মঙ্গলবার, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

জুমাতুল বিদা ও আল-কুদস দিবস

পোস্ট হয়েছে: মে ২৯, ২০১৯ 

news-image

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান : পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে বলা হয় জুমাতুল বিদা। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাসে যে ব্যক্তি তার গুণাহখাতা মাফ করিয়ে নিতে পারল না তার চেয়ে হতভাগা ব্যক্তি আর কেউ নেই। এজন্য রমজানের শেষ শুক্রবারে মুসলমানগণ আবেগঘন হয়ে পড়েন। অন্যদিকে আল-কুদস মুসলমানের কেবল রাষ্ট্রীয় সম্পদই শুধু নয় আল-কুদস হচ্ছে মুসলমানদের ঈমানের স্তম্ভ। ‘আল-কুদস’ মুসলমানদেরকে দিয়ে আল্লাহ পাক তাদের মর্যাদাকে বর্ধিত করেছেন। মুসলমানদের ঈমান ও অস্তিত্বের জন্য মক্কা, মদীনা এবং আল-কুদস অবিনাশী অংশরূপে অপরিহার্য। ফিলিস্তিনের মানুষ বছরের পর বছর ধরে নির্যাতিত। অথচ অসহায় নারী, পুরুষ ও শিশুদের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘তোমাদের কি হলো যে, তোমরা সংগ্রাম করবে না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য? যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! এই জনপদ-যার অধিবাসী জালিম, তা থেকে আমাদের অন্যত্র নিয়ে যাও; তোমার কাছ থেকে কাউকে আমাদের অভিভাবক কর এবং তোমার পক্ষ থেকে কাউকে আমাদের সহায় কর।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত:৭৫)

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বরেণ্য শিক্ষাবিদ, বহু পাঠ্যপুস্তক প্রণেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ন.ম. আবদুল মান্নান খান (১৯৪৩-২০০৯ খ্রি.)-এর উদ্যোগে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ‘আল-কুদস কমিটি’ গঠন করা হয়। দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে পালিত হচ্ছে। এখানে ‘আল-কুদস’ শুধু ফিলিস্তিনিদের সমস্যা নয়, গোটা মুসলমানদের সমস্যা। কেবল মুসলমানদেরই নয়, সমগ্র বিশ্ব মানবতার সমস্যা এটি। তাওরাত বা ইঞ্জিলে তো কোথাও নেই নির্দোষ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করতে হবে। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা ও বিশ্বব্যাপী গণজোয়ার সৃষ্টির জন্যই ইমাম খোমেইনী (রহ) মাহে রমজানের শেষ শুক্রবারকে ‘বিশ্ব আল-কুদস’ দিবস ঘোষণা করায় অনেক দেশ এটাকে স্বাগত জানায়। অনেক দেশের সরকার স্বাগত না জানালেও জনগণ এর সাথে একাত্ম হয়েছে। মুসলমানদেরকে যে কোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি কাউকে অন্যায় করতে দেখে, তাহলে হাত দিয়ে বল প্রয়োগে ফেরাবে, যদি সে সামর্থ্য না থাকে তবে মুখে সে অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে, যদি সে সামর্থ্যও না থাকে তাহলে মনে মনে খারাপ জানবে ও ঘৃণা প্রকাশ করবে, আর এটাই দুর্বলতম ঈমানের পরিচায়ক।’ (মুসলিম)

আল-কুদস দিবসের যুগান্তকারী ঘোষণা বিশ্বে সত্যিকার অর্থেই একটা প্রভাব ফেলেছে। ফিলিস্তিনে যত নির্যাতনই চালানো হোক না কেন, নির্যাতনকারীরা নৈতিকভাবে পরাজিত হচ্ছে।