শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

‘শত্রুরা কখনোই ইসলামের নূরকে নিভিয়ে দিতে পারবে না’

পোস্ট হয়েছে: নভেম্বর ২, ২০২০ 

news-image

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাফার বলেছেন, শুত্রুরা যত চেষ্টাই করুক না কেন তারা কখনোই ইসলামের নূরকে নিভিয়ে দিতে পারবে না। বরং দিন দিন তা আরও প্রজ্জ্বলিত হবে। সোমবার সকালে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ও ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত এই ওয়েবিনারে রাষ্ট্রদূত বলেন, পবিত্র রবিউল মাস এজন্য গুরুত্বপূর্ণ যে এমাসে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ (সা.)সমগ্র মানবজাতির রহমত স্বরুপ পৃথিবীতে আগমন করেছেন। তার সৃষ্টি গোটা সৃষ্টিজগত ও মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় ঘটনা। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে নবী আপনাকে যদি সৃষ্টি না করতাম তাহলে পৃথিবীর কোন কিছুই সৃষ্টি হতো না।তাই আমাদের কাছে এই  প্রিয় নবীর জন্মদিনের চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে।

ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাত

পৃথিবীতে তার শুভাগমন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ঈদ।যদিও ইসলামের বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে তার জন্মদিন নিয়ে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে। কোন কোন মাজহাবের মতে ১২ই রবিউল আউয়াল রাসুলের জন্মদিন আবার কোন কোন মাজহাবের মতে ১৭ই রবিউল আউয়াল হলো রাসুলের জন্মদিন।সুতরাং এ ধরনের কোন বিষয় মুসলমানদের মধ্যে যাতে কোন বিভেদ তৈরি করতে না পারে সেজন্য ইরানের ইসলামী বিপ্লবের রুপকার ইমাম খোমেনি (রহ:) ১২ই রবিউল আউয়াল থেকে ১৭ই রবিউল আউয়ালকে ইসলামী ঐক্যসপ্তাহ সপ্তাহ হিসেবে ঘোষণা করেছেন যাতে মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন। মোহাম্মদ রেজা নাফার বলেন,  মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য যখন অত্যন্ত জরুরী তখন তাদের একটি অংশ ইহুদি- নাসারাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ফিলিস্তিনের মুসলমানরা যখন ইহুদিবাদী ইসরাইল কর্তৃক চরম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তখন সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদানের মতো মুসলিম দেশ এই অবৈধ রাষ্ট্রের সাথে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষনা দিয়ে ফিলিস্তিনের মুসলিম ভাইদের যন্ত্রণাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব দুটি ভয়াবহ ভাইরাসে আক্রান্ত। একটি প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস এবং আরেকটি ইসলাম আতঙ্ক।  পশ্চিমারা গত দুই দশক ধরে ইসলামের সাথে দ্বন্দ্বের পথ বেছে নিয়েছে।ফ্রান্সে রাসুল (সা.)কে নিয়ে অবমাননাকর কার্টূন প্রকাশ করাই তার প্রমাণ।

কেন ফ্রান্স আজ ইসলামের দুষমনের পতাকাবাহী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে? কারণ তারা ইসলামকে ভায় পায়। ফ্রান্সের একজন খ্রিষ্টান ধর্মজাজক সম্প্রতি  বলেছেন, ফ্রান্স আগামী দিনে মুসলিম দেশে পরিণত হবে।আমাদের সকল শিশু ভবিষ্যতে মুসলমান হয়ে যাবে। ইসলাম সকল জায়গায় বিস্তৃত হবে।দুনিয়ার প্রায় ৫০ শতাংশ শিশুর নাম মুহাম্মদ। যদি আমরা এ ব্যাপারে এখনই পদক্ষেপ না নেই তাহলে ইসলাম ইউরোপেও বিজয়ী হবে।আইরিশ নাট্যকার ও রাজনীতিবিদ জর্জ বার্নার্ড শো যিনি ৭০ বছর আগে  মৃত্যু বরণ করেছেন তার দুই বইয়ে লিখেছেন, আমি ভাবিষ্যতবাণী দিচ্ছি  যে আগামীদিনে ইউরোপ মুহাম্মদ (সা.) এর ধর্মের দিকে ফিরে যাবে। মুহাম্মদ (সাঃ) ব্যতীত আর কেউই বিশ্বের সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না। সুতরাং আমরা বুঝতে পারছি রাসুল (সা.)এর অবমাননার পিছনে মূল কারণ কি। তিনি বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুতার বিষয়টি আজ আর কোন মুসলমানের কাছেই গোপন নয়। ইসলামের শত্রুরা আজ প্রকাশ্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে নেমেছে । কারণ ইসলামী বিশ্বের শক্তি আগের চেয়ে আরো দুর্বল হয়ে পড়েছে।ফলে মুসলমানরা আজ দু-ধার বিশিষ্ট তলোয়ারের মুখে পড়ে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়ছে। তাই মুসলমানদের এই সংকট থেকে মুক্তির জন্য ঐক্যের বিকল্প নেই।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক ডা. খিজির হায়াত খান

ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ. কে. এম মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাত।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক ডা. খিজির হায়াত খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো.মুহিবুল্লাহ সিদ্দিকী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক চেয়ারমান ড. মো: আতাউল্লাহ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন

অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবু আব্দুল্লাহ।অনুষ্ঠানে নাতে রাসুল পাঠ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের ছাত্র হাসান কিবরিয়া।অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন।