সোমবার, ৩রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

জঙ্গল-ই আবর: কুয়াশায় ঢাকা বনের জাদুতে হারিয়ে যাওয়া

পোস্ট হয়েছে: এপ্রিল ২৬, ২০২৩ 

news-image

সবুজ-শ্যামল ঘন বন। ভেতর দিয়ে বয়ে যায় মন জুড়ানো নির্মল বাতাস। চারদিক ঘন কুয়াশা। বাতাসে ভেসে আসে পাখিদের কোলাহল। অপরূপ এমন এক প্রকৃতির সাথে হারিয়ে যেতে কার না মন চায়।

জঙ্গল-ই আবর (আক্ষরিক অর্থ মেঘ বন) নামের আকর্ষণীয় এই বনটি ইরানের সেমনান প্রদেশে অবস্থিত। এটি এমন এক দুর্দান্ত গন্তব্য যেখানে ঘন কুয়াশা এবং কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘ প্রায়শই গাছপালাকে ঢেকে রাখে, তৈরি করে এক রহস্যময় পরিবেশ।

বনে বন্য শুয়োর, লিংকস, পার্সিয়ান চিতাবাঘ এবং ধূসর নেকড়েদের মতো প্রাণীর সমন্বয়ে বিচিত্র রকমের বন্যপ্রাণী রয়েছে। রয়েছে কয়েক হাজার উদ্ভিদ প্রজাতি। কিছু উদ্ভিদ রয়েছে অত্যন্ত বিরল প্রজাতির এবং এই অঞ্চলের জন্য অনন্য।

জঙ্গল-ই আবরে দর্শনার্থীরা নানা অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন। হাইকিং ট্রেইলগুলি আপনাকে বনের গভীরে নিয়ে যায়। এছাড়া রক ক্লাইম্বিং এবং জিপ-লাইনিংয়ের মতো দুঃসাহসিক অ্যাডভেঞ্চার তো আছেই। বেশ কয়েকটি অত্যাশ্চর্য জলপ্রপাত-বেষ্টিত বনটি এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলেছে।

বনের গাছগুলি এত লম্বা যে শীর্ষগুলি প্রায়শই কুয়াশায় ঢেকে যায়। বনের উপরিভাগ যেন মেঘের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এই গাছপালাগুলির বেশিরভাগই এলাকায় অনন্য।

বিশাল উচ্চতার বন বছর ব্যাপী শীতল জলবায়ু গড়ে তোলে। সাধারণত গ্রীষ্মকালে গরম থেকে আশ্রয় খোঁজার জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা। বনটি পিকনিক এবং ক্যাম্পিংয়ের জন্য নিখুঁত গন্তব্য। দর্শনার্থীদের তাঁবু গাড়ার জন্য বেশ কয়েকটি নির্ধারিত এলাকা রয়েছে।

ঘন বনের ভিতরে, আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না যে আপনি সেমনান প্রদেশে আছেন। ইরানের সেন্ট্রাল মরুভূমি এবং জীবজগৎ সংরক্ষিত এলাকা খার তুরান ন্যাশনাল পার্ক থেকে বেশি দূরে নয়।

সূর্যাস্তের কয়েক ঘণ্টা আগে বনে তাপমাত্রা কমে যায়। তখন মেঘ যেন বনে ছুটে আসে। মেঘমালা এত ঘন যে মনে হয় আপনি তাদের উপর হাঁটছেন। ৩৫ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত বনটি প্রাচীন ক্যাস্পিয়ান হাইরকানিয়ান বনের অংশ যা আলবোর্জ পর্বতের উত্তর ঢালকে বেল্টের মতো বেষ্টন করেছে এবং কাস্পিয়ান সাগরের দক্ষিণ উপকূলকে ঢেকে রেখেছে।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতায় অবস্থিত এই বনে গরম মৌসুমে তাপমাত্রা কম থাকে। বনে প্রচুর ঝরনা প্রবাহিত হয়, যা বৈচিত্র্যময় গাছপালা বাস্তুতন্ত্রের কারণে অনন্য।

সূত্র: তেহরান টাইমস।