সারাদেশে পবিত্র আশুরা পালিত
পোস্ট হয়েছে: জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
গত ১ অক্টোবর ২০১৭ সারাদেশে ভাবগম্ভীর পরিবেশে ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বাণী প্রদান করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও পৃথক বাণী দিয়েছেন। এসব বাণীতে তাঁরা দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কারবালায় শহীদদের এই আত্মত্যাগ মুসলিম উম্মাহর জন্য এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
আশুরা উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ বলেন, ইসলামের আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচররা যে আত্মত্যাগ করেছেন, তা ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মৃতিতে ভাস্বর পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী আমাদের অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে উদ্বুদ্ধ করে।
অপর এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পবিত্র আশুরা মানব ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবারবর্গ যে আত্মত্যাগ করেছেন, মুসলিম উম্মাহর জন্য তা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী সব অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আশুরার মহান শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, সংগঠন ও খানকা আহলে বাইতে রাসূল (সা.) স্মরণে আলোচনা ও শোকসভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় বক্তাগণ আশুরার ত্যাগের শিক্ষা রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তি জীবনে অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে এক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ‘আশুরার তাৎপর্য ও শিক্ষা’ শীর্ষক এই মাহফিলের আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগরে পরিচালক মোঃ মোজাহারুল মান্নান। চট্টগ্রামে আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে ১০ দিনব্যাপী শাহাদাতে কারবালা মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থানে শোক র্যালি ও মিছিল বের করা হয়। রেডিও ও টিভি চ্যানেলগুলোতে মুহররম উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
‘আশুরার বার্তা বহনে কবিদের ভুমিকা’ শীর্ষক আলোচনা ও কবিতা পাঠ অনুষ্ঠিত
‘ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কবিতা একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আদর্শ বিকাশে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির গুরুত্ব অপরিসীম’Ñ ইরানি রাষ্ট্রদূত
মহান আশুরা উপলক্ষে শোহাদায়ে কারবালা স্মরণে কবিতা পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত জনাব আব্বাস ভায়েজী দেহনাভী বলেন, ‘ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কবিতা একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আর আদর্শ বিকাশে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির গুরুত্ব অপরিসীম।’ প্রবীণ সাংবাদিক ও কবি এরশাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে জাতীয় কবিতা মঞ্চ ও ঢাকাস্থ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘আশুরার বার্তা বহনে কবিদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইরানি রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন। গত ০৬ অক্টোবর, ২০১৭ সকালে জাতীয় কবিতা মঞ্চের সভাপতি কবি মাহমুদুল হাসান নিজামীর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর জনাব সাইয়্যেদ মূসা হোসেইনী, ব্রিগেডিয়ার (অবসরপ্রাপ্ত) নাসিমুল গণি, অধ্যাপক ডা. হাসিনা বানু, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ কবি ড. ঈসা শাহেদী, প্রখ্যাত ছড়াকার কবি আবু সালেহ, কবি ও গবেষক আবদুল মুকীত চৌধুরী, উদিচি শিল্পী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আবৃত্তিকার বদরুল হাসান খান, নজরুল ইনস্টিটিউটের ডেপুটি ডিরেক্টর কবি রেজাউদ্দীন স্টালিন, ইরানি রাষ্ট্রদূতের পতœী মিসেস যেইনাব ভায়েজী দেহনাভী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজিব ওয়াদুদ।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. ভায়েজী আরো বলেন, মানুষ তার চিন্তা-চেতনা, আদর্শ, দর্শন ও অভিব্যক্তিকে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে। যেমন, পেইন্টিং, চলচ্চিত্র, কবিতা ইত্যাদি। যখন কোন ঘটনাকে শৈল্পিক শব্দমালায় প্রকাশ করা হয় তখন তা হয় কবিতা। কবিরা যখন ইতিহাসকে বিশ্লেষণ করেন তখন তাঁরা এর আবেগকে ধারণ করেন এবং কবিতা রচনা করেন। কবিরাই পারেন মহান ঘটনাকে ও এর তাৎপর্যকে শৈল্পিক শব্দমালা ও যথার্থ বাক্যাবলির মাধ্যমে হৃদয়ে গেঁথে দিতে। আশুরায় ইমাম হোসাইন (আ)-এর আত্মত্যাগের ঘটনাকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার উজ্জ্বল পথরেখা সৃষ্টির উদাহরণ হিসেবে কবিরা তাঁদের কাব্যভাষার ভেতর দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। যখন কবিরা ইমাম হোসাইনের কথা চিন্তা করেন তখন যেন এটি সেই চৌদ্দ শত বছর আগের বিষয় মনে না করেন, এবং তাঁরা তা করেনও না। যেমন আজকের কবিতাগুলোতে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ এসেছে। প্রকৃতপক্ষে কারবালার বাণীই এটা যে, অত্যাচারিতকে সাহায্য করতে হবে এবং অত্যাচারীর বিরোধীতা করতে হবে। নিজেদেরকে ভুলে যাবেন না, নিজেদের সক্ষমতাকে ভুলে যাবেন না; বরং সেই সক্ষমতা নিয়েই অত্যাচারিতের পক্ষে কথা বলতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
সভাপতির ভাষণে জনাব এরশাদ মজুমদার কারবালার আত্মত্যাগকে ইতিহাসের এক করুণ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং অনুষ্ঠানে আগত কবি-সাহিত্যিক ও মেহমানবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
জনাব সাইয়্যেদ মূসা হোসেইনী বলেন, ইমাম হোসাইন ও তাঁর সঙ্গীদের শাহাদাত এবং আশুরার হৃদয়বিদারক ঘটনা মানব ইতিহাসের অন্যতম করুণ ঘটনা। যে ঘটনার ১৪ শত বছর অতিবাহিত হলেও এই শোকাবহ স্মৃতি এখনও মানুষের অন্তরে জাগরুক রয়েছে এবং প্রতিবছর এই দিনটির গুরুত্ব মানুষের কছে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর কারবালার শহীদদের স্মরণ এবং অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ইমাম হোসাইনের দেখানো পথ স¤পর্কে মানুষকে আরো বেশি করে অবহিত করতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন, শোকানুষ্ঠান, শোক মিছিল, কবিতা ও মর্সিয়া পাঠ ও আলোচনার আয়োজন করা হয়। আর এসব আয়োজন কেবল মুসলমানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং অমুসলিমদের মধ্যেও কারবালার শহীদদের পথ অনুসরণ এবং জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে একই কণ্ঠ ধ্বনিত হয়।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ইতিহাসে বিশিষ্ট কবি ও নবি পরিবার ভক্তরা কারবালায় ইমাম হোসানের বিপ্লবের লক্ষ্য ও আশুরার ঘটনা কবিতার মাধ্যমে বর্ণনা করে একে চির জাগরুক করে রাখার পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এর বার্তা পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রেও মহান অবদান রেখে চলেছেন। এই অবদান কেবল ইরান ও আরবের আরবি ও ফারসি ভাষাভাষি ও এমনকি বাংলা, উর্দু ও হিন্দি ভাষাভাষী মুসলিম কবিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং অনেক অমুসলিম কবিও কারবালার ঘটনা ও আশুরার বার্তা পৌঁছে দিতে অনেক মূল্যবান কবিতা রচনা করেছেন। সুতরাং কবি, সাহিত্যিকরা তাদের আবেগ-অনুভূতি ও এর বিপ্লবী ও মানবিক বর্ণনা দিয়ে আশুরার ঐতিহাসিক ঘটনা জাগ্রত রাখার ক্ষেত্রে যে অবদান রেখে যাচ্ছেন তা ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে থাকবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
তিনি মাওলানা মুহাম্মদ আলী জওহর, প্রখ্যাত কবি ও দরবেশ খাজা মাইনুদ্দিন চিশতির কবিতা থেকে উদ্ধৃতি পেশ করেন এবং বলেন যে, জালিম ইয়াযিদের নৈতিক পরাজয় ঘটেছে এবং সে গণধীকৃত, নিন্দিত, লানতপ্রাপ্ত হয়েছে। পক্ষান্তরে ইমাম হোসাইন যুগযুগান্তর ধরে মানুষের হৃদয়ে নৈতিকতার আলো জ্বেলে দিয়েছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিমুল গণি বলেন, কবিতা হলো এমন একটি বিষয় যা মানুষের চিন্তা, চেতনা ও মননকে প্রকাশ করে। কবিকে জ্ঞানী হতে হয়। ইতিহাসকে ধারণ করতে গেলে সেই বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকতে হয়। অতীতের মহান ব্যক্তিরা কবি ছিলেন। তাঁরা কবিতার মাধ্যমে তাঁদের অভ্যন্তরীণ শক্তিকে তুলে প্রকাশ করেছেন। কবি নজরুল ছিলেন তেমনই এক ব্যক্তিত্ব। যিনি প্রকৃতপক্ষে ছিলেন মানবতার কবি। কাজী নজরুল ইসলাম ও অন্য কবিরা আশুরা ও কারবালাকে এই উপমহাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, কারবালার মহান ঘটনা নিয়ে আমরা এক সময় পুঁথি পাঠ শুনতাম, রেডিও-টিভিতে অনুষ্ঠান হতো। এখন আর তেমন একটা শোনা যায় না। এটা আমাদের দৈন দশা। একটা আত্মত্যগের মহান দর্শনকে আমরা ভুলে যেতে বসেছি। এ অবস্থা থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে।
ড. নাজিব বলেন, দশই মুহররমের ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। আশুরা বা মুহররম বিষয়ক কবিতায় দশই মুহররমের মর্মন্তুদ ঘটনার বর্ণনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এর সাথে বর্তমান প্রেক্ষাপটকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আর কেবল শোক প্রকাশ বা প্রচার নয়; বরং ইমাম হোসাইন (রা.) কেন শহীদ হলেন, কোন্ লক্ষ্য নিয়ে তিনি আন্দোলন করেছিলেন তা জানতে হবে ও সেই বাণী প্রচার করতে হবে। সেসবের সাথে আমাদের জীবনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করে করণীয় উপস্থাপন করতে হবে। এখানেই কবিতার সার্থকতা।
ছড়াকার আবু সালেহ বলেন, ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যে কবিতা পাঠের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এটি আমার জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে। কারণ, মুহররমকে নিয়ে এধরনের কোন অনুষ্ঠানে আমি কখনই অংশগ্রহণ করি নি। তিনি কবিতাচর্চায় ইরানি দূতাবাস ও ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কারবালার মহাবিয়োগান্ত ঘটনায় কেবল ইমাম হোসাইন (রা.) শহীদ হন নি, হত্যা করা হয়েছে পিতৃ¯েœহকে, ন্যায়কে, সর্বোপরি আল্লাহর প্রেমকে খুন করা হয়েছে। তাই মুহররমের বিষয়টি আমাদের মাঝে নতুন করে আলোচিত হওয়া প্রয়োজন।
কবি আবদুল মুকীত চৌধুরী মুহররম বিষয়ে বাংলাদেশের কবিদের লেখনি সম্পর্কে ‘পবিত্র আশুরার চেতনা’ শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত সংকলন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কবিরা অংশ নেন। আশুরা ও মুহররমের চেতনা নিয়ে শোহাদায়ে কারবালা স্মরণে উক্ত অনুষ্ঠানটি ছিল এ সময়ের একটি যুগান্তকারী ঘটনা। কেননা, সাহিত্য সাংস্কৃতিক মহলের অভিমত যে, কারবালার ঘটনা নিয়ে জারি গান, পুঁথিপাঠ ও মর্সিয়া পাঠের অনুষ্ঠান হলেও অমর আশুরা উপলক্ষে নিবেদিত কবিতা পাঠের বিষয়টি আধুনিক বাংলা কবিতার ইতিহাসে এটিই সূচনা ও একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এ ধারাকে অব্যহত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তাদের আলোচনা ও কবিদের কবিতায় কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা, স্বপরিবারে ইমাম হোসাইন (আ)-এর হৃদয়বিদারক আত্মত্যাগের মহিমা, তরবারির ওপর রক্তের বিজয়ের চেতনা প্রকাশের সাথে সাথে বর্তমান সময়ে ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, আরাকান, ইরাকসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মুসলমানদের ওপর ঘটমান নির্মমতার কথা উল্লিখিত হয়।
অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠে ও আবৃত্তিতে অংশ নেন কথা সাহিত্যিক কাসেম বিন আবু বাকার, ‘নুতন মাত্রা’ সম্পাদক ড. ফজলুল হক তুহিন, কবি কে এম মাহফুজুল করিম, কবি এমরান খন্দকার, কবি আরিফ খান, ছড়াকার কবি জগলুল হায়দার, কবি আমিন আল আসাদ, কবি মামুন সরোয়ার, কবি আবদুল হাই ইদ্রিসী, কবি মৃধা নুরুন নবী নূর, কবি হিজারুল ইসলাম, ড. সালমা, এডভোকেট শামীমা আকতার শিউলি, এডভোকেট সাজেদা বানু হেলেন প্রমুখ। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন শিশু-কিশোর মাসিক ‘ফুলকুঁড়ি সম্পাদক কথাশিল্পী মাহবুবুল হক, নিউজলেটারের সম্পাদকম-লীর সদস্য ড. জহির উদ্দিন মাহমুদ, আল-কুদস কমিটি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল জনাব মোস্তফা তারেকুল হাসান প্রমুখ। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত জাতীয় কবিতা মঞ্চের জেলা কমিটি সদস্যরা কবিতা পাঠে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘মোহররম’ কবিতা থেকে নির্বাচিত অংশ আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার সীমা ইসলাম, গযল পরিবেশন করেন জনাব এম এ মোন্নাফ, জনাব আবীদ আজম, শাহ নওয়াজ তাবীব, মর্সিয়া পাঠ করেন ড. সালমা এবং সংক্ষিপ্ত জারি পরিবেশন করেন মিসেস তাহেরা মোন্নাফ।
ঢাকাস্থ নাখালপাড়া ইমাম বাড়িতে শোকানুষ্ঠান
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে গত ১-১৩ মুহররম নাখালপাড়াস্থ ইমামবাড়িতে আলোচনা ও শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘নিশ্চয়ই এ হচ্ছে হোসাইন। তার মারেফাত (পরিচিতি) অর্জন কর’Ñ মহানবী (সা.)-এর এই হাদিসের ওপর ধারাবাহিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন হুজ্জাতুল ইসলাম আব্দুল কুদ্দুস বাদশা। তিনি বলেন, ইমাম হোসাইন (আ.) মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর নাতি ছিলেন। কিন্তু এটিই কি তাঁর পরিচয়? বরং তিনি ছিলেন ‘বেহেশতের যুবকদের সর্দার’, তিনি ছিলেন ‘নাজাতের তরী ও হেদায়াতের আলোকবর্তিকা’। ইমাম হোসাইনের শিশুকাল থেকেই মহানবী (সা.) তাঁর সাহাবীদের সামনে তাঁর প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করেছেনÑ কখনো আচরণের মাধ্যমে, কখনো কথা বলার মাধ্যমে। ইমাম হোসাইন (আ.)-এর ভবিষ্যৎ ব্যক্তিত্বের দিক সম্পর্কে মহানবী (সা.) মুসলমানদেরকে বার বার অবহিত করেছেন। আহলে বাইতের অন্যতম সদস্য হিসেবে তাঁর যে মর্যাদা সেটার বাইরেও স্বতন্ত্রভাবে ইমাম হোসাইনের মর্যাদাকে মহানবী (সা.) মুসলমানদের সামনে প্রকাশ করেছেন। আর এভাবেই তিনি ইমাম হোসাইনের পরিচয় লাভ করতে বলেছেন। যেমন যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) ইমাম হোসাইনকে ‘হেদায়াতের আলোকবর্তিকা’ বলেন তখন বুঝতে হবে মুসলমানরা যখন সত্য-মিথ্যা নির্ণয়ে সন্দেহে পতিত হবে তখন ইমাম হোসাইন (আ.) তাদেরকে সত্যপথ চিনিয়ে দেবেন। কিন্তু মুসলমানদের দুর্ভাগ্য যে, তারা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বাণীর প্রতি মনোযোগী হয় নি, ইমাম হোসাইনের কালজয়ী আন্দোলনে তারা তাঁর সহযোগী হয় নি; বরং তারা ইমাম হোসাইনকে অনুসরণ না করে অবহেলা করেছিল। ইমাম হোসাইন কারবালায় মুষ্টিমেয় সঙ্গী-সাথি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে ইয়াযীদের সেনাবাহিনীর চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের মোকাবেলা করেন এবং শাহাদাত বরণের মাধ্যমে ইসলামকে পুনর্জীবিত করে যান।
খুলনায় আশুরা পালিত
পবিত্র মুহররম উপলক্ষে আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানী ট্রাস্টের উদ্যোগে খুলনায় ১০ দিনব্যাপী শোকসভা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধারাবাহিক আলোচনা উপস্থাপন করেন ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহিম খলিল রাজাভী। সমাপনী দিনে নগরীর আলতাপোল লেনস্থ আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানী ট্রাষ্ট ইমাম বাড়ি হতে আশুরার শোক মিছিল বের করা হয়।
শোক মিছিলে অংশগ্রহণ করেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব মনিরুজ্জামান মনি ও ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জনাব মাহবুব কায়সার।
শোক মিছিলপূর্ব বক্তৃতায় হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলীল রাজাভী বলেন, দশ দিনব্যাপী শোক আলোচনা ও শোক মিছিলের মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্ববাসীকে এ বার্তা পৌঁছে দেওয়া যে, আহলে বাইতের অনুসারী মুসলমানরা জালিমদের পক্ষে নয়, তারা মজলুমদের পক্ষে।
তিনি বলেন, বিশ্বের মুসলমানরা আজ যদি মজলমুদের পক্ষে অবস্থান নিত তাহলে আইএস তথা ইসলামের নামে অন্যান্য জঙ্গি ও সন্ত্রাসী দল সৃষ্টি হতো না। তারা আজ ইসলামের নামে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মসজিদ ও ধর্মীয় স্থাপনায় আত্মঘাতী বোমা আক্রমণ চালিয়ে মুসলমান নারী-পুরুষ-শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করছে। তিনি কারবালার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে নবী (সা.)-এর দৌহিত্র, বেহেশতের যুবকদের নেতা হযরত ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আদর্শ বুকে ধারণ করে মজলুমদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।
বগুড়ায় আশুরা পালন
গত ১ মুহররম পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বগুড়ার শিবগঞ্জ মোহাম্মদপুর (হরিপুর) ইমামিয়া জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও শোক র্যালির আয়োজন করা হয়। এতে আশুরার তাৎপর্য বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন হুজ্জাতুল ইসলাম এ কে এম আনোয়ারুল কবীর, ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ আবু জাফর মন্ডল ও সেক্রেটারি হুজ্জাতুল ইসলাম মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জনাব মীর সিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা আনিসুর রহমান, প্রভাষক শাহিনুর ইসলাম, মাওলানা শাহিনুর রহমান প্রমুখ।
চট্টগ্রামে আশুরা পালন
আশুরা উপলক্ষে গত ১ থেকে ১০ অক্টোবর, ২০১৭ সকালে হালিশহর হোসাইনিয়া ইমামবারগাহে প্রতি সন্ধ্যায় শোক মজলিস অনুষ্ঠিত হয়। কারবালায় আশুরা দিবসের মর্মস্পর্শী বর্ণনা তুলে ধরেন হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা আমজাদ হোসাইন। মুসলিম উম্মাহকে সেই ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে বরাবরের মতো এবারো শোক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে সদরঘাট ইমামবারগাহে ফিরে আসে। পথসমাবেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন মাওলানা আমজাদ হোসাইন। জোহরের নামাযের আগ পর্যন্ত ইমামবারগাহে নওহা চলে। আস্র এর নামাযের পর ‘নামাযে আশুরা’ ও ‘যিয়ারতে ইমাম হোসাইন’ পাঠ করা হয়। সন্ধ্যায় কারবালার শাহাদাত-পরবর্তী নবী পরিবারের নারী-শিশুদের বন্দিদশায় অবর্ণনীয় নির্যাতন ভোগের বর্ণনাসম্বলিত শোকানুষ্ঠান পালিত হয়।
যশোরে পবিত্র আশুরা পালন
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দানবীর হাজী মুহাম্মাদ মহ্সীন ইমামবাড়ী কার্যকরী সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে যশোর ঈদগাহ হতে ঐতিহাসিক মুড়লী ইমামবাড়ী পর্যন্ত শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিলের শুরুতেই ঈদগাহ ময়দানে কারবালার শহীদদের স্মরণে যিয়ারতে আশুরা পাঠ করা হয়। মিছিল শেষে বক্তব্য রাখেন কমিটির সভাপতি মোঃ এহতেশাম-উল-আলম প্রতীক, সেক্রেটারি মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ঐতিহাসিক ইমাম বাড়ীর পেশ ইমাম জনাব ইকবাল হুসাইন, হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মিজানুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ইমাম হোসাইন (আ.) ও তাঁর পরিবার এবং সঙ্গী-সাথিদেরকে ৬১ হিজরিতে কারবালার প্রান্তরে নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে হত্যা করেছিল আবু সুফিয়ানের বংশধর আমীরে মুয়াবিয়ার স্বৈরাচারী সন্তান ইয়াযীদের সেনাবাহিনী। ইয়াযীদের হুকুম ছিল ইমাম হোসাইন (আ.) যেন ইয়াযীদের হাতে বাইয়াত হন। হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র জান্নাতের যুবকদের স¤্রাট ইমাম হোসাইন (আ.) দেখলেন মদ্যপ ও দুঃশ্চরিত্র ইয়াযীদের হাতে বাইয়াত হওয়ার মানে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বরের কষ্টার্জিত দ্বীন ইসলামকে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করা। বিশেষ করে হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর মাধ্যমে যে দ্বীন ইসলাম পূর্ণতা পেয়েছে, যে দ্বীনের উপরে মহান আল্লাহ রাযি ও খুশি হয়েছেন সেই দ্বীন ইসলাম তাগুতি শক্তি ইয়াযীদের হাতে ধ্বংস হতে চলেছে। তাই কারবালার ময়দানে ইমাম হোসাইন (আ.) এমন এক নজিরবিহীন আত্মত্যাগের সিন্ধান্ত গ্রহণ করলেন যার মাধ্যমে হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর রেখে যাওয়া দ্বীন ইসলাম আবারো নতুন করে জীবন ফিরে পেল। মহান কুরবানি (যিবহে আযীম)-এর মাধ্যম দ্বীন ইসলাম প্রকৃত রূপ ধারণ করল।
বক্তারা আরো বলেন, কারবালাতে ইমাম হোসাইন (আ.)-এর এই আত্মত্যাগের কারণেই আমরা সত্য দ্বীন ইসলাম পেয়েছি। মসজিদের মিনার থেকে আমরা আজানের সুমধুর ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি।
কুষ্টিয়ায় পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আলোচনা সভা ও শোকানুষ্ঠান
গত ৫ অক্টোবর, ২০১৭ ইমাম আল মাহদী পাঠাগার, ফকিরাবাদ, কুষ্টিয়া ও ইমামীয়া জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আলোচনা সভা ও শোকানুষ্ঠান ইমাম আল মাহদী পাঠাগারে অনুষ্ঠিত হয়। ইমামীয়া জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন এর সভাপতি জনাব মোঃ আবু জাফর মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সুগার মিলস লিঃ এর অবসরপ্রাপ্ত জি.এম. (কৃষি) জনাব মীর সিদ্দিকুর রহমান। প্রধান আলোচক ছিলেন বগুড়া আল মাহদী শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক হুজ্জাতুল ইসলাম মোজাফফর হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইমাম আল মাহদী পাঠাগার এর সভাপতি জনাব মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, আশুরার মূল শিক্ষা কারবালার ঘটনার সাথে জড়িয়ে আছে। জান্নাতের স¤্রাট ইমাম হোসাইন (আ.) এবং তাঁর সাথিরা কারবালায় মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইসলামের একটি নিখুঁত চিত্র অংকন করেন। তিনি কারবালার ঘটনার মাধ্যমে ইসলামের শত্রু-মিত্রের পরিচয়ও তুলে ধরেন।
প্রধান বক্তা তাঁর বক্তৃতায় পবিত্র আশুরার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও শিক্ষার ওপর বিষদ আলোচনা রাখেন। তিনি কারবালায় মৃতপ্রায় ইসলামকে পুনর্জীবিত করার জন্য সাইয়্যেদুশ শুহাদা ইমাম হোসাইন (আ.) এবং তাঁর সাথিদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। মহানবী (সা.) এর ওফাতের ৫০ বছরের মাথায় তাঁরই একদল বিপথগামী উম্মতের দ্বারা তাঁর পরিবারের ওপর এধরনের নৃশংস হত্যাকা-ের কারণ কী এবং কারা এর জন্য দায়ী তিনি তা ব্যাখ্যা করেন।
জনাব আবু জাফর মন্ডল তাঁর বক্তৃতায় পবিত্র আশুরায় ইমাম হোসাইনের আধ্যাত্মিক বিপ্লবের চিত্র তুলে ধরেন।
ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন থানায় ‘আশুরার তাৎপর্য ও দোয়া মাহফিল’ শীর্ষক আলোচনা সভা
গত ১ অক্টোবর ২০১৭ বোরহান উদ্দিন পিরগঞ্জ সংলগ্ন খানকায়ে দারুস্ সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসায় ‘ইমাম মাহদী (আ.) একাডেমী’র উদ্যোগে হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শাহাদাত দিবস উপলক্ষে ‘আশুরার তাৎপর্য ও দোয়া মাহফিল’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান আরম্ভ হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাটামারার পীর সাহেব আলহাজ্জ হযরত মাওলানা মুহিবুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, সিনিয়র শিক্ষক, খানকায়ে বশিরিয়া দারুস্ সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসা, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাফেজ ওয়াহিদর রহমান। তাছাড়া বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ উক্ত দাখিল ও হাফেজি মাদ্রাসার শিক্ষার্থিগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্জ হযরত মাওলানা মুহিবুল্লাহ বলেন, আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অত্যন্ত প্রিয় দৌহিত্র, বেহেস্তের যুবকদের সর্দার, হযরত ফাতিমা (রা.)-এর সন্তান হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এবং নবী পরিবারের সদস্যগণকে ইয়াযীদ বাহিনী ৬১ হিজরির এ দিনে অত্যন্ত নির্মম ও অন্যায়ভাবে শহীদ করে। হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেন নি বলেই তাঁকে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছে। এ হত্যাকা- সংগঠিত করার জন্য ইয়াযীদ, ইয়াযীদ বাহিনী এবং তাদের নেপথ্যে যারা ইন্ধন জুগিয়েছে তারা সকলেই অপরাধী। কোন অমুসলিমের হাতে ইমাম হোসাইন শহীদ হন নি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা সকলেই নামে মুসলমান ছিল। ইমাম হোসাইনের এ শাহাদাতের মাধ্যমে প্রকৃত ইসলাম স্পষ্ট হয়েছে। তাই ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আদর্শ আমাদের অনুসরণ করা সকলের কর্তব্য। কারবালার এ ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা অর্জন করতে পারি যে, অন্যায়ের কাছে কোন অবস্থাতেই মাথা নত করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তা বলেন, কীভাবে মহানবী (সা.)-এর উম্মতই তাঁর সন্তানকে হত্যা করলÑ এ জিজ্ঞাসা সর্ব যুগের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের। রাসূলের ওফাতের মাত্র ৫০ বছর অতিক্রান্ত হতে না হতেই এ হত্যাকা- চালানো হয়। এ হত্যাকা- ঘটিয়েছিল রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মত, যারা রাসূল (সা.) এবং তাঁর বংশকে ভালবাসে বলে দাবি করত। কারবালায় ইমাম হোসাইনের মহান ও সর্বোচ্চ আত্মত্যাগে আমাদের কান্নাবিজড়িত শোককে শক্তিতে পরিণত করে খুঁজে নিতে হবে ইমাম হোসাইনের শাহাদাতের লক্ষ্যকে, পৌঁছতে হবে তাঁর এ সর্বব্যাপী বীরত্বপূর্ণ বিপ্লবের ময়দানে।
সাতক্ষীরা আল-রাজী পাঠাগারে পবিত্র আশুরা পালন
গত ১ অক্টোবর, ২০১৭ সাতক্ষীরা আল-রাজী পাঠাগারের উদ্যোগে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে এক আলোচনা ও শোকানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আল-রাজী পাঠাগারের পরিচালক মোঃ আতাহার আলী খান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী এ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চিশতিয়া খানকা শরীফের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মোঃ আব্দুল হাকিম।
জনাব মোঃ আতাহার আলী বলেন, আশুরার দিনটি ছিল হক-বাতিল নির্ধারণের দিন। এ দিনে পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ ও তার বাহিনী বেহেশতের যুবকদের সর্দার ইমাম হোসাইন ও তাঁর সাথিদেরকে কারবালার ময়দানে তিন দিনের ক্ষুধার্ত ও পিপাসার্ত অবস্থায় শহীদ করে। তাই মুসলিম জাতি এ দিনে শোক পালন করে।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে ইমাম হোসাইন (আ.) ১০ মুহররম রাতে তাঁর সঙ্গী-সাথিদের একত্র করে যে কথাগুলো বলেছিলেন তা তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথি হাফেজ মাওলানা মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, রাসূল (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতকে মানতে হবে এবং তাঁদেরকে ভালোবাসতে হবে। মহান আল্লাহই তাঁদেরকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন এবং তাঁদেরকে আনুগত্য করা ও ভালোবাসাকে আমাদের জন্য কর্তব্য নির্ধারণ করেছেন। আমাদের পরকালীন মুক্তির জন্য পবিত্র আহলে বাইতকে অনুসরণ করতে হবে।
যশোরের শার্শায় আশুরা পালন
ইমাম মেহেদী (আঃ) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শার্শা থানার বিভিন্ন এলাকায় ১ মুহররম হতে ৯ মুহররম পর্যন্ত শোকানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ১০ মুহররম সকালে শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নাভারন বাজার প্রদক্ষিণ করে উলাশী প্রাইমারি স্কুল প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। আসরের নামাযের পর শোকানুষ্ঠান শুরু হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন জনাব আতিয়ার রহমান, জনাব মোঃ আমীর হামজা, অধ্যাপক মেহেদী হাসান মুরাদ, মাস্টর আয়ূব হোসেন, মাস্টার আনোয়ারুল ইসলাম এবং জনাব ইকবাল হোসেন (শান্তি)।
ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গাদীর দিবস ও মোবাহিলা দিবস উদ্যাপন
১৮ যিলহজ ঈদে গাদীর ও ২৪ যিলহজ ঈদে মোবাহিলা উপলক্ষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও আনজুমানে মুমিনীনে বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সুরেশ্বর দরবার শরীফের পীর আলহাজ খাজা শাহ সুফি সাইয়্যেদ নূরী আখতার হোসেন আহমাদী নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ জনাব শাহ সারওয়ার মুস্তাফা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর জনাব সাইয়্যেদ মূসা হোসেইনী।
জনাব মূসা হোসেইনী বলেন, ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো রয়েছে তার মধ্যে গাদীরে খুম ও মোবাহিলার ঘটনা উল্লেখযোগ্য। আর এ দুটি ঘটনাই ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ এগুলো মুসলমানদের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন বিদায় হজ সমাপ্ত করে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করছিলেন সেই সময় গাদীরে খুম নামক স্থানে পৌঁছলে জীবরাইল (আ.) মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নিয়ে অবতরণ করেন যেখানে আল্লাহ মহানবী (সা.)-কে সম্বোধন করে বলেন : হে রাসূল! যা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা পৌঁছে দাও, আর যদি তুমি তা না কর, তবে তুমি তার কোন বার্তাই পৌঁছাওনি; এবং আল্লাহ তোমাকে মানুষের অনিষ্ট হতে রক্ষা করবেন; এবং নিশ্চয় আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না।
মহানবী (সা.) গাদীরে খুমে যাত্রা বিরতি করে লোকদের সামনে ঐতিহাসিক বক্তব্য প্রদান করেন এবং হযরত আলী (আ.)-কে তাঁর পরে মুসলমানদের মাওলা বা অভিভাবক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অপর আয়াত নাযিল হয় : ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ধর্ম হিসেবে ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট হলাম।’
গাদীরে খুমে নাযিলকৃত দুটি আয়াত থেকে আমরা এই ঘটনার অপরিসীম গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারি।
অপরদিকে যে ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াত ও ইসলাম ধর্মের সত্যতার পরিচয় বহন করে তা হলো মোবাহিলার ঘটনা। ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত সম্বলিত মহানবী (সা.)-এর পত্র পেয়ে মদীনার নিকটবর্তী নাজরান অঞ্চলের খ্রিস্টানদের একটি প্রতিনিধিদল তাঁর সাথে দেখা করার জন্য মদীনায় আগমন করে। খ্রিস্টান প-িতদের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে যখন তারা কোন যুক্তি মানতে রাজি হচ্ছিল না তখন মহানবী (সা.) তাদেরকে মোবাহিলায় আহ্বান জানান। অর্থাৎ উভয় পক্ষ একটি জায়গায় সমবেত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে যে, যারা মিথ্যাবাদী তাদের ওপর যেন আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হয়। কিন্তু পরবর্তী দিনে খ্রিস্টানরা মহানবী (সা.) ও তাঁর সাথে আগত তাঁর পরিবারের লোকজনের দ্যুতিময় চেহারা এবং মোবাহিলার ব্যাপারে তাঁদের আস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায়। তারা মোবাহিলায় অবতীর্ণ না হয়ে জিজিয়া প্রদানের শর্তে মহানবীর সাথে সন্ধি করে।
জনাব হোসেইনী বলেন, এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় মহানবী (সা.) ও তাঁর আহলে বাইতের জয় ও সত্যের পরিচয় পরিস্ফুট হয়েছে। একই সাথে ইসলাম ধর্ম পৃথিবীর অন্য সকল ধর্মের ওপর বিজয় লাভ করেছে।
জনাব শাহ সারওয়ার মুস্তাফা বলেন, ‘(হে রাসূল!) তুমি বলে দাও, ‘আমি এর (বার্তা প্রচারের) জন্য তোমাদের নিকট হতে আমার পরমাত্মীয়গণের প্রতি ভালোবাসা ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাই না,’Ñ পবিত্র কোরআনের এ আয়াত নাযিল হলে সাহাবিগণ রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, কাদেরকে ভালোবাসতে হবে। রাসূল (সা.) জবাব দেন, ‘আমার আহলে বাইতকে।’ সূরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াতের মাধ্যমে মহানবীর আহলে বাইতকে নিষ্পাপ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আর হাদীসে সাকালাইনের মাধ্যমে আহলে বাইতকে আঁকড়ে ধরার জন্য মহানবী (সা.) আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
এই আহলে বাইতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হযরত আলী ইবনে আবি তালিবের মাওলা হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার ঘটনাই হলো গাদীরে খুমের ঘটনা। মহানবী (সা.) হযরত আলীর হাত উঁচু করে ধরে ঘোষণা করেন : ‘আমি যার মাওলা, এই আলী তার মাওলা…।’ এই ঘোষণার পর সাহাবীরা হযরত আলীকে অভিনন্দন জানান।
তিনি আরো বলেন, মোবাহিলা বিষয়ে পবিত্র কোরআনের যে আয়াত নাযিল হয় তা হলো : ‘… এস, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের, আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদের, এবং আমাদের সত্তাদের এবং তোমাদের সত্তাদের; অতঃপর সকলে মিলে (আল্লাহর দরবারে) নিবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষণ করি।
মহানবী (সা.) হযরত আলী, হযরত ফাতেমা, ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনকে সাথে নিয়ে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে মোবাহিলায় অংশগ্রহণের জন্য উপস্থিত হন। আয়াতের ভাষ্য অনুযায়ী সন্তান হিসেবে ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনকে, নারী হিসেবে হযরত ফাতেমাকে ও নিজ সত্তা হিসেবে হযরত আলীকে সাথে নেন। এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এর মাধ্যমে মহানবী (সা.) আহলে বাইতের পরিচয় আমাদের সামনে সুন্দরভাবে তুলে ধরেন।
জনাব সাইয়্যেদ নূরী আখতার হোসেন বলেন, গাদীরে খুমে লক্ষাধিক সাহাবীর সামনে রাসূলুল্লাহ (সা.) হযরত আলীকে মুসলমানদের মাওলা হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি সবসময় আহলে বাইতকে ভালোবাসা ও তাঁদেরকে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাঁর সেই আদেশকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। হযরত আলীকে শহীদ করা হয়েছে। মহানবীর প্রাণপ্রিয় নাতি বেহেশতে যুবকদের সর্দারদ্বয় ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনকে শহীদ করা হয়েছে। আমাদেরকে এসব ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আমাদের উচিত মহানবী (সা.)-এর এই হাদিসটি সবসময় স্মরণ রাখাÑ ‘আমি তোমাদের মধ্যে দুটি ভারী জিনিস রেখে যাচ্ছি যা আঁকড়ে ধরলে তোমার কখনই পথভ্রষ্ট হবে না : একটি আল্লাহর কিতাব, অন্যটি আহলে বাইত’। আমাদের দায়িত্ব হলো যারা রাসূলের হাদিসসমূহকে অস্বীকার করতে চায় তাদের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দেয়া এবং সকলের মধ্যে আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসাকে ছড়িয়ে দেয়া।
অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জনাব শামীম রেযা। স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন কবি আমিন আল আসাদ ও কাসিদা পরিবেশন করেন জনাব মেহেদী হাসান ও নাজিম হোসাইন।
যশোরে ঈদে গাদীর উদ্যাপন
গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, (১৮ যিলহজ) যশোরে আলী আসগার স্মৃতি সংঘ পাঠাগারের উদ্যোগে যশোর জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামে ঈদে গাদীর দিবস উদ্যাপিত হয়। ইনকিলাবে মাহদী মিশনের প্রতিষ্ঠাতা জনাব মল্লিক আব্দুর রউফে সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খালীল রাজাভী। বিশেষ বক্তাদের মধ্যে ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়্যদ হাবীব রেজা হুসাইনী, হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়্যদ এহসান হুসাইন হুসাইনী, মোঃ ফিরোজ খান, ঐতিহাসিক মুড়লী ইমাম বাড়ীর পেশ ইমাম জনাব ইকবাল হুসাইন ও ইনকিলাব-এ-মাহদী মিশনের পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তাগণ বলেন, ঈদে গাদীর মহান আল্লাহর পক্ষ হতে একটি পবিত্র ও মহিমান্বিত দিবস। এই দিনে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) হযরত আলী (আ.)-কে বেলায়াতের স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে খতমে নবুওয়তের পর ইমামতের পরিচিতি প্রদান করেন।
হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ইমাম আলী (আ.) থেকে শুরু করে আল্লাহর পক্ষ থেকে শেষ প্রতিনিধি হযরত ইমাম মাহদী (আ.) পর্যন্ত প্রত্যেক ইমামের নেতৃত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে বর্ণনা করেন। গাদীর দিবসকে গুরত্ব না দেবার কারণেই বিশ্বের মানব সম্প্রদায় আজ সাম্রাজ্যবাদী ও বিশ্ব লুটেরাদের হাতে জিম্মি এবং বিশেষ করে মুসলিম জাতির দলে দলে বিভক্তি ও অনৈক্যের কারণই হচ্ছে গাদীর দিবসকে মূল্যায়ন না করা।
অনুষ্ঠানে হাম্দ, নাত, কবিতা আবৃত্তি ও গজল পরিবেশন করা হয়।
যশোরের শার্শায় ঈদে গাদীর উদ্যাপন
১৮ই যিলহজ ঈদে গাদীর উপলক্ষে যশোরের শার্শা থানার উলাশী শিয়া মসজিদ প্রাঙ্গনে ইমাম মেহেদী (আঃ) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডাঃ আলতাফ হোসেন, মেহেদী হাসান মুরাদ। জনাব ইকবাল হোসেন (শান্তি) হযরত আলীর অভিষেকের ঘটনার ওপর বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দিবসে হযরত আলীর অনন্য মর্যাদা তাঁর সাহাবীদের সামনে তুলে ধরেন।