ইনডোর এশিয়া কাপ হকিতে বাংলাদেশ সপ্তম
পোস্ট হয়েছে: জুলাই ৩০, ২০১৯
বাংলাদেশের হকি খেলোয়াড়রা প্রথমবারের মতো থাইল্যান্ডে ইনডোর এশিয়া কাপ হকিতে অংশগ্রহণ করে ভালো পারফর্মেন্স করেছে। এত কম সময়ের অনুশীলনে কীভাবে ভালো ফল অর্জন করেছে সেটি নিয়েও ছিল নানারকম কৌতূহল। এমন আশানুরূপ ফলাফলে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন (বাহফে)। তাই ইনডোর হকি এখন সময়ের দাবি।
বাহফে সিনিয়র সহসভাপতি আবদুর রশিদ সিকদার বলেন, ইনডোর হকিতে প্রথম অংশ নিয়ে সপ্তম হয়েছি। চেষ্টা করেছি দক্ষ কোচের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে। আরো চেষ্টা থাকবে ইনডোর হকি নিয়মিত করতে। ফিল্ড হকির চেয়ে কোনো অংশেই ইনডোর হকির জনপ্রিয়তা কম নয়। সবচেয়ে যেটা বেশি প্রয়োজন, সেটা হলো ইনডোর হকি মাঠ। শিগগিরই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব ইনডোর মাঠের জন্য। সারা বাংলাদেশে কোথায়ও ইনডোর হকি মাঠ নেই। যদি মাঠ পাওয়া যায় তাহলে আমাদের খেলোয়াড়রা অবশ্যই ভালো করবেন। যেসব খেলোয়াড় রয়েছেন তাদেরকে নিয়েই এগোতে চাই। তবে ইনডোর হকির জন্য যদি আলাদা দল গঠন করা যায় তাহলে দ্রুত ফলাফল পাব। সকল পরিকল্পনাই সফল হবে যদি ইনডোর মাঠ পাই। কোচেস প্রোগ্রাম করলাম। মাঠ পেলে আরো কোর্স হবে। তখন ইনডোরকে নিয়ে একদম আলাদা করে চিন্তা করব।’
থাইল্যান্ডের চুনবুরিতে ইনডোর এশিয়া কাপে পুল ‘এ’-তে খেলা বাংলাদেশ দল তিনটি ম্যাচ হেরে জিতেছে দু’টি ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ৬-০, দ্বিতীয় ম্যাচে ইরানের কাছে ৮-০ গোলে হারের পর তৃতীয় ম্যাচে ফিলিপিনকে ৯-০ গোলে হারিয়ে জয়ের খাতা খোলে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে ৩-১ গোলে পরাজয়ের পর স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তাইপেকে ৯-০ গেলে হারিয়ে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়া চার দলের মধ্যে ভালো ফল করে সম্মিলিত তালিকায় সপ্তম হয় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের নবাগত বাকি তিন দলের মধ্যে চাইনিজ তাইপে, নেপাল ও ফিলিপাইন যথাক্রমে অষ্টম, নবম ও দশম হয়েছে।
থাইল্যান্ডে সদ্য সমাপ্ত ইনডোর এশিয়া কাপে বাংলাদেশের অর্জিত অভিজ্ঞতা, খেলাটির নিয়ম-কানুন ও কৌশল দেশীয় কোচদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ২৩-২৪ জুলাই ২৫ জন কোচকে নিয়ে রিজিওনাল ইনডোর হকি কোচেস কোর্সের আয়োজন করে বাহফে। কোর্সটি পরিচালনা করেন জাতীয় ইনডোর হকি দলের প্রধান কোচ হামিদরেজা বোখারাই, যিনি ইরানের জাতীয় হকি দলের খেলোয়াড় হিসেবে ২০০৬ সালে এবং কোচ হিসেবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং তেহরানের খাওয়ারেজমি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত জাকারিয়া মহিউদ্দিন ইন্টারপ্রেটর হিসেবে তাকে সহযোগিতা করেন। রিজিওনাল ইনডোর হকি কোচেস কোর্সের তত্ত্বাবধানে ছিলেন নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম কামাল। কোর্স শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করেন বাহফে সিনিয়র সহসভাপতি আবদুর রশিদ সিকদার।
রফিকুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ইরানের হামিদরেজা একজন বিশ্বমানের কোচ। ইরান বিশ্বকাপগামী দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। তাকে দিয়েই কোচেস কোর্স করালাম। যাতে আমাদের কোচরা ভবিষ্যতে ইনডোর হকি প্লেয়ার তৈরি করতে পারেন। তবে সবার আগে দরকার ইনডোর মাঠ।’
২৪ জুলাই কোর্স শেষে সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তোমাদের অনেক প্রতিভা আছে। আগে বলেছি, থাইল্যান্ডে যখন বলেছিলাম বাংলাদেশ দল এক মাসেরও কম সময় অনুশীলন করে খেলতে এসেছে তখন কেউ বিশ্বাস করে নি। তোমাদের বেশি বেশি প্রাকটিস এবং দ্বিপাক্ষিক ম্যাচ জরুরি। সর্বপ্রথম ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে হবে এবং সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে ইনডোর এবং আউটডোর টিম আলাদা করা।’