শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

স্মরণীয় বাণী

পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ১, ২০১৬ 

মহানবী (সা.) বলেন : জ্ঞান হলো গুপ্ত ভাণ্ডারতুল্য। আর তার চাবিকাঠি হলো প্রশ্ন। অতএব, প্রশ্ন কর, আল্লাহ্ তোমাদের অনুগ্রহ করবেন। কারণ, চার ব্যক্তির জন্য পুরস্কার ও পারিশ্রমিক রয়েছে : প্রশ্নকারী, বক্তা, শ্রোতা আর তাদের ভক্তিকারী।

মহানবী (সা.) বলেন : আমার প্রতিপালক আমাকে নয়টি জিনিসের উপদেশ দিয়েছেন : প্রকাশ্য ও গোপনে নিষ্ঠা অবলম্বন করা, সন্তুষ্টি আর ক্রোধের অবস্থায় ন্যায়পরায়ণ থাকা, অভাব ও প্রাচুর্যের সময় মধ্যপন্থা অবলম্বন করা, আর যে আমার প্রতি অত্যাচার করে তাকে যেন ক্ষমা করি, আর আমার প্রতি যে কৃপণতা করে তাকে প্রদান করা, আর যে আমার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে তার সাথে যেন সম্পর্ক গড়ি, আর আমার নীরবতা যেন হয় চিন্তা-গবেষণা, আর আমার কথা যেন হয় যিকির আর আমার তাকানো যেন হয় শিক্ষাগ্রহণ।

মহানবী (সা.) বলেন : চারটি জিনিস যার মধ্যে থাকে সে আল্লাহর মহিমাময় জ্যোতিসমৃদ্ধ হয় : যার সকল কাজের আশ্রয়স্থল হয় আল্লাহর একত্ববাদ এবং আমি তাঁর প্রেরিত হওয়ার সাক্ষ্য প্রদান, তার ওপর বিপদ আপতিত হলে বলে ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। আর ভালো কিছু লাভ করলে বলে ‘আলহামদুুলিল্লাহ্’। আর অপরাধ করলে বলে ‘আসতাগফিরুল্লাহ্ ওয়া আতুবু ইলাইহি’।

মহানবী (সা.) বলেন : সৃষ্টির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষণ হলো তাদের (দ্রব্যসমূহের) মূল্য সস্তা হওয়া এবং তাদের শাসকের ন্যায়বিচারক হওয়া। আর সৃষ্টির প্রতি আল্লাহর ক্রোধের লক্ষণ হলো তাদের শাসকদের অবিচারক হওয়া এবং তাদের (পণ্যদ্রব্যসমূহের) মূল্য চড়া হওয়া।

ইমাম (আ.) বলেন : দুনিয়ায় নিরাসক্ত হলো সেই ব্যক্তি, হারাম যার ধৈর্যকে লুটে নিতে পারে না আর হালাল তাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ থেকে বিরত রাখতে পারে না।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : বেহেশতের গুপ্তধনসমূহের অন্যতম হলো পুণ্যকাজ করা, পুণ্যকাজকে গোপন করা, বিপদ-আপদে ধৈর্যধারণ করা আর দুঃখ-কষ্টকে আড়াল করা।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : আমি তোমাদের ব্যাপারে দুটি জিনিসের ভয় পাই : প্রলম্বিত আশা আর প্রবৃত্তির অনুসরণ। প্রলম্বিত আশা পরকালকে ভুলিয়ে দেয়। আর প্রবৃত্তির আনুগত্য সত্য থেকে বিরত রাখে।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : যাকে চাও (তার) উপকার কর, যাতে তোমার (ভালোবাসায়) বন্দি হয়ে পড়ে।

ইমাম আলী (আ.) বলেন : জিহ্বা হলো একটি দাঁড়িপাল্লা, অজ্ঞতা একে হালকা করে আর বুদ্ধি একে ভারী করে।

ইমাম হাসান (আ.)-কে প্রশ্ন প্রশ্ন করা হয় : আত্মসংযম কী? তিনি বলেন : তাকওয়ার প্রতি আকর্ষণ এবং দুনিয়া থেকে অনাসক্তি। প্রশ্ন করা হয় : সহিষ্ণুতা কী? তিনি বলেন : ক্রোধ সংবরণ করা ও প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।

ইমাম হাসান (আ.) বলেন : নিকৃষ্টতা হলো এটা যে, নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে না।

ইমাম আলী ইবনুল হোসাইন যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : তাকওয়ার সাথে কোনো কাজই কম নয়। কীভাবে তা কম বলে গণ্য হবে যখন তা আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়েছে!

ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) বলেন : মহত ও বিনয়ী হওয়া ব্যতীত শুধু কুরাইশ বংশীয় বা আরব হওয়ার মধ্যে কোনো মর্যাদা নেই, তাকওয়ার অধিকারী হওয়া ব্যতীত কোনো সম্মান নেই, আর (সঠিক) নিয়ত ব্যতীত কোনো কর্মেরই মূল্য নেই, আর নিগুঢ় জ্ঞান ব্যতীত কোনো ইবাদত নেই। সাবধান! আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বিরাগভাজন ব্যক্তি হলো সেই ব্যক্তি যে নিজেকে কোনো ইমামের অনুসারী বলে মনে করে, অথচ তাঁর কর্মের অনুসরণ করে না।

ইমাম আলী ইবনে মুহাম্মাদ আন-নাকী (আ.) বলেন : কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনকারী যে নেয়ামতের কারণে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তার চেয়ে স্বয়ং কৃতজ্ঞতা দ্বারা বেশি সৌভাগ্যবান হয়। কারণ, নেয়ামত হলো দুনিয়ার সামগ্রী। আর কৃতজ্ঞতা দুনিয়া ও পরকালের নেয়ামত।

ইমাম নাকী (আ.) বলেন : যে ব্যক্তি নিজের মূল্য বোঝে না তার অনিষ্ট থেকে নিশ্চিন্ত থেক না।

ইমাম নাকী (আ.) বলেন : দুনিয়া হলো একটি বাজার যেখান থেকে কিছুসংখ্যক লোক লাভবান হয় আর কিছুসংখ্যক লোক লোকসান করে।

ইমাম হাসান আল আসকারী (আ.) বলেন : কোমর ভেঙে দেওয়া বিপদগুলোর মধ্যে একটি হলো সেই প্রতিবেশী, যে ভালো কাজ দেখলে তা গোপন করে আর মন্দ কাজ দেখলে তা ফাঁস করে দেয়।

ইমাম হাসান আল আসকারী (আ.) বলেন : যে ব্যক্তি নিজ ভাইকে গোপনে উপদেশ দেয় সে তাকে অলঙ্কৃত করল। আর যে তাকে অপরের সামনে উপদেশ দেয় সে তাকে কলঙ্কিত করল।

(তুহাফুল উকূল থেকে সংকলিত)
অনুবাদ : আব্দুল কুদ্দুস বাদশা