বুধবার, ২রা এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

স্মরণীয় বাণী

পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৮ 

১১ যিলকদ মহানবী (সা.)-এর পবিত্র আহলুল বাইতের বারো ইমামের অষ্টম ইমাম হযরত আলী ইবনে মূসা আর রেযা (আ.)-এর শুভ জন্মদিন। তিনি ১৪৮ হিজরির এই দিনে (১১ যিলকদ) জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সপ্তম ইমাম হযরত মূসা ইবনে জাফার আল কাযিম (আ.)। তাঁর কুনিয়াহ আবুল হাসান এবং তাঁর উপাধি রেযা। তিনি পিতা ইমাম কাযিম (আ.)-এর শাহাদাতের পর ১৮৩ হিজরি সালে ৩৫ বছর বয়সে ইমামতের মাকামে অধিষ্ঠিত হন। এ মহান ইমামের শুভ জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর কিছু অমিয় বাণী নিচে দেয়া হলো :
সর্বোত্তম ও সবচেয়ে সম্মানজনক গুণ হচ্ছে সৎকর্ম সম্পাদন, দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য এবং আশাকারীর (অভাবীর) আশা (অভাব) পূরণ করা। (বিহারুল আনওয়ার , খ. ৭৮, পৃ. ৩৫৫)
বিশ্বস্ত ব্যক্তি তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি বা করেনা। কিন্তু তুমি বিশ্বাসঘাতককে বিশ্বস্ত মনে করেছিলে (বামনে কর)। (বিহারুল আনওয়ার, খ. ৭৮,পৃ. ৩৩৫)
৪. সর্বোত্তম বুদ্ধি বৃত্তি (প্রজ্ঞা) হচ্ছে নিজ সত্তা সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান ও পরিচিতি। (বিহারুল আনওয়ার, খ. ৭৮, পৃ. ৩৫২ )
যে ব্যক্তি পারলৌকিক প্রতিদানের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস করে তার উচিত (বেশি বেশি) দান করা। (উয়ূনু আখবারির রিযা (আ.), খ. ২, পৃ. ৫৪)
দান-সাদকা করার চেয়েও উত্তম হচ্ছে দুর্বলকে তোমার সাহায্য করা। (তুহাফুল উকূল, পৃ. ৫২৫)
ইবাদত কেবল বেশি বেশি নামায পড়া ও রোযা রাখা নয়; বরং ইবাদত হচ্ছে মহান আল্লাহর ব্যাপারে (গভীর) চিন্তা করা। (উসূলুলকাফী, খ. ২, পৃ. ৫৫)
যে ব্যক্তি চায় যে তার মৃত্যু কাল বিলম্বিত হোক এবং তার জীবিকা (রিযিক) বৃদ্ধি পাকতার উচিত আত্মীয় তার সম্পর্ক রক্ষা করা। (উয়ূনু আখবারিররিযা (আ.), খ. ২, পৃ. ৪৪)
তোমরা তোমাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে জনগণকে কখনোই সন্তুষ্ট করতে পারবেনা। তাই তোমরা মিষ্টি মুখে এবং সদাচরণ দিয়ে তাদেরকে সন্তুষ্ট করবে। (মুসনাদুল ইমামির রিযা (আ.), খ. ১, পৃ. ২৯২)
গৃহ স্বামীর উচিত নিজ পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও সচ্ছলতার জন্য চেষ্টা ও ব্যয় করা যাতে তারা (পরিবার-পরিজন) তার মৃত্যু কামনা না করে। (মানলাইয়াহদুরুহুল ফাকীহ, খ. ২, পৃ. ৬৮)
যে উপকারীর শুকর (তারপ্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ) করেনা সে মহান আল্লাহরও শুকর করেনা। (উয়ূনু আখবারির রিযা (আ.), খ. ২, পৃ. ২৪)
যে ব্যক্তি নিজ নাফ্সের (প্রবৃত্তি) হিসাব-নিকাশ (ও বিচার) করে সে লাভবান হয় এবং যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির ব্যাপারে উদাসীন থাকে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।(বিহারুল আনওয়ার, খ. ৭৮, পৃ. ৩৫৫)
১৬. যে ব্যক্তি বিচক্ষণতার সাথে নিজ কর্ম সম্পাদন করেনা সে হচ্ছে ভুল পথে ভ্রমণকারী পথিকের ন্যায় যার সফরের (ভ্রমণের) গতি যত বাড়বে ততই সে সঠিক পথ (আসল লক্ষ্য) থেকে ভ্রষ্ট হবে ও দূরে চলে যাবে। (ফিক্হুর রিযা (আ.), পৃ. ৩৮১)
যে ব্যক্তি সবার কাছে প্রিয় হতে চায় তার উচিত গোপনে ও প্রকাশ্যে (সর্বাবস্থায়) মহান আল্লাহকে ভয় করা। (ফিক্হুর রিযা (আ.), পৃ. ৩৮১)
চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে আয়না স্বরূপ যা তোমাকে তোমার দোষ-ত্রুটি ও গুণগুলো দেখিয়ে দেয়। (ফিক্হুর রিযা (আ.), পৃ. ৩৮০)
উপহার-উপঢৌকন অন্তরগুলো থেকে ঘৃণা দূর করে। (উয়ূনু আখবারির রিযা (আ.), খ. ২, পৃ. ৭৪)
ভর্ৎসনা ও নিন্দা বিহীন ক্ষমাই হচ্ছে সুন্দর ক্ষমা। (চেহেল হাদিস, পৃ. ১২০)
যে ব্যক্তি মুসলমানদের বিষয়াদি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা ছাড়াই দিন শুরু করে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় (অর্থাৎ সে মুসলমান নয়)। (ফিক্হুর রিযা, পৃ. ৩৬৯)
মন্দ, অসৎ ও দুষ্ট প্রকৃতির লোকদের সঙ্গ দান সৎ ও ভালো ব্যক্তিদের ব্যাপারে কু-ধারণার উদ্রেক করে (অর্থাৎ সৎ ও ভালো লোক যদি অসৎ ও মন্দ লোকের সাথে ওঠা-বসা করে ও তার সঙ্গী হয় তাহলে তার ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ ও মন্দ ধারণা পোষণ করবেই)। (উয়ূনু আখবারির রিয়া (আ.), খ. ২, পৃ. ৫২)
মহান আল্লাহপাক আমাদেরকে ইমাম রেযা (আ.)-এর এসব অমিয় বাণী ও শিক্ষা আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তৌফিক দিন।
সংগ্রহ ও অনুবাদ : মোহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান