শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

সংবাদ

পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ১৯, ২০২০ 

১ ক্ষমার অযোগ্য মহাপাপ করেছে ফরাসি ম্যাগাজিন : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা
সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মাদ (স.)-কে অবমাননার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।
তিনি গত ৮ সেপ্টেম্বর এক বার্তায় বলেছেন, পবিত্র ও নুরানি ব্যক্তিত্ব মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে অবমাননা করে ক্ষমার অযোগ্য মহাপাপ করেছে ফরাসি পত্রিকা। তাদের এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম জাতির সঙ্গে পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হিংসা-বিদ্বেষের বিষয়টি আবারও ¯পষ্ট হয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেছেন, বাক্ স্বাধীনতার অজুহাত দেখিয়ে ফ্রান্সের কোনো কোনো রাজনীতিবিদ এই মহা অপরাধের নিন্দা পর্যন্ত জানাননি। তাদের এই অজুহাত অগ্রহণযোগ্য ও ভুল। এর মাধ্যমে তারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, ইহুদিবাদী গোষ্ঠী ও সাম্রাজ্যবাদী সরকারগুলোর ইসলামবিরোধী কঠোর নীতির কারণে মাঝে মধ্যেই এ ধরনের বিদ্বেষী ঘটনা ঘটছে। পশ্চিম এশিয়াকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদীদের অশুভ পরিকল্পনা থেকে এই অঞ্চলের বিভিন্ন জাতি ও সরকারগুলোর দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেও এই সময়টাকে মহানবী (স.)-কে অবমাননার জন্য বেছে নেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি জানান।
তিনি গোটা বিশ্বের মুসলমান বিশেষকরে পশ্চিম এশিয়ার মুসলমানদের উদ্দেশে বলেন, ¯পর্শকাতর এই অঞ্চলের ইস্যুগুলোর বিষয়ে আপনাদেরকে সদা সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। একই সঙ্গে পবিত্র ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের বিষয়ে পাশ্চাত্যের রাজনীতিবিদ ও নেতাদের শত্রুতার বিষয়টিও কখনোই ভুলে যাওয়া যাবে না।
সম্প্রতি সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (স.)-কে নিয়ে আবারও ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশ করেছে বিতর্কিত ফরাসি ম্যাগাজিন শার্লি এবদো। হযরত মুহাম্মাদ (স.)-কে নিয়ে ২০১৫ সালের কার্টুনগুলোই আবার প্রকাশ করে তারা।

২ মহানবী (স.)-কে অবমাননা; ইরানজুড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত
সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মাদ (স.)-কে অবমাননার প্রতিবাদে গত ১০ সেপ্টেম্বর ইরানজুড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ফার্স প্রদেশের শিরাজ শহরের প্রতিবাদ সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
প্রধান সমাবেশে ফার্স প্রদেশের গভর্নর ও শহরের প্রধান জুমার নামাজের ইমামসহ শীর্ষ কর্মকর্তারাও অংশ নেন। এ সময় তাঁরা ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিভেন্ন ¯ে¬াগান দেন।
তাঁদের প্রায় সবার হাতে ছিল নানা ধরণের পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড। কোনো কোনো পোস্টার ও প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘হে রাসূল (স.)! আপনাকে ভালোবাসি, আপনার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি’। বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক নারীও ছিলেন।
ইরানের অন্যান্য শহরেও একই ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। কয়েক দিন ধরে মহানবী (স.)-কে অবমাননার বিরুদ্ধে ইরানে ব্যাপক প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়।
৯ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে ফ্রান্সের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন অসংখ্য মানুষ। তাঁরা অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে ফ্রান্স সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। ফরাসি দূতাবাস ঘেরাও করে তাঁরা ইসলামবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ¯ে¬াগান দেন এবং বিশ্বনবী (স.)-এর প্রতি নিজেদের ভালোবাসা প্রকাশ করেন।
এছাড়া গতকাল মাশহাদ ও কোমেও বিক্ষোভ হয়েছে। মাশহাদ শহরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একদল মানুষ শহরে সমবেত হন এবং ফরাসি ম্যাগাজিন শার্লি এবদোতে মহানবী (স.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন ¯ে¬াগান দেন। এ সময় তারা এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধে জোরালো পদক্ষেপের আহ্বান জানান এবং বিশ্বের সব মুসলমানকে সোচ্চার হতে বলেন।
একই ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশ হয় ইরানের কোম নগরীতে। সেখানে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় তাঁদের হাতে শোভা পাচ্ছিল বিভিন্ন পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড। কোনো কোনো প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘আমি মুহাম্মাদ (স.)-কে ভালোবাসি’।
ইরানের ইসলামি তাবলিগাত সংস্থার সমন্বয় বিষয়ক পরিষদের উপ-প্রধান নুসরাতুল্লাহ লুতফি বলেছেন, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ উজমা খামেনেয়ী ফরাসি ম্যাগাজিনের ন্যক্কারজনক পদক্ষেপের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার পর দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সংস্থা বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।
মানুষ সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

২ ক। ইরানে পালিত হচ্ছে পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইরাকের সাদ্দাম সরকারের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ শুরুর বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে এক সপ্তাহ ধরে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। ১৯৮০ সালের এই দিনে হামলা শুরু করে সাদ্দাম বাহিনী।
এই এক সপ্তাহকে বলা হয় ‘ইসলামি প্রতিরক্ষা সপ্তাহ’। ইরাকের তৎকালীন সাদ্দাম সরকারের চাপিয়ে দেয়া আট বছরের যুদ্ধের বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরই ইরানে প্রতিরক্ষা সপ্তাহ পালিত হয়। ১৯৮০ সালের ওই যুদ্ধকে ইরানে ‘পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ’ বলা হয়।
ইরানে আগ্রাসন চালিয়ে তৎকালীন ইরাকি শাসক সাদ্দাম ঘোষণা করেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি ইরানের রাজধানী তেহরানে বসে চা পান করবেন। ইরানে তার এক বছর আগে ইসলামি বিপ্লব হয়েছিল বলে সাদ্দাম সরকারের ধারণা ছিল, ইরানের সদ্য প্রতিষ্ঠিত ইসলামি সরকার ইরাকের মতো সুসজ্জিত একটি সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করতে পারবে না।
কিন্তু বাস্তবে ইরাকি বাহিনী পাশ্চাত্য ও আরব দেশগুলোর সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া সত্ত্বেও ইরানকে পরাজিত করতে বা ইরানের এক ইঞ্চি ভূমিও জবরদখল করে রাখতে পারেনি এবং ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে ওই যুদ্ধ শেষ হয়।

৩ গোটা বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয়ী হয়েছে ইরান : সর্বোচ্চ নেতা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ইরাকের সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দামের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার দেশের চূড়ান্ত বিজয় প্রমাণ করেছে, ইরানের দিকে চোখ তুলে তাকালে আগ্রাসী শক্তিকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হয়। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পবিত্র প্রতিরক্ষা দিবসের অনুষ্ঠান পালন শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রতিরক্ষা যুদ্ধে (ইরাক-ইরান যুদ্ধ) অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের এক সমাবেশে ভাষণ দেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল
উজমা খামেনেয়ী।
পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ‘যখন একটি দেশ আত্মরক্ষার চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে তখন যেকোনো আগ্রাসী শক্তি সেই দেশের দিকে চোখ তুলে তাকাতে দুবার ভাবে। কারণ, ওই শক্তি জানে আগ্রাসন চালালে তাকে চরম মূল্য দিতে হবে।’
ইরানে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পবিত্র প্রতিরক্ষা দিবসের অনুষ্ঠান পালন শুরু হয়। এ উপলক্ষে প্রতিরক্ষা যুদ্ধে (ইরাক-ইরান যুদ্ধ) অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।
ফারসি ১৩৫৯ সালের ৩১ শাহরিভার (১৯৮০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর) ইরাকের তৎকালীন শাসক সাদ্দাম ইরানে আগ্রাসন চালায়। ওই আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট যুদ্ধ আট বছর স্থায়ী হয়। এ উপলক্ষে ইরানে প্রতি বছর ২১ সেপ্টেম্বর থেকে টানা এক সপ্তাহ ধরে ‘পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহ’ পালিত হয়।
ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে দেয়া ভাষণে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর সৃষ্ট ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে অঙ্কুরেই ধ্বংস করে দেয়ার জন্য ইরাকের মাধ্যমে ইরানের ওপর ওই যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। বিশ্বের তৎকালীন দুই পরাশক্তি আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হাতে হাত মিলিয়ে ওই যুদ্ধে ইরাককে সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল। কিন্তু এতসব সত্ত্বেও ওই যুদ্ধে ইরানের নিশ্চিত বিজয় হয়।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী প্রতিরক্ষা যুদ্ধ সম্পর্কে বলেন, আট বছর সারাবিশ্বের সকল শক্তির সম্মিলিত পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে ইরাকের আগ্রাসী বাহিনী ইরানের এক বিঘত ভূমিও দখলে রাখতে পারেনি। ইসলামি বিপ্লবকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে ওই যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হলেও তাদের সে লক্ষ্য তো অর্জিত হয়ই নি, উল্টো ইসলামি বিপ্লব যুদ্ধ শুরুর আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, অথচ এর আগের দুইশ’ বছরে ইরান যে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে তাতেই পরাজিত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইরানের কাজার শাসক এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইরানের পাহলাভি শাসক নিজেদের নিরপেক্ষতা ঘোষণা করেন। কিন্তু তারপরও দুই যুদ্ধেই বিদেশী সেনা ইরানে অনুপ্রবেশ করে ও সাময়িকভাবে এ দেশকে দখল করে নেয়। আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন ও সোভিয়েত সেনারা এই তেহরানে দম্ভের সঙ্গে প্যারেড করেছে। তিনি বলেন, এই যখন ছিল ইরানের অতীতের অবস্থা তখন ইসলামি বিপ্লবের পর ইসলামপ্রিয় যোদ্ধারা তাদের দেশের এক ইঞ্চি ভূমিও বিদেশিদেরকে দখল করতে দেননি।
পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাকেরি, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি উপস্থিত ছিলেন।

 

৩-১ ইরানের মুসলিম নারীদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস

ইরানের সমসাময়িক ইতিহাস প্রতিরক্ষার বিভিন্ন প্রেক্ষাপট, যুদ্ধ, রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে ইরানের ‎মুসলিম নারীদের ব্যাপক ও সক্রিয় উপস্থিতির সাক্ষ্য বহন করছে। এসব নারী তাঁদের আদর্শ এবং ‎বিশ্বাসের জন্য আবেগ-অনুভূতিকে উপেক্ষা করেছে, তারা ইরান-ইরাক যুদ্ধে মৌলিক এবং মূল্যবান ভূমিকা ‎পালন করেছে এবং আশুরার শিক্ষা অনুসরণ করে ‘অবিস্মরণীয়’ মহাকাব্য তৈরি করেছে। ঠিক যেমন ইমাম খোমেইনী (রহ.) তাঁদের ভূমিকা স¤পর্কে বলেছেন : ‘আমরা ইসলামি আন্দোলনের বিজয়ে এই মহান শ্রেণির (ইরানের সম্মানিত নারীদের) জন্য গর্বিত, যাঁরা ইসলামি রাষ্ট্র, কোরআন ও বিপ্লবের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে মূল্যবান ও সাহসী উপস্থিতির মাধ্যমে বিজয় অর্জনে ভূমিকা রেখেছে এবং ইসলামি বিপ্লবের অগ্রভাগ ও ‎পশ্চাত উভয় ক্ষেত্রেই সক্রিয় থাকার পাশাপাশি ত্যাগের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।’
আরোপিত যুদ্ধে শহীদদের তালিকা থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে, শহীদ নারীদের সংখ্যা ৬৪২৮ জন, ‎যার মধ্যে ৫০০ জন ছিলেন স্থলযোদ্ধা এবং তাঁরা যুদ্ধরত অবস্থায় শহীদ হয়েছেন।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের স্থপতির ভাষায়, বিগত অত্যাচারী শাসকের মোকাবেলায় আমাদের সম্মানিত ‎নারীরা বিজয় অর্জন করার পর এহেন পরাশক্তি ও তাদের মিত্রদের মোকাবেলায় প্রতিরোধের ক্ষেত্রে যে দৃঢ়তা ‎এবং সাহসিকতার নজির সৃষ্টি করেছেন সেরূপ দৃষ্টান্ত কোনো যুগের পুরুষদের দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার ‎ইতিহাসেই লিপিবদ্ধ হয়নি।
সমস্ত রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিশেষত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা, ইরানের ‎সমসাময়িক ইসলামি আন্দোলনে এবং বিদেশীদের সাথে দ্বন্দ্বের সমস্ত ক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ‎সক্রিয় ভূমিকা ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

৩-২ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠলেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি শুরু করবে ইরান
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) অ্যারো¯েপস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ বলেছেন, ইরানের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানির দরজা উন্মুক্ত হবে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইরান তার প্রয়োজনীয় অস্ত্রের জন্য বিদেশ থেকে আমদানির ওপর নির্ভর করে না এবং এই খাতে তাঁর দেশ স্বয়ংস¤পূর্ণ।
আমেরিকার অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা স¤পর্কে করা এক প্রশ্নের জবাবে হাজিজাদেহ বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পরিকল্পনা ও কর্মসূচির কোনো পরিবর্তন করা হয়নি এবং আমরা স্বয়ংস¤পূর্ণ। যদি অবরোধ উঠে যায় তাহলে রপ্তানির পথ খুলে যাবে।

৩-৩ তেহরানে প্রতিরক্ষা খাতের অর্জন নিয়ে প্রদর্শনী শুরু
ইরানের প্রতিরক্ষা খাতের বিভিন্ন অর্জনাবলি নিয়ে প্রদর্শনী ‘দ্যা স্যাকরেড ডিফেন্স অ্যাচিভমেন্টস এক্সিবিশন’ শুরু হয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানের স্যাকরেড ডিফেন্স মিউজিয়ামে ইরানি পার্লামেন্টের ¯িপকার মোহাম্মাদ বাঘের গালিবাফ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন করেন।
ইরানের আটটি প্রদেশে একই সাথে এই প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পবিত্র প্রতিরক্ষা খাতের ৫৬টি ম্যাক্রো গবেষণা প্রকল্প উন্মোচন করা হয়। দীর্ঘ ১৩ বছরের নিরবচ্ছিন্ন কর্মকা- শেষে এগুলো উন্মোচন করা হয়।

৩-৪ ইরানে প্রতিরক্ষা ও জাতীয় পর্যটন দিবসে গাড়ি যাত্রায় অংশ নেবেন নারী চালকরা
ইরানের পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহ ও সেই সাথে জাতীয় পর্যটন সপ্তাহ উদ্যাপনে ২৩ সেপ্টেম্বর একটি গাড়ি শোভাযাত্রায় অংশ নেন দেশটির কিছু সংখ্যক নারী গাড়ি চালক। ট্যুরিং অ্যান্ড অটোমোবাইল ক্লাব অব ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের (টিএসিআই) আয়োজনে মাজান্দারান প্রদেশের উত্তরের নামাক আবরুদ গ্রাম ও তেহরানের মধ্যখানে দুদিনব্যাপী এই গাড়ি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশকালে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা হয়। ১৯৬০-৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধের স্মরণে ইরানে প্রতি বছর পবিত্র প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে কয়েকটি কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রতি বছর ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা সপ্তাহ শুরু হয় আর জাতীয় পর্যটন সপ্তাহ শুরু হয় ২৭ সেপ্টেম্বর।

৩-৫ ড্রোন ও মিসাইল প্রযুক্তিতে বিশ্বে শীর্ষ পাঁচে ইরান
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) মহাকাশ বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ বলেছেন, ইরানের প্রতিরক্ষা খাত ইরানি বিশেষজ্ঞদের তৈরি করা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সরঞ্জাম উপভোগ করছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর মহাকাশ বাহিনীর সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন। তিনি বলেন, ইরানের মহাকাশ সেকশন ও এর অর্জনাবলি বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে।
অ্যারো¯েপস ফোর্সের প্রধান আরও বলেন, যখন আমরা মিসাইল, ড্রোন, রাডার উন্নয়ন স¤পর্কে কথা বলি তখন বলতে হয় এগুলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এবং এই ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে আমরা রয়েছি।

৪ আয়াতুল্লাহ তাসখিরির ইন্তেকাল; সর্বোচ্চ নেতার শোক
মাজহাবগত ঐক্য বিষয়ক বিশ্ব সংস্থার সর্বোচ্চ পরিষদের প্রধান আয়াতুল্লাহ মোহাম্মাদ আলী তাসখিরি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তেহরানের একটি হাসপাতালে ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন ৭৬ বছর বয়সী এই বিজ্ঞ আলেম।
তিনি ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে মতপার্থক্য নিরসনে নিরলসভাবে পরিশ্রম করেছেন। এ সংক্রান্ত বহু বইয়ের লেখক তিনি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর মুসলিম বিশ্ব বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বও পালন করে আসছিলেন আয়াতুল্লাহ তাসখিরি।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সর্বোচ্চ নেতা। তিনি এক শোকবার্তায় বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তাঁর দৃঢ় মনোবলের কাছে শারীরিক অক্ষমতাও হার মেনেছিল।

 

৫ আমেরিকার এ ব্যর্থতা জাতিসংঘের ইতিহাসে নজিরবিহীন : ড. রুহানি
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, তাঁর দেশের বিরুদ্ধে আমেরিকা অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পাস করতে যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে জাতিসংঘের ইতিহাসে তা নজিরবিহীন।
ইরানের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কেরমানশাহ, পূর্ব আজারবাইজান ও আরদেবিল প্রদেশে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট রুহানি একথা বলেন। ইরানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
গত ৪ আগস্ট জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকা ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব তোলে এবং তার উপর ভোটাভুটিতে শুধু আমেরিকার পক্ষে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র ভোট দেয়। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানিসহ আমেরিকার সমস্ত মিত্র দেশ এবং রাশিয়া ও চীন ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব পাসে ব্যর্থ হওয়ার আগে জাতিসংঘের ৭০ বছরের ইতিহাসে কখনো ইরানবিরোধী প্রস্তাব পাসের জন্য আমেরিকাকে এদেশ থেকে ওদেশ ঘুরে বেড়াতে হয় নি। কয়েক মাস এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভোটভিক্ষা করেও একটি মাত্র দেশের সমর্থন লাভে সক্ষম হয়েছে ওয়াশিংটন। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার এবং ইরানের জনগণের দৃঢ় অবস্থানের কারণে আমেরিকাকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে।
এই ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে আমেরিকার ইরানবিরোধী সমস্ত স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট রুহানি।

৬ ইরানে পবিত্র আশুরা পালিত; গোটা জাতি শোকাচ্ছন্ন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গত ৩০ আগস্ট কারবালার মর্ম¯পর্শী ঘটনার স্মরণে শোকাবহ আশুরা পালিত হয়েছে। ইরানের সর্বত্রই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে নানা শোকানুষ্ঠান।
সড়কের পাশে ও খোলা স্থানে সমবেত মানুষের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কারবালার ঘটনা বর্ণনা করা হয়। কারবালার বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনা করতে করতে বর্ণনাকারী যেমন কেঁদেছেন তেমনি উপস্থিত জনতাও কান্না করেন ও বুক চাপড়ান।
গোটা জাতিই শোকাচ্ছন্ন। আশুরা উপলক্ষে ইরানে দুই দিন সরকারি ছুটি ছিল। করোনা মহামারির কারণে এবার সীমিত আকারে শোকানুষ্ঠান পালিত হয়।
প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগের আশুরার দিনে ইরাকের কারবালায় বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (স.)-এর প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.) ও তাঁর ৭২ জন সঙ্গী-সাথি সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা সংগ্রামে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। অন্যায়ের কাছে মাথানত না করার কারণেই সেদিন ইমাম হোসাইন (আ.) পাপিষ্ঠ ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। এ কারণে ১০ মহররম বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বেদনাবিধুর দিন। এ ঘটনা শুধু ইসলামের ইতিহাসেরই করুণ ঘটনা নয়, বিশ্ব ইতিহাসেরও সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা।
সত্য ও ন্যায়ের জন্য আত্মত্যাগের মহিমায় গৌরবান্বিত আশুরা আজও মুসলিম হৃদয়ে সংগ্রাম ও ত্যাগের গতি সঞ্চার করে।

৭ যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় সারাদেশে পবিত্র আশুরা পালিত
যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে গত ৩০ আগস্ট বাংলাদেশে পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। সারাবিশ্বের মুসলমানদের কাছে আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ব্যাপক পরিসরে জনসমাবেশের মাধ্যম মুহররমের শোক মিছিল আয়োজন করা হয় নি। এ ব্যাপারে কদিন আগেই পুলিশের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
রাজধানীতে ৩০ আগস্ট সকাল থেকেই পুরান ঢাকার হোসেনি দালান এলাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হয় ধর্ম অনুরাগী নারী-পুরুষগণ। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একজন একজন করে পরীক্ষা করে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়। ইমামবাড়ার ভেতরে সাজানো হয় তাজিয়া।
এ বছর মিছিল করার সুযোগ না থাকলেও কালো পোশাক পড়ে শোকের আচ্ছাদনে কিশোর ও তরুণ-তরুণীরা ইমামবাড়ায় জড়ো হয়। হাতে আলাম নিয়ে তারা মিছিলের জন্য অপেক্ষাও করে। এরপর ইমামবাড়া চত্বরে আশুরার আনুষ্ঠানিকতা পালন করে।
হোসেনি দালানের ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সীমিত পরিসরে কিছু আয়োজন হয়েছে ইমামবাড়ার ভেতরে। ওই দিন সকাল ১০টায় সীমিত পরিসরে তাজিয়া মিছিল ইমামবাড়া চত্বর প্রদক্ষিণ করেছে। এ ছাড়া সেখানে মুহররমের মজলিসও অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় পালিত হয় শোকের অনুষ্ঠান শামে গরিবা।
উল্লেখ্য, হিজরি ৬১ সনের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) ১০ মহররম ইরাকের কুফা নগরের অদূরে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে সঙ্গী-সাথিসহ নির্মমভাবে শহীদ হন মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.)। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইমাম হোসাইন-এর আত্মত্যাগের এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। কারবালার এ শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা যোগায়।
কারবালার শোক ও স্মৃতিকে স্মরণ করে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল বিশেষ মোনাজাত, দোয়া মাহফিল ও কোরানখানি।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে সারা দেশে সরকারি ছুটি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দেন।

৮ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতার প্রসারে ইরান ও রাশিয়ার গুরুত্বারোপ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতা প্রসারে গুরুত্বারোপ করেছে ইরান ও রাশিয়া। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রুশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের প্রধান আলেকজান্দার সারগেয়েভের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হন ইরানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট সোরেনা সাত্তারি। এসময় তারা বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
ভিডিও কনফারেন্সে সাত্তারি বলেন, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দুদেশের বিস্তৃত ও গভীর স¤পর্ক রয়েছে। একইভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে এই মাত্রার স¤পর্ক অর্জন করা প্রয়োজন।
সাত্তারি বলেন, প্রাচীন প্রতিবেশী দেশ হিসেবে রাশিয়া অসংখ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতা সক্ষমতা ভোগ করে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশেষত অত্যাধুনিক ফার্মাসিউটিক্যাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে মাঠ প্রস্তুত রয়েছে।

৯ ড্রোন ও মিসাইল প্রযুক্তিতে বিশ্বে শীর্ষ পাঁচে ইরান
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) মহাকাশ বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ বলেছেন, ইরানের প্রতিরক্ষা খাত ইরানি বিশেষজ্ঞদের তৈরি করা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সরঞ্জাম উপভোগ করছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ মহাকাশ বাহিনীর সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন। তিনি বলেন, ইরানের মহাকাশ সেকশন ও এর অর্জনাবলি বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে।
অ্যারো¯েপস ফোর্সের প্রধান আরও বলেন, যখন আমরা মিসাইল, ড্রোন, রাডার উন্নয়ন স¤পর্কে কথা বলি তখন বলতে হয় এগুলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এবং এই ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে আমরা রয়েছি।

১০ ইরানের পার্স-১ স্যাটেলাইটের চূড়ান্ত পরীক্ষা স¤পন্ন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের তৈরি স্যাটেলাইট ‘পার্স-১’ এর নির্মাণ শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা সাফল্যের সঙ্গে স¤পন্ন হয়েছে। ইরানি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে উন্নত প্রযুক্তির স্যাটেলাইটটির চূড়ান্ত পরীক্ষা স¤পন্ন হয়। আগামী সপ্তাহে ইরানের মহাকাশ সংস্থাকে এটি সরবরাহ করা হবে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ইরানের তথ্য ও প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ অযারি জাহরোমি এ তথ্য জানিয়েছেন। একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধনীতে তিনি এই ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘পার্স-১’ হচ্ছে ইরানের তৈরি এযাবতকালের সবচেয়ে উন্নত কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট। ইরানি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে এটির চূড়ান্ত পরীক্ষা সফলভাবে স¤পন্ন হয়। এই স্যাটেলাইট রাতেও ছবি তুলে তা প্রেরণ করতে পারবে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্ব শেষ হওয়ায় এখন তা আগামী সপ্তাহে জাতীয় মহাকাশ সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপরই উৎক্ষেপণের লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু হবে।

১১ ডুয়াল-ফুয়েল লোকোমোটিভ ইঞ্জিন উন্মোচন করলো ইরান
প্রথম ডুয়াল-ফুয়েল লোকোমোটিভ ইঞ্জিন উন্মোচন করলো ইরান। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনটির উদ্বোধন করে ইরান হেভি ডিজেল ম্যানুফেকচারিং কো¤পানি (ডিইএসএ)। পরিবহন ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের পোর্টালে এই তথ্য জানানো হয়।
৪ হাজার-হর্সপাওয়ারের হেভি ইঞ্জিন উন্মোচন অনুষ্ঠানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান রেলওয়ের (যা আরএআই নামে পরিচিত) প্রধান সাইদ রাসুলি যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে রাসুলি বলেন, বিগত কিছু বছর দেশের রেলওয়ের পরিমাণগত এবং গুণগত বিকাশ ব্যাপকতর হয়েছে। কেরমানশাহ, হামেদান, উরমিয়া, ও গিলানসহ কয়েকটি প্রদেশ দেশের রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় তহবিল সরবরাহ করলে আরআইএ বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে এক হাজার কিলোমিটার নতুন রেলপথ চালু করতে সক্ষম হবে।
এই কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, এই ধরনের ইঞ্জিনের উৎপাদন দেশের রেল শিল্পের জন্য উল্লেখযোগ্য সফলতা এবং এটা এই শিল্পের বিদেশি উৎসের ওপর নির্ভরতা কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

১২ করোনা রোগী শনাক্তে নতুন যন্ত্র আবিষ্কার করল ইরান
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করতে নতুন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। এই যন্ত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মানবদেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে।
ইরানের তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গত ২৪ আগস্ট তেহরানে ন্যানোটেকনোলজি হেডকোয়ার্টার্সে এই যন্ত্র উদ্বোধন করেছেন। এটি মূলত মানুষের থুথু ও কফ সংগ্রহ করে সেটাকে নমুনা হিসেবে ব্যবহার করে।
যন্ত্রটি আবিষ্কারের সঙ্গে জড়িত গবেষকরা জানিয়েছেন, থুথু ও কফে অক্সিজেনের ক্ষুদ্র মলিকিউলের উপস্থিতির মাত্রা নির্ণয়ের মাধ্যমে যন্ত্রটি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি স¤পর্কে সংকেত দিতে পারে।
এরই মধ্যে ইমাম খোমেইনী (রহ.) হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে ছয়শ’ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে এই যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষার কাজ স¤পন্ন করা হয়েছে। এতে যন্ত্রটির কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে এবং ইরানের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বাণিজ্যিকভাবে এই যন্ত্র তৈরির অনুমোদন দিয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করার পাশাপাশি অ্যাজমা ও টিবি রোগে আক্রান্তদের শনাক্ত করতেও এই যন্ত্র কার্যকরী বলে গবেষকদল জানিয়েছে। এই যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে করোনা রোগী শনাক্তের কাজ আরও সহজ হবে বলে তাঁরা দাবি করেছেন।

১৩ করোনা চিকিৎসায় ইরানে তৈরি ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ ১০ দেশে রপ্তানি
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ইরানে তৈরি ওষুধ রেমডেসিভির বিশ্বের ১০টি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। ইরানের হাসপাতালগুলোতেও কোভিড-১৯ রোগীদের এই ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
ইরানের একটোভেরকো ফার্মাসিউটিক্যাল কো¤পানির নির্বাহী পরিচালক রেজা মোস্তাফি এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ইরান প্রেসকে বলেছেন, গতমাসে ইরানের হাসপাতালগুলোতে রেমডেসিভির ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে এবং করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এটি কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, রেমডেসিভির করোনা রোগ চিকিৎসার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নয় তবে এটা যদি সঠিক সময়ে প্রয়োগ করা যায় তাহলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ রোগীরা সুস্থ হয় উঠেন।
রেজা মোস্তাফি জানান, ইরানে তৈরি রেমডেসিভির ওষুধের দাম ধরা হয়েছে প্রায় ছয় লাখ তুমান যা অন্য দেশে তৈরি একই ওষুধের চেয়ে বেশ সস্তা।
ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাঈদ নামাকি গত ১৫ জুলাই জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ইরান রেমডেসিভির ওষধু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত রোগীকে স¤পূর্ণ সুস্থ করে দিতে পারে এখন পর্যন্ত এমন নির্ভরযোগ্য কোনো ওষুধ বিশ্বে তৈরি হয়নি। তবে আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে করোনার চিকিৎসার জন্য রেমডেসিভির প্রয়োগ করা হচ্ছে।

১৪। ৪৫ দেশে ন্যানোপণ্য রপ্তানি করছে ইরান
ইরান বর্তমানে বিশ্বের ৪৫টির বেশি দেশে ন্যানোপণ্য রপ্তানি করছে। ন্যানোপ্রযুক্তি পণ্যের ডাটাবেজে প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
২২ জুলাই হতে ইরানের ৩০টি ইরানি কো¤পানি ৬৮৪টি ন্যানোপণ্য উৎপাদন করছে। এর মধ্যে ২৫৯টি পণ্যের ন্যানোস্কেল ছাড়পত্র রয়েছে।
৬৮৪টি ন্যানোপণের মধ্যে ২১৫টি সাজ-সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট এবং ৪৬৯টি মালামাল সংশ্লিষ্ট। এসব পণ্য অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোসহ ৪৫টির অধিক দেশে রপ্তানি করা হয়। ইরানে বিগত সাত বছরে ন্যানোপণ্যের সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি প্রবণতা দেখা গেছে।

১৫ ইরানের সিমেন্ট রপ্তানিতে আয় ১২৮ মিলিয়ন ডলার
চলতি ফারসি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (২০ মার্চ থেকে ২১ আগস্ট) ইরান ৫ দশমিক ৮৪৭ মিলিয়ন টন সিমেন্ট রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি থেকে দেশটির আয় হয়েছে ১২৭ দশমিক ৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের শুল্ক প্রশাসন (আইআরআইসিএ) এই তথ্য জানিয়েছে।
উল্লিখিত পাঁচ মাসে ইরানি সিমেন্টের প্রধান প্রধান আমদানিকারক দেশ ছিল ভারত, আফগানিস্তান, রাশিয়া, ইরাক, কাতার, কেনিয়া, কুয়েত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আর্মেনিয়া, তুর্কমেনিস্তান, কাজাখস্তান, আজারবাইজান, বাংলাদেশ, চীন এবং ওমান। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি সিমেন্ট আমদানি করেছে ইরাক, কুয়েত ও আফগানিস্তান।
ইরানে বছরে ৮৫ মিলিয়ন টন সিমেন্ট উৎপাদিত হয় এবং দেশটির অভ্যন্তরীণ চাহিদা ৬৫ মিলিয়ন টন। ইরান বর্তমানে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম সিমেন্ট উৎপাদক দেশ। গত বছর দেশটি ৭ বিলিয়ন ডলারের নির্মাণ সামগ্রী রপ্তানি করেছে।

১৬ ইরানে প্রতিস্থাপন ওষুধ উৎপাদনে ২০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয়
ইরানের একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কো¤পানি অঙ্গ প্রতিস্থাপনে প্রয়োজন এমন একটি ওষুধ দেশীয়ভাবে উৎপাদন করে বছরে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক সাশ্রয় করতে সফল হয়েছে। সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্সি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আইমনোরাল নামের দেশীয় ওষুধটি অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৯৫ শতাংশ পূরণ করে। অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা রোগীদের ওষুধটি সেবন করার জন্য লেখা হয়। রোগীর শরীর যাতে প্রতিস্থাপিত অঙ্গ প্রত্যাখ্যান না করে সেজন্য এটি শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে দমন করে রাখতে পারে।
আইমনোরালের ২৫, ৫০ ও ১০০ গ্রামের তিনটি ডোজ রয়েছে। বছরে ওষুধটির উৎপাদন ও বিক্রয় মূল্য বছরে বিলিয়ন রিয়াল। একই ধরনের বিদেশি নমুনার তুলনায় এটি ৪০ শতাংশ সস্তা। অন্যদিকে. কয়েকটি পরীক্ষায় ওষুধটির উচ্চ মানের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

১৭ ভেনিজুয়েলায় পৌঁছেছে ইরানের তরলীকৃত গ্যাসবাহী জাহাজ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান থেকে প্রথমবারের মতো একটি কার্গো জাহাজে করে তরলীকৃত গ্যাস নেয়া হয়েছে ভেনিজুয়েলায়। এরই মধ্যে কার্গো জাহাজ থেকে এই গ্যাস ভেনিজুয়েলার পোর্টো হোসে বন্দরে খালাস করা হয়েছে।
শনিবার থেকে জাহাজটিতে গ্যাস খালাস করা শুরু হয়। ইরানের সাউথ পার্স গ্যাসক্ষেত্র থেকে এ জাহাজে প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল তরলীকৃত গ্যাস ভেনিজুয়েলায় নেয়া হয়।
এই প্রথম ইরান ও ভেনিজুয়েলার মধ্যে গ্যাস লেনদেনের ঘটনা ঘটলো। এর আগে ইরান থেকে অন্তত পাঁচটি জাহাজে করে জ্বালানি তেল নেয়া হয়েছে ভেনিজুয়েলায়।
ইরান থেকে ভেনিজুয়েলায় জ্বালানি তেল রপ্তানি করা হয়েছিল গত মে এবং জুন মাসের মধ্যে। এরপর এই গ্যাস রপ্তানি করা হলো। জ্বালানি তেল রপ্তানি সময় আমেরিকা ইরানি জাহাজ আটক কিংবা ওই জাহাজে হামলার হুমকি দিয়েছিল।
ইরান সমস্ত হুমকি উপেক্ষা করে তেল রপ্তানি অব্যাহত রাখে। শুধু তাই নয়- ইরান তখন প্রস্তুতি নিয়েছিল যে, আমেরিকা যদি ইরানি জাহাজ আটক করে তাহলে ইরানও পারস্য উপসাগরে মার্কিন জাহাজ আটক করবে।

১৮ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের নিবন্ধন তালিকায় দশম ইরান
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের নিবন্ধন তালিকায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থান থাকার দিক দিয়ে দশম স্থানে রয়েছে ইরান।
ইরানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, হস্তশিল্প, ও পর্যটন সংস্থার বিশ্ব ঐতিহ্য বিষয়ক দপ্তরের পরিচালক ফারহাদ আজিজি বলেন, ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থান থাকার সংখ্যার দিক দিয়ে ইরান দশম স্থানে রয়েছে। দেশের পর্যটনের উন্নয়নে এই অবস্থানের অগ্রগতিকরণ খুবই কার্যকর হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের আগে দেশটিতে ইউনেসকোর তালিকাভুক্ত মাত্র তিনটি স্মৃতিস্তম্ভ ছিল। এগুলো হলো পারসেপোলিস, নাকশ-ই জাহান স্কয়ার ও চোঘাজানবিল। কিন্তু আজকে ঐতিহাসিক এসব স্থানের এই সংখ্যা বেড়ে ২৪টিতে দাঁড়িয়েছে।
১৯ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বিদায়ী সংবর্ধনা
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ডেপুটি কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ মাহদী হোসেইনী ফায়েকের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ড. মাহদী ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইরানে ফিরে যান।
অনুষ্ঠানে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাত বলেন, যাঁরা দেশের বাইরে কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেন তাঁদের একটি সময়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে হয়। এটিই নিয়ম। ড. মাহদীও তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সাথে স¤পাদন করে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। আমরা তাঁর সাফল্য কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা একটি ফুটবল দলের মতো যেখানে দলীয়ভাবে সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। প্রত্যেকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের পরিচয় দিলেই দলীয় সাফল্য অর্জিত হয়। একজনের ব্যর্থতায় পুরো দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক্ষেত্রে কাজের মধ্যে বড়-ছোট কোনো ভেদ নেই।
অনুষ্ঠানে ইরান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল আব্দুল কুদ্দুস বাদশা বলেন, দুটি বছর যেন খুব দ্রুতই চলে গেছে। ড. মাহদী যখন বাংলাদেশে আসেন তখন থেকেই বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করে তাঁকে কাজ করতে হয়েছে এবং তিনি দক্ষতার সাথে সবকিছুকে মোকাবিলা করেছেন। ঢাকাস্থ ইরান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কর্মকা-ে সময় ব্যয় করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। বয়সের তুলনায় তাঁকে অনেক অভিজ্ঞ মনে হয়েছে। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে আমাদেরকে সাহায্য ও পরিচালনা করেছেন। অধিকাংশ সময় কালচারাল কাউন্সেলরের অনুপস্থিতিতে তাঁকে গুরুদায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। আমরা তাঁর সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করছি।
ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের চলচ্চিত্র ও জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, যে কোনো বিদায়ই অনেক কষ্টের। আজও আমাদেরকে ভারাক্রান্ত মনে ড. মাহদী হোসেইনীকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। তিনি একজন দক্ষ ও সক্রিয় কর্মকর্তা ছিলেন যিনি নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সফলভাবে কর্মতৎপরতা চালিয়েছেন। আমরা তাঁর প্রতি আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সবশেষে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর ড. হাসান সেহাত ড. মাহদী হোসেইনীর হাতে বিদায়ী সম্মাননা তুলে দেন। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে তাঁকে একটি স্মারক উপহার প্রদান করা হয়।অনুষ্ঠানে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মিগণ উপস্থিত ছিলেন।

২০ রসায়নবিদ রাজির স্মরণে ইরানে ফার্মাসিউটিক্যাল দিবস উদ্যাপন
পার্সিয়ান চিকিৎসক এবং দার্শনিক আবু বকর মোহাম্মাদ ইবন যাকারিয়া আল-রাজির স্মরণে ২৬ আগস্ট ইরানে ফার্মাসিউটিক্যাল দিবস উদযাপিত হয়েছে। এদিন তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর সম্মানে জন্মদিবসে ফার্মাসিউটিক্যাল দিবস পালন করা হয়।
রাজি ৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি চিকিৎসাবিদ্যা, আল-কেমি, পদার্থবিদ্যা এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ১৮৪টিরও বেশি বই লিখেছেন। তিনি সালফিউরিক এসিড আবিষ্কার করেন। তিনি ইথানল উৎপাদন, বিশোধন ও চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি বহু দেশ ভ্রমণ করেন।
তিনি বিশ্বের সেরা মনীষীদের একজন। একই সাথে তিনি চিকিৎসক, চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক ও রসায়নবিদ হিসেবে খ্যাতিমান। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের মুসলিম জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসক। জ্ঞানরাজ্যের অন্যান্য শাখাতেও তিনি অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
আল-রাজি রসায়নশাস্ত্রে অনেক নতুন বিষয় প্রবর্তন করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতীক চিহ্ন অন্যতম। তাঁকে বর্তমান রসায়নশাস্ত্রের অন্যতম প্রবর্তক হিসেবে অভিহিত করা যায়। চিকিৎসাশাস্ত্রে তিনি বহু বই লিখেন। জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যামিতির ওপরও তিনি বই লিখেন। বল-বিজ্ঞানে ওজন স¤পর্কিত তাঁর একটি বইয়ের খোঁজ পাওয়া যায়, যার নাম মিজান তাবিই। পদার্থ ও আলোকবিজ্ঞান স¤পর্কেও তিনি বই লিখেন, যার অনেকগুলোই বিলুপ্ত।
আল-রাজির পুরো নাম আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি। তবে তিনি আল-রাজি বা আর-রাজি নামে বেশি পরিচিত। পশ্চিমা বিশ্বে তিনি জযধুবং বা জধংরং নামে পরিচিত। তাঁর জন্ম পারস্যের (ইরান) রেই নগরে, যা বর্তমানে বৃহত্তর তেহরানের অংশ, ৮৬৫ সালে মতান্তরে ৮৬৪ সালে। মৃত্যু ৯২৫ সালে মতান্তরে ৯৩০ সালে।

২১ রেজিস্টেন্স চলচ্চিত্র উৎসবে তিন প্রবীণ ইরানি শিল্পীকে সম্মাননা
ষোড়শ রেজিস্টেন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তিন কিংবদন্তি ইরানি শিল্পীকে সম্মাননা জানানো হয়েছে। উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রবীন শিল্পী জমশিদ হাশেমপুর, জামাল শোরজেহ ও মোহসেন আলি আকবারিকে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
জমশিদ হাশেমপুর তেহরানে ১৯৪৪ সালের ২৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে ‘হোয়াইট হেল’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে।
১৯৮৩ সালে নির্মিত ‘উইক পয়েন্ট’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নজর কাড়তে সক্ষম হন।
জামাল শুরজেহ অন্যতম চলচ্চিত্র নির্মাতা, যার নাম পবিত্র প্রতিরক্ষা ও বিপ্লবের সাথে জড়িয়ে রয়েছে। ইরান-ইরাক দীর্ঘ আট বছরের যুদ্ধে বিজয় শেষে তিনি সবসময় পবিত্র প্রতিরক্ষা নিয়ে সিনেমা নির্মাণের কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
মোহসেন আলি আকবারিও পবিত্র প্রতিরক্ষা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে সর্বদা চিন্তা-ভাবনা করতেন। প্রতিরক্ষা নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।

২২ ইরানের করোনা ভাইরাস কার্টুন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
ইরানের ‘উই ডিফিট করোনাভাইরাস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। তেহরানে ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ে অনুষ্ঠিত কার্টুন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে এসব পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
প্রতিযোগিতায় শীর্ষ পুরস্কার লাভ করেন ইরানি কার্টুনিস্ট আলি রাদমান্দ। ইভেন্টের প্রধান আয়োজক আর্ট ব্যুরোর পরিচালক মোহাম্মাদ মেহদি দাদমানের কাছ থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন।
করোনাভাইরাস মহামারিতে ভ্রমণ বিধিনিষেধ থাকায় অনুষ্ঠানে কোনো বিদেশী বিজয়ী যোগদান করতে পারেননি। তাঁদের কাছে পুরস্কার পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আর্ট ব্যুরোর ভিজুয়াল আর্টস অফিসের পরিচালক মাসুদ শোজায়েই-তাবাতাবাই।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দাদমান বলেন, করোনাভাইরাসের সাথে মানুষ কিভাবে তাদের জীবনযাত্রাকে খাপ খাওয়াতে পারে তা শিখতে শিল্পীদের সাহায্য করা উচিত। কার্টুনের মাধ্যমে জনগণকে করোনাভাইরাসের হুমকি স¤পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন বলে জানান তিনি।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ইরান আর্টস ব্যুরোর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই কার্টুন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয় গত ২৫ আগস্ট। প্রথম পুরস্কার হিসেবে রাদমান্দ দেড় হাজার ইউরো জিতে নিয়েছেন। দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে এক হাজার ইউরো লাভ করেছেন ব্রাজিলের কাউ গোমেজ এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে পাঁচশ ইউরো পেয়েছেন বেলজিয়ামের স্টেফান প্রোফিজন।

২৩ তাজিকিস্তানে ইরানি আলোকচিত্রীর শীর্ষ পুরস্কার লাভ
তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশেনবেতে অনুষ্ঠিত প্রথম সোমোনি আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে শীর্ষ পুরস্কার লাভ করেছে ইরানি আলোকচিত্রী আমিন মাহদাভি ও মেহরজাদ মাকসুদিয়ান। গত ৩০ আগস্ট প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে ফটোগ্রাফিক সোসাইটি অব আমেরিকা (পিএসএ) ও ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল ডি আইআর্ট ফটোগ্রাফিক (এফআইএপি)।
মাহদাভি তাঁর ‘বোল্ড ফটো’র জন্য এফআইএপি স্বর্ণপদক লাভ করেন। তাঁর তোলা ছবিটিতে একজন বালককে কাঁধে করে একটি ছাগলছানা বহন করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এটি তোলা হয়েছে উত্তরাঞ্চলীয় ইরানের পল্লি এলাকা থেকে।
এছাড়া ইরানি আলোকচিত্রী আমির-হোসেইন হোনারভি, মাহমুদ কামেলি, আমির-আলি নাভাদেশাহলা, সৈয়দ মোহাম্মাদ-জাভাদ সাদরি ও মেহদি জাবোলাব্বাসি সম্মানজনক মেনশন লাভ করেন।

২৪ আন্তর্জাতিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম ইরানি কিশোর
চীনে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক এশিয়ান শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতেছে ইরানি কিশোর পারমিয়ান খোসরোবাদি।
১২ বছর বয়সী এই কিশোর উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ইরানের এসফারায়েনের ইন্সটিটিউট ফর দ্যা ইন্টেলেকচুয়াল ডেভেলপমেন্ট অব চিলড্রেন অ্যান্ড ইয়ং অ্যাডাল্টসের একজন সদস্য। চীনের এশীয় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে প্রথম স্থান অধিকার করে।
শান্তির বিষয়বস্তু নিয়ে আয়োজিত শিশু-কিশোরর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাটি চায়না শহর বেনশিতে অনুষ্ঠিত হয়। এশিয়ার শিশুদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও শিল্পগত স¤পর্ক সম্প্রসার এবং ভবিষ্যতে বন্ধুত্ব প্রসারে একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র তৈরি করতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্বের সাতটি দেশের ৪৩৯টি চিত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

২৫ আন্তর্জাতিক গণিত অলি¤িপয়াডে ইরানের ৬ পদক
৬১তম আন্তর্জাতিক গণিত অলি¤িপয়াডে (আইএমও) একটি স্বর্ণ, তিনটি রৌপ্য ও দুটি ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। মোট ১৪৯ নম্বর পেয়ে ১০৭টি দেশের মধ্যে ১৮তম স্থান অধিকার করেছে ইরান।
রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক গণিত অলি¤িপয়াডে পুরস্কার বিজয়ীদের নামের তালিকা গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হয়। ৪২ নম্বরের মধ্যে ৩৩ নম্বর পেয়ে ইরানের পক্ষে একমাত্র স্বর্ণপদকটি পেয়েছেন আলীরেজা হাকি।
ইরানের রৌপ্যপদক জয়ী অন্য তিন প্রতিযোগী হলেন মোহাম্মদ মোশতাকিফার (প্রাপ্ত নম্বর ২৮), কিয়ান শামসাইয়া (২৪ নম্বর) এবং আলী মিরজায়ী আনারি (২৪)। ব্রোঞ্জপদক প্রাপ্তরা হলেন মতিন ইয়াদোল্লাহি (২৩ নম্বর) এবং সাইয়েদ রেজা হোসাইনি দোলাতাবাদি (১৭)। ইরান গণিত দলের নেতৃত্ব দেন মোর্তেজা সাকাফিয়ান। সহকারি কোচ ছিলেন সাইয়েদ হেসাম ফিরোজি।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ১৯৮৫ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক গণিত অলি¤িপয়াডে অংশ নেয়। এ পর্যন্ত ৩৫ বার অলি¤িপয়াডে অংশ নিয়ে ৪৬টি স্বর্ণ, ১০০টি রৌপ্য, ৪৫টি ব্রোঞ্জপদক এবং ৪টি সম্মানসূচক স্বীকৃতি পেয়েছে।

২৬ আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলি¤িপয়াডে ইরানি শিক্ষার্থীদের চার মেডেল
আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলি¤িপয়াডে (আইওআই ২০২০) ইরানের শিক্ষার্থীরা তিনটি স্বর্ণপদক ও একটি রৌপ্যপদক জিতেছে। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীদের এই আন্তর্জাতিক ক¤িপউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার এবারের ৩২তম পর্বে তারা এসব পদক জিতে।
ইরানি শিক্ষার্থী শায়ান পারদিস, আলি সাফারি ও কাসরা মাজাহেরি স্বর্ণপদক জিতেছ এবং আবোলফজল সোলতানি জিতেছে রৌপ্যপদক। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলি¤িপয়াডের এবারের আসরে তারা মোট চারটি পদক ঘরে তোলে।
আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বে চতুর্থ স্থান দখল করে ইরানি দল। প্রতিবেদন মতে, চায়না, আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার দল যথাক্রমে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান লাভ করে।
করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে এবার ৩২তম আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিকস অলি¤িপয়াড ১৩ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ভারচুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।