সংবাদ বিচিত্রা
পোস্ট হয়েছে: জুন ১৩, ২০২০
১ পবিত্র কুরআন বলদর্পীদের ভয় না পাওয়ার শিক্ষা দিয়েছে : সর্বোচ্চ নেতা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আমেরিকাসহ অন্যান্য বলদর্পী শক্তিগুলোকে ভয় না পেতে তাঁর দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পবিত্র কুরআন আমাদেরকে বলদর্পী শক্তিগুলোকে ভয় না পাওয়ার শিক্ষা দিয়েছে।
সর্বোচ্চ নেতা গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে প্রথম রমজানের ইফতারের আগে একটি কুরআন তেলাওয়াতের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে এ আহ্বান জানান। প্রতি বছর এ ধরনের অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থাকলেও এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি সশরীরে উপস্থিত হননি।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, ‘আমেরিকাকে ভয় পেলে তার ফলাফল তিক্ত হয়। বিগত বছরগুলোতে কোনো কোনো মুসলিম দেশের নেতা আমেরিকাকে ভয় পাওয়ার কারণে কঠিন ও জটিল সমস্যার মধ্যে পড়েছেন এবং চরমভাবে অপমানিত হয়েছেন।’ তিনি আমেরিকার মতো দাম্ভিক শক্তির বিরুদ্ধে সাহস ও দৃঢ়তা প্রদর্শনের জন্য ইরানি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে গোটা মুসলিম উম্মাহকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, একমাত্র কুরআনের শিক্ষায় মানবতার জন্য মুক্তি ও কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তিনি বলেন, নিপীড়ন, বৈষম্য, যুদ্ধ, নিরাপত্তাহীনতা ও হতাশাকে দূরে ঠেলে শান্তি, নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য অর্জন করতে হলে পবিত্র কুরআনের আশ্রয় নিতে হবে।এই মহাগ্রন্থ দাম্ভিক শক্তিগুলোকে বিশ্বাস না করার যে আহ্বান জানিয়েছে তা পালন করার জন্য তিনি মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানান।
২ ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রেসিডেন্ট রুহানি
করোনাভাইরাস মোকাবিলার কাজে ব্যবহারের জন্য দেশের জাতীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে ১০০ কোটি ইউরো তোলার অনুমতি দেয়ায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়তুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। একইসঙ্গে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ বাকের নোবাখতকে এই অর্থ স্বাস্থ্যখাতে খরচ করার এবং যতটা সম্ভব অভ্যন্তরীণ কো¤পানিগুলোর কাছ থেকে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার কাজে ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য সরকারকে পার্লামেন্ট বা সর্বোচ্চ নেতার অনুমতি নিতে হয়। করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে পার্লামেন্টের অধিবেশন বন্ধ থাকায় সর্বোচ্চ নেতা গত ৬ এপ্রিল সরকারকে এ অনুমতি প্রদান করেন।
ইরানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মারাত্মক প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পরও দেশটির ওপর আরোপিত অবৈধ ও একতরফা নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে আমেরিকা। এর ফলে ইরানের পক্ষে দেশের বাইরে থেকে নিজের পাওনা অর্থ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে তা সত্ত্বেও ইরানে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, সাধারণ মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, গণহারে স্ক্রিনিংসহ এ সংক্রান্ত সব কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিচ্ছে তেহরান।
৩ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ইরানি জনগণের প্রতি সমবেদনা জানালেন পোপ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন একতরফা অবৈধ নিষেধাজ্ঞা আরোপের সমালোচনা করেছেন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। তিনি করোনা ভাইরাসের মহামারির মধ্যেও ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার জন্য ইরানি জনগণের প্রতি সমবেদনা জানান।
ইরানের ধর্ম বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সংস্থার প্রধান আলী রেজা আরাফি রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। এরপর ভ্যাটিকানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ডিনাল পিত্র প্যারোলিন মার্কিন সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন।
আরাফির চিঠিতে করোনা ভাইরাসের মহামারিতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন মারা যাওয়ায় তাদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সব ধর্মের লোকজনের মধ্যে সহযোগিতার কথা বলেন।
আরাফির এই চিঠির পর ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, চিঠির সামগ্রিক বক্তব্য জানার পর পোপ ফ্রান্সিস ইরানের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
আরাফি তাঁর চিঠিতে ইরানের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভূমিকা রাখার জন্য ভ্যাটিকানের প্রতি আহ্বান জানান। এরপর ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেলি ক্রাফটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়।
৪ ৪২ বছরে পা দিল ইরানের ইসলামি বিপ্লব
ইরানে ইসলামি বিপ্লবের ৪১তম বিজয়-বার্ষিকীর শোভাযাত্রায় দেশটির সর্বস্তরের কোটি কোটি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি আবারও এ মহান বিপ্লবের প্রতি ইরানিদের সমর্থন এবং অবিচল আনুগত্য ও অঙ্গীকারবদ্ধতাকে তুলে ধরে।
১৯৭৯ সালের এই দিনে তথা ১১ ফেব্রুয়ারি মার্কিন মদদপুষ্ট স্বৈরতান্ত্রিক শাহ সরকারের চূড়ান্ত পতনের মধ্য দিয়ে ইরানে প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন রাজতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটে এবং ইসলাম ধর্মভিত্তিক জনগণের শাসন-ব্যবস্থা চালু হয়। সেই থেকে প্রতি বছরই ‘ইয়াওমুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর দিবস’ হিসেবে ঘোষিত এই দিবস পালন করে আসছে ইরানি জাতি। প্রতি বছরের মত এ বছরও ইরানিদের এ দিবসের শোভাযাত্রার প্রধান সেøাগান ছিল ‘ধ্বংস হোক মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ’ ও ‘ধ্বংস হোক ইসরাইল’ এবং ইসলামই বিজয়ী।
ইরানে ইসলামি বিপ্লব প্রথম থেকেই ছিল গণভিত্তিক এবং ৪০ বছর পরও এই ভিত্তি অটুট থাকায় তা এই রাষ্ট্র-ব্যবস্থায় জনগণের অসাধারণ ভূমিকা ও গুরুত্বকে তুলে ধরছে। ইরানি জনগণ সব সময়ই বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহে ও ¯পর্শকাতর সময়ে ময়দানে সক্রিয়ভাবে উপস্থিত থেকেছে। আর এ বিষয়টি এ বিপ্লবের নানা অভাবনীয় সাফল্যের অন্যতম প্রধান রহস্য। বিশ্বের অন্য বিপ্লবগুলোতে জনগণ এভাবে এত ব্যাপক মাত্রায় ও এত দীর্ঘকাল ধরে সক্রিয় উপস্থিতি বজায় রাখেনি।
ইরানের ইসলামি বিপ্লব ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতি ইরানিদের বেশিরভাগ জনগণের অব্যাহত আনুগত্য এবং সমর্থন মার্কিন সরকারগুলোকে আরও বিচলিত ও ক্রুদ্ধ করেছে। ফলে তারা ইরানি জনগণকে সর্বোচ্চ মাত্রায় কষ্ট দিতে ওষুধ ও ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের অমানবিক নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েই তুলেছে। কিন্তু ইরানি জনগণ মার্কিন সরকারের নানা ষড়যন্ত্র ও নজিরবিহীন সর্বোচ্চ চাপ আর নিষেধাজ্ঞাগুলোকেও ব্যর্থ করে দিচ্ছে ইসলামি সরকার ও নেতৃত্বের প্রতি আরও বেশি সংহতি দেখানোর মাধ্যমে। ইরানিদের এই ঐক্যবদ্ধ জাতীয় শক্তির মূল উৎস হল খাঁটি ইসলামি আদর্শ। ফলে ইসলামের এ বিজয় বজায় থাকবে ও তা ইসলামি বিপ্লবের অগ্রযাত্রাকে অদম্য ও দুর্বার করবে বলে নানা লক্ষণ থেকেই ¯পষ্ট।
প্রায় ৪০ দিন আগে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদ্স ব্রিগেডের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি মার্কিন সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ হলে ইরান ও ইরাকসহ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করে। মার্কিন ওই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে সোলাইমানির সঙ্গে শহীদ হয়েছিলেন ইরাকের জনপ্রিয় কমান্ডার আবু মাহদি। সেই থেকে গোটা পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সরকারের প্রতি জনগণের ঘৃণা কয়েক গুণ বেড়েছে। ফলে ¯পষ্ট হল যে মার্কিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসও ইরানি সরকার ও জনগণের ঐক্যকে দুর্বল করতে এবং ইরানের আঞ্চলিক প্রভাবকে দুর্বল করতে ব্যর্থ। তাই পশ্চিম এশিয়া অঞ্চল থেকে পাততাড়ি গোটানো ছাড়া মার্কিনিদের সামনে অন্য কোনো পথ খোলা নেই।
৫ ইরানের ৪১তম বিপ্লব বার্ষিকীতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের অভিনন্দন
ইরানের ৪১তম বিপ্লব বার্ষিকীতে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বার্তায় ইরানের সরকার ও জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এসব দেশের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ইতালি, বেলজিয়াম, ¯েপন, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, কাজাখস্তান, কিরঘিজিস্তান, আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স, ক্রোয়েশিয়া, আফগানিস্তান, লেবানন, ইরাক, থাইল্যান্ড, কাতার, আযারবাইজান প্রজাতন্ত্র, তাজিকিস্তানসহ আরো বহু দেশ।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের একচল্লিশতম মহান বিজয়-বার্ষিকীতে এসব দেশ প্রেসিডেন্ট রুহানিসহ ইরানের সরকার এবং জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর নেতৃত্বে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের একচল্লিশতম বার্ষিকী ১১ ফেব্রুয়ারি সমগ্র ইরানব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়।
লক্ষ লক্ষ জনতা ইরানের বিভিন্ন এলাকায় বিজয় মিছিলে অংশ নেয়। তারা মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্ব আধিপত্যবাদীদের বিচিত্র ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোসহ প্রতিরোধ চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সেøাগান দেয়।
৬ ইরানের বিপ্লব বার্ষিকীতে দেশজুড়ে ৫৬ রেলপ্রকল্পের উদ্বোধন
ইরানের ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের ৪১তম বিজয়-বার্ষিকী উদযাপন ‘টেন-ডে ডন’ উপলক্ষে দেশজুড়ে ৫৬টি রেলপথ অবকাঠামো ও সেবা প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করা হয় বলে জানান ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান রেলওয়ের (যা আরএআই নামে পরিচিত) প্রধান সাইদ রাসুলি।
তেহরানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, উল্লিখিত প্রকল্পগুলো দেশের রেলপথ পরিবহনের নিরাপত্তা ও গতি বাড়ানোর লক্ষে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এই কর্মকর্তার তথ্যমতে, প্রকল্পগুলোতে মোট ব্যয় হয়েছে ছয় ট্রিলিয়ন রিয়াল (১৪২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার)। যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক সিগনাল, ডাবল ট্রাকিংয়ের ব্যবস্থায় করা, সেই সাথে সাব-লাইন তৈরি এবং কিছু ব্লকের পুরনো রেললাইনের পুনর্নির্মাণ ও মেরামতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রেলপথ উন্নয়ন প্রকল্পকে ইরান সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত পরিকল্পনাগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটির ষষ্ঠ পঞ্চ-বার্ষিকী জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় (২০১৬ থেকে ২০২১) রেলপথে কার্গো পরিবহনের অন্তত ৩০ শতাংশ ও যাত্রী পরিবহনের ২০ শতাংশ সক্ষমতা লাভের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
৭ ইরানি সেনাবাহিনী উন্মোচন করল দু’টি কৌশলগত দূরপাল্লার রাডার
ইরানের সেনাবাহিনী কৌশলগত দূরপাল্লার দু’টি রাডার উন্মোচন করেছে। নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এ দুই রাডার উন্মোচনের মধ্য দিয়ে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও বাড়ল।
ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল আবদুলরহিম মুসাভির উপস্থিতিতে গত ২০ এপ্রিল ‘খালিজে ফার্স’ (পারস্য উপসাগর) এবং ‘মুরাকিব’ (অতন্দ্র) নামের এ দুই রাডার উন্মোচন করা হয়।
দীর্ঘপাল্লার রাডার খালিজে ফার্সের তৎপরতা পরিসীমা ৮০০ কিলোমিটারেরও বেশি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ত্রিমাত্রিক ফেজড-অ্যারের এ রাডারে প্রচলিত সব লক্ষ্যবস্তুই ধরা পড়বে। এ ছাড়া, রাডার ফাঁকি দেয়ার সক্ষমতা আছে এমন লক্ষ্যবস্তুসহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও এতে ধরা পড়বে।
মুরাকিব (অতন্দ্র)ও ত্রিমাত্রিক অত্যাধুনিক ফেজড-অ্যারে রাডার এবং এর পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার। নিচু এবং মধ্যাকাশ দিয়ে উড়ে আসা নানা ধরণের ক্ষুদ্র লক্ষ্যবস্তু এতে ধরা পড়বে। এ ছাড়া, রাডার ফাঁকি দেয়ার সক্ষমতা আছে এমন লক্ষ্যবস্তুসহ চালকহীন বিমানকেও ধরতে পারবে এ রাডার।
ইরানি সেনাবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা দেশটির জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানিগুলোর সহযোগিতায় এই দুই রাডার ব্যবস্থার নকশা প্রণয়ন এবং তৈরি করেছেন।
এ ছাড়া, ইরান অত্যাধুনিক একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্মোচন করেছে। এ ব্যবস্থারও নকশা প্রণয়ন এবং নির্মাণ করেছেন ইরানি বিশেষজ্ঞরা।
৮ কক্ষপথে গেল ইরানের প্রথম সামরিক স্যাটেলাইট
কক্ষপথে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আইআরজিসির প্রথম সামরিক স্যাটেলাইট। গত ২২ এপ্রিল সকালে নূর-১ স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেণ করা হয়। কক্ষপথে ৪২৫ কিলোমিটার উচ্চতায় এটি স্থাপন করা হয়।
নূর-১ কক্ষপথে পাঠানো ইরানের প্রথম কোনো সামরিক স্যাটেলাইট। দেশীয়ভাবে তৈরি কাসাদ (বার্তা বাহক) লাঞ্চার দিয়ে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়। আইআরজিসির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হলো।
৯ রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম ডুবোজাহাজ যোগ দিল ইরানি নৌবহরে
রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম গাদির শ্রেণির ডুবোজাহাজ যোগ দিয়েছে ইরানের নৌবহরে। এর আগে গাদি-শ্রেণির ডুবোজাহাজের পুরোপুরি সংস্কার এবং মানোন্নয়ন করা হয়।
ইরানি নৌবাহিনীর কারখানার কমান্ডার ফ্লোটিলা অ্যাডমিরাল আব্বাস ফজলে-নিয়া গত ৮ এপ্রিল ২০২০ জানান, গত কয়েক বছর ধরেই গাদির-শ্রেণির ডুবোজাহাজ তৈরি করছে ইরান। তিনি জানান, বিভিন্ন শ্রেণির ডুবোজাহাজ তৈরির প্রযুক্তির অধিকারী বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের অন্যতম ইরান।
বিশ্বে ডুবোজাহাজকে ভারী, আধা-ভারী এবং হালকা এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ডুবোজাহাজ হালকা শ্রেণিভুক্ত বলেও জানান তিনি।
গাদির-শ্রেণির ডুবোজাহাজের সুবিধার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তিনি জানান, আকারে ছোট হওয়ায় গাদিরকে চিহ্নিত করা বা একে অনুসরণ করা সম্ভব নয়। শত্রুর জন্য কেনও আকারে ছোট ডুবোজাহাজ মারাÍক হুমকি হয়ে দেখা দেবে তারও ব্যাখ্যা দেন অ্যাডমিরাল আব্বাস ফজলে-নিয়া। তিনি জানান, গাদিরে রয়েছে চৌকস টর্পেডো বা ডুবোবোমা। এ দিয়ে শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট ভাবে হামলা করা ও তা পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া সম্ভব বলেও জানান তিনি।
ইরানের নৌবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে পুরোপুরি নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ডুবোজাহাজ গাদির বানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এটি সামরিক মহড়ায় নামার কর্মসূচি রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ডুবোজাহাজ বানানোর জন্য বিজ্ঞানে অত্যাধুনিক অগ্রসর এবং দক্ষ হতে হয়। কোনও দেশ ডুবোজাহাজ নির্মাণে সক্ষম হলে দেশটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি হস্তগত করেছে স্বাভাবিক ভাবেই তা ধরে নিতে হবে।
২০১৮ সালে ইরানের নৌবাহিনীতে প্রথম গাদির-শ্রেণির দুটি ডুবোজাহাজ যোগ দেয়। এই দুই ডুবোজাহাজের সাগর থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ, ডুবোবোমা বা টর্পেডো ছোঁড়া এবং মাইন বসানোর সক্ষমতা রয়েছে।
১০ সামরিক বিমান উৎপাদনে স্বয়ংস¤পূর্ণ ইরান
ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্প দেশের অভ্যন্তরে সামরিক বিমানের প্রত্যেকটি যন্ত্রাংশ উৎপাদনে সক্ষম বলে জানিয়েছেন দেশটির বিমান বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ জাতীয় টিভিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি একথা জানান।
নাসিরজাদেহ বলন, বর্তমানে আমেরিকা সহ বিশ্বের বড় বড় যুদ্ধবিমান নির্মাতা কো¤পানিগুলো তাদের প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ ও আনুষাঙ্গিক উপকরণগুলো উৎপাদন করে না। এক্ষেত্রে কয়েকটি দেশ তাদের উৎপাদনে অংশগ্রহণ করে থাকে। তবে আমরা যুদ্ধবিমানের সমস্ত উপকরণ দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদন করে থাকি।
বিমান বাহিনীর কমান্ডার বলেন, আমরা সামরিক জেট নির্মাণের প্রযুক্তি ও জ্ঞান অর্জন করেছি। বিমানবাহিনীর যে কোনো চাহিদা পূরণে সক্ষম প্রতিরক্ষা শিল্প। আমরা কিয়াম ও ইসফাহান সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং হালনাগাদ জ্ঞানের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত অন্য বিমানঘাঁটিগুলোতে পাইলট প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে স্বয়ংস¤পূর্ণ।
যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন উৎপাদনকে খুবই জটিল প্রযুক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবছর আমরা একটি ইঞ্জিনের নকশা ও উৎপাদন করেছি এবং এটি কাওছার জেটে স্থাপন করা হয়েছে। ইঞ্জিনটির চক্কর দেয়ার ক্ষমতা মার্কিন তৈরি এফ-৫ যুদ্ধবিমানের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরির সেই প্রযুক্তি অর্জন করেছি।
১১ করোনাভাইরাস গবেষণা প্রকল্পে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে ইরান
বিশ্বে করোনাভাইরাসের ওপর পরিচালিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকল্পের সংখ্যায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। দেশটির গবেষকরা এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট ১ হাজার ২শ’র অধিক প্রকল্প পরিচালনা করেছে। শুক্রবার ইরানের উপসস্বাস্থ্যমন্ত্রী রেজা মালেকজাদেহ গত ৪ মে ২০২০ এই তথ্য জানান।
সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ মন্ত্রীর বরাতে জানিয়েছে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় দেশের সব গবেষক হাতে হাত রেখে কাজ করেছেন। যার ফলে গত দেড় মাসে ১২শ’ গবেষণা প্রকল্প চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসের ওপর গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনা করে আন্তর্জাতিক পরিম-লে আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে দারুণ সব বৈজ্ঞানিক পণ্য তুলে ধরেছি। বর্তমানে দেশে পরিচালিত করোনাভাইরাস গবেষণার অধিকাংশই ইন্টারভেনশনাল স্কিমের আওতায়। এর মধ্যে ৩৫টি স্কিম কোভিড-১৯ এর কার্যকর চিকিৎসা উদ্ভাবন করছে বলে জানান ইরানি এই মন্ত্রী।
১২ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাড়ছে করোনা শনাক্তকরণে ইরানি কিটের চাহিদা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান জার্মানি ও তুরস্কসহ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট রপ্তানি শুরু করার পর দক্ষিণ আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশটির কিটের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে ইরান আরো কয়েকটি দেশে নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিটের নমুনা পাঠিয়েছে। পণ্যটি এসব দেশে অনুমোদন পেলে রপ্তানি শুরু করবে তেহরান। ১২ মে ২০২০ ইরানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্সির আন্তর্জাতিক ইন্টার্যাকশন সেন্টারের প্রধান মাহদি কালেনয় এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নভেল করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের ফলশ্রুতিতে ইরানের জানভিত্তিক কো¤পানিগুলো তাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সক্ষমতা প্রমাণে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট উৎপাদন শুরু করেছে। ভাইরাসটি মোকাবেলায় দেশটি এখন মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। দেশীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও দেশীয় তৈরি করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট রপ্তানি করছে।
কালেনয় বলেন, দেশীয়ভাবে তৈরি করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিটের নমুনা অন্যান্য দেশে পাঠানো হয়েছে। সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এসব কিটের বাজার তৈরি করা হবে। যেসব দেশে দেশীয় তৈরি কিট রপ্তানির টার্গেট রয়েছে তার মধ্যে কাতার, ভারত, পাকিস্তান,ফিলিপাইন অন্যতম বলে জানান তিনি।
১৩ পরিবেশবান্ধব জীবাণুনাশক উৎপাদন করছে ইরান
পরিবেশ ও মানুষের কোনো ক্ষতি করে নাÑ এমন ধরনের একটি জীবাণুনাশক উৎপাদন করার কারিগরি জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন ইরানের আমিরকবির ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির গবেষকরা। বর্তমানে দেশটির একটি জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানি মাল্টি অক্সিডেন্ট দ্রবণটির গণউৎপাদন করছে। যা দিয়ে মুখ ও হাত উভয় পরিষ্কার করা যাবে।
কো¤পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান একচেটিয়াভে পণ্যটি উৎপাদন প্রক্রিয়া স¤পন্ন করছে। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হচ্ছে না। সুতরাং পণ্যটি পরিবেশবান্ধব।
তিনি বলেন, জীবাণুনাশকটি ব্যবহারে মানুষের স্বাস্থ্যের প্রতি কোনো ঝুঁকি নেই। প্রকৃতগতভাবে এটি ক্ষারীয় ও অজ্বলনশীল।
উল্লেখ্য, ইরানের জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানিগুলো করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিপুল সংখ্যক সরঞ্জাম উৎপাদন করেছে। দেশটি এসব পণ্য এখন রপ্তানিতে সক্ষম। ইরানের তৈরি সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছেÑ আইসিইউ ও সিসিইউ সরঞ্জাম, সিটি-স্ক্যান মেশিন, করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কিট ও জীবাণুনশক। এছাড়া দেশটির জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানিগুলো দিনে ৬০ লাখ মাস্ক তৈরি করে।
১৪ করোনাভাইরাসের সর্বাপেক্ষা কার্যকর ওষুধ তৈরি করলো ইরান
ইরানের স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী রেজা মালেকজাদেহ জানিয়েছেন, তাঁর দেশ করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সর্বাপেক্ষা কার্যকর ওষুধ তৈরি করতে সফল হয়েছে। গত ১৪ মার্চ তিনি এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বিষয়টি ঘোষণা দেন। তিনি জানান, রোগটির চিকিৎসা ও মোকাবেলায় ইরান কয়েকটি গবেষণা পরিচালনার পর এই সফলতা পেয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আক্রান্তদের কাছ থেকে সংগৃহীত নমুনাসমূহ সংরক্ষণে রোগীদের ব্যক্তিগত তথ্য নিবন্ধন করা হয় এবং একটি বায়োলজিক্যাল ডাটাবেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যা গবেষণা পরিচালনায় মূল বিষয় ছিল।
তিনি আরও জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ইরানি ও চায়না ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তায় চীন এ পর্যন্ত ইরানে চারটি চালান পাঠিয়েছে।
১৫ আইআরজিসি’র নজিরবিহীন প্রযুক্তি : দূর থেকে ৫ সেকেন্ডে ধরা পড়বে করোনা
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি করোনা নির্ণয়ে নজিরবিহীন প্রযুক্তি বের করেছে। এ প্রযুক্তি দিয়ে ১০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে মাত্র ৫ সেকেন্ডের মধ্যে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা যাবে।
তেহরানে আইআরজিসি’র প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামির উপস্থিতিতে গত ১৫ এপ্রিল ২০২০ এ প্রযুক্তির উদ্বোধন করা হয়। ইরানে করোনাবিরোধী লড়াইয়ের শুরু থেকেই সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে চলেছে আইআরজিসি।
এ প্রযুক্তির সহায়তা করোনাভাইরাস রয়েছে এমন সব বস্তু শনাক্ত করা যাবে। পাশাপাশি মাত্র ৫ সেকেন্ডের মধ্যে শনাক্ত হবেন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিও। ইরানের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাসিজে কর্মরত বিজ্ঞানীরা বের করেছেন এ প্রযুক্তি।
আইআরজিসির কমান্ডার এ উদ্ভাবনকে নজিরবিহীন এবং একক বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেন। আইআরজিসি’র এ প্রযুক্তির কর্ম পদ্ধতি ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি এমন এক চৌম্বকীয় পরিম-ল তৈরি করে যা চারপাশ খতিয়ে দেখতে থাকে। একটি অ্যান্টেনার সাথে এ ব্যবস্থা লাগান আছে এবং করেনার উপস্থিতি খুঁজে বার করার সাথে সাথেই সেদিকে দিক নির্দেশনা দিতে থাকে।
এ প্রযুক্তির সুবিধার দিক গুলোও তুলে ধরেন তিনি। রক্ত পরীক্ষার ঝামেলায় যেতে হয়না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ দিয়ে দূর থেকেই কাজ করা যায়। এ সব সুবিধা থাকায় এটি দিয়ে গণভাবে করোনা নির্ণয় করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
ইরানের অনেক হাসপাতালে এ প্রযুক্তি সফল পরীক্ষা করা উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, এ প্রযুক্তি ব্যবহারে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই সফলতা লাভ করা গেছে। প্রযুক্তিটি সব ধরণের ভাইরাস নির্ণয়ের ভিত্তি তৈরি করতে পারে বলেও জানান তিনি।
১৬ মধ্যপ্রাচ্যে মাস্ক উৎপাদনের সবচেয়ে বড় কারখানা চালু করেছে ইরান
মধ্যপ্রাচ্য বা পশ্চিম এশিয়ার মধ্যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান মাস্ক তৈরি জন্য সবচেয়ে বড় কারখানা চালু করেছে। যখন ইরানসহ সারা বিশ্বে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়াবহ তা-ব চলছে তখন ইরান প্রতিরক্ষামূলক এই মাস্ক বানানোর জন্য কারখানা চালুর কথা জানালো।
ইরান সরকারের মুখপাত্র আলী রাবিয়ি বলেন, এ কারখানা রাজধানী তেহরানের কাছে আলবোর্জ প্রদেশের ইশতেহার্দ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চালু হয়েছে। তিনি জানান, এই কারখানা প্রতিদিন ২০ লাখ মাস্ক তৈরি করতে পারবে যা দেশের চাহিদা পুরণ করতে সক্ষম হবে। আরেকজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, ইশতেহার্দ কারখানায় ২০ লাখের বেশি মাস্ক উৎপাদন হবে যা বর্তমানের দ্বিগুণ।
১৭ ইরানি ভেন্টিলেটরের বিদেশি চাহিদা বাড়ছে
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ইরানের তৈরি ভেন্টিলেটর ক্রয়ে চাহিদা বাড়ছে বিশ্বের বেশ কিছু দেশ থেকে। রাশিয়া, ইতালি ও ¯েপনসহ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে বিক্রয়ের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইরানকে। ইরানের একটি জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানির সিইও আহমাদ বেহফার-মোকাদ্দাম ইরানি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজকে গত ২১ এপ্রিল ২০২০ এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, তাঁর কো¤পানি ইউরোপ থেকে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স লাভ করেছে। মহামারির আগ থেকেই ইউরোপীয় ও অন্যান্য দেশে তাদের ভেন্টিলেটর রপ্তানি করা হয়।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির আগে আমরা ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন, বাকু, আযারবাইজান, জর্জিয়া, বেলজিয়াম ইত্যাদি দেশে ভেন্টিলেটর রপ্তানি করেছি। মহামারির কারণে দেশীয় চাহিদা পূরণ করা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকারে রয়েছে। তবে রাশিয়া, ইতালি ও ¯েপন থেকে বিক্রয়ের জন্য নতুন অনুরোধ জানানো হয়েছে।
১৮ আমেরিকার জনগণের জন্য ওষুধ ও মানবিক ত্রাণ পাঠাল ইরানের ছাত্ররা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান একদিনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে মোকাবেলা করছে অন্যদিকে মার্কিন সরকারের অর্থনৈতিক সন্ত্রাস এবং জরুরি ঔষধ আমদানির ওপর নিষ্ঠুর নিষেধাজ্ঞাকে মোকাবেলা করছে।
ইরান পৃথিবীর একমাত্র দেশ যে করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী এবং ওষুধ সহজে কিনতে পারছে না। ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে জাতিসংঘ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দাবি সত্ত্বেও হোয়াইট হাউজ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখবে বলে সম্প্রতি ঘোষণা করেছে এবং ওয়াশিংটন সম্প্রতি তেহরানের ওপর বেশ কয়েকটি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইরান করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ইরান অনেক দেশের তুলনায় বেশ সাফল্য অর্জন করলেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে।
তবে ইরানের ওপর অবরোধ চাপিয়ে আমেরিকাও ভালো নেই। দেশটির স্বাস্থ্যখাত পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পর্যাপ্ত টেস্ট কিট, পিপিই, হ্যান্ড সেনিটাইজার, এমনকি সাবানও নেই। ইতোমধ্যে নিউ জার্সি শহরের ডাক্তার ফ্রাঙ্ক গ্যাবরিন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বিনা চিকিৎসায়।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের দিক থেকে আমেরিকা বিশ্বে শীর্ষে অবস্থান করছে। আমেরিকার এ সংকটজনক মুহূর্তে দেশটির জনগণের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইরানের ছাত্ররা।
ফার্স নিউজ এর খবরে বলা হয়েছে, গত ১ এপ্রিল ২০২০ ইরানের স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী বাসিজের ছাত্ররা তেহরানে আমেরিকার স্বার্থ দেখাশোনাকারী সুইস দূতাবাসে জরুরি ওষুধ ও মানবিক ত্রাণ পাঠিয়েছে। বিশ্ব মহামারী করোনার মধ্যেও ট্রা¤প প্রশাসন অবরোধ শিথিল না করায় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে এবং প্রয়োজনে মার্কিন জনগণের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে তারা এক গাড়ি ওষুধ ও মানবিক ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে।
এর আগে একই দূতাবাসের মাধ্যমে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) পরিচালিত ‘বাকিতুল্লাহ মেডিকেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটি’ কর্তৃপক্ষ আমেরিকার জনগণের জন্য ইরানের তৈরি করোনা শনাক্তকরণ কিট উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে।
বাকিয়াতুল্লাহ মেডিক্যাল সায়েন্স ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বিভাগের প্রধান বলেন, আমেরিকার সরকার আমাদের শত্রু, জনগণ নয়। তাই এই দুঃসময়ে জনগণের চিকিৎসার লক্ষ্যে কিটগুলো সুইজারল্যান্ড দূতাবাসে জমা দেয়া হয়েছে।
১৯ ইরানের জ্ঞানভিত্তিক ফার্মগুলোর ৫শ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি
গত ফারসি বছরে (২১ মার্চ ২০১৯ থেকে ২০ মার্চ ২০২০) ইরানের জ্ঞানভিত্তিক ফার্মগুলো ৬শ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য সামগ্রী রপ্তানি করেছে। গত ১৩ এপ্রিল এই তথ্য জানিয়েছেন ইরানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্সির আন্তর্জাতিক ব্যবসা উন্নয়ন দপ্তরের মহাপরিচালক রুহুল্লাহ ইসতিরি।
রপ্তানি খাতে ইরানের জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানিগুলোর কার্যক্রম স¤পর্কে আলোকপাত করেন তিনি। ইসতিরি বলেন, তার দপ্তর অন্যতম মূল লক্ষ্য হিসেবে জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানিগুলোর রপ্তানি বাড়ানোর ওপর নজর দিয়েছে। এলক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে দেশের আড়াই হাজার জ্ঞানভিত্তিক কো¤পানিকে অত্যন্ত উচ্চ মানসম্মত সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
২০ বিশ্বব্যাপী ৪৩ দেশে ইরানের ৯৫ স্কুল
বিশ্বব্যাপী ৪৩টি দেশে ৯৫টি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে ইরান। ইরানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা গোলামরেজা কারিমি গত ৫ এপ্রিল এই তথ্য জানান।
ইরানি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, সিরিয়া, লেবানন, জর্দান, তুরস্ক, ভারতীয় উপমহাদেশ ও ইউরোপে সাতটি অফিসের তত্ত্বাবধানে স্কুলগুলো পরিচালিত হচ্ছে। বিদেশি এসব স্কুলে বর্তমানে ১৪ হাজার ২৭ জন ইরানি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে বলে জানান তিনি।
কারিমি আরও জানান, ইরানে বিদেশি নাগরিকদের জন্য ১৪টি স্কুল, আফগান নাগরিকদের জন্য ১১টি এবং ৪টি আন্তর্জাতিক স্কুল, ১১টি বেসরকারি স্কুল ও বিভিন্ন দেশের দূতাবাস অধিভুক্ত ৯টি স্কুল চলমান রয়েছে।
২১ শরণার্থী শিক্ষার্থীদের পেছনে ইরানের বছরে ব্যয় ৪৭৭ মিলিয়ন ডলার
দেশে বসবাসরত বিদেশি শরণার্থী শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় প্রতি বছর প্রায় ২০ ট্রিলিয়ন রিয়াল (৪৭৭ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করে ইরান। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক দপ্তরের প্রধান গোলামরেজা কারিমি গত ১১ এপ্রিল ২০২০ এই তথ্য জানান। খবর আইএসএনএ এর।
তিনি বলেন, ইরানে ৫ লাখ ৫৮ হাজারেরও অধিক বিদেশি শিশু স¤পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষা গ্রহণ করছে। এসব শিশুর ৪ লাখ ৭৪ হাজার জনই আফগান নাগরিক।
কারিমি বলেন, দেশে বর্তমানে কাগজপত্রহীন ১ লাখ ৩৭ হাজার আফগান শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিশুর বাবা-মায়ের বসবাসের জন্য বৈধ কাগজপত্র নেই। তবে আমরা তাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিচ্ছি। ইরানি এই কর্মকর্তা আরও জানান, অসংখ্য আঞ্চলিক সংকট ও গৃহযুদ্ধের কারণে বিগত চার দশকে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ইরানে বিপুল সংখ্যক বিদেশি নাগরিক আশ্রয় নেয়।
উল্লেখ্য, ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলি খামেনেয়ী ২০১৫ সালের মে মাসে এক আদেশ জারি করেন, যেখানে ইরানে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের স্কুলে যোগদানের অনুমতি দান করেন তিনি। এমনকি যেসব শিক্ষার্থীর কোনো পরিচয় নেই এবং যারা দেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদেরকেও লেখাপড়া করার অনুমতি দেওয়া হয়।
২২ গত বছরে ইরানে ১ লাখ ৫ হাজার বই প্রকাশ
গত ফারসি বছর ১৩৯৮ সালে (২০ মার্চ ২০১৯ থেকে ২০২০) ইরানে ১ লাখ ৫ হাজারের অধিক শিরোনামে বই প্রকাশিত হয়েছে। এসব বইয়ের দাম ১৩৯৭ সালের তুলনায় দ্বিগুন ছিল। ইরানের বেসরকারি প্রকাশনা সংস্থা ‘বুক হাউজ’ এই তথ্য প্রকাশ করে।
গত ২১ এপ্রিল ২০২০ এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর প্রকাশিত সব বইয়ের মধ্যে ইরানি লেখকরা রচনা করেছেন ৭৫ হাজার ৬৪৪টি। আর বাকি ২৯ হাজার ৯৪১টি হচ্ছে অনূদিত বই।
গত ফারসি বছর ১৯৮ সালে সর্বমোট ১৪ কোটি ৮৯ লাখ ৮১ হাজার ১২৬ কপি বই বিক্রি হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। গত বছর শিশুদের বই প্রকাশিত হয়েছে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ১০ হাজার ২৪৭টি। যা আগের বছরগুলো থেকে সংখ্যায় সর্বোচ্চ। ১৩৯৮ সালে বইয়ের গড় মূল্য ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার রিয়াল (৮ ডলার)। যেখানে ১৩৯৭ সালে এই মূল্য ছিল ১লাখ ৮০ হাজার রিয়াল (৪ ডলার)।
২৩ ইরানের বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশের সংখ্যা বেড়েছে ৬০ গুণ
বিগত ২০ বছরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে ইরানের বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশের সংখ্যা বেড়েছে ৬০ গুণ। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। ইসলামিক ওয়ার্ল্ড সায়েন্স সাইটেশন সেন্টারের (আইএসসি) প্রধান মোহাম্মাদ জাভাদ দেহগানি বলেন, ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন তথ্যসূত্র ডাটাবেজে ইরানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রায় এক হাজার বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ নিবন্ধিত হয়। গত বছর এই সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে।
বর্তমানে ইরানে ৭৫ হাজার অনুষদ এবং প্রায় চল্লিশ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে উল্লেখ করে আইএসসি প্রধান বলেন, ওয়েব অব সায়েন্সে ৪ লাখ ৬০ হাজার নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ লাখ নিবন্ধ তৈরি হয়েছে গত ছয় বছরে। যা ৬৫ শতাংশের সমান।
২৪ ইরানি নারী বিজ্ঞানি মির্জাখনিকে সম্মাননা জানালো জাতিসংঘ
বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখায় ইরানি নারী গণিতবিদ মরিয়ম মির্জাখনিসহ এবছর বিশ্বের সাতজন নারী বিজ্ঞানীকে সম্মাননা জানিয়েছে জাতিসংঘের মহিলা দপ্তর ইউএন ওম্যান। বিশ্ব পরিবর্তনকারী উদ্ভাবন ও পেশাগত নতুনত্বে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ মির্জাখনি এই সম্মাননা লাভ করেন।
১১ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞানে আন্তর্জাতিক নারী ও বালিকা দিবস উপলক্ষে ইউএন ওম্যানের ওয়েবসাইটে সম্মাননা জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে লেখা হয়, এসব নারী বিজ্ঞানী জীবন রক্ষাকারী প্রতিকার, বিশ্ব-পরিবর্তনকারী উদ্ভাবন এবং সুদূরপ্রসারী গবেষণা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। তবুও অনেক ক্ষেত্রে তাদের ব্যক্তিগত অগ্রসরতাকে ছোট করে দেখা হয়েছে অথবা অবহেলা করা হয়েছে।
গণিতে বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী ইরানি বংশোদদ্ভূত প্রয়াত নারী গণিতবিদ মরিয়ম মির্জাখনি স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালে তেহরানের শরিফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে গণিতে বিএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি হারভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি স¤পন্ন করেন।
ইতিহাসের প্রথম নারী হিসেবে ২০১৪ সালে গণিতের নোবেল পুরস্কার ফিল্ডস পদক পাওয়া ইরানি গণিতবিদ মরিয়ম মির্জাখানি ২০১৭ সালের জুলাইয়ে মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
২৫ ইউরেশিয়ায় ইরানের রপ্তানি বেড়েছে ১০৫ শতাংশ
চলতি ইরানি বছরের প্রথম ১১ মাসে (২১ মার্চ ২০১৯ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০) ইউরেশিয়ার পাঁচ দেশে ইরানের রপ্তানি বেড়েছে ১০৫ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ইউরেশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়ন (ইইইউ) সদস্য দেশগুলোতে দেশটির এই রপ্তানি বেড়েছে। গত ১০ মার্চ ২০২০ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের শুল্ক প্রশাসন আইআরসিএ এর মুখপাত্র সাইয়্যেদ রুহুল্লাহ লাতিফি এই তথ্য জানিয়েছেন।
পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ রাশিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, আর্মেনিয়া ও কিরগিজস্তানের সমন্বয়ে গঠিত ইইইউ। এসব দেশে উল্লিখিত সময়ে ইরান মোট ১ দশমিক ২৪৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য সামগ্রী রপ্তানি করেছে।
তিনি বলেন, ওই সময়ে ইইউইউ এর সাথে ইরানের বাণিজ্য হয়েছে ২ দশমিক ৪৪৮ বিলিয়ন ডলারের। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৮৩৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বেশি হয়েছে। অর্থাৎ বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪০ শতাংশ।
লাতিফি বলেন, উল্লিখিত সময়ে ইরানি পণ্য সামগ্রীর বড় ক্রেতা রাষ্ট্র ছিল রাশিয়া, আর্মেনিয়া ও কাজাখস্তান। ইরান ১১ মাসে ইইউইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো থেকে ১ দশমিক ২০৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্যসামগ্রী আমদানি করে বলে জানান তিনি।
২৬ জৈব ওষুধ উৎপাদনে বছরে বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় ইরানের
ইরানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্সির জৈবপ্রযুক্তি উন্নয়ন সদরদপ্তরের সেক্রেটারি মোস্তাফা ঘানেই জানিয়েছেন, ইরান ২২ ধরনের জৈবওষুধ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। এতে দেশটির বছরে সাশ্রয় হয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
গত ১ মার্চ ২০২০ তিনি জানান, দেশে উৎপাদিত জৈব ওষুধের সংখ্যা ২২টি। এই অঞ্চলে এ ধরনের ওষুধ এককভাবে কেবল ইরানের রয়েছে। ঘানেই জানান, জৈব ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ইরানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলো জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া,
ভারত ও চীনসহ এশীয় দেশগুলো। তিনি আরও জানান, আগামী দুই বছরের মধ্যে ভোক্তা বাজারে ২৮টি নতুন জৈবওষুধ পাওয়া যাবে। এমন পরিস্থিতিতে ইরানএশিয়ায় প্রথম অথবা দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসবে। যা দেশের মেডিকেল সোসাইটির জন্য সম্মান ও গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
ঘানেই জানান, বিশ্বে ১৪০ ধরনের জৈবওষুধ আছে। এর মধ্যে ৫০টি ওষুধ অনেক বেশি সেবন করা হয় এবং এগুলো কিছু দেশে অনেক দামি।
২৭ ইরানের গ্যাস রপ্তানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ
গত ইরানি বছরে ইরানের গ্যাস রপ্তানি বেড়েছে ২৬ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গেল ইরানি বছরে (২১ মার্চ ২০২৯ থেকে ২০ মার্চ ২০২০) ইরান থেকে ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস রপ্তানি হয়েছে।
তথ্যমতে, গত বছরে দেশটিতে ক্রমসঞ্চিত মিষ্টি গ্যাস উৎপাদন হয় ২৬৭ বিলিয়ন কিউবিক মিটার। এই গ্যাসের মধ্যে ১১২ বিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক খাতে খরচ হয়েছে। অন্যদিকে দেশের বড় বড় শিল্প কারখানাগুলোতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪২ দশমিক ৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার।
গত বছর ইরানে উৎপাদিত মোট গ্যাসের মধ্যে ৬০ দশমিক ৬ বিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস উৎপাদন করে দেশীয় পাওয়ার প্লান্টগুলো। বর্তমানে দেশটিতে ৮০টি পাওয়ার প্লান্ট জাতীয় গ্যাস নেটওয়ার্কে যুক্ত রয়েছে।
২৮ ইরানের হ্যান্ডিক্রাফ্্ট রপ্তানিতে আয় ৪২৭ মিলিয়ন ডলার
গত ফারসি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (২১ মার্চ ২০১৯ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০) ইরানের হ্যান্ডিক্রাফ্্ট রপ্তানি থেকে ৪২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, হ্যান্ডির্ক্যাফট ও পর্যটন উপমন্ত্রী পুয়া মাহমুদিয়ান এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে হ্যান্ডিক্রাফ্্ট রপ্তানি থেকে তাঁর দেশের আয় হয়েছে ২৩৭ মিলিয়ন ডলার। আর বাকি ১৯০ মিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে স্যুটকেস বাণিজ্যের (খুচরা বিক্রি) মাধ্যমে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মূল্যের দিক দিয়ে পণ্যটির রপ্তানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। আর পরিমাণের দিক দিয়ে বেড়েছে ৮ শতাংশ।
মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছর ইরানের ৪৪০ মিলিয়ন ডলারের হ্যান্ডিক্রাফ্্ট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ১১ মাসের রপ্তানি চিত্র থেকে দেশটি ৯৭ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
২৯ ইরানের ই¯পাত উৎপাদনে ৫.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
গত ইরানি বছরের প্রথম ১১ মাসে (২১ মার্চ ২০১৯ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০) ইরানের অপরিশোধিত ই¯পাত উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ১৬ লাখ ৭৯ হাজার টন। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। উল্লিখিত সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে অ্যালুমিনিয়াম বারের উৎপাদন কমেছে ১৬ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে দেশটিতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ওই সময়ে সিমেন্ট উৎপাদন বেড়েছে ১২ দশমিক ২ শতাংশ।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইরানে বছরের প্রথম ১১ মাসে ই¯পাতপণ্য উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৬৪ হাজার টন। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা সাড়ে পাঁচ শতাংশ বেশি। দেশটিতে উল্লিখিত ১১ মাসে ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৬ হাজার টন সিমেন্ট উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ২ শতাংশ।
৩০ ইরানের ¯পঞ্জ লোহা রপ্তানি বেড়েছে ৭৭ শতাংশ
গত ফারসি বছর (২১ মার্চ ২০১৯ থেকে ২০ মার্চ ২০২০) ইরান ৯ লাখ ৪২ হাজার টন ডিরেক্ট রিডাকশন আয়রন (ডিআরআই) তথা ¯পঞ্জ লোহা রপ্তানি করেছে। আগের বছরের তুলনায় যা ৭৭ শতাংশ বেশি।
ইরানের ই¯পাত উৎপাদক সমিতির (আইএসপিএ) পরিসংখ্যান মতে, আগের বছর (২১ মার্চ ২০১৮ থেকে ২০ মার্চ ২০১৯) দেশটি থেকে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন ডিআরআই রপ্তানি হয়েছে।
আইএসপিএ জানায়, গত বছর ইরানে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৭ হাজার টন ডিআরআই উৎপাদন হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এই উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ছয় শতাংশ। আগের বছর (২১ মার্চ ২০১৮ থেকে ২০ মার্চ ২০১৯) দেশটিতে ২ কোটি ৬৩ লাখ ৫৯ হাজার টন ¯পঞ্জ লোহা উৎপাদন হয়েছিল।
ভারতের পর ইরানকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ¯পঞ্জ লোহা উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে জানায় আইএসপিএ।
৩১ দেশীয় শিল্পের বিকাশে ইরানের ৭ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয়
দেশীয় শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে বিগত ৫ বছরে সাত বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে ইরানের। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে খাতাম-আল আম্বিয়া কনস্ট্রাকশন সদরদপ্তরের হাত ধরে। তেল ও গ্যাস সহ বেশ কিছু শিল্পে দেশীয়ভাবে সরঞ্জাম উৎপাদনের মধ্য দিয়ে ওই সাত বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে।
গত ১৪ মার্চ ২০২০ ইরানের প্রযুক্তিগত এবং প্রকৌশল ক্ষমতার প্রদর্শনী আয়োজন উপলক্ষে খাতাম-আল আম্বিয়া কনস্ট্রাকশন সদরদপ্তরের কমান্ডার সাইয়িদ মোহাম্মাদ এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ সত্বেও সক্ষম দেশীয় কো¤পানিগুলো বিশেষত তেল ও গ্যাস খাতে বিদেশি কো¤পানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সক্ষম হয়েছে।
তেল ও গ্যাসে খাতে খাতাম-আল আম্বিয়া কনস্ট্রাকশন সদরদপ্তরের কার্যক্রম স¤পর্কে তিনি বলেন, অবরোধকালীন বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় সদরদপ্তর ই¯পাত ও কপার সহ বড় বড় শিল্পের ৭০ শতাংশের অধিক সরঞ্জাম দেশীয়ভাবে তৈরি করতে সফল হয়েছে।
প্রদর্শনীর ফাঁকে খাতাম-আল আম্বিয়া কনস্ট্রাকশন সদরদপ্তর ও ইসফাহান স্টিল কো¤পানির (ইএসসি) মধ্যে জাতীয় রেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
৩২ উত্তরপূর্ব ইরানের ১২৪টি ঐতিহাসিক নিদর্শন পুনরুদ্ধার
গত ফারসি বছর ১৩৯৮ সালে (২১ মার্চ ২০১৯ থেকে ২০ মার্চ ২০২০) উত্তরপূর্ব ইরানের খোরাসান রাজাভি প্রদেশে ১২৪টির মতো ঐতিহাসিক ভবন ও কাঠামো পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
পুনরূদ্ধার করা এসব ঐতিহাসিক নির্দশনের মধ্যে রয়েছে ফেরদৌসী মাজার, টাস টাওয়ার, অ্যানসেইন্ট উইন্ডমিলস অব নাশতিফান, ঘিয়াসিহ স্কুল এবং রিবাত-ই শরাফ। সোমবার প্রাদেশিক পর্যটন প্রধান আবোলফাজি মোকাররামিফার এই তথ্য জানান। খবর ইরানি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ এর।
তিনি আরও জানান, এসব ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে কিছু নিদর্শনের জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিদর্শনগুলো বছরের পর বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এগুলোর সংরক্ষণ, সুরক্ষা ও শক্তিশালী করার জন্য এসব পুনরুদ্ধার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়।
৩৩ ইরানে বিশ্বখ্যাত কবি শেখ সাদী দিবস উদ্যাপন
বিশ্বখ্যাত ইরানি কবি শেখ সাদীর স্মরণে বরাবরের মতো এবারও জাতীয় স্মৃতি দিবস উদযাপন করলো ইরান। ফারসি সাহিত্যে নীতিশাস্ত্র বা নীতিসাহিত্য রচনার এই উজ্জ্বল নক্ষত্র ১২০০ সালের দিকে শিরাজে জন্ম গ্রহণ করেন। মৃত্যুবরণ করেন ১২৯২ সালে।
শেখ সাদী ছিলেন একজন সু¯পষ্টভাষী যার পুরো নাম আবু-মুহাম্মাদ মুছলেহ উদ্দিন আব্দুল্লাহ সাদী শিরাজি। তিনি ছিলেন মধ্যযুগে ইরানের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম, যিনি ফেরদৌসির পর ফারসি সাহিত্যের সুন্দর আকাশকে নিজ আলো দ্বারা উজ্জ্বলতর করেছেন এবং যিনি শুধু ইরানেরই নন; বরং বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ লেখকদের অন্যতম।
শেখ সাদী ফারসি সাহিত্যের ইতিহাসে একজন মরমী এবং রূপকবিজ্ঞানী হিসেবে সমাদৃত। অসাধারণ মানসম্মত লেখনীর জন্য বিশ্বব্যাপী পেয়েছেন অসংখ্য স্বীকৃতি। মানবতার কবি শেখ সাদীর সামাজিক ও নৈতিক চিন্তার গভীরতা বিস্মিত করেছে সবাইকে।
প্রাচীন এই প-িত ফারসি ভাষাভাষী দেশগুলোর গ-ি পেরিয়ে পশ্চিমা সমাজসহ বিশ্বব্যাপী খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বব্যাপী বহু লেখনীতে উদ্ধৃত করা হয় তাঁর পঙ্্ক্তিকে।
৩৪ দার্শনিক নাসির আদ-দিন তুসিকে নিয়ে আইআরআইবির ধারাবাহিক
পারস্য দার্শনিক, চিকিৎসক ও জ্যোতির্বিদ আবু জাফর মোহাম্মাদ তুসিকে (যিনি নাসির আদ-দিন তুসি নামে সর্বাধিক পরিচিত) নিয়ে একটি টিভি ধারাবাহিক বানানোর পরিকল্পনা করছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সম্প্রচার মাধ্যম আইআরআইবি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ আইআরআইবির জনসংযোগ দপ্তর এই ঘোষণা দিয়েছে।
নাসির আদ-দিন তুসির (১২০১ থেকে ১২৭৪) বহু বিষয়ে দখল ছিল। তিনি বিজ্ঞান ও দর্শনে উৎসাহিত হন। তুসি গণিত, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, মুসলিম দার্শনিক ইবনে সিনার দর্শন এবং ওষুধ বিষয়ে লেখাপড়া করেন। তিনি ১২৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জ্যোতির্বিদ্যাগত অবজারভেটরি ‘মারাগেহ’ এর প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়া তিনি একটি লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা যেখানে জ্যোতির্বিদ্যা ও জ্যোতিষ সংশ্লিষ্ট সাহিত্যের ৪ লক্ষাধিক খ- একসাথে রয়েছে। তাঁর জন্মদিবস ইরানে প্রতি বছর প্রকৌশলী দিবস হিসেবে উদ্যাপিত হয়। এবছর তাঁর জন্ম তারিখ পড়েছে ২৪ ফেব্রুয়ারি।
৩৫ ইরানে আন্তর্জাতিক করোনাভাইরাস কার্টুন প্রতিযোগিতায় ৪শ শিল্পকর্ম জমা
ইরানের ‘উই ডিফিট করোনাভাইরাস’ আন্তর্জাতিক কার্টুন প্রতিযোগিতায় জমা পড়েছে ৪ হাজার ২শটি ব্যাঙ্গচিত্র। এসব শিল্পকর্ম দাখিল করেছেন বিশ্বের ৮৮টি দেশের কার্টুনিস্টরা।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য পাঠানো শিল্পকর্মগুলো থেকে প্রায় ২ হাজার কার্টুন ইরানকার্টুন ডটআইআর এ ২৮ দিন যাবত দেখানো হয়। আন্তর্জাতিক কার্টুনিস্টদের পাঠানো এসব শিল্পকর্ম দেখেছেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। ইরান আর্টস ব্যুরোর ভিজুয়াল আর্টস অফিসের পরিচালক মাসুদ শোজায়েই-তাবাতাবাই গত ১৪ এপ্রিল ২০২০ এই তথ্য জানান।
এছাড়া কার্টুনগুলো ইন্সটিটিউট অব কন্টেমপোরারি ভিজুয়াল আর্টস এর ওয়েবসাইটে দেখানো হয়।
আন্তর্জাতিক এই কার্টুন প্রতিযোগিতায় ইরান থেকে সর্বোচ্চ ৪৩৬ জন কার্টুনিস্ট অংশ নেন। এরপরে তুরস্ক থেকে ৮২ জন, ভারত থেকে ৭৫ জন, ইন্দোনেশিয়া থেকে ৭০ জন, ব্রাজিল থেকে ৪৮ জন ও রাশিয়া থেকে ৩০ জন কার্টুনিস্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
ইরান আর্টস ব্যুরেরা আয়োজনে অনুষ্ঠিত কার্টুন প্রতিযোগিতায় সহযোগিতায় ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
৩৬ করোনাভাইরাসের ওপর চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করবে ইরান
করোনা ভাইরাস মহামারির ওপর আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হবে তেহরানে। ইভেন্টটির একজন আয়োজক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ওয়ান মিনিট কোয়ারিন্টাইন’ ¯ে¬াগানে আন্তর্জাতিক উৎসবটি আয়োজন করা হবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্দেশ্য করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোয়ারেন্টাইন থাকা অবস্থায় বিশ্বের মানুষ যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছে তা ভাগাভাগি করা।
গত ১২ মে ২০২০ সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ২ লাখ ৮০ হাজারের অধিক মানুষ মারা গেছে। এ পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৪০ লক্ষাধিক এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩ লাখ মানুষ।
৩৭ ফরাসি চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ছবি ‘এক্সাম’
ফ্রান্সের ক্রেটেইল ইন্টারন্যাশনাল নারী চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ছবির খেতাব কুড়িয়েছে চলচ্চিত্রকার সোনিয়া হাদ্দাদ পরিচালিত ইরানি স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘এক্সাম’। ছবিটি চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের ৪২তম আসরের আন্তর্জাতিক বিভাগ থেকে সেরা ছবির অ্যাওয়ার্ড জিতেছে।
‘এক্সাম’ ছবিটিতে এক কিশোরীর গল্প তুলে ধরা হয়েছে। সে একজন বায়ারের কাছে অবৈধ মাদকদ্রব্যের একটি প্যাকেট সরবরাহ করার প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এতে সে এক অদ্ভুত ঘটনাচক্রে আটকে যায়।
স্বল্পদৈর্ঘ্যটি ৪২তম ক্রেটেইল ইন্টারন্যাশনাল ওমেন্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অংশ গ্রহণের জন্য মনোনীত হয়। প্রতি বছর ফ্রান্সের প্যারিসে উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়। মেধাবী নারী চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ছবি প্রদর্শনের জন্য জ্যাকি বুয়েট ১৯৭৮ সালে চলচ্চিত্র উৎসবটি প্রতিষ্ঠা করেন।
ক্রেটেইল ইন্টারন্যাশনাল নারী চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের ৪২তম আসর ১৩ থেকে ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়।
৩৮ অস্কারে লড়ার যোগ্যতা অর্জন করলো ইরানের ‘সং ¯প্যারো’
অস্কার ২০২১ এ লড়ার যোগ্যতা অর্জন করলো ইরান ও ডেনমার্কের যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘সং ¯প্যারো’। চলচ্চিত্রকার ফারজানেহ অমিদভারনিয়া পরিচালিত চলচ্চিত্রটি চিলির ২০তম লেবু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশন ছবির পুরস্কার লাভ করে। উৎসবটির সেরা ছবির খেতাব কুড়িয়ে অস্কারে অংশ নেওয়ার এই যোগ্যতা অর্জন করে চলচ্চিত্রটি।
অ্যানিমেশনটিতে একদল শরণার্থীর কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। যারা ভালো জীবন যাপনের সন্ধানে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার জন্য তারা একজন চোরাচালানীকে অর্থ পরিশোধ করেন। হিমায়িত একটি গোস্তের ট্রাকের পেছনে করে তাঁরা নিরাপদ একটি দেশে পাড়ি দেন। ‘সং স্প্যারো’-তে পতুল অ্যানিমেশন ব্যবহার করে পুরো গল্প তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৫ সালের অস্ট্রিয়ায় সংঘটিত একটি বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছবিটি নির্মিত হয়েছে।
৩৯ সিল্ক রোড চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মালাকুত’-র অ্যাওয়ার্ড জয়
গত ৪ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অনুষ্ঠিত সিল্ক রোড ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে (এসআরআইএফএফ) সম্মানজনক ডিপ্লোমা লাভ করেছে ইরানি চলচ্চিত্র ‘মালাকুত’। স্বল্পদৈর্ঘ্য অ্যানিমেশনটি পরিচালনা করেছেন চলচ্চিত্রকার ফারনুশ আবেদি।
অ্যানিমেশনটি তৈরি করা হয়েছে এক পিয়ানো বাদকের গল্প নিয়ে। সে তার স্ত্রীর জীবন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু এতে সে তার ভেতরের শয়তানকে জাগিয়ে তোলে।
উৎসবের আয়োজকরা জানান, ২০১২ সালে সিল্ক রোড ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালের (এসআরআইএফএফ) যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি আন্তর্জাতিক প্রশংসিত চলচ্চিত্র উৎসবে পরিণত হয়। প্রতি বছর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে আন্তর্জাতিক এই চলচ্চিত্র উৎসবের আসর বসে। উৎসবে সিল্ক রোডের বাণিজ্যিক রুটের আওতাভুক্ত দেশগুলোর চলচ্চিত্রের জন্য বিশেষ বিভাগ রয়েছে।
৪০ মার্কিন উৎসবে সেরা ফিচার ছবির অ্যাওয়ার্ড জিতলো ‘আনটাইমলি’
সম্প্রতি আমেরিকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ডালাস ভিয়োফেস্ট অলটারনেটিভ ফিকশনে সেরা ফিচার ছবির অ্যাওয়ার্ড জিতেছে ইরানি ফিচার ‘আনটাইমলি’। চলচ্চিত্রকার পুয়া ইশতেহারদি পরিচালিত ছবিটি উৎসবের এবারের আসরে ‘বেস্ট ফার্স্ট ফিচার’ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছে।
‘আনটাইমলি’ চলচ্চিত্রটিতে হামিন নামে ইরানি এক তরুণ সেনা সদস্যের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। যিনি ইরান-পাকিস্তান সীমান্তরেখায় একটি ওয়াচটাওয়ারে সামরিক দায়িত্ব পালন করেন।
ওয়াচটাওয়ারের ওপর থেকে হামিন বিগত বছরগুলো পর্যালোচনা করে দেখেন। শৈশবকালে তাঁর ও তাঁর বোনের সাথে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে কল্পনা করেন।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন ইমান আফশার, শায়ান আফশার, আইয়ুব আফশার, মাহসা নরুয়ি, আভা আজারপিরা ও মোল্লাবাখশ রায়েসি প্রমুখ অভিনেতা।
এর আগে ইরানি ফিচারটি আমেরিকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কানসাস সিটি ফাইল চলচ্চিত্র উৎসবে ‘বেস্ট ওয়ার্ল্ড সিনেমা ফিচার’ অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।
এছাড়াও ইরানি ফিচারটি আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য ৬৮তম কলাম্বাস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম অ্যান্ড অ্যানিমেশন ফেস্টিভালে দেখানো হবে। চলচ্চিত্রটি এরআগে পঞ্চম টোকিও স্বতন্ত্র চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক ও সেরা সিনেমাটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।
৪১ মার্কিন উৎসবে সেরা চলচ্চিত্র ইরানি ছবি ‘লিমিট’
আমেরিকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিয়ে সেরা চলচ্চিত্রের খেতাব কুড়ালো ইরানি শর্ট ফিল্ম ‘লিমিট’। উডবুরি চলচ্চিত্র উৎসবের এবারের দ্বিতীয় আসরে ছবিটি সেরা ছবির অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন ইরানি নির্মাতা জাভাদ দারায়ি।
৮ মিনিটের ছবি ‘লিমিট’ স্থানীয় এক ব্যক্তির জীবন নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। লোকটি একটি শান্ত গ্রামে বসবাস করতো। একদিন কোনো এক প্রয়োজনে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে তিনি সাহায্য চান। এসময় হঠাৎ করে কেউ একজন তার কক্ষে প্রবেশ করেন।
আমেরিকার উটাহ অঙ্গরাজ্যের সল্ট লেক সিটিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় উডবুরি ফিল্ম ফেস্টিভালে ‘লিমিট’ সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় ৬ থেকে ৮ মার্চ।
জাভাদ দারায়ির ছবিটি এর আগে কয়েকটি পুরস্কার জিতেছে। ছবিটি ফ্রান্সের দশম ইন্টার-২ মারচেস ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালে জুরি র্গ্যান্ড প্রিক্স অ্যাওয়ার্ড ও আমেরিকার নিউ ইয়র্কে ২০১৯ গ্লোবাল শর্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডে সেরা পরিচালকের পুরস্কার লাভ করে।
৪২ চেন্নাই উৎসবে সেরা শর্ট ফিল্ম ইরানের ‘দ্যা পাস্ট কন্টিনিয়াস’
গত এপ্রিলে ভারতের চেন্নাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে (সিআইএফএফ) সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতেছে ইরানি ছবি ‘দ্যা পাস্ট কন্টিনিয়াস’। চলচ্চিত্রকার শিভা তাহেরির স্বল্পদৈর্ঘ্যটি উৎসবের এবারের ১৭তম আসর থেকে সেরা ছবির খেতাব কুড়ালো।
সেরা শর্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ‘দ্যা পাস্ট কন্টিনিয়াস’ এর স্ক্রিপ্ট লিখেছেন কারিম আমিনি, আমিন তাহমাসেবি ও আলি বাতেনি। ভারতের চেন্নাই শহরে চলচ্চিত্র সমিতি ইন্দো সিনে-অ্যাপ্রিসিয়েশন ফাউন্ডেশন (আইসিএএফ) এর উদ্যোগে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে ‘দ্যা পাস্ট কন্টিনিয়াস’ আমেরিকার ১৩তম টাওস শর্টজ ফিল্ম ফেস্টিভাল, ইতালির ভ্যারিস ফিল্ম ফেস্টিভাল ও ইন্দোনেশিয়ার ১৬তম মিনিকিনো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে অংশ নেয়।
৪৩ দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার ইরানি তরুণ দাবাড়– গোলামি
২০২০ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত দাবার সর্বোচ্চ বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল চেস ফেডারেশনের (এফআইডিই) শিরোপা জিতে ইরানের তরুণ দাবাড়– আরিয়ান গোলামি। এফআইডিই এর অনূর্ধ্ব ১৮ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ পদক গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সে।
এর আগে গোলামি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ২০১৯ শাঙহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশন চেজ ইন্টারন্যাশনালের রাউন্ড-৯ এর শিরোপা লাভ করে।
১৮ বছর বয়সী এই তরুণ দাবাড়– ঘায়েমশাহরে জন্মগ্রহণ করে। মাত্র আট বছর বয়সে সে ইরানের সবচেয়ে তরুণ এফআইডিই-র্যাঙ্কিং দাবা গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
৪৪ অলি¤িপকে টিকিট নিশ্চিত করলো ইরানি মুষ্টিযোদ্ধা শাহবাখশ
টোকিও অলি¤িপকস ২০২০ এ টিকিট নিশ্চিত করলেন অত্যন্ত হালকা ওজনের ইরানি মুষ্টিযোদ্ধা দানিয়াল শাহবাখশ। গত ১২ মার্চ ২০২০ হংকংয়ের প্রতিপক্ষ ইয়ু সিং তিসোকে পরাজিত করে অলি¤িপকে নিজের অবস্থান নিরাপদ করেন তিনি।
অলি¤িপক বক্সিং কোয়ালিফিকেশন ইভেন্টটি জর্দানের আম্মানে অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য ৮ জন মুষ্টিযোদ্ধাকে পাঠিয়েছে ইরান।
প্রতিযোগিতার ২২ পেইড ফাইটে অপরাজিত থাকা তিসোকে মুষ্টির আঘাতে জর্জরিত করেন ১৯ বছর বয়সী শাহবাখশ। দারুণ পারফরমেন্স করে টানা তিন রাউন্ডের সবগুলোতে জয় লাভ করেন তিনি।
আলিরেজা ইস্তাকির নেতৃত্বাধীন ইরানি বক্সিং দলের অন্য সদস্যরা হলেন- আশকান রেজায়ি (৬৩ কেজি), শাহিন মুসাভি (৭৫ কেজি), অমিদ আহমাদি সাফা (৫২ কেজি), সাজাদ কাজেমজাদেহ (৬৯ কেজি), ইহসান রুজবাহানি (৮১ কেজি), তুফান শারিফি (৯১ কেজি) ও ইমান রামেজানপুর (+৯১কেজি)।
অলি¤িপক বক্সিং কোয়ালিফিকেশন টুর্নামেন্টে ৩৫টি দেশের ১৫১ জন মুষ্টিযোদ্ধা অংশ নেন। ইভেন্ট শেষ হয় ১১ মার্চ।
৪৫ এশিয়া ওয়ার্ল্ড কাপ হিরো ইরানের বেইরাভান্দ
এ বছর এএফসির এশিয়ান ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ হিরো নির্বাচিত হয়েছেন ইরানের আন্তর্জাতিক গোলরক্ষক আলিরেজা বেইরভান্দ। এএফসি মনোনীত পাঁচজনের সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে তিনি এশিয়ান হিরো নির্বাচিত হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন।
দ্যা-এএফসি ডটকম ওয়েবসাইটে পরিচালিত জরিপে সর্বোচ্চ ৬৮ শতাংশ ভোট পান ইরানি এই গোলরক্ষক। বেইরাভান্দ জাপানি কিংবদন্তি মিডফিল্ডার কেইসুকে হোন্দাকে পরাজিত করে সেরা নির্বাচিত হন। জরিপে হোন্দা পেয়েছেন মাত্র ২৪ শতাংশ ভোট।
এশিয়া হিরোর সংক্ষিপ্ত মনোনয়ন তালিকায় বেইরাভান্দের সাথে আরও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার টিম কাহিলি, সৌদি আরবের সামি আল জাবের ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের পার্ক জি-সাং।
গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করেন বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল।
৪৬ ইরানি বিস্ময় শিশু আরাতের প্রশংসায় মেসি
ফুটবলের বিস্ময় শিশু আরাত হোসেইনি। মাত্র ছয় বছর বয়সে যেন ফুটবলের জাদুকর বনে গেছে সে। সম্প্রতি বারসেলনার টি-শার্ট পরে ফুটবল পায়ে দারুণ নৈপুণ্যতা দেখায় ইরানি এই শিশু। যা দেখে কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে পারলেন না ফুটবলের জাদুকর লিওনেল মেসি। তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে আর্জেন্টিনা তারকা আরাতের প্রশংসা করেছেন। সে যে অসাধারণ নৈপুণ্যতা দেখিয়েছে তাতে বিস্ময় প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
মেসি লিখেছেন, ‘থ্যাংকস আরাত!! আই সি এ লট অব ক্লাস দেয়ার, ইমপ্রেসিভ! হাগ!!’
ছয় বছর বয়সী আরাত ইরানের উত্তরাঞ্চলে জন্মগ্রহণ করে। তবে এখন সে লিভারপুলে বসবাস করে। ধারাবাহিক কিছু ভিডিওতে অবিশ্বাস্য নৈপুণ্যতা দেখিয়ে ইন্টারনেটে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় সে।
ইনস্টাগ্রামে আরাতের ফলোয়ার সংখ্যা ২৭ লাখ। বিশ্বের নামিদামি ক্রীড়া তারকারাও তার ফলোয়ারের তালিকায় রয়েছে। এদের মধ্যে বক্সার অ্যান্থনি জশুয়া, সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার রিও ফারদিনান্দ ও লিভারপুল চ্যা¤িপয়ন লিগ বিজয়ী লুইস গারসিয়ারাও রয়েছেন।
বিস্ময় শিশু আরাতের প্রিয় খেলা ফুটবল। তবে জিমনেস্টিক, বাস্কেটবল ও তাইকোয়ান্দোর মতো খেলাগুলোতেও বেশ ভালো সে।