম তাদেরকে আর বেশি অগ্রসর হবার সুযোগ দেয় নি; তারা পরবর্তী দুই সেটের প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে ২৫-১৮ ও ২৫-১৫ ব্যবধানে বসনীয় প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে স্বর্ণপদক লাভ করে। ফলে এ রিও-২০১৬ প্রতিযোগিতায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সাকুল্যে ৮টি স্বর্ণপদক, ৯টি রৌপ্যপদক ও ৭টি ব্রোঞ্জপদক জয় করে ১৫তম স্থান দখল করতে সক্ষম হয়। এ প্রতিযোগিতায় সিটিং ভলিবল টীমের জয় করা স্বর্ণপদকটি ছিল পুরো প্রতিযোগিতায় ইরানের জয় করা অষ্টম স্বর্ণপদক।
উল্লেখ্য, চার বছর আগে লন্ডনে অনুষ্ঠিত প্যারা অলিম্পিক্স্-এ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ১০টি স্বর্ণপদক, ৭টি রৌপ্য দক ও ৭টি ব্রোঞ্জপদক লাভ করে ১১তম স্থান অধিকার করেছিল।

বিয়ের জন্যে ইরানে বিলিয়ন ডলারের সুদমুক্ত ঋণ
ইরান সরকার সবসময় তরুণ-তরুণীদের বিয়েতে উৎসাহ দিয়ে থাকে। এজন্য তরুণ-তরুণীদের বিয়েতে ঋণ দিয়ে থাকে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই এই ঋণের রেকর্ড করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিয়ের জন্যে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৩শ’ আবেদনের বিপরীতে ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে ইরানের ব্যাংক। এ ঋণ সুদমুক্ত।
২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সুদবিহীন ক্ষুদ্র ঋণ দিয়েছে ব্যাংকগুলো। বিয়ে করতে ঋণ চেয়ে এই সময়ের মধ্যে ৮০ লাখ ৩০ হাজার আবেদন জমা পড়ে।
ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, তরুণ-তরুণীদের বিয়ের জন্য এর আগে এতো বিপুল পরিমাণে ব্যাংক ঋণ দেওয়া হয়নি। বিয়ে দিতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে ইরান কর্তৃপক্ষ।