মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

English

আমেরিকার সমঝোতা ত্যাগ প্রভাব ফেলে নি ইরানের তেলবাণিজ্যে

পোস্ট হয়েছে: মে ২২, ২০১৮ 

news-image

ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে প্রায় দুই সপ্তাহ। ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত এই সমঝোতা থেকে দেশটি বেরিয়ে গেলে তেহরানের তেলবাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হলেও কার্যত এখনও কোনো প্রভাব পড়ে নি। তবে ইরানি তেলের ক্রেতা রাষ্ট্রগুলোকে এক্ষেত্রে এখনও ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ কৌশল অবলম্বন করতে দেখা যাচ্ছে।

তেহরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আমেরিকার পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ইরানের তেল রপ্তানিতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রভাবে ফেলতে যাচ্ছে না। ট্রাম্পের ঘোষণার পর এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পথে আমেরিকা কেবল একাকীই হাঁটছে এবং ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে নি সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী বাকি দেশগুলো।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইরানি তেল আমদানিকারক দেশগুলোর অধিকাংশ তাদের তেলবাণিজ্যে পরিবর্তন আনছে- এমন কোনো লক্ষণ তাদের পক্ষ থেকে এখনও লক্ষ করা যায় নি। বরং ট্রাম্পের ঘোষণায় যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে সে সম্পর্কে তাদের সর্তক থাকতে দেখা যাচ্ছে। পাশাপিাশ ইরানের অপরিশোধিত তেলের মার্কেট ধরে রাখতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে এ দেশগুলোকে।

মার্কেট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইরানের তেল শিল্পের ওপর আমেরিকা পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় তেলবাণিজ্যের ধারা অব্যাহত রাখতে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে ইরানকে। দৃষ্টান্তস্বরূপ- যুক্তরাষ্ট্রের শেল এর তেল উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও কমেছে। এতে করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেল রপ্তানিতে যে ঘাটতি দেখা দেবে তা পূরণে সক্ষম হবে যুক্তরাষ্ট। এছাড়া সৌদি আরবও ইরানের জন্য চ্যালেঞ্জের হতে পারে। কেননা, দেশটি ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছে যে, ইরানি তেল রপ্তানি বন্ধ হলে তার ঘাটতি পূরণে প্রস্তুত রিয়াদ।

ইরানের জন্য আরেকটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ  চ্যালেঞ্জ হলো- অর্থ লেনদেন ও ব্যাংকিং সমস্যা। ইরান ইতোমধ্যে এ সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছে। এসব থেকে স্পষ্ট হয় ইরানের তেল শিল্প কতটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশটিকে সাহায্য করবে আগের নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলার অভিজ্ঞতা।

ইরানের তেল কর্মকর্তারা বরবারই বলেছেন, ট্রাম্পের ঘোষণার পর গেল দুই সপ্তাহে এ পর্যন্ত ইরানের তেল রপ্তানিতে বা তেল বাজারে কোনো প্রভাব পড়ে নি। দেশটির তেলমন্ত্রী বিজান জাঙ্গানেহ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়ন করে তাহলে তেহরানের এক ফোটা তেলও অবিক্রিত থাকবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তিনি একথা বলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি বিষয়ক প্রধান মিগুয়েল আরিয়াস ক্যানেটের সঙ্গে গত শনিবার তেহরানে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাঙ্গানেহ। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি সমঝোতার প্রতি অনুগত থাকে তাহলে ইরানের তেল বিক্রিতে কোনো ওঠানামা হবে না। সূত্র: তেহরান টাইমস।