ঢাকায় ‘ফারসি ও বাংলা সাহিত্যে হজ’ শীর্ষক সাহিত্য সভা ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান
পোস্ট হয়েছে: আগস্ট ২৭, ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার হলে ২৫ আগস্ট সোমবার বিকেলে ‘ফারসি ও বাংলা সাহিত্যে হজ’ শীর্ষক সাহিত্য সভা ও ফারসি ভাষায় বক্তব্য, আবৃত্তি ও লেখা প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানি ভিজিটিং প্রফেসর ড. কাজেম কাহদূয়ী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. যোবায়ের মোহাম্মদ এহসানুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কালচারাল কাউন্সেলর ড. মাহদী হোসেইনী ফায়েক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহসানুল হাদির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নাত পরিবেশন করেন সালমা আফরোজ।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানি ভিজিটিং প্রফেসর ড. কাজেম কাহদূয়ী বলেন, রুদাকি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ফারসি সাহিত্যের প্রায় সবাই হজ নিয়ে কবিতা লিখেছেন। নাসের খসরু প্রায় এক হাজার বছর আগে ৪৪০ হিজরিতে কাবা ঘরের পাশে বসে হজ নিয়ে কবিতা লিখেছেন। শরীয়তী ও জালালে আলে আহমাদের হজ নিয়ে চমৎকার লেখা রয়েছে।কাহদূয়ী বলেন, ফরসি সাহিত্যে হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে যেমন লেখা রয়েছে তেমনি আবার অনেক সাহিত্যিকের লেখায় কাবা ঘরের আশপাশের নোংরা পরিবেশ ও হজ পালনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর আচরণে ক্ষোভ প্রকাশেরও অনেক নজির রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. যোবায়ের মোহাম্মদ এহসানুল হক বলেন, আমাদের দেশে যেসব কবি সাহিত্যিকের লেখায় হজের বিষয়টি স্থান পেয়েছে তাদের মধ্যে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও কবি আল মাহমুদ অন্যতম। তিনি বলেন, হাম্দ, নাত রচনায় আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নিকটবর্তী হতে পেরেছেন এমন কেউ আছেন বলে আমার জানান নেই।তিনি হজ নিয়ে কবিতা ও গান দুটিই রচনা করেছেন। নজরুল নানা সংকটের কারণে হজে যেতে না পারলেও তার গানে পবিত্র কাবা ঘরে যাওয়ার আকুতি প্রকাশ পেয়েছে।এছাড়া কবি আল মাহমূদের ‘সৌরভের কাছে পরাজিত’ বইয়ে হজ সম্পর্কে চমৎকার লেখা রয়েছে। ‘একটি চুম্বনের প্রতীক্ষায়’ নামক লেখায় হাজরে আসওয়াদে চুম্বনের জন্য তার গভীর আকাঙক্ষা প্রকাশ পেয়েছে।
ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কালচারাল কাউন্সেলর ড. মাহদী হোসেইনী ফায়েক অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, গত এক বছরে আমার পর্যবেক্ষণে মনে হয়েছে, এদেশে ফারসি চর্চায় যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। যারা ফারসি ভাষায় বক্তব্য, আবৃত্তি, লেখা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন তাদের পারফর্মেন্স দেখে মনে হয়েছে ফারসি ভাষায় শেখার প্রতি তাদের যথেষ্ট চেষ্টা ও আগ্রহ রয়েছে। ফারসি শিক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে আমাদের এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন অব্যাহত থাকবে। সেই সাথে আগামী ফারসি কোর্সগুলোতে যারা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করবে তাদের মধ্য থেকে অন্তত ৪/৫ জনকে যাতে স্কলারশিপ দিয়ে অ্যাডভান্স কোর্সে ইরানে পাঠানো যায় আমাদের সে চেষ্টাও থাকবে। অনুষ্ঠান শেষে ফারসি ভাষায় বক্তব্য, আবৃত্তি, লেখা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ৬৯ তম ফারসি ভাষা কোর্সের জুনিয়র, সিনিয়র ও ডিপ্লোমা পর্যায়ে যারা প্রথম স্থান অধিকার করেছেন তাদেরকে সম্মাননা দেয়া হয়।