চলে গেলেন ইরানি চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আব্বাস কিয়ারোস্তমি
পোস্ট হয়েছে: জুলাই ৫, ২০১৬
ক্যান্সারের সঙ্গে লড়তে লড়তে প্যারিসে চিকিৎসার জন্যে গিয়েছিলেন ইরানের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আব্বাস কিয়ারোস্তমি। সেখান থেকে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। অথচ গত সপ্তাহেই একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস এন্ড সাইন্স তাকে সদস্য করে নেয়। ৭৬ বছর বয়সেই তিনি বিদায় নিলেন এই ধরাধাম থেকে। ১৯৯৭ সালে তার ‘টেস্ট অব চেরি’ সিনেমাটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার পাম ডি ওর জিতে নেয়।
৪০ টির বেশি সিনেমা নির্মাণ করেছেন তিনি। তার অন্য উল্লেখযোগ্য সিনেমা ক্লোজআপ, দ্য উইন্ড উইল ক্যারি আস। কিয়ারোস্তমি তার অনেক সিনেমার শুটিং ইরানের বাইরে করেছেন। ইরানের জন্যে আব্বাস কিয়ারোস্তমি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে অসংখ্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি নিয়ে এসেছেন। বেশ কয়েকবার তার দেহে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। গত সপ্তাহে ফের তিনি গিয়েছিলেন প্যারিসে। তার মৃত্যুতে ইরানের চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা আসগর ফারহাদি বলেছেন, আব্বাস কিয়ারোস্তমি শুধু চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র জগত ও তার ব্যক্তিগত জীবনে এক আধুনিক অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার অধিকারী। তার সক্ষমতা ও খ্যাতি ইরানে আরো নতুন প্রজম্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের পথ দেখাচ্ছে। পুরো বিশ্ব তার মৃত্যুতে একজন মহান ব্যক্তিকে হারিয়েছে।
ইরানের আরেক প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকারক কামাল তাবরিজি বলেছেন, আব্বাস কিয়ারোস্তমির চলচ্চিত্র আমাকে বিস্ময় জাগাত। শান্তির সঙ্গে তিনি সিনেমা জগত থেকে বিদায় নিয়েছেন।
ইরান সরকারের পক্ষ থেকে আব্বাস কিয়ারোস্তমির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে।
রয়টার্স বলেছে, আব্বাস কিয়ারোস্তমির সিনেমা আসল জগত ও আবেগকে উম্মোচন করেছে। গার্ডিয়ানে পিটার র্যাডশ বলেছেন, কিয়ারোস্তমির সিনেমা ছিল অভিজাত ও কাব্যময়।
আব্বাস কিয়ারোস্তমি জন্ম নেন তেহরানে। পড়াশুনা করেন তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৯ সালে সেন্টার ফর দি ইন্টেলেকচুয়াল ডেভলভমেন্ট অব চিলড্রেন এন্ড ইয়ং এ্যাডাল্টস থেকে সিনেমা নির্মাণের হাতে খড়ি নেন। ‘কোথায় বন্ধুর বাড়ি ’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ ছায়াছবি তাকে জাতীয় মর্যাদা এনে দেয়।
১৯৬৯ সালে আব্বাস কিয়ারোস্তমি বিয়ে করেন পারভীন আমিরকোলিকে। ১৯৮২ সালে এ বিয়ে ভেঙ্গে যায়। আব্বাস কিয়ারোস্তমি তার দুই ছেলে আহমেদ ও বাহমানের সঙ্গে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেন। এদের মধ্যে আহমেদ মাল্টিমিডিয়া প্রকাশক ও বাহমান প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা।