লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হলো নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা
পোস্ট হয়েছে: মে ৩, ২০১৭
লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হলো মানবতা ও সাম্যের জয়গানের পথিকৃৎ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার অমর চরণ, ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির’। সোমবার মহান মে দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘লাখো কণ্ঠে বিদ্রোহী কবিতা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নজরুল চর্চাকেন্দ্র বাঁশরী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি)৷
সাম্প্রদায়িকতার ভেদাভেদ ভুলে মানবতার জয়গানের পাশাপাশি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সব মানুষকে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের চেতনাকে জাগ্রত করতেই সংগঠন দু’টি নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা পাঠের আয়োজন করে।
এ উপলক্ষে পূর্বনির্ধারিত সময় বিকেল ৪টার আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় ঢাবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিএনসিসি সদস্য এবং সাধারণ মানুষে পূর্ণ হয়ে যায় পুরো ময়দান। বিপুল উৎসাহউদ্দীপনায় বিকে পাঁচটায় শুরু হয় কবিতা আবৃত্তি।
বাঁশরীর প্রশিক রেজাউল হোসেন টিটুর সাথে সমবেত কণ্ঠে ‘বিদ্রোহী’ কবিতার আবৃত্তি শুরু হয়। সমেবত লাখো কণ্ঠে ‘বল বীর-বল উন্নত মম শির’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো মাঠ। হৃদয়ের গভীর থেকে ভেসে আসে শোষণ-নিপীড়ন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখা নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার চিরচেনা সেই চরণগুলো।
এর আগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, মে দিবস একটি বিদ্রোহের প্রতীক। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম নিজেই ছিলেন একজন বিদ্রোহী এবং অসাম্প্র্রদায়িক ব্যক্তিত্ব।
ইনু বলেন, নজরুল সাম্প্রদায়িক অত্যাচারের বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক চেতনার ডাক দিয়েছেন। তাকে বক্ষে ধারণ করে শোষণমুক্ত- অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিনির্মাণে এগিয়ে চলছি আমরা।
তরুণদের প্রজন্মকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, নতুন সমাজ ব্যবস্থা, নতুন সৃজনতা দেয় তরুণেরাই। পুরনোকে আঁকড়ে ধরে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি না। সংস্কার-বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে দেশের পরিবর্তন ও উন্নতি সাধিত হবে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখতে তরুণদের বিদ্রোহ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের স্বার্থে শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদাকে সম্মান করতে হবে। কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা শ্রমিক অধিকার ও মানুষের অধিকারের ভাবচেতনাকে প্রকাশ করেছে।
আবৃত্তি শেষে খিলখিল কাজী সাংবাদিকদের বলেন, এখন বিদ্রোহী কবিতাকে অনুবাদের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলেই আমরা এ কবিতার মাহাত্ম্য বুঝতে পারব।
অনিন্দিতা কাজী বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম চলে গেছেন, কিন্তু রেখে গেছেন অসংখ্য সাহিত্যসম্ভার।