মঙ্গলবার, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

ইরান ভ্রমণ ইউরোপের মতোই নিরাপদ : ইন্টারন্যাশনাল এসওএস

পোস্ট হয়েছে: নভেম্বর ২৭, ২০১৮ 

news-image

ভ্রমণপিপাসুদের জন্য পশ্চিম ইউরোপের মতোই নিরাপদ গন্তব্য ইরান। গ্লোবাল সিকিউরিটি তথা বৈশ্বিক নিরাপত্তার ওপর প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। ইরানের পর্যটন শিল্পের জন্য এই প্রতিবেদনটিকে একটি শুভ সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় দেশটির রাজস্ব লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হতে পারে পর্যটন শিল্প।

কন্ট্রোল রিস্ক এর সহযোগিতায় ‘দ্যা ২০১৯ ট্রাভেল রিস্ক ম্যাপ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নিরাপত্তা সেবা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল এসওএস (সস)। এতে কোনো দেশে পর্যটকরা বর্তমানে কতটা হুমকিতে রয়েছেন তার ভয়াবহতার মাত্রা দেখানো হয়েছে। অর্থা’ রাজনৈতিক সহিংসতা (সন্ত্রাসবাদ, বিদ্রোহ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অস্থিরতা ও যুদ্ধ), সামাজিক অস্থিরতা (ধর্মীয় গোষ্ঠীগত, সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত সহিংসতা) ও উগ্রবাদ এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অপরাধের কারণে কোনো দেশে পর্যটকরা কতটা ঝুঁকিতে রয়েছেন তা তুলে ধরা হয়েছে।

পরিবহন অবকাঠামোর বলিষ্ঠতা, শৈল্পিক সম্পর্কের অবস্থা, নিরাপত্তা ও জরুরি সেবার কার্যকারিতা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় রাষ্ট্র কতটা সংবেদনশীল সেসব বিষয়ও বিবেচনায় এনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

‘দ্যা ২০১৯ ট্রাভেল রিস্ক ম্যাপ’ এর তালিকায় ‘নগণ্য’, ‘কম’, ‘মাঝারি’, ‘উচ্চ’ ও ‘চরম’- এই পাঁচ ক্যাটাগরির ঝুঁকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইরানে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার (ইউনেসকো) তালিকাভূক্ত ১৭টি স্থানসহ পর্যটক আকৃষ্টের জন্য রয়েছে বিভিন্ন প্রাচীন স্থাপনা ও অঞ্চল। যা নিয়ে বিশ্বে সম্ভাবনাময়ী পর্যটক গন্তব্যে থাকা শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

ইরানি কর্তকর্তারা বলছেন, ইরান তেল নির্ভরতা কমাতে চায়। এজন্য তারা ২০২৫ সাল নাগাদ বছরে ২ কোটি পর্যটক আকৃষ্ট করতে চায়। যা থেকে তাদের ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় হবে।

এরআগে প্রকাশিত এক সরকারি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের মার্চ থেকে শুরু করে চলতি ফারসি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইরানে ৬০ লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশেরও বেশি।

বিশ্ব ভ্রমণ ও পর্যটন সংস্থা ডব্লিউটিটিসি সম্প্রতি বলেছে, ২০১৭ সালে ইরানের মোট জাতীয় উৎপাদনে (জিডিপি) ৩০ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অবদান রেখেছে দেশটির পর্যটন খাত। অর্থনীতিতে পর্যটন রাজস্বের সর্বোচ্চ অবদান রাখার দিক দিয়ে বিশ্বের ১৮৫টি দেশের মধ্যে ৩৫তম অবস্থানে রয়েছে ইরান।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ছাড়া ‘নগণ্য’ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে বাহরাইন, কুয়েত ও কাতার। ‘কম ঝুঁকিতে’ থাকা দেশগুলো হলো জর্ডান, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্জিয়া, আজারবাইজান, আরমেনিয়া ও উজবেকিস্তান।

তালিকায় পর্যটকদের জন্য ‘গড়’ (অ্যাভারেজ) নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা দেশ হিসেবে তুর্কমেনিস্তান ও সৌদি আরবের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে, অঞ্চলে ‘বিপজ্জনক’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে পাকিস্তান, ইরাক ও আফগানিস্তান।

পর্যটকদের জন্য ‘চরম’ ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর প্রায় সবগুলোই আফ্রিকার। মধ্যপ্রাচ্যে ‘চরম’ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো হলো সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সোমালিয়া।

অতি সামান্য কিছ দেশ ‘নগণ্য’ ঝুঁকির ক্যাটাগরিতে নিজেদের উত্তীর্ণ করাতে সক্ষম হয়েছে। এই ক্যাটাগরিতে ইউরোপ থেকে রয়েছে লুক্সেমবার্গ, ডেনমার্ক, স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও গ্রিনল্যান্ড। ‘কম’ ঝুঁকিতে থাকা দেশের মধ্যে আরও রয়েছে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। সূত্র: প্রেসটিভি।