বৃহস্পতিবার, ৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

ইরানে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে করোনা প্রতিরোধী সামগ্রী

পোস্ট হয়েছে: মার্চ ১৮, ২০২০ 

news-image

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস চীন থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর তিন মাস পার হয়ে গেছে। এ সময়ের মধ্যে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দেশে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে। একইসঙ্গে বিপদজনক এ ভাইরাস থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে বের করার জন্যও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ইরানের জনগণও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ধর্মীয় নগরী কোমে প্রথম করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এরপর ইরানের অন্যান্য শহরেও এ ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র এক মাসের মধ্যে ইরানের ১৩ হাজারের বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়লেও অন্তত ৭০০ ব্যক্তি এতে প্রাণ হারিয়েছে। প্রতিদিনই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ দুঃখজনক পরিস্থিতির মধ্যেই ইরানের সবচেয়ে বড় জাতীয় উৎসব নওরোজ দিন ঘনিয়ে আসছে। ফলে দুশ্চিন্তার মাত্রা বেড়েছে। তবে ইরানে ব্যাপকমাত্রায় এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লেও দেশটির সরকার ও জনগণ ‘ভাইরাসকে আমরা পরাজিত করব’ এমন শ্লোগান দেয়ার মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

সবার ঐক্যবদ্ধ অবস্থান ও সহযোগিতা ভাইরাস মোকাবেলাকে আরো সহজ করে তুলেছে। সারা ইরানের চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য সহযোগীরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমেরিকার কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান যখন খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর সংকটে ভুগছে তখন ইরানের সরকার ও জনগণ সম্মিলিতভাবে এ ভাইরাস মোকাবেলায় এগিয়ে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনমূলক তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। হাতে গ্লাবস, মুখে মাস্ক পরার ছবি ও ভিডিও যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে তা ইরান-ইরাক যুদ্ধকালীন সময়ের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

ইরানের সর্বস্তরের জনগণ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় নজিরবিহীনভাবে পরস্পরকে সহযোগিতা করছে। বহু মানুষ ও দাতব্য সংস্থাগুলো বিনামূল্যে জনগণকে মাস্কসহ ভাইরাস প্রতিরোধী অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছে। মাজারগুলোতে যেসব অর্থ জমা হচ্ছে মাজার কর্তৃপক্ষ সেসব অর্থ হাসপাতালগুলো দিচ্ছে করোনায় আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসার জন্য।

এরই মধ্যে ছোটবড় বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি।এ অবস্থায় দোকান পাটের মূল মালিকরা দোকানদার তথা ভাড়াটের কাছ থেকে মাসিক ভাড়া নিচ্ছে না অর্থাৎ মাফ করে দিয়েছে। এভাবে দোকানের মালিকরা সবার সঙ্গে কষ্ট ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। এ ছাড়া ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, স্বেচ্ছাসেবী এবং ধর্মীয় মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা ইরানের বিভিন্ন এলাকায় ভাইরাস প্রতিরোধক এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল সামগ্রী সাধারণ মানুষের কাছে বিতরণ করছে। ইরানের প্রেস টিভিতে এসেছে এক ব্যক্তি (মুদি দোকানদার) ১০ হাজার মাস্ক বিনামূল্যে বিতরণ করেছে। ওই ব্যক্তি আগেই এ মাস্কগুলো কিনে রেখেছিল এবং যখন মাস্কের ব্যাপক ঘাটতি ছিল তখন সে তা মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিল। এ ছাড়া সরকার ১০০ জিবি ইন্টারনেট ফ্রি দিচ্ছে গ্রাহকদেরকে। পার্সটুডে।