ইমামের সুযোগ্য উত্তরসূরি রাহবার আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী
পোস্ট হয়েছে: ডিসেম্বর ২৬, ২০১৩

হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর বেদনাদায়ক ইন্তেকালের পর আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী ১৯৮৯ সালের ৪ জুন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের নতুন নেতা নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি প্রেসিডেণ্ট হিসাবে দীর্ঘ ৮ বছর ইসলামী প্রজাতন্ত্রের খেদমত করেন। প্রেসিডেণ্ট হিসাবে তিনি পাকিস্তান, ভারত, লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, অ্যাংগোলা, তানজানিয়া, জিম্বাবে, যুগোশ্লাভিয়া, রোমানিয়া, উত্তর কোরিয়া, চীন প্রভৃতি দেশ সফর করেন। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ১৯৩৯ সালের ১৫ জুলাই ইরানের খোরাসান প্রদেশের রাজধানী পবিত্র মাশহাদের এক ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর তিনি কোম-এর ধর্মতাত্ত্বিক কেন্দ্রে গমন করেন এবং হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসেন। ১৯৬২ সালে তিনি ইমামের নেতৃত্বে পরিচালিত ইসলামী আন্দোলনে যোগদান করেন। পরবর্তী বছর তৎকালীন সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করে। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ১৯৭৮ সালে মাশহাদে ফিরে আসেন এবং ইসলামী বিপ্লব জয়লাভ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার নেতৃত্ব দেন। বিপ্লবের অব্যবহিত পর ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে তিনি বিপ্লবী পরিষদের একজন সদস্য মনোনীত হন। আগস্ট (৭৯) মাসে তিনি উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন। অতঃপর ডিসেম্বর মাসে তিনি ইসলামী বিপ্লবী রক্ষিবাহিনীর অধিনায়ক নিযুক্ত হন। ১৯৮০ সালের ১৯ জানুয়ারি ইমাম খোমেইনী (রহ.) তাঁকে তেহরান নগরীর জুমআর নামাযের ইমাম নিযুক্ত করেন। ১৫ মার্চ তিনি মজলিস (পার্লামেন্ট)-এর ডেপুটি নির্বাচিত হন। তার আগে ১১ মার্চ তিনি প্রতিরক্ষা পরিষদের উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। ইরানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইমাম খোমেইনী তাঁকে দক্ষিণাঞ্চলীয় রণাঙ্গনে প্রেরণ করেন।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ১৯৮০ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে শতকরা ৯৫ ভাগ ভোট পেয়ে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালের ২০ আগস্ট তিনি পুনরায় দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন।
জনাব আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ফারসি ছাড়াও আরবি, তুর্কি প্রভৃতি ভাষায় বিশেষ পারদর্শী। তিনি ইসলামী আদর্শ ও ইতিহাসের ওপর বেশ কয়েকটি মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন। সেগুলোর মধ্যে ‘আয়েন্দাহ দার কালাম রুয়ে ইসলাম’, ‘আদদায়ানামাহ আলাইহে তামাদ্দুনে গারব’, ‘সুলহে ইমাম হাসান’ প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
(নিউজলেটার, জুন ১৯৯১)