ঢাকায় ইমাম খোমেইনী (র.)-এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা (ভিডিও)
পোস্ট হয়েছে: জুন ৫, ২০১৬

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৩ জুন শুক্রবার রাজধানী ঢাকায় এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে ইরান কালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে ‘ইমাম খোমেইনী (র.)-এর অসিয়তনামা : মুসলিম উম্মাহর দৃষ্টি আকর্ষণী বিষয়সমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ.) ছিলেন মানবতার মুক্তির দিশারী।
তিনি সারাজীবন মানুষের ইহ ও পরকালীন মুক্তি চেয়েছেন। তিনি জনগণের অভিমতকে গুরুত্ব দিতেন এবং জনগণের সমর্থন নিয়ে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
সভায় বিশেষ অতিথির ভাষণে ইরানের রাষ্ট্রদূত ড. আব্বাস ভায়েজী দেহনাভী বলেন, মানব জাতির ইতিহাসে দেশ ও জাতির জন্য যারা অতুলনীয় ভূমিকা পালন করেছেন তাদের অন্যতম হলেন ইমাম খোমেইনী (রহ.)। তিনি ছিলেন একাধারে প-িত, দার্শনিক, সাহিত্যিক এবং বিপ্লবী নেতা।
সভায় ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর অসিয়তনামা সম্পর্কে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ মূসা হোসেইনী বলেন, সাধারণত একজন মানুষ তার জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে তার সহায়-সম্পদ, সন্তান ও পরিবারের বিষয়আশয় সম্পর্কে অসিয়ত করে যান বা পরিবারের সদস্যদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়ে যান। কিন্তু ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর অসিয়তনামা তেমনটি ছিল না।
ইসলামি চিন্তাবিদ, আরেফ, দায়িত্বশীল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতা হিসেবে যেভাবে তিনি জনগণের জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন, ইসলামি বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্র পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করেছেন, এই অসিয়তনামায় সেসম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সেইসাথে ইরানের জনগণ ও মুসলিম উম্মাহকে উদ্দেশ্য করে এই অসিয়তনামায় ইমামের সমসাময়িক মানুষ ও পরবর্তী প্রজন্ম কীভাবে পথ চলবেন সে ব্যাপারেও দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ইমাম খোমেইনী (রহ.) ইরানের বিপ্লবকে জনগণের জন্য বিপ্লব মনে করেন যা জনগণের একতা, আত্মত্যাগ ও খোদায়ী শক্তির উপর নির্ভরতার মধ্যমে এই বিপ্লবের বিজয় অর্জিত হয়েছে এবং জনগণকে সাথে নিয়েই এই বিপ্লবকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা হয়েছে। এমনকি জনগণকেই এই বিপ্লবের ভবিষ্যৎ কর্ণধার বলে ইমাম খোমেইনী মনে করেন এবং আল্লাহ তা‘আলার আমানত হিসেবে এই বিপ্লবের হেফাজতের দায়িত্বও জনগণের বলে তিনি উল্লেখ করেন। ইমাম খোমেইনী বলেন, জনগণ যতদিন সতর্কতার সাথে এই বিপ্লব রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে ততদিন কোন অপশক্তিই এই বিপ্লবের সামান্যতম ক্ষতি করতে সক্ষম হবে না ।
তিনি আরো বলেন, দাম্ভিকতা পরিহার, জুলুম-অত্যাচার থেকে দূরে থাকা ও বিদেশি আধিপত্যকে প্রশ্রয় না দেয়া এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও চিন্তাগত ক্ষেত্রে স্বাধীন ও সম্মানের সাথে জীবনযাপনের বিষয়গুলোর উপর ইমাম খোমেইনী তার অসিয়তনামায় বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ও ইমাম বোখারী একাডেমির সভাপতি খলিলুর রহমান সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর পরিচালক ডা. খিজির হায়াত খান।
অনুষ্ঠানের ভিডিও