শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

ইরানের দৃষ্টিনন্দন মারানজাব মরুভূমি

পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ১, ২০২০ 

news-image

অপরূপ সৌন্দর্য আর প্রাচীন ঐতিহ্যের লীলাভূমি ইরান। সৈকত, বন-জঙ্গল, পর্বত ও সবুজ-শ্যামলে আচ্ছাদিত বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও দেশটির মধ্যভাগে রয়েছে সুন্দর সুন্দর অনেক মরুভূমি। এখানকার দৃষ্টিনন্দন মারানজাব মরুভূমি ইরানের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। দর্শনীয় এই স্থানটি দেশ ও দেশের বাইরে থেকে আসা পর্যটকের আনাগোনায় সবসময় মুখরিত হয়ে থাকে।

অমসৃণ রাস্তা দিয়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে মরুভূমিটি অন্যতম সেরা স্থান। এটি ইসফাহান প্রদেশের আরান ও বিদগোল শহরের উত্তরে অবস্থিত। বান্দ-ই রিগ মরুভূমির উত্তরে রয়েছে নোনা পানির লেক  এবং পূর্বে রয়েছে ডিজার্ট ন্যাশনাল পার্ক। পশ্চিমে রয়েছে মাসিলেহ মরুভূমি, হোজ-ই সুলতান ও মোরেহ লেক এবং উত্তর দিকের বাকি অংশে রয়েছে আরান ও বিদগোল শহর।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মরুভূমির গড় উচ্চতা প্রায় ৮৫০ মিটার। পুরো মরুভূমির উপরিভাগ বালুময় পাহাড় ও সাবুলাস দিয়ে ঢাকা। এই অঞ্চলের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রাণী হচ্ছে নেকড়ে, হায়না, র‌্যাপেলের শিয়াল, বালির বিড়াল, পর্যবেক্ষক টিকটিকি, গিরগিটি, টিকটিকি, বিশেষ প্রজাতির সাপ, বিচ্ছু, পার্ট্রিজ, ঈগল এবং ফ্যালকন।

এই মরুভূমির প্রধান প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে উঁচু উঁচু টিলা, অন্তহীন সমভূমি, কালো পর্বত (সিয়াহ কুহ), সূর্য ওঠা ও ডোবার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, হ্যালোক্সিলন জঙ্গল, নুনের হ্রদ এবং অতি সুন্দর আকাশ। যেন আপনি স্বর্গে পৌঁছতে পারবেন এবং তারকাগুলো ছুঁতে পারবেন।

সল্ট লেক

সল্ট লেক

মরুভূমির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হেচ্ছে নোনা পানির লেক। এটি শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। লেকটি দেখতে ত্রিভুজ আকৃতির মতো। যার মাথা চলে গেছে উত্তর দিকে। লেকটির ভিত্তি প্রায় ৬৫ কিলেমিটার ও উচ্চতা প্রায় ৬০ কিলোমাটার। এটির গভীরতা ৫ থেকে ৫৪ মিটারের মধ্যে।
জাজিরেইয়ে সারগারদানি

জাজিরেইয়ে সারগারদানি

লেকের উত্তরপূর্ব ও মধ্যখানে স্বল্প উচ্চতার একটি পর্বত রয়েছে। এটি দ্বীপের মতো, চারপাশে রয়েছে সাদা লবণের আবরণ। এই জায়গাটির নাম জাজিরেইয়ে সারগারদানি। বৃষ্টিপাতের কারণে বছরে এক বা দুই মাস লেকটি দৃশ্যমান থাকে। আর বছরের বাকি মাসগুলো লবণের জলাভূমিতে পরিণত হয়।
কারাভানসারেই

কারাভানসারেই

মরুভূমিতে মারানজাব কারাভানসারেই নামে একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে। ৩৫০ বছর আগে সাফাভী আমলে এটি গড়ে ওঠে। সাড়ে তিন হাজার বর্গমিটার জায়গার ওপর অবস্থিত সরাইখানাটিতে ২৯টি কক্ষ রয়েছে। এটির নিকটে সল্ট লেক থাকা সত্বেও মিঠা পানির কানাত (চ্যানেল) ও খুবই বড় পুল রয়েছে।
মরুভূমিটি খুঁজে পেতে আপনাকে কাশান শহরে যেতে হবে। এরপর আপনাকে যেতে হবে ইসফাহানের আরান ও বিদগোল শহরে। ইমামজাদেহ হেলাল আলি পবিত্র মাজারে গিয়ে মানুষজনের কাছে মরুভূমিতে যাওয়ার রাস্তা জেনে নিতে পারবেন।
 
মরুভূমিটি পরিদর্শনের আদর্শ সময় শরতের শেষ এবং বসন্তের আগে ও পরে। সরাইখানাতে বিশ্রাম নেয়ার কক্ষ রয়েছে এবং এখানে সম্ভবত তাঁবু টেনেও বিশ্রাম নেয়া যায়। সূত্র: তেহারন টাইমস।