ইরানের খুজেস্তান, সভ্যতার দোলনা
পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০
![news-image](https://www.iranmirrorbd.com/wp-content/uploads/2020/09/shushatr2.jpg)
শীতকালে ইরানে অবকাশযাপনের অন্যতম সেরা গন্তব্য খুজেস্তান প্রদেশ। এখানকার চিরসবুজ-শ্যামল গন্তব্যগুলোর মধ্যে সুসার ঐতিহাসিক স্থান, দেজফুল ও শুশতার উল্লেখযোগ্য। এসব গন্তব্য ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী যে কারোর কাছে যথেষ্ট আকর্ষণের। বদ্বীপের মধ্য দিয়ে বিশাল নদী পাড়ি দেয়া- শতাব্দীকাল ধরে খুজেস্তানকে একটি আদর্শ কৃষি ঠিকানায় পরিণত করেছে। শীতকালে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে অবকাশযাপন করতে যারা পছন্দ করেন তাদের এখানে ঠাণ্ডা আবহাওয়া এড়িয়ে চলার সুযোগ রয়েছে। অক্টোবর থেকে মে এর শেষ নাগাদ হালকা বসন্তের মতো আবহাওয়া উপভোগ করতে পারবেন।
খুজেস্তানের আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্যগুলো হলো- চোঘা যানবিল জিগগুরাট, শুশতার হিস্টোরিক্যাল হাইড্রলিক সিস্টেম, সুসা প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, হাফ্ট টেপ, দেজফুলের পুরনো সেতু, শাদোরভান বাঁধ-সেতু, কার্খে ও করুন নদী।
চোঘা যানবিল
![](https://www.culturalexbd.com/wp-content/uploads/2020/09/ziggurat-750x536.jpg)
চোঘা যানবিল ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে অবস্থিত এক ঐতিহ্যবাহী স্থান। এখনও এ স্থানে প্রাচীন বিশাল স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়- যা ইউনেস্কো কর্তৃক সংরক্ষিত। সেসময় মেসোপোটেমিয়া অঞ্চলের বাইরে হাতে গোনা যে কয়েকটি প্রাচীন ও সুসংরক্ষিত বিশাল স্থাপত্য নিদর্শন ছিল সেগুলোর অন্যতম হলো এই চোঘা যানবিল। প্রত্নতাত্বিক স্থানটি এলামাইট আমলের (খিস্ট্রপূর্ব ১৪০০ খেকে ১১০০) স্থাপত্য বিকাশের অনন্য দলিল। শহরটি কখনই পূর্ণাঙ্গভাবে নির্মাণ করা হয়নি। আসিরিয়ার সাম্রাজ্যের হাতে ধ্বংস হওয়ার আগ পর্যন্ত কিছু মানুষ সেখানে বসবাস করত। এটি পোড়ামাটি এবং কাদামাটি দিয়ে নির্মিত হয়েছিল।
শুশতার হিস্টোরিক্যাল হাইড্রলিক সিস্টেম
খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতকে শাসক দারিউস দ্যা গ্রেটের সময় শুশতার হিস্টোরিক্যাল হাইড্রলিক সিস্টেম নির্মাণ করা হয়। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় এটি নিবন্ধিত হয় ২০০৯ সালে। ধারাবাহিক কয়েকটি চ্যানেলের মাধ্যমে শুশতার শহরে পানি সরবরাহে সিস্টেমটি ব্যবহার করা হতো। তৎকালীন সময়ের উল্লেখযোগ্য বিস্ময়কর অর্জন হিসেবে এটি বিবেচিত হয়। আজকের দিনেও সিস্টেমটি ব্যবহার করা হয়।
ইউনেস্কো সিস্টেমটিকে ‘মাস্টারপিস অব ক্রেয়েটিভ জিনিয়াস’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ব্রিজ, ওয়েয়ারস, বাঁধ, কল, পানির ক্যাসকেড, খাল এবং টানেলের আন্তঃসংযুক্ত একটি সেট নিয়ে হাইড্রলিক সিস্টেম নির্মাণ করা হয়েছে। কমপ্লেক্সটিতে ব্যবহৃত মূল উপাদান হচ্ছে গ্রানাইট, চুনের প্লাস্টার ও মর্টার।
সুসা
![](https://www.culturalexbd.com/wp-content/uploads/2020/09/image050.jpg)
ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে অবস্থিত সুসা শহর মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল।খ্রিস্টপূর্ব ৫ম অব্দের শুরুর দিকে বাণিজ্য, প্রশাসন ও ধর্মীয় বিবেচনায় সুসা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখে। এটি বিশ্বের বৃহত্তর দুই সভ্যতা- মেসোপটেমিয়ান এবং ইরানি মালভূমির মিলনস্থল হয়ে ওঠে। প্রত্নতাত্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যে, খ্রিস্টপূর্ব ৭০০০ অব্দে সুসা শহরে জনমানুষের বসতি গড়ে উঠেছিল। নব্যপ্রস্তরযুগীর গ্রাম হিসেবে গড়ে ওঠা এই প্রাচীন শহরটি অঙ্কিত মৃৎশিল্প সভ্যতার সাথে সম্পর্কিত ছিল। এই স্থানে প্রাপ্ত নিদর্শনসমূহের মধ্যে আঁকা মৃৎশিল্প ছাড়াও আঁকা সিরামিকেরপাত্রও রয়েছে। ভ্রমণ স্মৃতিময় করতে ছুটির সময় ইরানের এসব দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে পারেন।
সূত্র: ইপিকপারসিয়া ডটকম।
![](https://www.culturalexbd.com/wp-content/uploads/2020/09/shushtar-bridge-persia-1140x312.jpg)
![](https://www.culturalexbd.com/wp-content/uploads/2020/09/20180426_125359-750x536.jpg)
![](https://www.culturalexbd.com/wp-content/uploads/2020/09/izeh-Tarisha-temple-750x536.jpg)
![](https://www.culturalexbd.com/wp-content/uploads/2020/09/izeh-ecolodge-750x375.jpg)