মহাকবির মাজারে
পোস্ট হয়েছে: মার্চ ৩১, ২০১৪
আশ্রাফ সিদ্দিকী
হজরত ইমাম রেজার পুণ্য নগরী মাশহাদ থেকে
আমরা চলেছি তুস্ নগরীর পথে
হাইওয়ের শুরুতেই শাহনামার অমর কবি ফেরদৌসীর
বিরাট ভাস্কর্য মূর্তি-
প্রশস্ত রাস্তার দুইপাশে সবুজ থেকে সবুজ চিনাব্ তরুর সারি-
দুইদিকে আংগুর, আপেল, কমলা, পেস্তা এবং জাফরানের বাগান
বাতাসে মধুর মধুর গন্ধ…।
চাষীরা কাজ করছেন খেতে খামারে
বোরকায় আবৃত তাদের গৃহিণী এবং কন্যারাও আছেন
কখনো বিশ্রাম করছেন গাছের ছায়ায়
হাতে কফি অথবা চায়ের পেয়ালা
অথবা দু’একটি আপেল বা আংগুরের থোকা।
মাত্র ত তিরিশ কিলোমিটার পথ-
আমাদের গাইড চলন্ত বিশ্বকোশ মোহাম্মদ আমেরী-
ব্যাখ্যা করে চলেছে ইরানের ইতিহাস…।
সামনে ডাইনে বাঁক নিতেই তুস্ নগরী
এই কি সেই নদী- যার অকাল বন্যা থেকে দেশবাসীকে বাঁচাতে
ছিল তরুণ ফেরদৌসীর শাহনামা রচনার অমর সাধনা
আর সেই একমাত্র আদরিনী কন্যা-
অর্থ প্রয়োজন ছিল যার শুভ বিবাহের জন্য
গাইড আমেরী বলে চলেছে…।
জুন মাসের এই সকালে
শত শত দর্শনার্থীতে উপচে পড়ছে স্মৃতিসৌধের প্রান্তর
সামনেই সাতটি বিচিত্র ফোয়ারা
তাতে রামধনুকের সাতটি রঙ
ডাইনেই মহাকবির বিরাট ভাস্কর্য
মুখে মৃদু হাসি দেখছেন ফোয়ারার রঙধনু…।
তাঁর সামনেই মাজার
ঘুমিয়ে আছেন তিনি
দেয়ালে দেয়ালে উৎকীর্ণ শাহনামার বিচিত্র সব ভাস্কর্য।
সুলতান মাহমুদ গজনী রক্ষা করেন নাই
ষাট হাজার স্বর্ণ মুদ্রার প্রতিশ্রুতি
কিন্তু তিনি কোথায় আজ? কোথায় তার মাজার?
গাইড বলছে সে মাজারে দর্শকদের নেই যাতায়াত।
কে বড়?- কবি না সম্রাট?
কবির স্পর্ধা- না সম্রাটের অহঙ্কার?
চিনাব গাছের তলায় মহাকালের প্রতীক এক মহাকবি
আমাদের এসব আলাপ শুনে
দেখি মৃদু মৃদু হাসছেন,
চোখে তাঁর মহাকালের ভ্রুকুটি !!