শুক্রবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বই প্রকাশনা উৎসব ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠান

পোস্ট হয়েছে: জানুয়ারি ২১, ২০২০ 

news-image

ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ২০ জানুয়ারি সোমবার ‘ফারসি শিক্ষার প্রথম পদক্ষেপ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং ফারসি ভাষা, ফটোগ্রাফি ও ক্যালিগ্রাফি কোর্সের সনদ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক ড. আব্দুস সাত্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানি ভিজিটিং প্রফেসর ড. কাজেম কাহদূয়ী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান।

অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ হাসান সেহাত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যেকোন সামাজিক কর্মকা- মানুষের অন্তর, বিবেক ও ভাষার উপর নির্ভরশীল। আজ যে গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হবে তার নাম হলো ফারসি শিক্ষার প্রথম পদক্ষেপ। বইটি ফারসি ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি ইরানি জাতির সাহিত্য ও সভ্যতা সম্পর্কে জানতে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।

বাংলদেশে ফারসি ভাষা চর্চার জন্য এমন একটি গ্রন্থের প্রয়োজনীয়তার উপলব্ধি থেকেই আমি বইটি ছাপানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমি চাই ভাষা ও সাহিত্যের ভালো যা আছে তা সকলের কাছে ছড়িয়ে দিতে। মূল বইটি প্রকাশ করেছে ইরানের সাদী ফাউন্ডেশন। আর এটি অনুবাদ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার। আমি তাঁকে এজন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানি ভিজিটিং প্রফেসর ড. কাযেম কাহদূয়ী বলেন, যে কোন শিক্ষা-প্রশিক্ষণের বিষয় বই ছাড়া সম্ভব নয়। বই থাকতে হবে এবং ক্লাসে লিখতে হবে। ফারসি শিক্ষার জন্য যেমন পাঠ্যবই প্রকাশ করতে হবে তেমনি সকল শিক্ষার্থীকে বই কিনতে হবে। তবেই যথাযথ শিক্ষা নিশ্চিত হবে।

অনুষ্ঠানে বইটির অনুবাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম সরকার বলেন, ইরানের বুনিয়াদে সাদী ‘গামে আউয়াল’ বা ফারসি শিক্ষার প্রথম পদক্ষেপ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে। তবে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সহযোগিতা না করলে বাংলাদেশে এ গ্রন্থটি ছাপানো সম্ভব হতো না। সেজন্য তিনি কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ হাসান সেহাতকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান।তিনি একই সাথে বইটি প্রকাশের ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সবুর খান ও ড. আবুল বাশারকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ড. আবুল কালাম সরকার বইটি অনুবাদে যথেষ্ট কষ্ট করেছেন। আর তাঁর সাথে ড. আব্দুস সবুর ও ড. আবুল বাশারও অনেক সহযোগিতা করেছেন। তিনি বইটি প্রকাশে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ফারসি চর্চার পেছনে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অতুলনীয় অবদান রয়েছে। আর ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর নেতৃত্বে ইরানে বিপ্লব সাধিত না হলে বাংলদেশে ফারসি চর্চার ক্ষেত্রও প্রস্তুত হতো না। বিপ্লবের পর এদেশে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ফারসি ভাষা শিক্ষা কোর্স চালু করে। সেসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি ভাষার কয়েকজন মাত্র শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভূমিকার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি ভাষা শিক্ষার্থীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে।তিনি ফারসি ভাষা শিক্ষার অন্যান্য পাঠ্যবইগুলো অনুবাদের ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক ড. আব্দুস সাত্তার বলেন, এরকম একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি। শুরুতেই বলতে চাই যে, জেনারেল সোলাইমানির শাহাদাতের ঘটনায় কষ্ট অনুভব করছি। প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার মানুষের মধ্যে মানবিকতার বিষয়গুলোর বড়ই অভাব পরিলক্ষিত হয়। তাদের মধ্যে আন্তরিকতা দেখা যায় না। তিনি বলেন, শিল্পকলার ইতিহাসের আলোচনা ইরানকে বাদ দিয়ে হয় না। ইরান শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ একটি দেশ। ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যে ক্যালিগ্রাফি কোর্স চালু করেছে তা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। আমি আশা করছি এ ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশে ক্যালিগ্রাফি শিল্পের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আলোচনা শেষে ফারসি শিক্ষার প্রথম পদক্ষেপ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং ফারসি ভাষা, ফটোগ্রাফি ও ক্যালিগ্রাফি কোর্সের সনদ প্রদান করা হয়।