বুধবার, ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

কেন রমজান মুমিনদের জন্য অসাধারণ নানা সুযোগের মাস?

পোস্ট হয়েছে: মার্চ ১২, ২০২৫ 

news-image

পবিত্র রমজানে কুরআন-চর্চা ও খোদায়ি শিক্ষাগুলো বাস্তবায়নের ওপর বেশ জোর দেয়া হয়। রমজান জীবনের পথ ও গতির দিকে ফিরে দেখার বা পুনর্মূল্যায়নের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়।রোজা শুধু শরীরকেই বিশুদ্ধ করে না, একইসঙ্গে তা আত্মাকেও করে পরিশুদ্ধ। পার্থিব নানা দূষণ থেকে প্রাণ ও আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার এবং মানুষ ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন জোরদারের মাস এই পবিত্র রমজান।

খানা-পিনা, আরাম-আয়েশ ও ব্স্তুগত তথা পার্থিব নানা ঝোঁক-প্রবণতা থেকে দূরে থাকার অনুশীলনের মাধ্যমে রমজানে মুমিন ব্যক্তিরা আল্লাহর ইবাদতের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েন যাতে পরিশুদ্ধ হয় আত্মা ও মন-প্রাণ। কুরআন-চর্চা ও খোদায়ি শিক্ষাগুলো বাস্তবায়নের দিকে তারা বেশি মনোযোগী হন এই মাসে। ফলে এটা স্পষ্ট যে রমজান জীবনের পথ ও গতির দিকে ফিরে দেখার বা পুনর্মূল্যায়নের জন্য সবচেয়ে ভালো সময়।

রমজানে খারাপ বা মন্দ স্বভাবগুলো দূর করতে বেশি মনোযোগী হন মুমিন। বিশেষ করে যেসব স্বভাব অন্যদের ক্ষতি করে সেসব থেকে দূরে থাকতে সচেষ্ট হন মুমিনরা। জিহবার প্রকৃত রোজা মানে বাজে কথা না বলা, গিবত না করা বা অন্যের কুৎসা রটনা না করা। চোখের রোজা মানে নিষিদ্ধ কোনো দিকে না তাকানো বা কুদৃষ্টি না দেয়া।

রোজাদারকে ক্রোধ দমনের অভ্যাস করতে হবে। অন্যদের সাহায্য করাসহ ভালো বা কল্যাণকর কাজের চর্চা করতে হবে। কেবল একজন ব্যক্তির উন্নতির জন্য সাহায্য দিলেও চলবে না। সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গড়ার ভিত্তি তৈরিরও চেষ্টা করতে হবে ও এমন সমাজ গড়ার চেষ্টা করতে হবে যেখানে মানুষেরা হবে আগের চেয়েও বেশি নিবেদিত-প্রাণ নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ রক্ষায়। এভাবে সামাজিক সম্পর্কগুলো ও মানবীয় বন্ধনগুলো হবে উন্নততর এবং মানুষের মধ্যে বাড়বে মৈত্রী ও একতা, বাড়বে ইতিবাচক যোগাযোগ বা লেনদেন।

পাপ ও ভুল-ত্রুটি থেকে যত বেশি সম্ভব দূরে থেকে মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার মাস রমজান। রমজানের সুবর্ণ সুযোগ সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) বলেছেন, রমজান মহান আল্লাহর মাস এবং এই মাসে আল্লাহ সাওয়াব বাড়িয়ে দেন ও গোনাহগুলো দূর করেন; আর এই মাস হল বরকতের মাস।

রমজানে যে কোনো একটি সাওয়াবের কাজ বা ভালো কাজের জন্য আল্লাহ অন্য মাসের চেয়ে বহুগুণ বা ৭০ গুণ বেশি পুরস্কার দেন। তাই আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এই মহাসুযোগটিকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে। এ মাসের কিছু ভালো আমল হল নামাজ আদায়, রোজা রাখা, কুরআন তিলাওয়াত, দান-খয়রাত করা এবং অন্যদের সহায়তা দেয়া। এসবের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।

এ মাসে তওবা কবুলের সুযোগ বেশি। গোনাহর বোঝা কমানোর সবচেয়ে ভালো সুযোগ রয়েছে এই মাসে। মহানবীর (সা) এই হাদিসে রমজানকে বরকতের মাসও বলা হয়েছে। কারণ এই মাস জীবনে কল্যাণ, সমৃদ্ধি ও পুরস্কার বা নেকি বাড়ায়। এই মাসে সময়ের দিক থেকে রয়েছে বেশি বরকত, আমলের দিক থেকে রয়েছে বেশি বরকত ও এমনকি রিজিকের দিক থেকেও রয়েছে বেশি বরকত। আধ্যাত্মিক ও বস্তুগত বা পার্থিব এই উভয় দিক থেকেই বরকত। এই মাসে বাড়ে আত্মিক প্রশান্তি ও জোরদার হয় ঈমান। তাই রমজান মাস জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার মাস এবং খোদায়ি নেয়ামত ও সুযোগগুলোকে কাজে লাগানোর মাস। পার্সটুডে/