বিশ্ব অধরা সংস্কৃতি হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে ইরানের ‘পোলো’
পোস্ট হয়েছে: নভেম্বর ১৩, ২০১৭
জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) ইউনেস্কোর অধরা বা ইনট্যানজিবল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাচ্ছে ইরানের ঐতিহ্যবাহী ‘পোলো’ খেলা ও বাঁকানো স্ট্রিং বাদ্যযন্ত্র ‘কারানচেহ’। চলতি বছরের শেষে ইরানের অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে দেশটির এ দুটি ঐতিহ্য।
বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছেন ইরানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, হস্ত ও কুটিরশিল্প এবং পর্যটন সংস্থার নিবন্ধন অধিদপ্তরের প্রধান ফরহাদ নাজারি। খবর প্রেসটিভির।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ঐতিহ্যবাহী এ দুটি জিনিস ইরানের অধরা সংস্কৃতি বা ইনট্যানজিবল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে। এ দুটি ঐতিহ্যকে ২০০৩ সালের কনভেনশনের আওতায় ইউনেস্কোর নথিভুক্ত করা হবে। অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তঃসরকারি কমিটির অনুষ্ঠিতব্য ১২তম অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেয়া হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে ৪ ডিসেম্বর অধিবেশন শুরু হয়ে শেষ হবে ৮ ডিসেম্বর।
পোলো খেলা কী
ঘোড়ার পিঠে চড়ে লাঠি পিটিয়ে দলগতভাবে গোল করার খেলার নাম ‘পোলো।’ এটি জন্ম থেকেই রাজা-বাদশাদের খেলা হিসেবে পরিচিত৷ কয়েক হাজার বছর আগে প্রাচীন পারস্যে রাজকীয় এই খেলাটির জন্ম হয় এবং ইরানে প্রথম এই খেলাটি খেলা হয়। পোলোর আসল নাম ‘চোগান’। এবং এখনও পর্যন্ত ইরানে খেলাটি ‘চোগান’ নামেই পরিচিত। প্রাচীন পারস্যে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে খেলাটি প্রথম খেলা হয়।
সেদেশের ষষ্ঠ শতাব্দীর ইতিহাসে জানা যায়, বাদশাহ দ্বিতীয় খসরু পারভেজের সময়ে হারেমে থাকা রানিরাও এই খেলায় অংশ নিতেন। ক্রমে অভিজাত সম্প্রদায়ের পুরুষ ও নারীদের কাছে এই খেলা প্রিয় হয়ে ওঠে। পারস্যের কবি ফেরদৌসি নবম শতাব্দীতে তাঁর বিখ্যাত রচনা শাহনামা-তে একাধিক রাজকীয়
পোলো টুর্নামেন্টের বর্ণনা দিয়েছেন। সপ্তদশ শতাব্দীতে পোলো খেলার জন্য নির্মিত হয়েছিল ইস্পাহান শহরের নকশ-ই-জাহান স্কোয়ার৷ তৈরি করিয়েছিলেন বাদশাহ প্রথম আব্বাস৷
মধ্যযুগে পোলো খেলা পারস্য (ইরান) থেকে ছড়িয়ে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যে, ভারত, চীন ও জাপানসহ অন্যান্য দেশে। ভারতে পোলো খেলা শুরু করেন সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবেক। কাকতালীয় ঘটনা- পোলো খেলতে খেলতেই সম্রাট কুতবউদ্দিনের মৃত্যু হয়৷
কামানচেহ বা বাঁকানো স্ট্রিং বাদ্যযন্ত্র
ফার্সি ভাষার ‘কামানচেহ’ অর্থ হালকা বাঁকানো। ইরান ছাড়াও এই বাদ্যযন্ত্রটি আর্মেনিয়া, আজারবাইজান ও কুর্দে ব্যবহৃত হয়। এই স্ট্রিং যন্ত্রটি একটি পরিবর্তনশীল-টান ধনু দিয়ে বাজানো হয়।
ইরানের সুপরিচিত কারামচেহ বাদক হলেন আলি আসঘার, আর্দেশির কামকার ও কেয়হান কালহোর।