বুধবার, ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

বিশ্বকে মারণাস্ত্রমুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে শেষ হল ন্যাম শীর্ষ সম্মেলন

পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬ 

news-image
ভেনিজুয়েলায় বিবৃতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে শেষ হল জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বা ন্যামের ১৭তম শীর্ষ সম্মেলন। বিবৃতিতে গত চার বছরে ন্যামের সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে এ জোটকে এগিয়ে নেয়া ও আরো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির প্রচেষ্টার ব্যাপক প্রশংসা করা হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ন্যাম সভাপতির দায়িত্ব ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্টের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
 
শান্তিসংহতি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে ন্যাম গঠিত হয়েছিল। দুদিনের শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা আন্তর্জাতিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। ন্যাম সম্মেলনের বিবৃতিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। বিশেষ করে এ জোটভুক্ত দেশগুলোতে চলমান সংকটের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াসাবেক উপনিবেশিক ও বর্তমান নব্য  সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর চাপিয়ে দেয়া আগ্রাসনের কারণে সৃষ্ট সংকট ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
 
বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৫৫ সালে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বা ন্যামের যাত্রা শুরু হয়েছিল। জোট মনে করে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কজাতিগুলোর অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও  উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরো ক্ষমতা দেয়ার ওপরই আন্তর্জাতিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক দ্বিতীয় বৃহত্তম এ জোট অবিচারযুদ্ধরক্তপাতউগ্রবাদ ও সহিংসতায় জর্জরিত বর্তমান বিশ্বে জাতিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধঐক্যসংহতি ও সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জোট এখনো বিশ্বাস করে আন্তর্জাতিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে বিরাজমান বর্ণবাদঅযাচিত হস্তক্ষেপদখলদারিত্ব ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বে উন্নতিশান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
 
ন্যাম শীর্ষ সম্মেলন শেষে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছেজোটে গৃহীত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন  এবং অর্থনৈতিক উন্নতি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন আন্তর্জাতিক  সহযোগিতা। বিশ্লেষকরা বলছেনএ সহযোগিতার অর্থ হচ্ছে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বৃহৎ শক্তিগুলোর রাজনৈতিক ও সামরিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে যা কিনা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এ ছাড়ামানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতিও সত্যিকারের সম্মান দেখাতে হবে বৃহৎ শক্তিগুলোকে।
 
ন্যাম সম্মেলনের বিবৃতিতে বিশ্বকে নিরস্ত্র করার জন্য চেষ্টা চালানোর ওপরও জোর দেয়া হয়েছে যাতে বিশ্ব গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে মুক্ত হতে  পারে। এ ছাড়াবিশ্ব থেকে পরমাণুসহ অন্যান্য মারণাস্ত্র পুরোপুরি নির্মূল করার জন্যও বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শান্তিপূর্ণ পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকারের প্রতিও সম্মান জানানো হয়েছে ন্যামের বিবৃতিতে।
 
জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য দেশগুলো মনে করে সন্ত্রাসবাদ বর্তমান বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রধান হুমকি। তাদের মতে যেখানেই সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এবং যারাই তাদেরকে সহযোগিতা করুক না কেন অবশ্যই তার নিন্দা জানাতে হবে। গত চার বছর ধরে ন্যামের সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে এ জোটকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ইরান ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। নিরস্ত্রীকরণ,জাতিসংঘের কাঠামোতে পরিবর্তন আনামানবাধিকার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি বিষয়ে স্পষ্ট নীতি গ্রহণ করেছিল ইরান।