সোমবার, ৩রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

চলে গেলেন আলী বেহরুজ ইস্পাহানি

পোস্ট হয়েছে: জানুয়ারি ২৫, ২০১৭ 

news-image

দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি মারা গেছেন। ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে সোমবার ভোর পাঁচটায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

ইস্পাহানি গ্রুপের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, সোমবার বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নাজিমউদ্দিন রোডের হোসেনি দালান মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে হোসেনি দালান কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি ছিলেন ২০০ বছরের পুরোনো শিল্পগোষ্ঠী ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান। চা, বস্ত্র, খাদ্যপণ্য, পাটশিল্প, আবাসন, পোলট্রি ও শিপিং খাতে ইস্পাহানির ব্যবসা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে কর্মরত আছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ।

অর্থনীতিবিষয়ক ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অন্যতম সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলের কর্ণধার হিসেবে তিনি অনেক জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (আইইউবি) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ছিলেন তিনি। বেসরকারি সংস্থা মাইডাসের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আলী বেহরুজ ইস্পাহানি।

১৯৫০ সালের ৩০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি। ২০০৪ সাল থেকে ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

ইস্পাহানি গ্রুপের ব্যবসায়িক ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, ইরানের ইস্পাহান থেকে হাজি মোহাম্মদ হাশেম ১৮২০ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে এসে ব্যবসা শুরু করেন। হাজি মোহাম্মদ হাশেমের দৌহিত্র হাজি মির্জা মেহদী ইস্পাহানি ১৮৮৮ সালে ঢাকায় ইস্পাহানি গ্রুপের ব্যবসার সূচনা করেন। মির্জা মেহদী ইস্পাহানির পুত্র মির্জা মোহাম্মদ ইস্পাহানি ১৯০০ সালে কলকাতায় এম এম ইস্পাহানি অ্যান্ড সন্স প্রতিষ্ঠা করেন। মির্জা মোহাম্মদ ইস্পাহানির তিন পুত্র মির্জা আহমদ ইস্পাহানি, মির্জা আবুল হাসান ইস্পাহানি ও হাজি মির্জা মাহমুদ ইস্পাহানির হাত ধরে এম এম ইস্পাহানি অ্যান্ড সন্স ১৯৩৪ সালে কলকাতায় প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে ইস্পাহানি গ্রুপের প্রধান কার্যালয় কলকাতা থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে আলী বেহরুজ ইস্পাহানির পিতা মির্জা মেহদী ইস্পাহানি যিনি সাদরি ইস্পাহানি নামে বেশি পরিচিত, শিল্পগোষ্ঠীটির প্রধানের দায়িত্বে আসেন। ২০০৪ সালে পিতার মৃত্যুর পরে ইস্পাহানি গ্রুপের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন আলী বেহরুজ ইস্পাহানি।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।