শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

সংবাদ বিচিত্রা (বিদেশী সংবাদ)

পোস্ট হয়েছে: মার্চ ১৬, ২০১৭ 

মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক বিষয়গুলো এ অঞ্চলের দেশগুলোরই সমাধান করা উচিত : সর্বোচ্চ নেতা

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক বিষয়গুলো এ অঞ্চলের দেশগুলোরই সমাধান করা উচিত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফ্যান লফভেনকে দেয়া সাক্ষাতের সময় সর্বোচ্চ নেতা এ কথা বলেন।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ইরাক পরিস্থিতির উন্নতির কথা তুলে ধরে বলেন, সিরিয়া পরিস্থিতিরও উন্নতি হতে পারে, তবে সবার আগে সন্ত্রাসবাদের প্রতি কয়েকটি দেশের সমর্থন ও যুদ্ধকামী নীতির অবসান হওয়া জরুরি। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, সিরিয়ার কথিত বিরোধী গ্রুপে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিনিধির উপস্থিতি এবং সিরিয়ার চলমান সংকটে সন্ত্রাসীদের জন্য অস্ত্রের যোগান দেয়া- এ ধরনের হস্তক্ষেপের কয়েকটি উদাহরণ।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, ইরান ও সুইডেনের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। স্টকহোমের সঙ্গে স¤পর্ক উন্নয়নের পদক্ষেপকে তেহরান স্বাগত জানায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যে বর্তমানে যে স¤পর্ক রয়েছে তা প্রকৃত সক্ষমতার চেয়ে অনেক নিচেই। তিনি বলেন, ইরানের জনগণ সুইডেনের বিষয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে যা দু’দেশের মধ্যকার স¤পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে একটি সঠিক ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
এ সময় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী পদে সুইডেনের পক্ষে ইরানের ভোট দেয়ার কথা উল্লেখ করে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সংস্থাটি কয়েকটি দেশের কাছে বন্দি হয়ে রয়েছে। তারপরও গঠনমূলক ভূমিকা রেখে এ সংস্থাকে দ্বৈতনীতি অনুসরণ করা থেকে বিরত রাখা সম্ভব।’
সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তেহরান সফরে এসে তিনি অর্থনৈতিক ও মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি নিয়ে ইরানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি জানান, ইরান ও সুইডেন যেসব দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সমঝোতা সই করেছে তাঁর দেশ তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সুইডেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হয়েছে এ সংস্থায় কার্যকরী ভূমিকা পালনের জন্য।

ইরানকে হুমকি দিয়ে বলদর্পী শক্তিগুলো অনুশোচনা করবে : বিপ্লববার্ষিকীর শোভাযাত্রায় প্রেসিডেন্ট রুহানি
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি রাজধানী তেহরানে বিপ্লব বার্ষিকীর সমাবেশে বলেন, সারা দেশে ইসলামি বিপ্লবের বিজয় বার্ষিকীর শোভাযাত্রায় লাখ লাখ মানুষ অংশ নিয়ে আমেরিকার নয়া প্রশাসনের মিথ্যাচারের জবাব দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, মহান ইরানি জাতিকে হুমকি দেয়ার কারণে বিশ্বের বলদর্পী শক্তিগুলো অনুশোচনা করবে। তিনি বলেন, জনগণের এ সরব উপস্থিতির মাধ্যমে তারা বিশ্বকে এ বার্তাই দিচ্ছে যে, ইরানি জাতির সঙ্গে সম্মান এবং মর্যাদার ভাষায় কথা বলতে হবে, ভয় ও হুমকির ভাষায় নয়। তিনি আরও বলেন, গত ৩৮ বছরে ইরানি জাতি এটা প্রমাণ করেছে যে, যারাই তাদের সঙ্গে হুমকির ভাষায় কথা বলেছে তারাই পরবর্তীকালে অনুশোচনায় ভুগেছে।
ড. রুহানি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি গোটা বিশ্ব মেনে নিয়েছে এবং ইরানের পরমাণু পণ্য এখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করছে। এ সময় তিনি ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের পর থেকে শত্রুদের অব্যাহত নানা ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতার নিন্দা জানান।
ইরানের সঙ্গে সই হওয়ার পরমাণু সমঝোতা বাতিল করার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা¤েপর হুমকির মুখে পালিত হয় ইসলামি বিপ্লব বিজয়ের ৩৮তম বার্ষিকী। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সর্বস্তরের জনগণকে এবারের বিজয় সমাবেশ এবং শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানয়েছিলেন। তাঁর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে খারাপ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে তেহরানের সুবিশাল আজাদি চত্বর এবং তার আশেপাশের এলাকা হয়ে ওঠে ফুঁসে ওঠা মানুষের বিশাল এক মহাসমুদ্র।
ইরানে ফারসি ক্যালেন্ডার অনুসারে ২২ বাহমান বিপ্লব বার্ষিকী উদযাপন করার লক্ষ্যে সারা ইরানে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে বিজয় মিছিল ও সমাবেশ করেন। ১৯৭৯ সালের ওই দিন ইমাম খোমেইনী (র.)-এর নেতৃত্বে মার্কিন সমর্থিত স্বৈরশাসক রেযা শাহের পতন হয় এবং ইসলামি বিপ্লব চূড়ান্তভাবে বিজয় লাভ করে।

ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির ইন্তিকাল
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদের প্রধান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ আলী আকবর হাশেমি রাফসানজানি গত ৮ জানুয়ারি ২০১৭ তেহরানের একটি হাসপাতালে ইন্তিকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। ইরানের প্রেস টিভির খবরে বলা হয়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ইন্তিকাল করেন। মৃত্যুর আগে আয়াতুল্লাহ রাফসানজানি ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদের প্রধানহিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আয়াতুল্লাহ রাফসানজানি হৃদযন্ত্রে তীব্র ব্যথা অনুভব করলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি সেখানে ইন্তিকাল করেন।
১৯৩৪ সালের ২৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন ইরানের এই খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ। তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন রাজনীতিবিদ ও লেখক। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের চতুর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের চেয়ারম্যান। এছাড়া, ১৯৮০ সালে তিনি ইরানের জাতীয় সংসদের ¯িপকার নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় রাফসানজানি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির জানাযা ও দাফন অনুষ্ঠানে সর্বস্তরের মানুষের ঢল
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নীতি নির্ধারণী পরিষদের প্রধান আয়াতুল্লাহ আলী আকবর হাশেমি রাফসানজানির নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় গত ৮ জানুয়ারি ২০১৭। নামাযে ইমামতি করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যা¤পাসে স্থানীয় সময় সকাল দশটায় তাঁর জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি, মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবর্গ ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, নীতি নির্ধারণী পরিষদের সদস্যরা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. আলী লারিজানি, বহুসংখ্যক সংসদ সদস্য, শীর্ষ পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তাগণ এবং লাখ লাখ সাধারণ মানুষ। জানাযা শেষে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের নেতা মরহুম ইমাম খোমেইনীর মাযার প্রাঙ্গনে তাঁকে দাফন করা হয়।

আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির স্মরণে শোক-সভা করলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রভাবশালী নেতা আয়াতুল্লাহ হাশেমি রাফসানজানির মৃত্যুতে ইসলামি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ীর উপস্থিতিতে ও তাঁরই উদ্যোগে তেহরানে একটি শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ইমাম খোমেইনী (র.) হোসাইনিয়ার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই শোকসভা। এ সভায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও বিশ্বনবী (সা.)-এর পবিত্র আহলে বাইতের ওপর দরুদ পাঠ করা হয়। কোরআন পাঠ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি, সংসদ স্পিকার আলী লারিজানি, প্রধান বিচারপতি সাদিক আমোলি লারিজানিসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এই শোকানুষ্ঠানে যোগ দেন। বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তারাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইবরাহিম জাফারি ও ইরাকি ইসলামি সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রধান আম্মার আল হাকিমও এ শোক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা রাফসানজানি ছিলেন দেশটির বিপ্লবোত্তর সংসদের প্রথম ¯িপকার। তিনি পর পর দুই দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়াও মরহুম রাফসানজানি ছিলেন তেহরানের জুমআ নামাযের অস্থায়ী খতিব। ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদেরও প্রধান ছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এই ইসলামি রাষ্ট্রের সেবা করেছেন।

আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির ইন্তিকালে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের শোক
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নীতি নির্ধারণী পরিষদের প্রধান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ আকবর হাশেমি রাফসানজানির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্দিরমির পুতিন। তিনি গত ১০ জানুয়ারি ২০১৭ ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির কাছে পাঠানো এক শোকবার্তায় ইরানের সরকার ও জনগণকে শোক ও সমবেদনা জানান।
মস্কোয় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মেহদি সানায়ি গত ১০ জানুয়ারি এ খবর জানিয়ে বলেন, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রতিনিধি ইরান দূতাবাসে এসে প্রেসিডেন্ট পুতিনের শোকবার্তা হস্তান্তর করেন। আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির মৃত্যুতে মস্কোর ইরান দূতাবাসে খোলা হয়েছে বিশেষ শোকবই। সেখানে পদস্থ রুশ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রাশিয়ায় নিযুক্ত অন্যান্য দেশের কূটনীতিকরা নিজ নিজ দেশের পক্ষে ইরানের সরকার ও জনগণকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
এর আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ, লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা আব্দুল মালেক হুথিসহ বিশ্বের বহু দেশের নেতা আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বার্তা পাঠিয়েছেন।

ইউরোপে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকতর সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য রাহ্বারের আহ্বান
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহ্ উযমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী ইউরোপের মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি তাদের চার দিকের বিশ্বে অধিকতর প্রভাব বিস্তারকারী ভূমিকা পালনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন অব্ ইসলামিক স্টুডেন্ট্স্ অ্যাসোসিয়েশন ইন ইউরোপ (ইউআইএসএই)-এর ৫১তম বার্ষিক সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত ২০ জানুয়ারি (২০১৭) প্রেরিত এক বাণীতে এ আহ্বান জানান।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের বর্তমান রাহবার হযরত আয়াতুল্লাহ্ খামেনেয়ী তাঁর এ বাণীতে বলেন, যুবক ও একই সাথে ছাত্র হওয়ার কারণে তারা একটি শক্তিশালী চালিকাশক্তি, এ কারণে তারা স্ব-উদ্যোগে জনগণকে সমুন্নত লক্ষ্য সমূহ অর্জনের দিকে পথপ্রদর্শন করতে পারে।
ইসলামি বিপ্লবের রাহবার বলেন, ছাত্রত্ব ও যুবক হওয়ার দু’টি বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হওয়া ছাড়াও তোমরা ইসলামি সমিতি সমূহের মতো কার্যকর ও প্রভাব বিস্তারকারী প্রক্রিয়ায় উপস্থিতির অধিকারী। তাই এটাই কাম্য যে, তোমরা বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের ক্ষেত্রে এবং দ্বীনী ও নৈতিক দিক থেকে নিজেদেরকে অধিকতর উন্নত করে গড়ে তুলবে। তিনি আরো বলেন, তোমাদের কাছ থেকে আরো কাম্য এই যে, তোমরা তোমাদের চার দিকের বিশ্বের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে এবং তোমাদের কথা ও কাজের দ্বারা আল্লাহ্র পথে অগ্রসর হবে।
হযরত আয়াতুল্লাহ্ খামেনেয়ী বলেন, বর্তমানে ইসলামের সমুন্নত পতাকার বিরুদ্ধে বলদর্পী ও ধর্মদ্রোহী শক্তি যে অসম যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সে পরিপ্রেক্ষিতে এটা আমাদের সকলেরই কর্তব্য। তিনি এ লক্ষ্যে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি ইসলামের সঠিক জ্ঞানের উৎসে পরিণত হবার এবং সঠিক ঐশী পথে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।

আরব দেশগুলোর শত্রুরা ইরান-আতঙ্ক ছড়াচ্ছে : রুহানি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, তাঁর দেশ শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত হওয়া সত্ত্বেও ইসলাম ও আরব দেশগুলোর অভিন্ন শত্রুরা মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। মাস্কাত সফররত প্রেসিডেন্ট রুহানি গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আলে সাঈদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ইরান সব সময় সব ধরনের সমস্যা ও মতবিরোধ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে। এ ছাড়া, ইরানের সামরিক শক্তি স¤পূর্ণ আত্মরক্ষামূলক এবং মধ্যপ্রাচ্যের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষার সেবায় নিয়োজিত।
প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতাই কেবল এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তাঁর দেশের প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেন।
হাসান রুহানি বলেন, এ অঞ্চলের দেশগুলো যখনই কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তখনই তেহরান তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরান আঞ্চলিক দেশগুলোকে সহায়তা করতে কার্পণ্য করে নি।
সাক্ষাতে সুলতান কাবুস রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ইরানের সঙ্গে সহযোগিতা শক্তিশালী করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ইরানের সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন ওমানের সুলতান। একদিনের ওমান সফর শেষে প্রেসিডেন্ট রুহানি কুয়েতের উদ্দেশে মাস্কাত ত্যাগ করেন।

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রীর উপদেষ্টার সাথে যারীফের সাক্ষাৎ
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ যারীফ গত ১৯ জানুয়ারি (২০১৭) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আনিফে আমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র্রবিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আযীযের সাথে সাক্ষাৎ ও পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে মত বিনিময় করেন।
মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্কট ও ফিলিস্তিনের সর্বশেষ ঘটনাবলি সম্পর্কে আলোচনার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি)-র বিশেষ অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে সে দেশে অবস্থানকালে অধিবেশনের অবকাশে জনাব যারীফ ঐ দুই কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব জাওয়াদ যারীফ এবং মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আনিফে আমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আযীযের মধ্যকার এ বৈঠক দু’টিতে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি সম্পর্কে আলোচনা হয় এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও সংশ্লিষ্ট দেশ দু’টির মধ্যে সকল ক্ষেত্রে সম্পর্ক সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

রোহিঙ্গা মুসলমানদের প্রতি মানবিক সাহায্য প্রদানের জন্য যারীফের আহ্বান
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব জাওয়াদ যারীফ মযলূম রোহিঙ্গা মুসলমানদের মানবিক সাহায্য প্রদানের ও তাদের সপক্ষে যথাযথ ভূমিকা পালনের জন্য বিশ্বের সকল মুসলমানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্কট ও ফিলিস্তিনের সর্বশেষ ঘটনাবলী সম্পর্কে আলোচনার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি)-র বিশেষ অধিবেশনে গত ১৯শে জানুয়ারী (২০১৭) তারিখে প্রদত্ত ভাষণে এ আহ্বান জানান।
জনাব যারীফ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সে দেশের চরমপন্থী বৌদ্ধদের অপরাধমূলক কর্মকা-ের কঠোর নিন্দা করেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সরকার অন্যায়ভাবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় বৌদ্ধ চরমপন্থীদের দ্বারা তাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ধর্ষণ ও গণহত্যাকে উপেক্ষা করে চলেছে। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় মুসলিম জাতি সমূহকে বৈষম্য ও ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার হওয়া মুসলমানদের পক্ষে সোচ্চার হতে হবে।
জনাব যারীফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মৃত্যুর হাত থেকে পলায়ন করতে গিয়ে যে মুসলিম সন্তানরা সমুদ্রে ডুবে মারা যাচ্ছে তাদের সে মর্মান্তিক দৃশ্যের প্রতি বিশ্ববাসী চোখ বন্ধ করে আছে ও পুরোপুরি নীরব রয়েছে। তিনি মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানদের রক্ষার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান এবং জোর দিয়ে বলেন, মিয়ানমারের সরকার যাতে সে দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে সে লক্ষ্যে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
জনাব যারীফ আরো বলেন, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে তার সুফল অবশ্যই সে দেশের মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীকেও পেতে হবে। তিনি বলেন, দেশটির গণতন্ত্র অভিমুখে যাত্রা যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি সেখানকার জনগণের একটি অংশের বিরুদ্ধে যে নিষ্ঠুরতা ও পৈশাচিকতা চলছে তার প্রতি দেশটির সরকারের অবহেলাও খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও গভীর উদ্বেগের বিষয়।

ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে দু’টি পারমাণবিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (এইওআই) ও রুশ ফেডারেশনের পারমাণবিক শক্তিবিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থা রোসাটম্ স্টেট্ অ্যাটোমিক কর্পোরেশনের মধ্যে পারমাণবিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে দু’টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইরানি পারমাণবিক প্রতিনিধিদলের রাশিয়া সফরের শেষ দিনে গত ১৯ জানুয়ারি (২০১৭) রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এইওআই-র মুখপাত্র বেহ্রুয কামালভান্দী ও রোসাটম্-এর প্রধান অ্যালেক্সি লিখাচেভ্ নিজ নিজ দেশের পক্ষ থেকে চুক্তি দু’টিতে স্বাক্ষর করেন।
শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্য ইরানে পারমাণবিক শক্তির উৎপাদনের লক্ষ্যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প সম্পর্কে গত ২০১৫ সালের ১৪ই জুলাই তারিখে ৫+১ জাতি ও ইরানের মধ্যে স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কোঅপারেশন প্লান্ অব্ অ্যাক্শন্ (জেসিপিওএ)-এর সাথে সঙ্গতি রেখে স্টাব্ল্ আইসোটোপ্ উৎপাদনের লক্ষ্যে ইরানের র্ফোদা ফুয়েল এন্রিচ্মেন্ট্ প্লান্টের পুনঃনির্মাণ এবং ইতিপূর্বে ২০১৪ সালে ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পাদিত পারমাণবিক বিষয়ক চুক্তি সমূহের বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে দু’দেশের মধ্যে বর্তমান সহযোগিতা চুক্তি দু’টি স্বাক্ষরিত হয়।

ইরান ও জার্মানির মধ্যে পরিবহন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও জার্মানির মধ্যে বিমান, রেলওয়ে, সামুদ্রিক ও সড়ক পরিবহন সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইরান সরকারের সড়ক ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী আব্বাস আহ্মদ অখুন্দী এবং ইরান সফরে আগত জার্মানির পরিবহন ও ডিজিটাল ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ড গত ১৭ জানুয়ারি (২০১৭) তেহরানে এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এ সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী দু’দেশের মধ্যে বিশেষভাবে বিমান, রেল, সামুদ্রিক ও সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্র সমূহে পারস্পরিক সহযোগিতার পন্থা উদ্ভাবনসহ যোগাযোগ ও পরিবহনের সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অচিরেই একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর জনাব আব্বাস আহ্মদ অখুন্দী সাংবাদিকদের জানান যে, সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী জার্মানি ইরানে ৫০টি লোকোমোটিভ উৎপাদনের কাজে সহযোগিতা করবে। তিনি জানান, জার্মানির সিমেন্স্ কোম্পানি ইরানের এমএপিএনএ কোম্পানিকে এগুলো উৎপাদনের কাজে সহযোগিতা দেবে।
তিনি আরো জানান যে, এ ছাড়াও দু’পক্ষের মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন, একটি এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স সেন্টার নির্মাণ ও সড়ক পরিবহনের স্মার্টিফিকেশন সম্পর্কে আলোচনা হয়েছেÑ যা ইতিবাচক ফলাফল বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ প্রসঙ্গে জনাব অখুন্দী উল্লেখ করেন যে, এয়ারবাস বিমান ক্রয় এবং কয়েকটি ইরানি বন্দরের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহের ব্যাপারে ইরান ও জার্মানির মধ্যে লেনদেন হয়েছে।
জার্মান মন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ড দু’দেশের মধ্যকার আলোচনা ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ইরান ও জার্মানির মধ্যে পরিবহন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার চমৎকার ক্ষেত্র রয়েছে।
উল্লেখ্য, জনাব আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ড তাঁর এ সফরে তাঁর দেশের একটি বড় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যাতে মিউনিখ ও ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমান বন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদ্বয় সহ বিভিন্ন জার্মান কোম্পানির ৩০ জন সিনিয়র পরিচালক অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
আরো উল্লেখ্য যে, জার্মানির পরিবহন ও ডিজিট্যাল ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ড এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে ইরান সফরে আসেন। ঐ সময় দু’দেশের মধ্যে পরিবহন খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এবারের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে ইতিপূর্বে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকসমূহে অন্তর্ভুক্ত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত ও তার আওতা অধিকতর বিস্তৃত হবে।

ইতালি ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইরানি পণ্যের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের কাস্টম্স্ প্রশাসন কর্তৃক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে ইতালি হচ্ছে ইরানি পণ্যের সবচেয়ে বড় আমদানীকারক। চলতি ইরানি বছর (১৩৯৫)-এর প্রথম নয় মাসের (২১ মার্চ Ñ ২০ ডিসেম্বর ২০১৬) রপ্তানির পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উক্ত নয় মাসে ইতালি ইরান থেকে তেল বহির্ভূত ও স্যুটকেস ব্যবসায়ের মাধ্যমে আমদানিকৃত পণ্যের বাইরে মোট ৫ লাখ ৮৭ হাজার টন পণ্য আমদানি করে যার মূল্য ছিল ৩৮ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার। উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী বছরে একই সময়ে ইতালি কর্তৃক আমদানিকৃত একই ধরনের পণ্যের মূল্য ছিল ৪৬ কোটি ৪২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৫৭৩ ডলার। সে হিসেবে চলতি ইরানি বছরের প্রথম নয় মাসে ইতালি কর্তৃক ইরানি পণ্য আমদানির পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শতকরা ১৭ ভাগ হ্রাস পেয়েছে।
চলতি ইরানি বছরের প্রথম নয় মাসে ইরান থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ইতালির পরের স্থান হচ্ছে ইরানের প্রতিবেশী দেশ আযারবাইজান প্রজাতন্ত্রের; এ সময় আযারবাইজান ইরান থেকে ৩০ কোটি ২১ লক্ষ ২৮ হাজার ৩৫৫ ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করে। এর পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি Ñ ঐ সময় ইরান থেকে যার পণ্য আমদানির মূল্য ছিল ২১ কোটি ১০ লক্ষ ৬৫ হাজার ৫৫ ডলার। এর পর চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে ছিল যথাক্রমে স্পেন (১৯ কোটি ৭৩ লক্ষ ৭৪ হাজার ৬৭২ ডলার) ও আর্মেনিয়া (১৬ কোটি ৮ লক্ষ ৭২ হোজার ৭৯২ ডলার)।
চলতি ইরানি বছরের প্রথম নয় মাসে ইউরোপের ৪০টি দেশে ইরান থেকে তেল বহির্ভূত ও স্যুটকেস ব্যবসায়ের মাধ্যমে আমদানিকৃত পণ্যের বাইরে আমদানিকৃত মোট পণ্যের আমদানি মূল্য ছিল ১৮৫ কোটি ৫৪ লক্ষ ৯২ হাজার ১৯৮ ডলার।

৪১০০ কোটি ডলারের তেল রপ্তানি করবে ইরান : জাঙ্গানে
ইরানের তেলমন্ত্রী বিজান জাঙ্গানে আশা প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁর দেশ চলতি ফারসি বছরের শেষ নাগাদ ৪১০০ কোটি ডলার মূল্যের তেল ও তেলজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারবে। তিনি গত ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চলতি বছরের গত নয় মাসে ইরান ২৮৭০ কোটি ডলারের তেল রপ্তানি করেছে। ২০১৬ সালের ২১ মার্চ চলতি ফারসি বছর শুরু হয়েছে এবং আগামী ২০ মার্চ তা শেষ হবে।
তেল রপ্তানি থেকে অর্জিত অর্থ ইরানের চলতি জাতীয় বাজেটে হাতে নেয়া অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট বলেও তিনি মন্তব্য করেন। জাঙ্গানে বলেন, তেল ও তেলজাত পণ্য রপ্তানির সব অর্থ তেহরান সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাচ্ছে এবং কোনো দেশ নিষেধাজ্ঞার সময়ের মতো এই অর্থ আটকে রাখছে না।
ইরানের তেলমন্ত্রী বলেন, পরবর্তী অর্থ-বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট রুহানির সরকার যে বাজেট প্রণয়ন করবে তাতে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৫৫ ডলার ধরা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ ইরানের তেলবিষয়ক উপমন্ত্রী আমির হোসেইন জামানিনিয়া জানিয়েছিলেন, চলতি ফারসি বছরের প্রথম নয় মাসে ইরান প্রায় ৩০০০ কোটি ডলার মূল্যের তেল রপ্তানি করেছে। পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরানের পরমাণু সমঝোতা সই হওয়ার পর দেশটির তেল রপ্তানির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন।
ইরানে ওয়ার্ল্ড্ ফেডারেশন অব্ ট্যুরিস্ট গাইড্স্ অ্যাসোসিয়েশন-এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাজধানী তেহরানে ওয়ার্ল্ড্ ফেডারেশন অব্ ট্যুরিস্ট গাইড্স্ অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউএফটিজিএ)-র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি (২০১৭) পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিশ্বের ৪৫টি দেশ থেকে চারশ’ ট্যুরিস্ট্ গাইড্ অংশগ্রহণ করেন। ইরান ফেডারেশন অব্ ট্যুরিস্ট্ গাইড্ অ্যাসোসিয়েশন্ (আইএফটিজিএ) এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, এর আগে ওয়ার্ল্ড্ ফেডারেশন্ অব্ ট্যুরিস্ট গাইড্স্ অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউএফটিজিএ)-র বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রুবী রয়্ ২০১৫ সালে ইরান সফর করেন। ঐ সময় তিনি ওয়ার্ল্ড্ ফেডারেশন অব্ ট্যুরিস্ট গাইড্স্ অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউএফটিজিএ)-র পরবর্তী সম্মেলন ইরানে অনুষ্ঠানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ইরানে ওয়ার্ল্ড্ ফেডারেশন্ অব্ ট্যুরিস্ট গাইড্স্ অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউএফটিজিএ)-র সম্মেলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এতে অংশগ্রহণকারী বিদেশি ট্যুরিস্ট গাইড্দেরকে কোনোরূপ প্রবেশমূল্য ছাড়াই বিভিন্ন মিউজিয়াম ও অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থান পরিদর্শন করানো হয়। উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনুরূপ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ইরানি ট্যুরিস্ট গাইডগণকেও অনুরূপ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে।

আবাদানে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র জাদুঘর নির্মিত হবে
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পারস্য উপসাগর উপকূলীয় বন্দর নগরী আবাদানে পার্ক আকারে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যারিটাইম মিউজিয়াম (সমুদ্র যাদুঘর) নির্মিত হবে। ইরানের তেল শিল্প মিউজিয়াম অফিসের প্রধান জনাব আকবর নে‘মাতুল্লাহী গত ১২ জানুয়ারি (২০১৭) এ তথ্য প্রকাশ করেন।
তিনি প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে আবাদান শহরে শতাব্দী কালের পুরনো একটি পেট্রোলিয়াম টেকনিক্যাল স্কুল রয়েছেÑ যা তেল শিল্পবিষয়ক পেশাগত প্রশিক্ষণ প্রদানের কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকে। তিনি জানান, এ স্কুলের অংশ হিসেবে ১৬০০ বর্গমিটার জায়গা জুড়ে একটি সমুদ্র যাদুঘর নির্মাণ করা হবেÑ যা হবে এ ধরনের দ্বিতীয় কিন্তু বৃহত্তম জাদুঘর।
জনাব আকবর নে‘মাতুল্লাহী বার্তা সংস্থা মেহ্র্ নিউজ-এর সংবাদ প্রতিনিধিকে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বিগত শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে দ্রুত বিকাশমান তেল শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ স্কুলটি ব্রিটিশ অর্থায়নে নির্মিত হয়। এর আগে অনেক বছর যাবত তেল শিল্পের উঁচু পদগুলোর জন্য কেবল ব্রিটিশদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হতো। আবাদানের পেট্রোলিয়াম টেকনিক্যাল স্কুল প্রতিষ্ঠিত হবার পর ইরানি নাগরিকগণ সেখানে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ লাভ করে তেল শিল্পে উঁচু পদে চাকরি পেতে শুরু করেন।
জনাব আকবর নে‘মাতুল্লাহী জানান, আবাদানে যে সমুদ্র মিউজিয়াম নির্মিত হতে যাচ্ছে তা এ ধরনের পাঁচটি সমুদ্র মিউজিয়াম নির্মাণের লক্ষ্যে গৃহীত উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনারই অংশ। এটি হবে আবাদানের তৃতীয় মিউজিয়াম; ১৬০০ বর্গমিটার আয়তনের এ মিউজিয়াম পার্কে ১১টি ডক্ থাকবে এবং এতে বিভিন্ন বয়স গ্রুপের দর্শকদের জন্য যথেষ্ট জায়গা ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের উপকরণাদি থাকবে।
জনাব আকবর নে‘মাতুল্লাহী বলেন, এ প্রকল্পটি পর্যটন আকর্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখে গ্রহণ করা হয়েছে এবং এর সকল উপায়-উপকরণেই তেল শিল্পের প্রতীকী রূপ ফুটিয়ে তোলা হবে। সম্মেলন কেন্দ্রসমূহ নির্মাণ, শিশুদের জন্য খেলার মাঠের ব্যবস্থা রাখা ও অন্যান্য কেন্দ্র নির্বিশেষে সব কিছুরই মূল সুর হবে তেল শিল্প।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সমুদ্র মিউজিয়াম সমূহের কথা মাথায় রেখে এ সমুদ্র মিউযিয়ামটির প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে; এর ডকগুলোতে সকলের হাঁটাচলার জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকবে এবং শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন খেলার মাঠ থাকবে।

ইরানি ওষুধ বিজ্ঞানীরা আল্ঝেইমার চিকিৎসার ভেষজ ওষুধ তৈরি করেছেন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ওষুধ বিজ্ঞানিগণ এমন একটি ভেষজ ওষুধ তৈরি করেছেন যা আল্ঝেইমার রোগের নিরাময় করতে সক্ষম হবে। ইরানীয়ান ইনস্টিটিউট্ অব্ মেডিক্যাল প্লান্ট্স্-এর গবেষকগণ ‘মেলিট্রোফিক্’ নামক এ ওষুধটি আবিষ্কার করেছেন।
অতীতে ইরানে মস্তিষ্কের সমস্যাদির চিকিৎসার জন্য যে প্রাচীন ও দেশজ বিজ্ঞানের ব্যবহার করা হতো ইরানিয়ান ইনস্টিটিউট্ অব্ মেডিক্যাল প্লান্ট্স্-এর গবেষকগণ তা কাজে লাগান এবং এ বিষয়ে বিশ্বে যে অধুনাতম গবেষণা পরিচালিত হয়েছে তা অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা করেন। এর ফলে তাঁরা প্রথম বারের মতো এমন একটি ওষুধ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন যা আল্ঝেইমারের চিকিৎসায় সাফল্য এনে দেবে।
ইরানি গবেকগণ এ ওষুধটি উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা করতে গিয়ে হাল্কা ও মধ্যম ধরনের আল্ঝেইমারে আক্রান্ত ৬৫ থেকে ৮০ বছর বয়ষ্ক ৪২ জন রোগীর ওপর অনেকগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। এ সব পরীক্ষায় তাঁরা এক্স্পেরিমেন্ট গ্রুপের রোগীদেরকে ড্রাকোসেফালাম্ এবং কন্ট্রোল্ গ্রুপের রোগীদেরকে প্ল্যাসেবোস্ প্রদান করেন। এতে চার মাসের গবেষণায় উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়; দেখা যায় যে, যেসব রোগীকে ড্রাকোসেফালাম্ নির্যাস প্রদান করা হয়েছিল তাদের হাল্কা ও মধ্যম ধরনের আল্ঝেইর্মা নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং এ ছাড়াও সাধারণভাবে এক্সপেরিমেন্ট গ্রুপের রোগীদের ভিতর থেকে উদ্বেগ সমস্যা ও চুলকানির লক্ষণসমূহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ইরানি গবেষকদের দ্বারা তৈরি ‘মেলিট্রোফিক্’ নামক এ ওষুধটি আন্তর্জাতিক বাজারে বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি ইতিমধ্যেই বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

ইরানি গবেষকগণ মধু দূষণ নির্ণয়ক কিট্ তৈরি করেছেন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের একদল গবেষক একটি মুধু দূষণ নির্ণয়ক কেমিক্যাল কিট্ তৈরি করেছেন, যার সাহায্যে মধু ব্যবহারকারিগণ খুবই কম খরচে খাঁটি মধু ও ভেজাল মধুর মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় করতে সক্ষম হবেন।
‘মধু দূষণ নির্ণয়ক কেমিক্যাল কিট্’ তৈরি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক জনাব আব্বাস ইবরাহীমী বলেন, বর্তমান কালে মধু ব্যবহারকারীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মধুর মান নিশ্চিতকরণ।
উল্লেখ্য, খাদ্য ও পানীয়ের ক্ষেত্রে দূষণ বলতে বুঝায় তাতে অন্য জিনিসের ভেজাল; কতক লোভী লোক অনেক বেশি মুনাফার লোভে মধুতে বিভিন্ন ধরনের কম দামী জিনিস ভেজাল দিয়ে থাকে; এসব জিনিস কেবল যে মধুর চেয়ে নিম্ন মানের তা নয়, ক্ষেত্রবিশেষে তা ক্ষতিকরও বটে।
জনাব আব্বাস ইবরাহীমী বলেন, যেহেতু মধুতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে সেহেতু তার মান নির্ণয়ের জন্য গবেষণাগারে পরীক্ষা করতে হয়Ñ যা খুবই ব্যয় বহুল। এর প্রতি লক্ষ্য রেখেই ইরানি গবেষকগণ মধু দূষণ নির্ণয়ক কিট্ উদ্ভাবন করেছেন যার সাহায্যে খুব সহজে ও স্বল্প সময়ে খাঁটি মধু ও ভেজাল মধুর মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয় করা সম্ভব হবে।
তিনি জানান, এ কেমিক্যাল কিট্টি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছেÑ যা মধুতে বিদ্যমান দু’টি প্রধান এন্জাইম্Ñ গ্লুকোজ্ অক্সিডেজ্ ও ডায়াটেস্ট এবং সেই সাথে হাইড্রোক্সাইল্মিথাইর্ল্ফুফুর‌্যাল্ (এইচএমএফ্)-এর মূল্যায়ন করতে পারবে। নকল মধু চিনি জাতীয় উপাদান সমূহের হাইড্রোলাইসিস থেকে তৈরি করা হয় যাতে এসব জিনিস বেশি পরিমাণে থাকে।
উল্লেখ্য, জনাব আব্বাস ইবরাহীমী ও সাইয়্যেদ হোসাইন সাফাভী কর্তৃক পরিচালিত ‘মধু দূষণ নির্ণয়ক কেমিক্যাল কিট্’ প্রকল্পটি অষ্টাদশ খাওয়ারিয্ম্ ইয়ুথ্ ফেস্টিভ্যালে দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেছে।

ইরানি গবেষকগণ ডিজিট্যাল্ ডেটা-কে ব্রেইল-এ রূপান্তরের ডিভাইস্ আবিষ্কার করেছেন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গবেষকগণ এমন একটি ডিভাইস্ উদ্ভাবন করেছেন যা ডিজিট্যাল ডেটা-কে ব্রেইল্-এ রূপান্তরিত করতে সক্ষমÑ যার ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা বর্তমানে তাদের দ্বারা ব্যবহৃত কম্পিউটারের তুলনায় অধিকতর সহজে ডিজিট্যাল্ ডেটা থেকে জ্ঞান আহরণ করতে সক্ষম হবে।
এ ডিভাইস্টি তৈরির প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব মোসলেম আযামর্ফা বার্তা সংস্থা এমএনএ-র সংবাদ প্রতিনিধিকে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে জানান, এ ডিভাইস্টি ডিজিট্যাল ডেটা-কে লাইন ভিত্তিতে ব্রেইলে রূপান্তরিত করতে সক্ষম এবং তা এমনভাবে বৃত্তাকারে বিন্যস্ত করতে সক্ষম যার ফলে ব্রেইল্ এটি ব্যবহারকারীর হাতের নিচ দিয়ে অতিক্রম করবে এবং সে তার হাত নাড়াচাড়া না করেই এ থেকে জ্ঞান আহরণ করতে সক্ষম হবে।
জনাব মোসলেম আযামর্ফা জানান, ইতিপূর্বে ডিজিট্যাল ডেটা-কে রিফ্রেইশাব্ল্ ব্রেইল ডিস্প্লে-তে রূপান্তরকারী যে সিস্টেম উদ্ভাবিত হয়েছে তার থেকে বর্তমান ডিভাইস্টির সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে এটির কম ব্যয় সাপেক্ষতা; ব্রেইল কনভার্সনের জন্য প্রচলিত সিস্টেমটি যে ধরনের কম্পিউটারের সাহায্যে ব্যবহার করা হয় তার ব্যয় হচ্ছে চার হাজার ডলার, কিন্তু নব-উদ্ভাবিত এ ডিভাইসটির জন্য ব্যয় হবে মাত্র ৬০০ থেকে ৯০০ ডলার। অন্যদিকে বর্তমানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের দ্বারা ব্যবহৃত কম্প্উিটারে ডিজিট্যাল ডেটা-কে লাইন ভিত্তিতে ব্রেইলে রূপান্তর করা সম্ভব হয় না, কিন্তু নব-উদ্ভাবিত এ ডিভাইস্টি তা করতে সক্ষম। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা, এ ডিভাইস্টি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদেরকে অধিকতর দ্রুত গতিতে ও অনেক বেশি নির্ভুল পাঠের নিশ্চয়তা দেবে।
জনাব মোসলেম আযামর্ফা জানান যে, এ সিস্টেমটি এখনো বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা হয় নি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এটি বাজারে আসার পরে তা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পঠন সুবিধার ক্ষেত্রে একটি বিরাট যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে।
উল্লেখ্য, জনাব আযামফারের এ প্রকল্পটি অষ্টাদশ খাওয়ারিযম্ ইয়ুথ ফেস্টিভালে প্রথম পুরস্কার লাভ করে এবং এটি নিবন্ধনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তেহরানে চব্বিশতম আন্তর্জাতিক ঝাড় বাতি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাজধানী তেহরানে ২৪তম আন্তর্জাতিক বাতি, ঝাড়বাতি ও আলোকসজ্জা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি তেহরানের স্থায়ী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী মাঠে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের শিল্প, খনিজ সম্পদ ও বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী জনাব মোহাম্মাদ রেযা নে‘মাত্যাদে, কয়েক জন উপমন্ত্রী, ইরান চের্ম্বা অব্ কমার্স, ইন্ডা্িট্রজ্ অ্যান্ড্ মাইন্স্-এর চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট সমিতি সমূহের প্রধানদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ প্রদর্শনীতে আড়াইশ’ ইরানি ও অন্যান্য দেশের কোম্পানির নিপুণ কারিগর ও শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। এতে ইরানের বাইরের যেসব দেশের কোম্পানি ও প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে চীন, স্পেন, হংকং ও ইতালি। অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি বিচিত্র ধরনের ও চমকপ্রদ বাতি, ঝাড়বাতি ও আলোকসজ্জার উপকরণ ও তা ব্যবহারের নমুনা দর্শকদেরকে প্রদর্শন করে।
উল্লেখ্য যে, ইরানে ঝাড়বাতি উৎপাদনের শিল্পের ইতিহাস অনেক পুরনো এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানে এ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ও প্রসার ঘটেছে। এর ফলে বর্তমানে ইরান ঝাড়বাতি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ইতালি, স্পেন ও চেক প্রজাতন্ত্রের সাথে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম। উল্লেখ্য, ইরানে ব্যবহার্য ঝাড়বাতির শতকরা ৮০ ভাগই এখন স্থানীয়ভাবে ইরানে উৎপাদিত হয়ে থাকে।

তেহরানে ৩৫তম ফাজ্র্ আন্তর্জাতিক থিয়েটার উৎসব অনুষ্ঠিত
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের বিজয় বার্ষিকী উৎসবের অংশ হিসেবে গত ২০ থেকে ৩১ জানুয়ারি (২০১৭) পর্যন্ত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাজধানী তেহরানে ৩৫তম ফাজ্র্ আন্তর্জাতিক থিয়েটার উৎসব (এফআইটিএফ্) অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের ফাজ্র্ আন্তর্জাতিক থিয়েটার উৎসব (এফআইটিএফ্)-এ প্রতিযোগিতা বিভাগে বিভিন্ন ইরানি মঞ্চনাট্যের পাশাপাশি বিশ্বের আরো এগারোটি দেশের ২০টি মঞ্চনাট্য প্রদর্শিত হয়। ইরানের বাইরের যেসব দেশ এ উৎসবে অংশগ্রহণ করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, জাপান, গ্রিস, স্পেন, ইরাক, তুরস্ক, জর্জিয়া, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও বুলগেরিয়া। প্রতিযোগিতায় ইরানের দশটি ও ঐ সব দেশের ১৯টি মঞ্চনাট্য অংশগ্রহণ করে এবং ইরান ও নেদারল্যান্ডের যৌথ উদ্যোগে উপস্থাপিত একটি মঞ্চনাট্যও প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
৩৫তম ফাজ্র্ আন্তর্জাতিক থিয়েটার উৎসব (এফআইটিএফ্)-এর আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক জনাব মেহ্র্দাদ রায়ানী মাখুস্ জানান যে, এ উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য আড়াইশ’টিরও বেশি সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছিল।
৩৫তম ফাজ্র্ আন্তর্জাতিক থিয়েটার উৎসব (এফআইটিএফ্)-এর শেষ দিনে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত ফলাফল হচ্ছে :
শ্রেষ্ঠ মেক-আপ : সারাহ্ এস্কান্দারী (এ মিড্সামার নাইট্স্ ড্রিম), সেরা মিউজিক : র্ফাশাদ্ ফোযুনী (দ্য স্মল্ জয়স্ বিকামিং এ কক্রোচ্), সেরা পোশাক : শীমা র্মীহামীদী (এ মিড্সামার নাইট্স্ ড্রিম), সেরা শব্দ সংযোজন : লিসা র্ভাবেলেন (ওয়ান), সেরা স্টেজ ডিজাইন : আমীর হোসাইন দাভানী (দ্য ট্রাম্পেট্ অব্ ইসরাফীল), সেরা অভিনেতা : র্পসা পিরূর্য্ফা (ম্যাট্রিয়োশ্কা), সেরা অভিনেত্রী : ফাতেমাহ্ নাক্বাভী (‘দ্য ট্রাম্পেট্ অব্ ইসরাফীল্’ ও ‘ডায়াবোলিক্ রোমিও অ্যান্ড্ জুলিয়েট্), সেরা নাট্য রচয়িতা : হোসাইন্ পাক্দেল্ (হিজ্ এক্সেলেন্সীজ্ নাইট্মেয়ার) ও সেরা পরিচালক : জেরি যোন্ (কোরাস্ অব্ র্অফ্যান্স্)। এছাড়া বিশেষ পুরস্কার ক্যাটেগরিতে সিয়ামাক্ আহ্সাএই ও হামীদ র্পুআযারী-কে (দ্য ক্লাউডি হাউজ্) পুরস্কৃত করা হয়।
বিজয়ী নাটকগুলোর মধ্যে ‘ওয়ান’ (নেদারল্যান্ড) ও ‘কোরাস অব্ র্অফ্যান্স্’ বাদে বাকি সবগুলোই ইরানি। উল্লেখ্য, বিদেশি নাটকগুলোর বেশির ভাগই ছিল মূকাভিনয়।

ঢাকার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তিন বিভাগে শ্রেষ্ঠ হলো ইরান
ঢাকায় রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত ১৫তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ছায়াছবি, সেরা অভিনয় ও শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ইরান।
ইরানের বার্তা সংস্থা ইসনা জানিয়েছে, ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে রেজা মির কারিমির পরিচালনায় নির্মিত ‘দোখতার’ বা ‘কন্যা’ শীর্ষক ছায়াছবি শ্রেষ্ঠ ছায়াছবি হওয়ার গৌরব অর্জন করে। একই ছায়াছবিতে অভিনয়কারী ফরহাদ আসলানি পেয়েছেন সেরা অভিনয়ের পুরস্কার।
অন্যদিকে ‘ম্যালেরিয়া’ শীর্ষক ছায়াছবি পরিচালনার জন্য সেরা পরিচালক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ইরানের পারভিজ শাহবাজি।
ঢাকার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব গত ১২ জানুয়ারি ২০১৭ শুরু হয়ে ২০ জানুয়ারি শেষ হয়।
ইরানি চলচ্চিত্রের জেআইএফএফ পুরস্কার লাভ
ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক মেহেরদাদ্ হাসানী পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘কেচ্’ ৯ম জয়পুর ইন্টারন্যাশন্যাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (জেআইএফএফ)-এ অংশগ্রহণ করে ‘শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র’ পুরস্কার লাভ করেছে। ভারতের জয়পুর নগরীর গোল্চা সিনেমা হলে গত ৪ থেকে ১১ জানুয়ারি (২০১৭) এ উৎসব অনুষ্ঠত হয়।
রাফসানজান ইয়ং সিনেমা অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক নির্মিত ‘কেচ্’ (বালিকা) চলচ্চিত্রের গল্পে একজন নার্সের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে যিনি যুদ্ধ এলাকায় একটি শিশুর জীবন রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারান।
এ চলচ্চিত্রটিতে যুদ্ধের নির্মমতার বিপরীতে মানুষের অন্তরে মানবতার মূল্যবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং তুলে ধরা হয়েছে যে, এখনো সমাজে এমন মানুষ আছে যারা অন্যদের জন্য নিজেদের জীবনকে ঝুঁকির কবলে নিক্ষেপ করতে ও প্রাণ হারাতে পারে।
উল্লেখ্য, জয়পুর ইন্টারন্যাশন্যাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (জেআইএফএফ) প্রথম বারের মতো ২০০৯ সালে শুরু হয় এবং এর পর থেকে প্রতি বছর এ চলচ্চিত্র উৎসবটির ক্ষেত্র দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে।

ইরানি শিশুদের আন্তর্জাতিক অ্যাবাকাস্ ও মানসাঙ্ক পুরস্কার লাভ
দক্ষিণ ইরানের শীরায নগরীর দুই ভাই সাঈদ এস্কান্দারী ও সোহেল এস্কান্দারী সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত্ (ইউইএ)-তে অনুষ্ঠিত ২১তম অন্তর্জাতিক অ্যাবাকাস্ ও মানসাঙ্ক প্রতিযোগিতা (ইউসিএমএএস) ২০১৬-তে অংশগ্রহণ করে প্রথম ও তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেছে।
ছয় থেকে তেরো বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এ প্রতিযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়। এ বছরের প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ৫৭টি দেশের আড়াই হাজারেরও বেশি সংখ্যক শিশু অংশগ্রহণ করে।
সাঈদ ও সোহেল মাত্র ৮ মিনিট সময়ের মধ্যে ২০০ প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে সক্ষম হয়। এসব প্রশ্নের মধ্যে ছিল তিন ডিজিটের যোগ-বিয়োগ, তিন ডিজিটের গুণ ও চার ডিজিটের ভাগ অঙ্ক।
উল্লেখ্য, ইউসিএমএএস হচ্ছে ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মানসাঙ্ক নিপুণতা বিকাশের লক্ষ্যে পরিকল্পিত সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা। ইউসিএমএএস এ পর্যন্ত এ বিষয়ে বিশ্বে দশ লক্ষাধিক শিশুকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
স্মরণ করা যেতে পারে যে, ভারতের নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইউসিএমএএস-এর ইতিপূর্বেকার প্রতিযোগিতায় ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আরদেবিল্-এর দশ বছর বয়সী শিশু মেশকাত্ মোহাম্মাদ বাক্বেরী দ্বিতীয় পুরস্কার জয় করেছিল।

ইরানি কুস্তিগীরদের তাখ্তী কুস্তি কাপ বিজয়
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গ্রেকো-রোমান ও ফ্রি-স্টাইল্ কুস্তি টীম ৩৭তম তাখ্তী কুস্তি কাপ প্রতিযোগিতায় শিরোপা অর্জন করেছে। গত ১৯ ও ২০ জানুয়ারি (২০১৭) উত্তর-পূর্ব ইরানের মাশহাদ নগরীতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এ প্রতিযোগিতায় ইরানের গ্রেকো-রোমান টীম-‘এ’ জর্জিয়ান টীমকে ৭-১ ব্যবধানে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করে। অন্যদিকে ইরানি টীম গ্রেকো-রোমান ‘বি’ তুরস্কের টীমকে ৫-৩ ব্যবধানে পরাজিত করে তৃতীয় স্থান দখল করতে সক্ষম হয়। এছাড়া ইরানের ফ্রিস্টাইল্ কুস্তি টীম-‘এ’ প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচে আর্মেনিয়ান টীমকে ৮-০ ব্যবধানে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়নশীপের অধিকারী হয়। তবে ইরানের ফ্রিস্টাইল্ কুস্তি টীম ‘বি’ কাজাকিস্তানের কাছে ৫-৩ ব্যবধানে পরাজিত হয়ে চতুর্থ স্থান লাভ করে।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রী জনাব সুলতানীর্ফা-এর উপস্থিতিতে উত্তর-পূর্ব ইরানের রাযাভী খোরাসান প্রদেশের কেন্দ্রীয় শহর মাশহাদে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় ইরানি কুস্তি টীমগুলোর পাশাপাশি আর্মেনিয়া, বেলারুস, ইউক্রেন, কিরগিজিস্তান, উযবেকিস্তান, মঙ্গোলিয়া, জর্জিয়া ও লাতিন আমেরিকার নির্বাচিত টীমসমূহ এবং কাজাকিস্তানের দু’টি টীম অংশগ্রহণ করে।
এ প্রতিযোগিতায় ইরানের পাঁচটি টীম অংশগ্রহণ করে; এগুলো হচ্ছে : ইরান-এ, ইরান-বি, কোসিহ্, জাভানান্ ও রাযাভী খোরাসান্ টীম।
উল্লেখ্য, তাখতী কুস্তি কাপ প্রতিযোগিতা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক কুস্তি প্রতিযোগিতা হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে ইরানের খ্যাতনামা কুস্তিগীর মরহূম্ গোলামরেযা তাখতী-র স্মৃতি স্মরণে যার নামকরণ করা হয়েছে।

রিও ২০১৬ প্রতিযোগিতায় ইরানি মহিলা তীরন্দাযের দ্বিতীয় স্থান অধিকার
রিও ২০১৬ প্যারালিম্পিক্ গেম্স্ প্রতিযোগিতায় বৈশ্বিক তীরন্দাযীর ফাইনাল পর্বে ইরানি মহিলা তীরন্দায যাহ্রা নে‘মাতী বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা তীরন্দায হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন।
অলিম্পিক তীরন্দাযী ক্রীড়ার আন্তর্জাতিক ফেযারেশন ‘ওয়ার্ল্ড্ আর্চারী’ রিও ২০১৬ প্যারালিম্পিক্ গেম্স্ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী তীরন্দাযদের ক্রীড়া নৈপুণ্য পর্যালোচনা করে যাহ্রা নেমাতীকে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা তীরন্দায হিসেবে ঘোষণা করে। এতে প্রথম স্থান লাভ করে গ্রেট্ ব্রিটেন্ প্যারা আর্চারি টীম; এ টীমটি তিনটি স্বর্ণ পদক, দু’টি রৌপ্যপদক ও একটি ব্রোঞ্জপদক লাভ করে।
যাহ্রা নে‘মাতী ইতিপূর্বে ২০১২ সালে লন্ডনে যে টাইটেলের অধিকারী হয়েছিলেন রিও ২০১৬ প্যারালিম্পিক্ গেম্স্ প্রতিযোগিতায় অসাধারণ সাফল্য প্রদর্শন করে তা ফিরিয়ে পান; রিও-র অলিম্পিক্স্ প্রতিযোগিতায় তিনি ওয়ার্ল্ড্ আর্চারি প্যারা চ্যাম্পিয়ন উ চুনিয়ান্কে ৬-৪ ব্যবধানে পরাজিত করে এ সাফল্যের অধিকারী হন।
যাহ্রা নে‘মাতী তাঁর এ ব্যক্তিগত সাফল্য ছাড়াও ইবরাহীম্ রার্ন্জ্বাকিভাজ্-এর সাথে মিশ্র টীমেও অংশগ্রহণ করেন এবং এতে একটি রৌপ্যপদক লাভ করেন। এর ফলে এ প্রতিযোগিতায় ইরানের তীরন্দাযী পদকের সংখ্যা দাঁড়ায় চারটিতে।
উল্লেখ্য, রিও প্রতিযোগিতায় যাহ্রা নে‘মাতী বিরাট জনপ্রিয়তার অধিকারী হন এবং প্রতিযোগিতা চলাকালে দর্শকগণ তাঁর নামে মুহুর্মুহু সেøাগান প্রদান করেন। এছাড়া ২০১৬ সালের জন্য শ্রেষ্ঠ অল্-রাউন্ড্ আর্র্চাদের যে তালিকা প্রণয়ন করা হয় তাতে যাহ্রা নে‘মাতীর নাম ‘সম্মানজনক উল্লেখ’ (ঐড়হড়ৎধনষব গবহঃরড়হং)-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১২ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অলিম্পিক্স্-এ যাহ্রা নে‘মাতী স্বর্ণ জয় করে প্রথম ইরানি কৃতি মহিলা তীরন্দায হিসেবে রেকর্ড গড়েন এবং এরপর রিও-তে অনুষ্ঠিত প্যারালিম্পিক্স্ ২০১৬-তে পুনরায় আরেকটি ব্যক্তিগত স্বর্ণ জয় করে স্বীয় দেশের মুখ উজ্জ্বল করলেন।

আন্তর্জাতিক বেহ্কাপ প্রতিযোগিতায় ইরানের শিরোপা অর্জন
সম্প্রতি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর ধর্মীয় নগরী মাশহাদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বেহ্কাপ প্রতিযোগিতা ২০১৭-তে ন্যাশনাল ইরানীয়ান্ বেহ্কাপ টীম ব্যক্তিগত ও টীম্ সেকশনে উভয় ক্ষেত্রেই শিরোপা অর্জন করেছে।
‘পীস্ অ্যান্ড্ ফ্রেন্ড্শিপ্ কাপ্’ শিরোনামে মাশহাদের পায়ামে নূর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ আন্তর্জাতিক বেহ্কাপ প্রতিযোগিতা ২০১৭-তে স্বাগতিক দেশ ইরানের ন্যাশনাল ইরানিয়ান্ বেহ্কাপ টীম ছাড়াও দশটি বিদেশি টীম অংশগ্রহণ করে। এতে অংশগ্রহণকারী বিদেশি টীমগুলো এসেছিল জর্জিয়া, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, আযারবাইজান প্রজাতন্ত্র, তুর্কমেনিস্তান, ইরাক, উযবেকিস্তান, সিরিয়া ও তাজিকিস্তান থেকে।
এ প্রতিযোগিতায় সার্বিক ফলাফলে ইরান প্রথম স্থান অধিকার করে এবং সিরিয়া দ্বিতীয় স্থান লাভ করে। এছাড়া ইরানি টীম ‘বি’ ও ইরাক যৌথভাবে তৃতীয় স্থানের অধিকারী হয়।
এ প্রতিযোগিতায় ব্যক্তিগত প্রতিযোগিতা বিভাগে ইরানের হোসাইন্ লাতীফী ট্রফি জয় করেন এবং ভারতের আলী মোহাম্মাদ মীর্যা রৌপ্যপদক জয় করে দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী হন। অন্যদিকে লাতীফীর দুই সহযোগী দাউদ নিক্বাখ্ত্ ও মাস্‘উদ্ আসাদীয়ান্ যৌথভাবে ব্রোঞ্জপদক লাভ করেন।
প্রতিযোগিতার অবকাশে মাশহাদ পায়ামে নূর বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোহাম্মাদ আলী দর্ভাইর্য়া বলেন, আন্তর্জাতিক বেহ্কাপ প্রতিযোগিতা হচ্ছে চলতি ২০১৭ সালে মাশহাদে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক ইভেন্ট এবং এ কারণে তা বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী।
উল্লেখ্য, স্বনামখ্যাত ইরানী ক্রীড়াবিদ বেহ্নাম আযাদ অনেকগুলো ক্রীড়ার সমন্বয়ে ‘বেহ্কাপ্’ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পরিকল্পনা করেন এবং ২০১১ সালে তা নিবন্ধিত করেন। অত্যন্ত চমৎকার বিনোদনমূলক এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতাটি এমনভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে যে, এতে নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সকলের পক্ষেই অংশগ্রহণ করা সম্ভব।
বেহ্কাপ্ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের ও রেফারিদের জন্য সুনির্দিষ্ট বিশেষ বিশেষ নিয়মাবলি রয়েছে এবং এ ক্রীড়ার জন্য বিশেষ ধরনের উপকরণাদিও রাখা হয়েছে। বেহ্কাপের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সিন্থেটিক ঘাসের চত্বরে, প্রাকৃতিক ছোট ঘাসের চত্বরে, বিশেষ ক্রীড়া মেঝেতে, প্রস্তর ভূমিতে, সমুদ্র উপকূলে ও সমতল ভূমিতে তথা যে কোনো ধরনের স্থানে আয়োজনের উপযোগী।
বেহ্কাপ্ ক্রীড়া অনেকটা গল্ফ্ খেলার অনুরূপ, তবে গল্ফ্ খেলায় যেখানে ‘হোল্’-এর মধ্যে বল প্রবেশ করাতে হয় সেখানে বেহ্কাপে ‘গোলপোস্ট’-এর মধ্যে বল প্রবেশ করাতে হয়। এর অন্যান্য নিয়মের মধ্যে রয়েছে : খেলার সময় বলটি অবশ্যই ক্রীড়া-কোর্টের মধ্যে থাকতে হবে, এর বাইরে যেতে পারবে না, বলটি অন্যান্য বলকে স্পর্শ করতে পারবে না, ইত্যাদি। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ সংখ্যক গোল করতে পারবেন তাঁকে বিজয়ী বলে গণ্য করা হবে।