উৎসবমুখর পরিবেশে ইরানে প্রকৃতি দিবস পালিত
পোস্ট হয়েছে: এপ্রিল ৩, ২০১৭
ইরানে প্রতি বছরের মতো এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয়েছে সিজদাহ বেদার বা প্রকৃতি দিবস। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হল ফার্সি নববর্ষ বা নওরোজের দুই সপ্তাহব্যাপী উৎসব।
ফার্সি বছরের প্রথম মাসের নাম ‘ফারভারদিন’। ১৩ ফারভারদিন হলো নওরোজ উৎসবের শেষ দিন। ইরানে ইসলামি বিপ্লব-পূর্বকালে এই দিবসটিকে বলা হতো ‘সিজদাহ বেদার’। তবে বর্তমানে রুজে তাবিয়াত বা প্রকৃতি দিবস হিসেবেই দিনটি পালিত হচ্ছে। পার্সটুডের খবর।
প্রকৃতি দিবসে বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া ইরানিদের কেউই বাসায় থাকে না। পার্কগুলোতে ভিড়ের চিত্রটা কীরকম তা বোঝা যাবে এখানে জায়গা দখলের অবস্থাটা চিন্তা করলে। সবাই তাঁবু নিয়েই পার্কে যায়। খুব ভোরে ভোরে পরিবারের কোনো একজন প্রতিনিধি পার্কে গিয়ে তাঁবু খাটানোর জায়গা নির্বাচন করে দখলে যায়। দেরি করলে আর তাঁবু খাটানোর সুযোগ পাওয়া যাবে না। এবার তেহরানের আড়াই হাজার নগর-উদ্যান ও পার্কে প্রকৃতি দিবস পালনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতি বছরই এই দিন ইরানের জনগণ তাদের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অনুসরণে ঘর ছেড়ে চলে যায় সুন্দর পরিবেশ ও আবহাওয়াময় কোনো এলাকায়। সবুজ প্রান্তর, বন, পার্ক কিংবা কোনো ঝরনার পাশে পরিবারের সবাইকে নিয়ে, আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তাঁবু গেড়ে অস্থায়ী নিবাস তৈরি করে। তাঁবুর পর তাঁবু গেড়ে যারা বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এক জায়গায় মিলিত হন এই দিনটি যাপন করতে তাদের মাঝে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও নৈকট্য সৃষ্টি হয়। এটাই এই প্রকৃতি দিবসের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
এ দিনে ইরানিরা সারাদিনের প্রয়োজনীয় খাবার দাবারের আয়োজন করে। দিনভর হাসি-আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন শেষে গভীর রাতে ঘরে ফেরে সবাই। প্রকৃতি দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকৃতির কোলে ঠাঁই নেয়ার এই প্রবণতা পুরো বসন্ত ঋতু জুড়ে তো থাকেই, শীত ব্যতিত পুরো বছরই বলা যায় প্রকৃতি ঘনিষ্ঠতা লক্ষ্য করা যায় ইরানে।