ইরানের প্রেসিডেন্টের কাজাখস্তান সফর: সম্পর্ক উন্নয়নের নয়া অধ্যায়ের সূচনা
পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬

ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি (বুধবার) রাতে কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় পৌঁছেছেন। প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গী হিসেবে একটি উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধি দলও সে দেশ সফরে গেছেন।
ইরানের প্রেসিডেন্ট এর আগে আর্মেনিয়া সফরে গিয়েছিলেন। আর্মেনিয়ায় প্রেসিডেন্ট রুহানির সফর ছিল অত্যন্ত সফল। আর্মেনিয়া ও ইরানের প্রেসিডেন্ট দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বিষয়ে পাঁচটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছেন। এসব সমঝোতা বাস্তবায়িত হলে তেহরান ও এইরভানের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার নয়া অধ্যায় শুরু হবে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এবং কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট নুর সুলতান নাজার বায়েভও গতকাল(বৃহস্পতিবার) দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। এ সময় তারা কাস্পিয়ান সাগরে জাহাজ চলাচল, পর্যটন, ব্যবসা ও ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা বিষয়ক মোট পাঁচটি সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমে সংযোগ স্থাপনের জন্য ইরানের করিডরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শরীক দেশ হচ্ছে আমের্নিয়া, কাজাখস্তান ও কিরঘিজিস্তান। ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ভৌগোলিক দিক দিয়ে ইসলামী ইরানের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে অভিন্ন ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন। এ ছাড়া, এ অঞ্চলের দেশগুলোর তেল, গ্যাসের বিশাল ভাণ্ডার, যৌথ পুঁজি বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা উন্নয়নের এক বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে এবং এ থেকে সাবই উপকৃত হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যএশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের কৌশলগত সম্পর্ক সহযোগিতা বিস্তারের সুযোগ এনে দিলেও তার বাস্তবায়ন কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। যেমন ককেশিয় ও মধ্যএশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের যোগাযোগের যে রুট রয়েছে তার সর্বোত্তম ব্যবহার যাতে উন্মুক্ত সাগর ব্যবহারের সুযোগ মধ্যএশিয়ার দেশগুলো পেতে পারে। এ ছাড়া, এ অঞ্চলের দেশগুলোতে যে বিশাল জ্বালানির ভাণ্ডার রয়েছে তারও সৎব্যবহার। ইরান, কাজাখস্তান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে রেল যোগাযোগ, কাস্পিয়ান সাগর তীরবর্তী এই তিন দেশের মধ্যে তেল পাইপ লাইন নির্মাণের যে পরিকল্পনা রয়েছে তা আঞ্চলিক উন্নয়নের বিরাট সুযোগ এনে দিলেও এটাই যথেষ্ট নয় কারণ সহযোগিতা বাস্তবায়নের পথে অনেক বাধাও রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে বড় আকারে পণ্য সরবরাহ ও ব্যাংকিং খাতে সীমাবদ্ধতা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যএশিয়ার এ দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা সমগ্র ওই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য কল্যাণকর এবং পারস্পরিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নেয়াই ইরানের কূটনীতির প্রধান লক্ষ্য। ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু সমঝোতার পর অন্য দেশের সঙ্গে ইরানের আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারের সুযোগ এসেছে। তাই মধ্যএশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের বহুপক্ষীয় সহযোগিতারও নয়া দিগন্তের সূচনা হয়েছে। সূত্র: পার্সটুডে