বৃহস্পতিবার, ৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

তেহরানে জমে উঠেছে ‘ইলেকম্প ২০১৮’

পোস্ট হয়েছে: জুলাই ২৯, ২০১৮ 

news-image

ইরানের রাজধানী তেহরানে চলছে ২৪তম আন্তর্জাতিক ইলেক্ট্রনিক্স, কম্পিউটার ও ই-কমার্স প্রদর্শনী। প্রযুক্তিপ্রেমীদের পদচারণায় জমে উঠেছে ‘ইলেকম্প’ নামে পরিচিত প্রযুক্তিপণ্যের এই আন্তর্জাতিক মেলা। চার দিনব্যাপী মেলাটি চলছে তেহরানের ইন্টারন্যাশনাল পারমানেন্ট ফেয়ারগ্রাউন্ডসে। প্রদর্শনীর জন্য রঙিন আর উদ্ভাবনী সাজ-সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। নতুন নতুন স্টার্ট-আপ দিয়ে সাজানো হয়েছে হলগুলো। মেলায় আসা উৎসুক দর্শনার্থীদের কাছে নিজেদের উদ্ভাবিত পণ্যসামগ্রী ও কার্যক্রমকে তুলে ধরছে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। মেলা ২৮ জুলাই শুরু হয়ে চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত।

ইরানের ইলেকট্রনিক্স ও কম্পিউটার পণ্য এবং সেবার বাজারে ‘ইলেকম্প’ হলো সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ইভেন্ট। যা শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। প্রতি বছর অসংখ্য কোম্পানি সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের ক্ষেত্রে তাদের অর্জন করা সর্বশেষ পণ্য সামগ্রী নিয়ে এই মেলায় হাজির হয়। প্রতিবারের মতো এবারও তরুণ উদ্যোক্তারা ক্যাজুয়াল পোশাকে দর্শনার্থীদের কাছে উপস্থাপন করছেন নিজেদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন সেবা ও পরিকল্পনা।

ইরানি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়, বর্তমানে স্টার্ট-আপগুলো ইরানের বাজারের একটি বিশাল অংশ দখল করে আছে। যেমন দেশটির একটি অনলাইন ই-কমার্স প্লাটফর্ম ভিজিটর সংখ্যায় মধ্যপ্রাচ্যে সবার শীর্ষে উঠে এসেছে। রোজ ওই প্লাটফর্মটিতে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার একক ভিজিটর ভিজিট করেন। যেখান প্রায় দেড়শ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লেনদেন হয়।

এদিকে, আমেরিকা বর্তমানে ইরানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। যা দেশটির জন্য এক প্রকার মহা-আশীর্বাদ হিসেবে পরিণত হয়েছে। স্টার্ট-আপের জন্য তৈরি হয়েছে বিশাল সম্ভাবনা। মার্কিন প্রশাসনকে হতাশ করার জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তির স্টার্ট-আপ তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে।

আইসিটি গিল্ড অরগানাইজেশনের প্রধান মোহাম্মাদ বাকের আসনা-আশারি জানান, ইলেকম্পের গত আসরে স্টার্ট-আপ প্রদর্শনীর জন্য যে পরিমাণ জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল এবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার দ্বিগুণ। তিনি বলেন, এবারের মেলায় আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসায় তৎপর কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ কম লক্ষ করছি। তবে এই আসরে স্টার্ট-আপের অংশগ্রহণ বেড়েছে। শনিবার ইলেকম্পে দেওয়া এক উন্মুক্ত বক্তৃতায় তিনি এসব কথা জানান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিপুল সংখ্যাক গ্রাজুয়েটধারীর কাছে রাষ্ট্রীয় পরিচালিত প্রতিষ্ঠান বা কোনো সুপরিচিত কোম্পানিতে চাকরি করা সর্বাপেক্ষা পছন্দসই লক্ষ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে। তবে এখন তরুণ উদ্যমী ও মেধাবীরা নিজস্ব ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করার কথা ভাবছেন। নিজস্ব ধারণা থেকে তারা এসব ব্যবসা শুরু করবেন বলে ভাবছেন। ইরানের সরকারও এই সিদ্ধান্তে এসে উপনীত হয়েছ যে, এই ধরনের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশে বেকারত্ব দূর করতে সাহায্য করবে। তৈরি করতে পারে নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা।

এর আগে জানানো হয়, এবারের প্রদর্শনীতে বিশ্বের ২০ এর অধিক দেশ থেকে কয়েকশ কোম্পানি যোগ দিচ্ছে। ইভেন্টে ৪ শতাধিক স্টার্ট আপ অংশ নিয়েছে। ইলেকম্পে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে তাদের সর্বশেষ অর্জন, পণ্যসামগ্রী ও সেবা প্রদর্শন করছে। তারা এসব পণ্য ও সেবার গুণগত নানা দিক তুলে ধরছেন দর্শনার্থীদের কাছে। মেলাটির আয়োজন করেছে ইরানিয়ান আইসিটি গিল্ড অর্গানাইজেশন। এবার নিয়ে তেহরানে পরপর চতুর্থ বছরের মতো এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। সূত্র: মেহর নিউজ এজেন্সি।