বিশ্বের সবচেয়ে দামি মসলার ৯০ ভাগই উৎপাদন হয় ইরানে
পোস্ট হয়েছে: জুলাই ১১, ২০১৭

বিশ্বের সবচেয়ে দামি মসলা জাফরান। যা খাবারে সোনালি হলুদ রং আর দারুণ সুগন্ধি আনতে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন মিসর এবং রোমে এর ব্যবহারের বিস্তারিত রেকর্ড রয়েছে, যেখানে রং করার কাজে, সুগন্ধ দ্রব্যসমূহ তৈরিতে, ওষুধ এবং রন্ধনশীল্পের উপাদানের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতো। এছাড়া মোগল সম্রাটদের রাজকীয় খাবারে ব্যবহার করা হতো সুগন্ধি রঙ ও ভেষজ উপাদানটি।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের ক্রোকাস ফুলের মাঠ থেকে বিশ্বের ৯০ ভাগ জাফরান উৎপাদন হয়।
জাফরান বিশ্বের সবচেয়ে দামি উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত। ইরানে হাজার হাজার বছর ধরে উদ্ভিদটির চাষাবাদ হয়ে আসছে এবং সেদেশে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জাফরান চাষের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। বোতলজাত ও পশ্চিমের মুদি দোকানগুলিতে বিকিকিনি শুরু হওয়ার আগে মধ্যপ্রাচ্যে জাফরান কোমল রক্তবর্ণ ফুল হিসেবে জীবন যাত্রা শুরু করে।
ক্রোকাস ফুলের শুকনো স্ট্যামেন (ফুলের যেখানে পরাগ থাকে) থেকে ফুলের মিষ্টি পদার্থ বের করা হয় এবং প্রতি বছর কেবল এক সপ্তাহ সময়ের জন্য এই ফুল ফোটে। এই পরাগ উৎপাদনের কাজ কৃষকদের কাছে না সহজের না সস্তার। এক পাউন্ড জাফরান উৎপাদনের জন্য কৃষকরা মাত্র ৪০ ঘণ্টার মতো সময় হাতে পান। আর এজন্যই স্বর্ণের চেয়েও দাম বেশি জাফরানের।
মজার বিষয় হলো ১ লাখ ৭০ হাজার ফুলের ওজন ১০০ কেজি। আর এ থেকে মাত্র এক কেজি শুকনো জাফরান উৎপাদন হয়ে থাকে।
ইরানের জাতীয় জাফরান কেন্দ্রের চেয়ারম্যান গোলাম রেজা মিরি বলেন, গত ইরানি বছরে (ফারসি ক্যালেন্ডার) যুক্তরাষ্ট্রসহ ৪৭টি দেশে ইরান থেকে ১৭২ টনের অধিক জাফরান রফতানি করা হয়েছে, যার মূল্য ২৪৬.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগের বছরের তুলনায় রফতানির পরিমাণ বেড়েছে ৩২ দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি বছরে আরও ২০ শতাংশ রফতানি বাড়বে বলে আশা করছেন তিনি।
গত বছরে ইরানে জাফরান চাষের এলাকা ৮৮ হাজার হেক্টর থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার হেক্টরে। ইরানি জাফরানের প্রায় ৯৫ ভাগ দেশটির দক্ষিণ খোরাসান ও খোরাসান রাজাভি প্রদেশে উৎপাদিত হয়।
সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল ট্রিবিউন।