ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সংক্ষিপ্ত হজবাণী
পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৬
![news-image](https://www.iranmirrorbd.com/wp-content/uploads/2016/09/49813_949.jpg)
পবিত্র হজ অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সারা বিশ্বের মুসলমান ও হজযাত্রীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বাণী দিয়েছেন। তার এর হজবাণীর কিছু অংশ তুলে ধরা হল:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সব প্রশংসা কেবলই বিশ্বজগতের প্রভু তথা প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আর মহান আল্লাহর দরুদ বর্ষিত হোক আমাদের নেতা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের ওপর এবং তাঁর পছন্দনীয় সঙ্গীদের ওপর ও তাঁদের ওপর যারা বিচার-দিবস পর্যন্ত এই মহান ব্যক্তিদের অনুসারী।
বিশ্বের মুসলিম ভাই ও বোনেরা!
মুসলমানদের জন্য হজ মর্যাদা ও গৌরবের একটি উপলক্ষ যা সব মানুষের দৃষ্টিতেই স্পষ্ট। এ উপলক্ষ অন্তরকে আলোকিত করার এবং মহান আল্লাহর সমীপে নিজেকে বিনম্র করার ও দোয়া আর কাকুতি-মিনতির উপলক্ষ।
হজ এক পবিত্র, পার্থিব, খোদায়ি ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্রত। মহান আল্লাহ যেমনটি সূরা বাকারার ২০০ নম্বর আয়াতের অংশবিশেষে বলেছেন: «فَاذکُرُوا اللّهَ کَذِکرِکُم ءابآءَکُم اَو اَشَدَّ ذِکرًا»
অতঃপর আল্লাহকে স্মরণ কর যেমন করে তোমরা স্মরণ করতে তোমাদের পূর্বপুরুষদের, বরং তার চেয়েও বেশি। সূরা বাকারার ২০৩ নম্বর আয়াতের একাংশে মহান আল্লাহ বলেছেন, «وَ اذکُرُوا اللّهَ فی اَیّامٍ مَعدوداتٍ» এবং আল্লাহকে স্মরণ কর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে । অন্যদিকে সূরা হজের ২৫ নম্বর আয়াতের একাংশে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, মসজিদুল হারাম… যা আমরা তৈরি করেছি মানুষের জন্য সমানভাবে- স্থানীয় কিংবা বহিরাগত, (সবার জন্য তা সমান)।
এইসব আয়াত হজের বৈচিত্র্যময় ও অশেষ দিকগুলো স্পষ্ট করে দেয়।
এই অতুলনীয় ব্রতের স্থান ও কালের নিরাপত্তা এক স্পষ্ট নিদর্শন ও তা জ্বলজ্বল তারকার মতই মানুষের হৃদয়ে দেয় প্রশান্তি এবং তা হাজিকে মানুষের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী ও আধিপত্যকামী জালিমদের সৃষ্ট নিরাপত্তাহীনতার নানা চালিকাশক্তির অবরোধ থেকে মুক্ত করে। ফলে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হাজিগণ নিরাপত্তার আনন্দ উপভোগ করেন।
ইসলাম যে ইব্রাহিমি (প্রকৃত) হজ মুসলমানদেরকে উপহার দিয়েছে তা গৌরব, আধ্যাত্মিকতা, ঐক্য ও মর্যাদার প্রতীক। এই হজ ইসলামের শত্রু ও অমঙ্গলকামীদের কাছে তুলে ধরে মুসলিম উম্মাহর মহত্ত্ব বা বিশালত্ব ও মহান আল্লাহর অশেষ শক্তির ওপর তাদের নির্ভরতা। এ ছাড়াও তা স্পষ্ট করে দেয় বলদর্পি আর বিশ্ব-মোড়লদের পক্ষ থেকে মানবজাতির ওপর চাপিয়ে দেয়া দুর্নীতি, লাঞ্ছনা ও জুলুমের চোরাবালি থেকে মুসলিম উম্মাহর দূরত্বকে।
(প্রকৃত) ইসলামি ও তাওহিদি হজ হচ্ছে সূরা ফাতহের ২৯ নম্বর আয়াতের একাংশে বর্ণিত «اَشِدّآءُ عَلَی الکُفّارِ رُحَمآءُ بَینَهُم» শীর্ষক বক্তব্যের প্রতীক যার অর্থ হল, মুসলমানরা পরস্পরের প্রতি দয়ার্দ্র ও কাফির বা অবিশ্বাসীদের প্রতি কঠোর। এই হজ হচ্ছে মুশরিকদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করার এবং মু’মিনদের সঙ্গে ঐক্য ও ভালবাসা জোরদারের স্থান।