ইরানের প্রথম ‘পর্যটন শহরে’ রূপ নিচ্ছে ইয়াযদ
পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ১৮, ২০১৭
জাতিসংঘের বিজ্ঞান ও বিশ্ব ঐতিহ্য বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ঘোষিত ইরানের ঐতিহ্যবাহী শহর ইয়াযদ। দেশটির কেন্দ্রীয় পর্বতমালার পাশে অবস্থিত ইয়াযদ প্রদেশের প্রধান শহরের নাম ইয়াযদ। মরু আঞ্চলের শহরগুলোর মধ্যে এটি ইরানের অন্যতম প্রাচীন, বৃহত্তম ও সুন্দর শহর হিসেবে স্বীকৃত। সম্প্রতি শহরটিতে ‘সিটি অব ট্যুরিস্ট’ নামে একটি পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রকল্পটির বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ইয়াযদ যেমন ইরানের প্রথম পর্যটন শহরে রূপান্তরিত হবে। ঠিক সমভাবে এটি দেশজুড়ে থাকা অন্যান্য সর্বাধিক পর্যটক আকৃষ্ট শহরগুলির জন্যও একটি রোল মডেল হয়ে দাঁড়াবে।
রোববার ইয়াযদ প্রদেশের পর্যটন দপ্তরের পরিচালক ফাতেমেহ দানেশইয়াজদি বলেন, ‘ইয়াযদ শহরকে পর্যটন শহরে রূপান্তরিত করতে বেশ কিছু কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এর ফলে শহরটি সর্বজনীন একটি শহরে রূপ নেবে। একইভাবে দেশের অন্যান্য পর্যটন শহরগুলোও গড়ে তোলা যাবে।’
গত জুনে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পাওয়ার পর ‘সিটি অব ট্যুরিস্ট’ নামের এই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। এতে সহায়তা করছে ইয়াযদ পৌরসভা ও ইরানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, পর্যটন এবং হস্তশিল্প সংস্থা।
ইয়াযদ মানে হলো পাক পবিত্র। ইয়াযদ শহরটির বৈশিষ্ট্য তার নাম থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। ইয়াযদ শহরের স্থাপনাগুলোর ইতিহাস নিয়ে কিছুটা মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন এখানকার প্রথম স্থাপনাটি গড়ে উঠেছিল অ্যালেক্সান্ডারের হাতে। বলা হয়ে থাকে অ্যালেক্সান্ডার এই শহরটি তৈরি করেছিলেন কারাগার হিসেবে। যারা শাস্তিপ্রাপ্ত তাদের জন্য এবং নির্বাসনে দেয়ার জন্য এই শহরটি গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এ কারণে অ্যালেক্সান্ডারের কারাগার নামেও এই শহরের প্রসিদ্ধি আছে।
বলা হয়ে থাকে, অ্যালেক্সান্ডার যখন ইরানের ওপর দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তখন তেহরানের কাছাকাছি ‘রেই’ নামক বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক শহরের বেশ কজন ব্যক্তিত্ব তার বিরোধিতা করেছিলেন। অ্যালেক্সান্ডার সেইসব মহান ব্যক্তিবর্গকে গ্রেফতার করে ইয়াযদ অতিক্রম করার সময় সেখানকার একটি কূপে বন্দি করে রেখেছিলেন। ওই স্থানটিকে গ্রিক ভাষায় জিন্দান বা কারাগার বলে।
অ্যালেক্সান্ডার যখন ইয়াযদ থেকে বেরিয়ে যান তখন ওই কারাবন্দিরাই রক্ষীদের সাহায্য নিয়ে শহরটিকে আবাদ করার উদ্যোগ নেয়। অনেক ইতিহাসবিদের মতে, ইয়াজদের গোড়াপত্তন হয়েছিল সাসানি শাসক প্রথম ইয়াযদগার্দ্ এর হাতে। তার নামের সাথে মিল রেখেই শহরটির নাম রাখা হয়েছে ইয়াযদ।
হিজরি পঞ্চম শতক থেকে এই শহরটির বিকাশ ঘটে। আতাবাকিরাই এই শহরের উন্নয়নে অবদান রেখেছিল। ইয়াযদেও দেখার আছে অনেক কিছু। বিশ্ব পর্যটকরা এই শহরে প্রায়ই বেড়াতে আসে ইয়াযদের মসজিদে কাবির, ফাহরাজ জামে মসজিদ, সাইয়্যেদ রোকনুদ্দিনের সমাধি, দৌলতাবাদ বাগিচা, আমিরে চাখমখ মসজিদ, অগ্নিমন্দির, টাওয়ার ইত্যাদি দেখার জন্য।। সূত্র: তেহরান টাইমস।