শুক্রবার, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

পোস্ট হয়েছে: জুলাই ২৫, ২০১৯ 

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের নেতা ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে ২৮ মে, ২০১৯ বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন অডিটোরিয়ামে ‘ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক চিন্তাধারা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব আবুল কালাম আজাদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরানি রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ রেযা নাফার। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান, ব্রিলিয়েন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল হুজ্জাতুল ইসলাম মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান ও প্রখ্যাত চিন্তাবিদ জনাব তানিম নওশাদ। সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আনিসুজ্জামান।
জনাব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইমাম খোমেইনী ছিলেন সমকালীন বিশে^র অবিসংবাদিত নেতা। তিনি ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ। পৃথিবীতে যেসকল নেতা বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী ছিলেন ইমাম খোমেইনী তাঁদের অন্যতম। তিনি বিশ্বসভ্যতার অন্যতম লালনভূমি ইরানে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন রাজতন্ত্রের উত্তরাধিকারী পাহলভী বংশের স্বৈরাচারী শাসনকে উৎখাত করেন। ইমাম খোমেইনী আজীবন সা¤্রাজ্যবাদী পরাশক্তিগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি ছিলেন একজন আপোসহীন সংগ্রামী পুরুষ, যিনি সকল শোষণ ও অনাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। ইমাম খোমেইনীর বড় পরিচয় হলো তিনি একজন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন বলেই বিশে^র পরাশক্তিগুলো ইরানের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র করেও সফলতা লাভ করতে পারে নি।
তিনি আরো বলেন, ইরানের ইসলামি বিপ্লব দুনিয়ার মুসলমানের কাছে, মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সমগ্র মানবতার কাছে এক নুতন দিগন্ত উন্মোচন করে। ইমাম খোমেইনী (র.)-এর সুযোগ্য নেতৃত্বে ইরানের ইসলামি বিপ্লব ‘ইসলাম’ স¤পর্কে প্রচলিত সংকীর্ণ অনেক ধ্যানধারণাকে বদলে দিয়েছে। দলপূজা, গোষ্ঠীতন্ত্র, খ-িত চিন্তাধারার বেষ্টনীর ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ ইসলামি উম্মাহর একটি উঁচু ধারণা তিনি উপস্থাপন করেন। তিনি ছিলেন সর্বপ্রকার গোঁড়ামিমুক্ত।
তিনি বলেন, ইমাম খোমেইনী একজন উঁচু মাপের কবিও ছিলেন। তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু ছিল নৈতিকতা, মানবতা, আল্লাহর সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক লাভের শিক্ষা এবং আল্লাহর সৃষ্টির সাথে মানুষের সম্পর্ক লাভের শিক্ষা ও দেশপ্রেম। তাঁর কবিতাগুলো শেখ সাদী (রহ.) ও মাওলানা রুমি (রহ.)-এর ভাবাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত যার গভীরতা অনেক।
প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান বলেন, একটি সময়ে ইমাম খোমেইনী (রহ.)-কে লেলিন, মাও সেতুং এর মতো বিপ্লবী নেতার মতো মনে করা হতো, কিন্তু অচিরেই ইমাম খোমেইনীর স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব প্রকাশিত হয় এবং তাঁর আধ্যাত্মিকতার দিকটি সকলের সামনে উদ্ভাসিত হতে শুরু করে। তবে এ মহান ব্যক্তিত্বের নানা দিক এখনও উন্মোচিত হয় নি।
হুজ্জাতুল ইসলাম মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, ইমাম খোমেইনী এমন একটি নাম যার সাথে কেবল ইসলামি বিপ্লবই নয়, বরং আধ্যাত্মিকতার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ইমাম খোমেইনীর বিপ্লব সাড়া বিশ^কে নাড়া দেয়। বিপ্লবের পর এর স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছিল, নানা ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, কিন্তু সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দিন দিন অগ্রগতির পানে এগিয়ে চলছে।
জনাব তানিম নওশাদ বলেন, ইমাম খোমেইনী এমন এক সময় বিপ্লবের নেতৃত্ব দেন যখন ইরানের জনগণ রাজনীতি ও অন্যান্য সামাজিক বিষয়াদি সম্পর্কে সচেতন থাকলেও এর সাথে আধ্যাত্মিকতার বিষয়টিতে সেভাবে সচেতন ছিল না। ইমাম খোমেইনী জনগণকে আধ্যাত্মিক রাজনৈতিক চর্চায় উদ্বুদ্ধ করেন।
জনাব মোহাম্মদ রেযা নাফার বলেন, ইমাম খোমেইনীর বহুমুখী ব্যক্তিত্বের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি ছিলেন অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী যিনি বস্তবাদী রাজনীতির বিপরীতে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিকে আধ্যাত্মিকতার সাথে সংমিশ্রিত করেছেন। তিনি এমন এক বিপ্লবী চিন্তাধারা উপস্থাপন করেন যা আজও ইরানি জনগণকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ইমাম খোমেইনী ছিলেন সা¤্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার একজন সংগ্রামী মহাপুরুষ। তিনি মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে এমন একটি বিপ্লব সংঘটিত করেন যা আজও সফলভাবে টিকে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক আল-কুদ্স দিবস উদ্যাপন
আন্তর্জাতিক আল-কুদ্স দিবস (পবিত্র রমযানের শেষ শুক্রবার) উপলক্ষে আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে ২৫ রমযান ১৪৪০ হিজরী, শুক্রবার, ৩১ মে, ২০১৯ বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে ‘আল-কুদ্স মুক্তির অন্বেষায়’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আ.ক.ম মোজাম্মেল হক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ রেযা নাফার, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত জনাব ইউসেফ এস ওয়াই রামাদান ও সিটি ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, ইস্টার্ণ প্লাস জামে মসজিদের খতিব মওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমীন এবং বিশিষ্ট চিন্তাবিদ জনাব আবদুল্লাহ আল ক্বাফি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক জনাব জামাল উদ্দিন বারী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আল-কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর সহ-সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জনাব এ.কে.এম. বদরুদ্দোজা। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও আল কুদ্স কমিটি বাংলাদেশ-এর সভাপতি প্রফেসর ড. শাহ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী।
জনাব আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, ইসরাইল কর্তৃক দখলকৃত ফিলিস্তিনের কারণে সকল মুসলমান ব্যথিত, তবে মধ্যপ্রাচ্যের কতিপয় দেশ ছাড়া। বরং তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসরাইলকে সমর্থন ও সাহায্য-সহযোগিতা করে চলেছে। আমরা আল-কুদ্স দিবস পালনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করি। আমরা এই সেমিনারের মাধ্যমে ইসরাইলি বর্বরতার নিন্দা জানাই। বিশে^র সকল মানবতাবাদী মানুষের উচিত ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় ইসরাইলি নিষ্ঠুরতাকে নিন্দা করেছেন এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন।
জনাব রেযা নাফার বলেন, একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, যদি কোন মুসলমান সাহায্যের আবেদন জানায় এবং অপর মুসলমান তাকে সাহায্য না করে তাহলে সে আসলে মুসলমান নয়। ফিলিস্তিনি মুসলমানরা আমাদেরকে সাহায্যের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে, আর আমাদের উচিত তাদেরকে সাহায্য করা। ফিলিস্তিন ও আল-কুদ্স এর মুক্তির লক্ষে আল-কুদ্স দিবস পালন করা হয়ে থাকে। এ দিবস পালনের অর্থ হলো ইসরাইলের অস্তিত্বের বিরোধিতা করা। এটি একটি আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিশে^র বিপুল সংখ্যক মানুষ আজ ফিলিস্তিনের সমর্থনে ময়দানে অবতীর্ণ হয়।
জনাব ইউসেফ রামাদান বলেন, ফিলিস্তিনিরা নির্যাতিত অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে। পবিত্র ভূমিতে তারা রক্ত দিয়ে যাচ্ছে। জেরুজালেম ছাড়া কোন চুক্তি ফিলিস্তিনিরা মেনে নেবে না। তারা নিজেদের মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন। আর আমাদের উচিত মুসলমানদের মধ্যকার ঐক্য যেন বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা।
অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন বলেন, ফিলিস্তিনকে নিয়ে শত বছর আগে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল তা প্রতিনিয়ত চলছে, নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমাদের উচিত এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক হওয়া। মৌখিত প্রতিবাদের সাথে সাথে আমাদেরকে বাস্তব কর্মগত প্রতিবাদের কর্মতৎপরতা চালাতে হবে। ইসরাইলি পণ্য বর্জন করা এরূপ কর্মতৎপরতার একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে।
ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ফিলিস্তিনকে ঘিরে বর্তমানে যে নতুন নীল নকশা রচনা করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য বাহরাইনে যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে তা হবে প্রথম পদক্ষেপ। আমরা এই নীল নকশা ‘দ্য ডিল অব সেঞ্চুরি’-কে ধিক্কার জানাই। ইসরাইল ও মার্কিন ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন দেশের ভূমিকাও নিন্দনীয়। ইরান ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করায় তারা ইরানের বিরুদ্ধে অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
জনাব আবদুল্লাহ আল ক্বাফি বলেন, প্রথম বিশ^যুদ্ধের পর বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে নিয়ে যে সংকটের সূত্রপাত হয়েছিল বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে সেই সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের মাধ্যমে নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে। আমরা এ সংকটের মোকাবিলায় ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী জনগণের ইন্তিফাদা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করছি।
মাওলানা রুহুল আমীন বলেন, ইসরাইলিরা ফিলিস্তিন, জর্ডান, সিরিয়া, মিশর, ইরাক নিয়ে বৃহত্তর ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। এদের বিরুদ্ধে মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কতিপয় দেশের কারণে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। ইরানের ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেইনীর আল-কুদ্স দিবস পালনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে যাব।
স্বাগত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বলেন, যায়নাবদী ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তারা আল-কুদ্স দখল করে রেখেছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী রাষ্ট্র ইরানকে তারা কোণঠাসা করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছে। যদি তারা এতে সফল হয় তবে ফিলিস্তিন মুক্তির সম্ভাবনা অনেক দূরে সরে যাবে। কিন্তু তাদের এ অপচেষ্টা কখনও সফলতা লাভ করবে না।
সেমিনারের সভাপতি প্রফেসর ড. শাহ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী বলেন, ফিলিস্তিন ও আল-কুদ্স প্রসঙ্গে প্রত্যেক মুসলমানকে ঈমানী দায়িত্ব পালন করতে হবে। মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও কর্মসূচি হাতে না নিলে আল-কুদ্স মুক্ত হবে না। কেবল ঐক্যবদ্ধ উম্মাহই যায়নবাদী ইসরাইলের হাত থেকে মযলুম ফিলিস্তিনিদেরকে মুক্তি দিতে পারে।
প্রবন্ধকার জনাব জামাল উদ্দিন বারী বলেন, ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব সফল হওয়ার পর মহান নেতা ইমাম খোমেনী (র) পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে কুদ্স দিবস ঘোষণা করেন। সেই থেকে ইরানসহ বিশ্বের বহু দেশে কুদ্স দিবস পালিত হয়ে আসছে। ফিলিস্তিন ও পবিত্র বায়তুল মোকাদ্দাস দখলদার ইহুদিবাদীদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্যে মুসলমানদের জাগিয়ে তোলাই আল-কুদস দিবসের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি ইসলাম ও মানবতার দুশমন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রামকে চিরতরে নিঃশেষ করার লক্ষে এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্রমূলক চুক্তি (ডিল অফ দা সেঞ্চুরি বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি) স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু যায়নবাদী গুরুদের প্রেসক্রিপশনে রচিত কথিত ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি ব্যর্থ হতে বাধ্য। মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের অনেকেই ইতিমধ্যে এই গোপন চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফিলিস্তিন ও আল-আকসার বন্দিদশা পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ও সামরিক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে মধ্যপ্রাচ্য ও নিপীড়িত বিশ্বের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্য অর্জনের পথে অন্যতম অন্তরায়। মুসলমানদের ঐক্য এবং মানবতার প্রতি বিশ্বসম্প্রদায়ের কমিটমেন্ট সেই অন্তরায়ের অর্গল ভেঙ্গে দিতে পারে।
সেমিনারের পূর্বে দুপুর ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

খুলনায় আল-কুদস দিবস পালিত
আন্তর্জাতিক আল-কুদ্স দিবস উপলক্ষে খুলনা আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানী ও আহলে বাইত (আ.) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গত ৩১ মে বাদ জুমআ নগরীর আলতাপোল লেনস্থ আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানী ইমামবাড়ী হতে এক বিক্ষোভ র‌্যালী বের হয়ে নগরীর আলতাপোল লেন ও সাউথ সেন্ট্রাল রোড প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।
র‌্যালী শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী বলেন, সারা বিশ্ব জুড়ে মুসলমানদের ওপরে যে বর্বোরোচিত অত্যাচার-যুলুম নেমে এসেছে সে প্রেক্ষাপটে আজ মুসলমানদের মধ্যে সকল বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বিশ্ব আল-কুদ্স দিবস পালন করার উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনিদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করা এবং এটা বোঝানো যে, আমরাও তাদের সাথে আছি। আমেরিকা ইসরাইলি অপকর্ম আড়াল করার উদ্দেশ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করছে।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন হুজ্জাতুল ইসলাম ড. আলী মুর্তজা, হুজ্জাতুল ইসলাম আব্দুল লতিফ, হুজ্জাতুল ইসলাম মোঃ শহীদুল হক এবং আঞ্জুমান-এ-পাঞ্জাতানীর নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এটি ১টি ছবি দিয়ে বক্স নিউজ হবে

যশোরে আল-কুদ্স দিবস উদ্যাপন
গত ৩১ মে মাহে রমযানের শেষ শুক্রবার ইনকিলাবে মাহ্দী মিশনের উদ্যোগে আর. এন. রোড যশোর কার্যালয়ে আল-কুদ্স দিবস উদ্যাপিত হয়েছে।

ইনকিলাব-এ-মাহ্দী মিশনের পরিচালক জনাব সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মোঃ মিজানুর রহমান, ঐতিহাসিক দানবীর হাজী মুহাম্মাদ মহ্সীন মুড়লী ইমাম বাড়ি যশোরের পেশ ইমাম জনাব ইকবাল হুসাইন, জনাব আতাহার হুসাইন প্রমুখ।

ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে মহাকবি শেখ সাদীর স্মরণ অনুষ্ঠান
বিশ্বখ্যাত ইরানি কবি শেখ সাদীর স্মরণে গত ২৩ এপ্রিল ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানি ভিজিটিং প্রফেসর ড. কাযেম কাহদুয়ী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান।
ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কালচারাল কাউন্সেলর ড. মাহদী হোসেইনী ফায়েকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠোনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবুল কালাম সরকার।
অনুষ্ঠানে ড. কাযেম কাহদুয়ী বলেন, এমন এক মহান কবির স্মরণ অনুষ্ঠানে আজ আমরা উপস্থিত হয়েছি যার নাম জানে না উপমহাদেশে এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। সাদী শিরাজি ছিলেন মানবতার কবি। তাঁর সাহিত্যকর্মে নৈতিকতা, মানবতা ও বিনম্রতার বিষয়টি বিশেষভাবে প্রাধান্য পেয়েছে। তার মতে, ফুলের সং¯পর্শে মাটির ঢেলা যেমনিভাবে সুগন্ধি প্রাপ্ত হয়, অনুরূপ জ্ঞানী-গুণীর সং¯পর্শে থাকলে মানুষের চরিত্রেও এ প্রভাব পড়াটা স্বাভাবিক। সাদী বলেন, তারাই প্রকৃত বড় যাদের মধ্যে কোন দম্ভ বা অহঙ্কার নেই। মানবতা ও বিনম্রতার এক উদাহরণ দিয়ে ড. কাহদূয়ী বলেন, একজন গিটার বাদক কোন কারণে রেগে গিয়ে অপর একজনের মাথায় তার গিটার দিয়ে আঘাত করে গিটারটি ভেঙে ফেলেছে এবং লোকটির মাথা ফেটে গেছে। লোকটি এর প্রতিবাদ না করে যখন উল্টো বলছে আমার মাথা হয়তো ভালো হয়ে যাবে, কিন্তু এই দরিদ্র লোকটার গিটারটা ভেঙে গেল! সে এখন গিটার পাবে কোথায়? এমন মানুষগুলোই যে প্রকৃত বড় মানুষ, মানবতার অগ্রদূত কবি সাদী তার সাহিত্যকর্মে তা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন।
প্রফেসর ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, সাদী ছিলেন অমর কবি। তিনি বিশে^র বিভিন্ন জনপদ ভ্রমণ করে সমাজের মানুষকে কাছে থেকে দেখেছেন এবং সেই অভিজ্ঞতা তিনি লেখনির মাধ্যমে মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। তাঁর গ্রন্থ ‘গুলিস্তান’ সমাজ কল্যাণের একটি বড় গ্রন্থ। সাদী বলেন, অহঙ্কার পতনের মূল। যারা অহঙ্কার করে তারা কখনো বড় হতে পারে না। তিনি বলেন, সাদী তাঁর সাহিত্যকর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের মাঝে বেঁচে আছেন এবং থাকবেন।
ড. মাহদী হোসেইনী ফায়েক বলেন, কবি সাদী কেবল ফারসি ভাষাভাষিদের কবি ছিলেন না। তিনি ছিলেন বিশ্বকবি। তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি বিখ্যাত হয়েছেন। এমন কবি সাহিত্যিকদের স্মরণ অনুষ্ঠান আমাদেরকে সাহিত্য চর্চায় আরো অনুপ্রাণিত করবে।
অধ্যাপক আবব্দুস সবুর খানের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ছাত্র বাদল মিয়া, নাজমুল ইসলাম ও ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ফারসি ভাষা শিক্ষা কোর্সের ছাত্রী সিফাতে এলাহী।

বাংলাকে সমৃদ্ধ করেছে আরবি, ফারসি : প্রফেসর আব্দুল মান্নান
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেছেন, প্রতিটি ভাষাই বিদেশি শব্দ দ্বারা সমৃদ্ধ হয়। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। বাংলায় বিদেশি শব্দের ব্যবহার না থাকলে এই ভাষাটিও সংস্কৃত ভাষার মতোই একটি মৃত ভাষায় পরিণত হতো। বিদেশি ভাষা বিশেষকরে আরবি ও ফারসি এই ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। গত ২৬ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার হলে আঞ্জুমানে ফারসি’র কাউন্সিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মান্নান বলেন, আমার জন্মস্থান চট্টগ্রাম ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সর্বশেষ অঞ্চল হলেও এটি ছিল বিভিন্ন ভাষাভাষীদের প্রবেশ পথ। যে পথে ব্যবসায়ীদের সাথে বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রবেশ ঘটেছে। তিনি বলেন, বঙ্গ ছিল এ অঞ্চলের সবচেয়ে সমৃদ্ধ অঞ্চল। আর এখানে হাজার বছরের প্রাচীন বন্দর থাকায় এ পথ দিয়েই বেশিরভাগ বণিক এ অঞ্চলে প্রবেশ করতো। যে কারণে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এখনও প্রচুর বিদেশি শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ফারসি এমন একটি ভাষা যা বিশ্বকে অনেক আন্তর্জাতিক মানের কবি,সাহিত্যিক উপহার দিয়েছে। এই ভাষাটি উপমহাদেশে দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল। এ অঞ্চলে ফারসি ভাষার বিস্তারে আঞ্জুমানে ফারসির নব গঠিত কমিটি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেযা নাফার। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে ফারসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিস্তারের লক্ষ্যে গঠিত আঞ্জুমানে ফারসির এই কাউন্সিল অনুষ্ঠানে ফারসি ভাষাভাষীদের দেশ ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত হিসাবে উপস্থিত থেকে নিজেকে ইতিহাসের অংশ করতে পারায় গৌরবান্বিত অনুভব করছি। আশাকরছি নতুন কমিটি আঞ্জুমানে ফারসির পথ চলাকে আরো বেগবান করবে। যাঁরা অতীতে এই আঞ্জুমানের সাথে জড়িত থেকে মেধা ও সময় ব্যয় করেছেন তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি যাঁরা গত হয়েছেন তাঁদেরকেও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত রেযা নাফার। তিনি কবি শেখ সাদীর স্মরণ দিবসের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইরানে যত বড় বড় কবি সাহিত্যিক রয়েছেন সাদী তাঁদের অন্যতম। গত ২১ এপ্রিল ফারসি পহেলা উর্দিবেহেশস্ত ছিল সাদীর স্মরণ দিবস। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো একে সাদী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাঁর রচিত ফারসির ফুলবাগান খ্যাত ‘গুলিস্তান’ ও ‘বুস্তান’ এখনও সুবাস ছড়াচ্ছে। জাতিসংঘের প্রধান ফটকে লেখা তাঁর কবিতা বিশ্বজুড়ে মানবতার বাণী ছড়াচ্ছে। সাদীর গজলের একটা বিরাট অংশ ইসলামের নবী, ও নবী পরিবারকে কেন্দ্র করে। আরেফদের জন্য মর্তবা, মহব্বত সাদীর কবিতার বিরাট অংশ প্রেমের গাথুনি দিয়ে গ্রথিত। সাদী আমেরিকা ও ইউরোপে খুবই পরিচিত। পুশকিন, হুগো, ইমারসন সাদীর কবিতার প্রশংসা করেছেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইরানি ভিজিটিং প্রফেসর ড. কাযেম কাহদুয়ী ফারসি প্রেমিকদের সম্মান ও মর্যাদা কামনা করে বলেন, ইরান ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশে ফারসি ভাষার প্রচলন রয়েছে। তবে ইরানের ফারসি ও আফগানিস্তানে ব্যবহৃত ফারসি দারির মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কি না সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুটি ভাষারই মূল উৎস একই। এই ভাষাটি নতুন নতুন রাষ্ট্রে এসে নতুন নতুন রূপ পায়। তিনি বলেন, ইরানের ফারসি, ফারসি দারি ও ফারসি তাজিকের মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্য কেবল উচ্চারণগত।
অনুষ্ঠানে আঞ্জুমানে ফারসির সাবেক সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ইসলামের সূচনা হয়েছে আরবে কিন্তু এ অঞ্চলে ইসলাম এনেছেন পারস্যের সুফি-সাধকরা। প্রায় ৬৩৬ বছর এ অঞ্চলে ফারসি রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল।বাংলা ভাষার গবেষক ড. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেছেন, বাংলা ভাষায় প্রায় ৮ হাজার ফারসি শব্দ রয়েছে ।
এদেশের মাদ্রাসা শিক্ষায় দীর্ঘকাল ধরে ফারসি ভাষা পড়ানো হলেও পাকিস্তান আমলে এর গুরুত্ব কমে যায়। ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় ধীরে ধীরে ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা বাড়তে থাকে। বর্তমানে দেশের তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত ৩০ জন শিক্ষক ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রসারে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও ত্রিশালে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহায়তা কামনা করেন।
আঞ্জুমানে ফারসির সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবুল কালাম সরকার বলেন, দীর্ঘদিন পর আঞ্জুমানে ফারসির পুনরুজ্জীবনে সহযোগিতার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ফারসির বিস্তার ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি বিভাগ চালু করার ব্যাপারে যে দাবি উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহায়তায় তা আলোর মুখ দেখবে বলে আমি আশাবাদী।
অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কালচারাল কাউন্সেলর ড. মাহদী হোসেইনী ফায়েক বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর এ অঞ্চলে ফারসি চর্চা নতুন মাত্রা পায়। কালচারাল সেন্টারের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় আঞ্জুমানের নতুন কমিটির র্নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ফারসির উন্নয়নের জন্য এ অনুষ্ঠান মাইল ফলক হয়ে থাকবে। অতীতে যারা আঞ্জুমানে ফারসির নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশেষকরে অধ্যাপক সিরাজুল হক, ড. কুলসুম আবুল বাসার, ড. এ. কে. এম. মাহবুবুর রহমান, মরহুম ফরিদ উদ্দিন খান, ড. সাইফুল ইসলাম খান, আবুল কালাম সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. মাহদী ফায়েক বলেন ফারসি ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অতীতের মতো সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে ।
আলোচনা পর্ব শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটির সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন বিশিষ্ট লেখক, সাহিত্যিক ও ফারসি গবেষক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, সহ সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মহসিন উদ্দিন মিয়া ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, সাধারণ স¤পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের ফারসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীম বানু, যুগ্ম স¤পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহসানুল হাদী, কোষাধ্যক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের ফারসি বিভাগের শিক্ষক এ্যাডভোকেট কামাল হোসাইন, প্রচার স¤পাদক আহসানিয়া ইন্সটিটিউট অফ সুফিজম এর সহকারী অধ্যাপক শেইখ মোহাম্মদ ওসমান গণি, প্রকাশনা স¤পাদক ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, অনুবাদ ও গবেষণা স¤পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদি হাসান ও অফিস স¤পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম।সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন জামিয়াতুল মোস্তফা বিশ্ববিদ্যালযের শিক্ষক শাহনাজ আরেফিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আতাউল্ল্যাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নূরে আলম ও ঢাকাস্থ ইরানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল আব্দুল কুদ্দুস বাদশা। অনুষ্ঠানে নাত পরিবেশন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদি হাসান।অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সবুর খান।