শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

মহান আল্লাহর পরিচয়

পোস্ট হয়েছে: মার্চ ১৭, ২০২০ 

 

গোলাম রেযা হায়দারী আবহুরী
অনুবাদ : আব্দুল কুদ্দুস বাদশা

আল্লাহর রহমত লাভ

‘যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের প্রতিপালক তাদেরকে স্বীয় রহমতে অন্তর্ভুক্ত করবেন।’
(সূরা জাছিয়া, আয়াত নং ৩০)

কিভাবে আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়?
দয়াময় আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন : ‘আমার রহমত সর্বত্র বিস্তৃত হয়েছে।’
আল্লাহর রহমত গোটা দুনিয়াকে ভরিয়ে তুলেছে। বিশ্বের সকল সৃষ্টিই আল্লাহর দয়া ও রহমত লাভে ধন্য হয়। আল্লাহ কাউকেই স্বীয় রহমত থেকে বঞ্চিত করেন নি। এমনকি কাফেরদেরকেও তিনি অনেক নেয়ামত দান করেছেন।
পৃথিবীতে এই যে অসংখ্য প্রকার জীবজন্তু রয়েছে আল্লাহ প্রত্যেক দিনই তাদের আহার যুগিয়ে থাকেন এবং তাদের জীবনকে মিষ্টি ও উপভোগ্য করে তোলেন। তুমি যে প্রাণিকেই দেখ না কেন আল্লাহ তাকে কোনো না কোনো একটা উপায় দান করেছেন যেন তারা জীবন নির্বাহ করতে সাহায্য করে। আল্লাহ জিরাফকে দীর্ঘ গলা দিয়েছেন যার সাহায্যে সে উঁচু গাছের পাতা ছিড়ে খেতে পারে। হাতিকে লম্বা শুঁড় দিয়েছেন যার সাহায্যে সে মাটি থেকে খাবার ও পানি তুলে খেতে পারে। মাছকে পাখনা ও লেজ দিয়েছেন যাতে সে ঐগুলোর সাহায্যে পানিতে সাঁতার কেটে বেড়াতে ও তার খাবার খুঁজে নিতে পারে। পাখিকে ডানা দিয়েছেন যার সাহায্যে সে উড়ে গিয়ে তার পছন্দের আহার সংগ্রহ করতে পারে।
সুতরাং আমরা আল্লাহর রহমত লাভের জন্য চেষ্টা চালানোর আগেই তাঁর রহমত পেয়ে গেছি। আল্লাহর রহমত সমস্ত দুনিয়ায় ভরে রয়েছে। আমরা মানুষরাও তাঁর রহমত থেকে উপকার লাভ করে থাকি।
অবশ্য আল্লাহর বিশেষ এক ধরনের রহমতও রয়েছে, যা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে হয়। তোমার উপরিউক্ত প্রশ্নটিও নিশ্চয় সেই বিশেষ ধরনের রহমত সম্পর্কেই করেছ। পবিত্র কুরআন এ সম্পর্কে বলে : ‘যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের প্রতিপালক তাদেরকে স্বীয় রহমতে অন্তর্ভুক্ত করবেন।’ সুতরাং আল্লাহর ঐ বিশেষ রহমত লাভ করতে হলে দুটি শর্ত রয়েছে : একটি হলো ঈমান রাখা এবং দ্বিতীয়টি হলো ভালো কাজ করা।
ঈমানের অর্থ হলো এটা বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ হলেন এক ও অদ্বিতীয়, তিনি ছাড়া অন্য কাউকে ইবাদত করা যায় না। আর ভালো কাজ বলতে সেই কাজগুলো বুঝায়, যেগুলো পবিত্র কুরআনে আল্লাহ আমাদেরকে করতে বলেছেন। তদ্রƒপ মহানবী (সা.) ও পবিত্র ইমামগণও আমাদেরকে যেসব কাজ করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
মাতাপিতাকে শ্রদ্ধা করা, পবিত্র কুরআন পাঠ করা, অন্যদেরকে সাহায্য করা, অসুস্থ লোকদের দেখতে যাওয়া, শিক্ষা এবং জ্ঞান অর্জন করা, রোযা রাখা, মসজিদ, মাদ্রাসা ও হাসপাতাল নির্মাণ করা ইত্যাদি কাজগুলো হলো কিছু ভালো কাজের উদাহরণ, যার মাধ্যমে আল্লাহর বিশেষ রহমত লাভ করা যেতে পারে।
সুতরাং আল্লাহর অধিক রহমত লাভ করতে হলে তাঁর প্রতি ঈমান রাখতে হবে এবং তাঁর কথা মেনে চলতে হবে। তা হলেই তাঁর বিশেষ রহমত লাভ করতে পারব, যে রহমত আমাদেরকে আল্লাহর প্রিয় হতে এবং আমাদের অন্তরের প্রশান্তি অর্জনে ও বেহেশতে প্রবেশ করতে সাহায্য করবে।