শিরাজের দৃষ্টিনন্দন ‘এরাম গার্ডেন’
পোস্ট হয়েছে: মে ২৮, ২০২১

‘বাগ-ই এরাম’ বা এরাম গার্ডেন ইরানের শিরাজের অন্যতম প্রাচীন ও সর্বাপেক্ষা সুন্দর একটি বাগান। খোশক নদীর উত্তর তীর সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে বাগানটি।
ফারসি ‘এরাম’ শব্দটি আরবি শব্দ ‘ইরাম’ থেকে এসেছে। ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনে যার অর্থ জান্নাত।
এরাম গার্ডেনে তিন হাজার বছরের পুরনো একটি গাছসহ রয়েছে প্রচুর সুন্দর সুন্দর ফুল, সতেজ বায়ু, সুগন্ধযুক্ত মির্টলস এবং উঁচু উঁচু বিশাল সাইপ্রাস গাছ। আকর্ষণীয় এই প্রকৃতির কারণে এটি বড় পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে ব্যাপক পর্যটকের সমাগম ঘটে এই দর্শনীয় স্থানটিতে।
বাগানটি কবে নাগাদ গড়ে উঠেছে তা সবার কাছে অজানা। তবে ঐতিহাসিক প্রমাণাদি ইঙ্গিত দিচ্ছে, বাগানটি সেলজুক রাজবংশের (১১ থেকে ১৪ শতাব্দি) সময় তৎকালীন সুপ্রসিদ্ধ রাজা আহমাদ সানজারের শাসনামলে নির্মাণ করা হয়।
শিরাজের অন্যান্য অনেক দর্শনীয় স্থানের মতো এরাম গার্ডেন পুনরুদ্ধার করেন জান্দ রাজবংশের (১৭৫০ থেকে ১৭৯৪) রাজারা। কিন্তু পরবর্তী শাসনামলগুলোতে কাশকাহী উপজাতিদের প্রধান মোহাম্মাদ কোলি খানের কাছে এটি হস্তান্তর করা হয়।
কোলি খান ১৮ শতকের শুরুর দিকে মূল ম্যানসনটি নির্মাণের নির্দেশ দেন। তিনি পাইন, কমলা, সাইপ্রেস এবং পার্সিমন গাছসহ বাগানে বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপন করেন।
পরবর্তীতে কাজার রাজবংশের (১৭৮৫ থেকে ১৯২৫) শাসক নাসেরুদ্দিন শাহ এর আমলে মির্জা হাসান আলি খান নাসির আল মোলক কাশকাহী উপজাতিদের কাছ থেকে বাগানটি কিনে নেন এবং বর্তমানে বাগানে যে প্যাভিলিয়নটি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সেটি নির্মাণ করেন।
অতি মূল্যবান বাগানের প্যাভিলিয়নটি স্থানীয় শিরাজী স্থপতি মোহাম্মাদ হাসান নির্মাণ করেন। তিনতলা বিশিষ্ট সুন্দর কাঠামোটি সাভাবিদ ও কাজার স্টাইলের স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত এবং টাইলসগুলোতে বিখ্যাত ফারসি কবি হাফিজের কবিতাসমূহ খোদাই করা রয়েছে। সূত্র: ইরনা।