ডক্টর মুস্তফা চামরান- অকুতোভয় শহীদ
পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩

ইসলামের একজন সম্মানিত সিপাহসালার শহীদ ড. মুস্তফা চামরানের শাহাদাত দিবস হচ্ছে ২১ জুন। তিনি ১৯৮১ সালের ২১ জুন দেহলভীতে ইসলামের শত্রুদের হাতে শহীদ হন। ড. মুস্তফা চামরান ছিলেন একজন বিপ্লবী মুসলমান যিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের মহান নেতা ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর নেতৃত্বে ইসলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। সম্মানের সঙ্গেই তিনি তাঁর ছাত্রজীবন অতিবাহিত করেছেন এবং ধার্মিকতা ও শিক্ষার দিকটি এমনভাবে সম্পূর্ণ করেছেন যে, ইসলামই আইন ও অন্যান্য বিষয়ে সচেতনতা ও জ্ঞান অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতর ডিগ্রিও লাভ করেছেন।
তিনি আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল প্লাজমা ফিজিক্সে দুটি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ড. চামরান ছিলেন উপগ্রহ ও শক্তিশালী রাডার এর একজন বিশিষ্ট গবেষক। তিনি জ্ঞানের বিশালতা ও কর্মকৌশলকে এমনি নিবেদিতচিত্ততার সঙ্গে সমন্বিত করতে পেরেছিলেন যে, তাঁর বন্ধু ও দুশমন সবাই একইভাবে বিস্মিত হত। ইহুদিবাদের এবং কুদসের দখলদার শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে তিনি লেবাননে সংগ্রাম করেছেন।
ইরানে ইসলামী বিপ্লব সফলকাম হওয়ার পর তিনি স¦দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং তাঁর সকল বাস্তব ও বিপ্লবী অভিজ্ঞতা ইসলাম ও ইসলামী বিপ্লবের স্বার্থে ব্যবহার করেন। তিনি সক্রিয় ও দৃঢ়ভাবে দেশের পুনর্গঠন কর্মের সূচনা করেন। শহীদ চামরানকে তেহরানের জনগণ প্রথম ইসলামী মজলিসের প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করেছিলেন। এক পর্যায়ে ইমাম খোমেইনী ড. চামরানকে তাঁর সামরিক উপদেষ্টা এবং সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা পরিষদে তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ করেন। ইরাকের বামপন্থী সরকারের আগ্রাসন এবং বিশ্ব ক্ষমতাদর্পী আমেরিকার উদ্যোগে একটি অনাহুত যুদ্ধ শুরুর পর শহীদ চামরান যুদ্ধের ময়দানে দায়িত্ব পালন করেন। স্বেচ্ছাসেবক যোদ্ধাদের পাশাপাশি তিনি ‘অনিয়মিত বাহিনী’র একটি প্রধান কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইসলাম ও ইসলামী ইরানের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব আঞ্জাম দেন। তিনি বিরতিহীনভাবে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত ছিলেন এবং বেশ কয়েকবার আহত হন। কিন্তু প্রতিবারই সুস্থ হলে ফিরে গিয়েছেন যুদ্ধের ময়দানে এবং ইসলামের নিরাপত্তার মহান কর্ম সম্পাদন করেছেন। সুসানগার্দ হোয়াইজেহ ও অন্যান্য ইরানী শহর মার্কিনী ক্রীড়নক সাদ্দামের কবল থেকে মুক্ত হলে ড. চামরান ১৯৮১ সালের ২১ শে জুন দেহলভীতে শাহাদাত বরণ করে তাঁর কাক্সিক্ষত বেহেশতী দুনিয়ায় প্রবেশ করেন। তাঁর শাহাদাত বরণে ইমাম খোমেইনী গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন : ‘তিনি ছিলেন অসাধারণ প্রজ্ঞার অধিকারী, যিনি আল্লাহর ওপর গভীর বিশ্বাস রেখে তাঁর জিহাদ শুরু করেছিলেন। তিনি স্বীয় পথে অবিচল থেকে তাঁর জীবন দান করেছেন।’
(নিউজলেটার, জুন ১৯৯১)