ইমাম আল-হাসান ইবনে আলী আল-আসকারী (আ.)
পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৬

ইমাম আল-হাসান ইবনে আলী আল-আসকারী (আ.)-এর মূল নাম আল-হাসান, উপাধি আল-আসকারী ও ডাকনাম আবু মুহাম্মাদ। তিনি ২৩২ হিজরির ৮ রবিউস সানী শুক্রবার মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ২৬০ হিজরির ৮ রবিউল আউয়াল শুক্রবার মাত্র ২৮ বছর বয়সে সামাররায় (ইরাকের একটি অঞ্চল) শাহাদাত বরণ করেন। সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। আব্বাসী শাসক মুতামিদের এক ষড়যন্ত্রমূলক বিষ প্রয়োগে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মাসুম ইমাম আল-হাসান ইবনে আলী আল-আসকারী (আ.) তাঁর জীবনের বাইশ বছর অতিবাহিত করেন পিতা ইমাম আলী আল-হাদী আন-নাকী (আ.)-এর পৃষ্ঠপোষকতায়। পিতার শাহাদাতের পর ইমাম আল-হাসান ইবনে আলী আল-আসকারী দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম ছিল হাদিসা (বা সুসান)।
ইমাম হাসান আল-আসকারীকে অবর্ণনীয় বাধা-বিপত্তির মধ্যে দিন কাটাতে হয়। তিনি কোন সামাজিক যোগাযোগ রাখতে পারতেন না। শুধু তাই নয়, ইমাম আসকারীকে অধিকাংশ সময় কাটাতে হয়েছে কারাগারে।
মাসুম ইমামের প্রতি তদানীন্তন খলিফার চূড়ান্ত দমননীতির ফলে তাঁর অনুরক্তদের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং সংখ্যায় ও শক্তিতে তা উল্লেখযোগ্য আকার ধারণ করে। তাই খলীফা তাঁকে আগের চাইতে আরো বেশি পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। সম্ভাব্য সকল উপায়ে এবং গোপন পরিকল্পনার মাধ্যমে ইমামকে সরিয়ে দেয়ার, এমনকি হত্যা করার চেষ্টা শুরু করে।
একদিন ইমাম আসকারী (আ.) অসুস্থ হয়ে পড়লে খবরপ্রাপ্তির সাথে সাথে খলীফা আল-মুতামিদ ইমামের বাড়িতে একজন চিকিৎসক ও কিছু চর পাঠায় এবং এক পর্যায়ে ইমামকে শাহাদাতের পেয়ালা পান করতে হয়।
ইমাম আসকারী (আ.) বিপুলসংখ্যক লোককে ধর্মীয় জ্ঞান ও হাদীসের শিক্ষা দান করেন। সেসব জ্ঞানী আলেমে মাধ্যমেই তাঁর সম্পর্কে তথ্যাবলি বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।
ইমাম হাসান ইবনে আলী আল-আসকারী (আ.) বলেছেন : ‘মহানুভবতা ও দানশীলতার একটি সীমা আছে, তা অতিক্রান্ত হলে তা হবে অমিতব্যয়ের শামিল। সাবধানতার একটি সীমা আছে, তার চেয়ে বেশি হলে তা হবে ভীরুতা। মিথব্যয়িতার একটি সীমা আছে, তা ছড়িয়ে গেলে হবে কৃপণতা। সাহসের একটি সীমা আছে, তা অতিক্রম করলে হয় বোকামি ও ঔদ্ধত্য।’
এই নৈতিক শিক্ষা আমাদের সকলের জন্য যথেষ্ট হোক।
(নিউজলেটার, অক্টোবর ১৯৯১)