বুধবার, ৯ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

মহীয়সী নারী হযরত খাদীজাতুল কুবরা (আ.)

পোস্ট হয়েছে: জুলাই ১৭, ২০১৮ 

মহীয়সী নারী হযরত খাদীজাতুল কুবরা (আ.)
মো. আশিফুর রহমান

হযরত খাদীজার জন্ম ও বংশপরিচয়

যখন সমগ্র আরব জাহেলীয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল- নারীদের কোন সম্মান ছিল না- তাদেরকে মানুষের মর্যাদা দেয়া হতো না, নারীদেরকে পুরুষের ভোগের উপকরণ মনে করা হতো, পিতার মৃত্যুর পর সন্তানদের মধ্যে পিতার স্ত্রীদের বণ্টন করে দেয়া হতো সেই সময় আরবের সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে জন্ম নেন হযরত খাদীজাতুল কুবরা (আ.)। তিনি আবরাহার হাতি বাহিনীর মক্কা আক্রমণের পনের বছর আগে পবিত্র মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদ ইবনে আবদুল উয্যা ইবনে কুসাই ইবনে কিলাব। অন্যদিকে মহানবী (সা.)-এর বংশগত পরিচয় হচ্ছে তিনি হলেন মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম ইবনে আব্দে মানাফ ইবনে কুসাই ইবনে কিলাব। অর্থাৎ মহানবী (সা.)-এর সাথে হযরত খাদীজার বংশধারা ঊর্ধ্বতন ষষ্ঠ পুরুষে গিয়ে মিলিত হয়। হযরত খাদীজার মাতার নাম ছিল ফাতিমা বিনতে যায়েদা।
হযরত খাদীজার পিতা খুওয়াইলিদ ছিলেন আরবের ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী। খুওয়াইলিদ দম্পত্তি দীর্ঘদিন সন্তানহীন ছিলেন। অঢেল সম্পত্তির অধিপতি হওয়ার পরও তাঁদের মনে সন্তানহীনতার বেদনা পীড়া দিত। অবশেষে তাঁরা আল্লাহ্তায়ালার কৃপায় হযরত খাদীজা (আ.)-এর গর্বিত পিতা-মাতা হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন।
তাঁদের কন্যাসন্তান ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে লাগলেন। খুওয়াইলিদ কন্যাকে সব দিক দিয়ে সহযোগিতা করতেন। জাহেলীয়াতের যুগে কন্যাসন্তানকে শিক্ষা দান করার কথা কল্পনাই করা যেত না। কিন্তু খুওয়াইলিদ তাঁর কন্যাকে শিক্ষিত করে তোলেন।

হযরত খাদীজার উপাধি

হযরত খাদীজা যেমনি শিক্ষিত ছিলেন তেমনি ব্যক্তি-জীবনেও তিনি ছিলেন নির্মল চরিত্রের অধিকারিণী। হযরত খাদীজা তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও পুণ্যময় চরিত্রের কারণে ‘আত তাহেরা’ অর্থাৎ পবিত্রা বলে প্রসিদ্ধা ছিলেন। তাঁকে ‘খাদীজাতুল কুবরা’ অর্থাৎ মহতী খাদীজাও বলা হতো।

ব্যবসায়ের দায়িত্ব গ্রহণ

হযরত খাদীজার মাতা ৬৭৫ খ্রিস্টাব্দে এবং পিতা ৬৮৫ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। মাত্র দশ বছরের ব্যবধানে বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর তাঁদের সম্পদ তাদের সন্তানদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়, কিন্তু পারিবারিক ব্যবসায়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন খাদীজা এবং তিনি একে সম্প্রসারিত করেন। বলা হয় যে, যখন কুরাইশরা গ্রীষ্মের সময় সিরিয়ায় অথবা শীতের মওসুমে ইয়েমেনে বাণিজ্য সফরে বের হতো তখন তাদের সকলের সম্মিলিত সম্পদের সমান হতো কেবল খাদীজার বাণিজ্য কাফেলার সম্পদ।

হযরত খাদীজার বদান্যতা

হযরত খাদীজা দানশীলতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি সব সময় দরিদ্রদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর দরজা দুঃখী ও অসহায় মানুষের জন্য খোলা থাকত। তাঁর বাড়িকে দরিদ্ররা ‘আশা ও নিরাপত্তার বাড়ি’ বলে জানত। তিনি অনাথদের এত আপন করে নিতেন যে, সবাই তাঁকে ‘ইয়াতীমের মা’ বলে ডাকত।
হযরত খাদীজা তাঁর ব্যবসায়ের মাধ্যমে যে লাভ অর্জন করতেন তা দিয়ে গরীব, বিধবা, ইয়াতীম, অসুস্থ এবং মক্কার প্রতিবন্ধীদের সাহায্য করতেন। তিনি দরিদ্রদের খাদ্য ও বস্ত্র প্রদান করতেন, তাঁর দরিদ্র স্বজনদের অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করতেন, এমনকি তাঁর নিকটআত্মীয়দের মধ্যে যারা বিবাহের খরচ বহন করার সামর্থ্য রাখত না তাদের বিবাহের খরচ তিনি বহন করতেন। তিনি প্রতিদিন দরিদ্র ও নিরাশ্রয় অতিথিদের সাথে কথা বলতেন, তাদের অসহায়ত্ব ও সমস্যার কথা শুনতেন। তিনি অসহায় নারীদের প্রতি ভীষণভাবে যত্নশীল ছিলেন। তাদের মধ্যে তিনি টাকা-পয়সা বিতরণ করতেন। তিনি ইয়াতীমদের খাওয়াতেন এবং তাদের সাথে নিজে খাদ্য গ্রহণ করতেন। হযরত খাদীজা কন্যাদের জীবন্ত কবর দেয়ার বিরোধিতা করতেন এবং সাধ্যমতো কন্যাসন্তানদেরকে নিজ গৃহে আশ্রয় দিতেন।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে বিবাহ

পিতার মৃত্যুর পর হযরত খাদীজাহ্ নিজেই তাঁর ব্যবসা পরিচালনা করতে লাগলেন। ৫৯৫ খ্রিস্টাব্দে হযরত খাদীজা তাঁর ব্যবসায়ের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত ব্যক্তির সন্ধান করছিলেন। হযরত আবু তালিব হযরত খাদীজার ব্যবসায়ের দায়িত্বভার নেয়ার জন্য রাসূলকে উপদেশ দেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) হযরত খাদীজার পণ্য-সামগ্রী নিয়ে সিরিয়ায় গমন করেন এবং বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করে মক্কায় ফিরে আসেন। তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) হযরত খাদীজার কর্মচারী হিসাবে নাকি ব্যবসায়ের অংশীদার হিসাবে শামে গিয়েছিলেন এ বিষয়টিতে মতপার্থক্য রয়েছে। ইয়াকুবী তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে লিখেছেন : ‘মহানবী (সা.) তাঁর জীবনে কারো বেতনভুক কর্মচারী হন নি।’
খাদীজার দাস মাইসারাহ্ এ সফরে রাসূলের চরিত্র সম্পর্কে যা কিছু প্রত্যক্ষ করেছিল তা হযরত খাদীজাকে অবহিত করে। রাসূলের উন্নত চরিত্র, সততা, আমানতদারীর কারণে হযরত খাদীজা তাঁর প্রতি অভিভূত হয়ে তাঁর কাছে বিবাহের প্রস্তাব পাঠান।
মহানবী (সা.) হযরত আবু তালিবের সাথে বিবাহের ব্যাপারে আলোচনা করলেন। কুরাইশ বংশীয় শীর্ষস্থানীয় ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হযরত আবু তালিব রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বিবাহের খুতবা পাঠ করেন। এ বিবাহের পরপরই মক্কার অজ্ঞ নারীরা মহানবী (সা.)-কে বিয়ে করার জন্য খাদীজার নিন্দা করতে থাকে যে, মহানবী (সা.) কোনভাবেই তাঁর উপযুক্ত নন।
বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে হযরত খাদীজার বিবাহ করার কারণ হিসাবে মনে হতে পারে যে, যেহেতু তিনি তাঁর ব্যবসা পরিচালনার জন্য একজন বিশ্বস্ত ও দক্ষ লোক খুঁজছিলেন, আর রাসূলও তেমনি ছিলেন সেজন্য তিনি রাসূলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এমন চিন্তা নিঃসন্দেহে অমূলক। ইতিহাস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে তাঁকে যেসব বিষয় উদ্বুদ্ধ করেছিল তা ছিল কতগুলো আধ্যাত্মিক ও নৈতিক বিষয়। ব্যবসায়ের উত্তরোত্তর প্রবৃদ্ধি অর্জন আর ধন-সম্পদ বৃদ্ধি যে তাঁর বিবাহে কোন ভূমিকাই রাখেনি সেটা আমরা বুঝতে পারি ইসলামের জন্য তাঁর সমুদয় সম্পদ বিলিয়ে দেয়া থেকে। বিবাহের পর হযরত খাদীজা তাঁর সমুদয় সম্পদ রাসূলের হাতে তুলে দেন। আর রাসূলুলুল্লাহ (সা.) এ সম্পদ অসহায়, এতীম ও গরীব-দুঃখীদের মধ্যে বণ্টন করেন এবং পরবর্তীকালে ইসলাম প্রচার কাজে ব্যয় করেন।
রাসূলের সাথে হযরত খাদীজাহ্ দীর্ঘ পঁচিশ বছর বৈবাহিক জীবন অতিবাহিত করেন। এ সময়ে হযরত খাদীজার গর্ভে রাসূলের দুই পুত্রসন্তান ও চার কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পুত্রসন্তানরা রাসূলের নবুওয়াতের ঘোষণার পূর্বেই মারা যান। তাঁর চারজন কন্যাসন্তানও ছিল। তবে হযরত ফাতিমা (আ.) ছাড়া অন্যরা হযরত খাদীজার কন্যা ছিলেন কিনা এ নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ঈমান

রাসূলুল্লাহ (সা.) ত্রিশ বছর বয়স থেকে মক্কার হেরা গুহায় আল্লাহর ধ্যানে মশগুল থাকতে শুরু করেন। তিনি হেরা গুহাতে একাধারে কয়েকদিন অবস্থান করতে আরম্ভ করেন। এমতাবস্থায় খাদীজা নিজে গিয়ে তাঁর খাবার পৌঁছে দিতেন। মহান আল্লাহ্র পক্ষ থেকে চল্লিশ বছর বয়সে মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রদান করা হয়। হেরা পর্বতের গুহায় রাসূলের ওপর সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত নাযিল হয়। মহানবী (সা.) বাড়িতে ফিরে এসে হযরত খাদীজার কাছে এ কথা ব্যক্ত করেন। ইসলামের ইতিহাসের অকাট্য বিষয়াদির অন্যতম হচ্ছে এই যে, হযরত খাদীজাহ্ (আ.) ছিলেন প্রথম নারী যিনি মহানবী (সা.)-এর প্রতি ঈমান এনেছিলেন। আর এ ব্যাপারে কোন মতপার্থক্যও নেই।
হযরত আলী (আ.) মহানবীর নবুওয়াতের সূচনালগ্নে ইসলাম ধর্মের নিঃসঙ্গতার দিকে ইঙ্গিত করে একটি ভাষণে বলেছেন : ‘সে দিন রাসূলুল্লাহ্ ও খাদীজার গৃহ ব্যতীত ইসলামে বিশ্বাসী আর কোন ঘর ছিল না; আমি ছিলাম তাঁদের পর ইসলামে বিশ্বাসী তৃতীয় ব্যক্তি।’ হযরত খাদীজা রাসূলের সাথে সর্বপ্রথম নামায আদায় করেন।

ইসলাম প্রচারে হযরত খাদীজার অবদান

বিবাহিত জীবনের ১৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর এ সময়ে হযরত খাদীজা অত্যন্ত কষ্টকর এক জীবনের মধ্যে প্রবেশ করেন। কেননা, এ সময়ের মধ্যেই তাঁর স্বামী মহান আল্লাহর নবী হিসাবে তাঁর ধর্ম প্রচারের কাজ শুরু করেন। আর ইসলামের প্রাথমিক যুগের দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে তিনিই ছিলেন রাসূলের সান্ত¡নার উৎস। রাসূলের ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ছিলেন হযরত খাদীজা।
শেবে আবু তালিবে
হযরত খাদীজা প্রচণ্ড চাপের মুখেও তাঁর স্বামীর সাথে থেকে কুরাইশদের মোকাবিলা করেন। যখন কাফিররা বনি হাশিম ও বনি আবদুল মুত্তালিবকে বয়কট করার ঘোষণা দেয় তখন হযরত আবু তালিব নিজেদের নিরাপত্তার জন্য শেবে আবু তালিবে চলে যান। সেখানে তাঁরা প্রায় তিন বছর অবস্থান করেন।
হযরত খাদীজা জন্মগ্রহণ করেছিলেন একটি অভিজাত পরিবারে এবং জীবনের বেশিরভাগ সময় কষ্টহীন একটি জীবন যাপন করেছিলেন। যদিও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে বিবাহ বন্ধনের আবদ্ধ হওয়ার পর তিনি তাঁর ধনসম্পদ মুসলিম জনসাধারণের জন্য খরচ করেন। কিন্তু শেবে আবু তালিবের কষ্টকর জীবন তাঁর কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি বিষয় ছিল। বৃদ্ধ বয়সেও হযরত খাদীজা শেবে আবু তালিবে উপস্থিত ছিলেন।
হযরত খাদীজার ইন্তেকাল
যা হোক রাসূলের সাথে দীর্ঘ পঁচিশ বছরের জীবন ইসলামের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল। এ সময় তিনি রাসূলকে সব দিক দিয়েই সহযোগিতা করেছেন। রাসূলের সাথে সব কষ্ট তিনি সমানভাবে বহন করেছেন। অবরোধের সময় হযরত খাদীজাহ্ যে কষ্ট সহ্য করেন তাতে তাঁর শরীর ভেঙ্গে পড়ে। তাঁর অসুস্থাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর সেবা-শুশ্রুষা করতে থাকেন। অবশেষে পঁয়ষট্টি বছর বয়সে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াতের ১০ম বর্ষে (৬১৯ খ্রিস্টাব্দ) ১০ রমযান হযরত খাদীজা মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন করেন।
তাবারসী ‘ই’লামুল ওয়ারা’ গ্রন্থে ইবনে মান্দাহর ‘কিতাবুল মারিফাহ’ থেকে ওয়াকিদীর বক্তব্যটি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেন : তাঁরা হিজরতের তিন বছর পূর্বে শে’ব থেকে বের হন। আর এ বছরেই আবু তালিব ও খাদীজা ত্রিশ দিনের ব্যবধানে ইন্তেকাল করেন। একারণে রাসূলুল্লাহ (সা.) ঐ বছরটিকে ‘আমুল হুয্ন’ বা ‘শোকের বছর’ নাম দেন।
হযরত খাদীজা শেবে আবু তালিবে অবস্থানকালের তিনটি বছরে তাঁর ধনসম্পদের সবকিছুই ব্যয় করে ফেলেন। এমনকি যখন তিনি মারা যান তখন তাঁকে দাফন করার মতো একটি কাপড়ও তাঁর ঘরে ছিল না। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একটি চাদর দিয়ে তাঁকে দাফন করা হয়। তাঁকে দাফন করা হয় হুজুন নামক স্থানে। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর কবরে নেমে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকেন। এরপর তিনি তাঁকে সেখানে দাফন করেন।

হযরত খাদীজার মর্যাদা

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘সারা বিশ্বের নারীদের মধ্যে মরিয়ম বিনতে ইমরান, খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ, ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদ এবং ফিরআউনের স্ত্রী আসিয়াই তোমাদের জন্য যথেষ্ট।’
ইসলামের ইতিহাসে হযরত খাদীজা অনেক দিক থেকে অগ্রবর্তী ছিলেন। তিনি অনেক বিষয়েই প্রথম ব্যক্তি হিসাবে বিবেচিত হন। যেমন তিনি শেষ নবী (সা.)-এর প্রথম স্ত্রী। তিনিই প্রথম সাক্ষ্য দেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল ও শেষ নবী। মহানবী (সা.)-এর পর তিনিই প্রথম ওহীর বাণী শ্রবণকারী। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি মহানবী (সা.)-এর সাথে মহান আল্লাহর উদ্দেশে নামায আদায় করেন। তিনি একমাত্র নারী যাঁর বর্তমানে রাসূল (সা.) দ্বিতীয় বিবাহ করেন নি। তাঁর গর্ভে রাসূলের সন্তানরা জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর কন্যা হযরত ফাতেমার মাধ্যমে রাসূলের বংশধারা কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে এবং পৃথিবীতে শেষ ইমাম হযরত মাহ্দী (আ.)-এর আগমন ঘটবে।

হযরত খাদীজার প্রতি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভালোবাসা

রাসূলুল্লাহ (সা.) হযরত খাদীজার মৃত্যুর পর প্রায়শ তাঁর সম্পর্কে আলোচনা করতেন এবং তাঁর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলতেন : ‘আমাকে (আল্লাহর তরফ থেকে) তাঁর ভালোবাসা দান করা হয়েছে।’