সোমবার, ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

ঢাকায় ‘পয়েট্রি ফর ফিলিস্তিন’ শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ২৬, ২০২৪ 

news-image

ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও জাতীয় কবিতা মঞ্চের উদ্যোগে শনিবার বিকেলে ঢাকায় ‘পয়েট্রি ফর ফিলিস্তিন’ শীর্ষক এক সম্মেলন   অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত দুই পর্বের অনুষ্ঠানটির আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাহ্‌ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মজিবুর রহমান মঞ্জু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেযা মীরমোহাম্মাদী।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান। ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় কবিতা মঞ্চের সভাপতি কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী।

অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ফিলিস্তিন হলো মুসলমানদের পুণ্যভূমি। এখানে মুসলমানদের প্রথম কেবলা আল আকসা অবস্থিত। অথচ মুসলমানদের এই পুণ্যভূমিতেই আজ গণহত্যা চলছে আর আন্তর্জাতিক সমাজ নীরব ভূমিকা পালন করছে। দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদের অব্যাহত বর্বর হামলায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। তাদের এই পাশবিক হামলা থেকে ফিলিস্তিনের অসহায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও রেহায় পাচ্ছে না। তিনি বলেন, ইসলামের শিক্ষা হলো প্রত্যেক মুসলমানের বিপদে এগিয়ে আসা, সহমর্মিতা প্রকাশ করা। তিনি বলেন,  ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটা ইসলামের চেতনা। আমরা যদি এ চেতনাকে ধারণ করে ঐক্যের রশিকে শক্ত করে ধরি তাহলে ফিলিস্তিনের মুক্তি আসবেই।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.  শাহ্ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ফিলিস্তিনের প্রতি যে ভালোবাসা আছে তার প্রকাশ ঘটেছে আজকের এই অনুষ্ঠানের কবিদের কবিতার মধ্য দিয়ে। হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহ মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহসহ সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিকে রক্ষার আন্দোলনে যারা জীবন দিচ্ছেন তারা ইসলামের পথে শহীদ হচ্ছেন।শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। তিনি বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সততা, ন্যায়, নৈতিকতা ও সাহসিকতার ঘাটতির কারণেই আজ ইসলামী বিশ্বে সঙ্কট বিরাজ করছে।ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। মুসলমানরা যদি ন্যায়ের পথে ও ঐক্যের পথে ফিরে আসে তাহলে মুসলমানদের জয় আসবেই। তিনি বলেন, আমরা মুসলমানরা কাউকে জুলুম করব না এবং কাউকে জুলুমের শিকার হতে দিব না। ইসলাম একটি চেতনার নাম।এই চেতনা যথাযথভাবে ফিরে আসলেই কেবল ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব  মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বিশ্বের প্রতিটি মানুষেরেই নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো আওয়াজ তুললেও যেন ফিলিস্তিনের মানুষের নিরাপদে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর কোনা গ্যারান্টি নেই।শিশুকাল থেকেই ফিলিস্তিনের মানুষ যুদ্ধের মধ্যে বড় হচ্ছে। ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে চাইলে বিশ্ববিবেককে জাগ্রত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় কবিতা মঞ্চের সভাপতি কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এমন একটি দেশ যে দেশটি ফিলিস্তিনের ব্যাপারে সবসময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে। ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য সহযোগিতা করে চলেছে। ইরানের এই ভূমিকা প্রশংসনীয়। আমরা একে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাই।

অনুষ্ঠানে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মুসলমানদের পূণ্যভূমি ফিলিস্তিন আজ রক্তে রঞ্জিত। দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলী সেনাদের অব্যাহত বর্বর হামলায় গত এক বছরে ফিলিস্তিনের প্রায় অর্ধলক্ষ নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তাদের এই পাশবিক হামলা থেকে ফিলিস্তিনের অসহায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও রেহায় পাচ্ছে না। তিনি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।