ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা  ইমাম খোমেইনী (রহ.)এর ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকালে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে এক ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের মাননীয় রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ রেযা নাফার।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন, খুলনাস্থ ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী এবং ইমাম খোমেইনী (র.)-এর ফারসি কবিতার গ্রন্থ ‘দিওয়ানে ইমাম’ এর অনুবাদক বিশিষ্ট গবেষক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী । কনফারেন্সটিতে শ্রোতা হিসেবে গবেষক, আলেম, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ এবং শিক্ষার্থীরাও সংযুক্ত ছিলেন।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মাননীয় রাষ্ট্রদূত জনাব নাফার তার বক্তব্যে ইমাম খোমেইনীর ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিকের প্রতি আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বর্তমান অর্জন হযরত আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর নির্দেশনা ও বুদ্ধিমান নেতৃত্বের  ফসল। তিনি  ইমাম খোমেইনীর পথ ও চিন্তার ধারাবাহিকতায় মিল রেখে ইরানি জাতির সামনে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। বিশ্বে মার্কিন অপরাধ এবং সাম্প্রতিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসল চেহারা এবং এর অপরাধসমূহ প্রকাশিত হচ্ছে। আর তাই তাদের নিপীড়ন বিশ্বে বেশি দিন টিকবে না। জনাব নাফার আরো বলেন, ইমাম খোমেইনীর নাম সময় ও স্থানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না ও থাকবে না। তাঁর চিন্তাভাবনা ও ব্যক্তিত্ব দ্বারা প্রভাবিত ইরানি বিপ্লবকে ‘বিশ্ব বিপ্লব’  বলে অভিহিত করা হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তা বলেন, ইরানি বিপ্লবের প্রভাবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে চিন্তা, মতাদর্শ এবং বক্তৃতায় নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে। ইমাম খোমেইনীর নেতৃত্ব ও চিন্তাধারার এই বিপ্লব আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, চিন্তাভাবনা এবং মতবাদের ক্ষেত্রে একটি নতুন পথ উপস্থাপন করেছে যা পশ্চিমা শক্তিগুলিকে আতঙ্কিত করে তুলেছিল। তাই তারা বিপ্লব যাতে সামনে অগ্রসর হতে না পারে সেজন্য নানাভাবে (আরোপিত যুদ্ধ, অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা…) বাধার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি যে, এই বিপ্লব তার ঐতিহ্য, কর্তৃত্ব ও মর্যাদার সাথে সামনে এগিয়ে চলছে।

বক্তারা ইমাম খোমেইনীর চিন্তায় ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যকার যোগসূত্র, ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পরে দুই পরাশক্তির ক্ষয়িষ্ণু অবস্থান, বিশ্বের বিভিন্ন জাতি ও স্বাধীনতাকামীদের কাছে ইমামের চিন্তাদর্শনের অনুপ্রেরণা, নিপীড়িত ও মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয়, ইমাম খোমেইনীর ব্যক্তিত্বের আধ্যাত্মিক, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দিকসহ নানাবিধ বিষয়ে আলোচনা করেন।  ইমাম খোমেইনীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়ার মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সটি শেষ হয়।