শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

‘জীবনের চেয়ে টাকার মূল্য বেশি নয়’

পোস্ট হয়েছে: অক্টোবর ২৬, ২০১৬ 

news-image
আমার শত্রুকেও বলব না এই পথে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসতে। জীবনের চেয়ে টাকার মূল্য বেশি না। আমার কোন আত্মীয়-স্বজনকেও বলব নাশত্রুকেও বলব না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রীসে পৌঁছানো আমিনুল হক একথাই জানালেন বিবিসিকে।
ইউরোপে ঢোকার স্বপ্ন নিয়ে বহু বিপদসংকুল পথ পেরিয়ে আমিনুল গ্রীসে আসেন গত অাগস্টে। যেভাবে তিনি ছোট্ট এক রাবারের ডিঙ্গি নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেনতা ভাবলে এখনো শিউরে ওঠেন।
তুরস্ক থেকে রওয়ানা দিয়েছিলেন তারা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে পথ চলার পর কোস্টগার্ডরা সমদ্রের মাঝখান থেকে তাদের উদ্ধার করে গ্রীসের লেসবস দ্বীপে নিয়ে আসে।
_92086281_955638d9-6b98-4942-8975-9495ab69efb3
দশ মিটার দীর্ঘ ঐ রাবারের ডিঙ্গিতে প্রায় আশি জন মানুষ ছিল। ছিল অনেক নারীতিন মাস বয়সী শিশু। ছোট্ট নৌকায় এত মানুষের সবার বসার জায়গা পর্যন্ত ছিল না।
পথে তাদের বেশ কয়েকবারই বড় বড় ঢেউয়ের মোকাবেলা করতে হয়। নৌকা প্রায় খাড়া হয়ে গিয়েছিল ঢেউয়ের তোড়ে। তখন তারা আল্লাহকে ডাকছিলেন।
শেষ পর্যন্ত কোন বিপদ ছাড়াই তারা নিরাপদে গ্রীসে পৌঁছেন। কিন্তু আর কাউকে এই বিপজ্জনক পথে ইউরোপে আসার পরামর্শ দেবেন না আমিনুল হক।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে নৌকায় করে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসার চেষ্টা করতে গিয়ে এ বছরই সবচেয়ে বেশি অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে এ বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭শরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে।
 
আমিনুল হকের বাড়ি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলায়। অর্থনৈতিক কারণে তিনি এই পথে ইউরোপে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তার সঙ্গে এই নৌকায় আরও চারজন বাংলাদেশি ছিলেন।
আমিনুল হক কিছুদিন ইরানে ছিলেন। সেখানে থেকে তুরস্কে আসেন। সেখানে কিছুদিন কাজ করেছেন। এরপর কিছু টাকা জমিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তিনি আটশ’ ডলার দিয়েছিলেন পাচারকারীদের।
আমিনুল হক কিছুদিন গ্রীসের এক ক্যাম্পে ছিলেন। তাদের এক মাসের জন্য সেখানে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর এখন তিনি অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গ্রীসে আছেন। সূত্র: বিবিসি