রবিবার, ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির ইন্তিকালে বিভিন্ন দেশে শোক

পোস্ট হয়েছে: মার্চ ১৬, ২০১৭ 

ইসলামি ইরানের প্রখ্যাত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও রাজনীতিবিদ আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানি গত ৮ জানুয়ারি ২০১৭ ইরানের রাজধানী তেহরানে ইন্তিকাল করেন। তাঁর ইন্তিকালে ইরানের বাইরে বিভিন্ন দেশে স্মরণানুষ্ঠান পালিত হয় এবং ইরানের বিভিন্ন কূটনৈতিক দফতরে শোকবই খোলা হয়। আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানি ছিলেন ইসলামি বিপ্লবের নেতা মরহুম ইমাম খোমেইনীর অন্যতম একান্ত সহচর এবং বর্তমান রাহবার আয়াতুল্লাহ উজমা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ীর সুদীর্ঘকালের সাথি ও সহযোদ্ধা। তিনি দুই মেয়াদে ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাতীয় স্বার্থ ও কল্যাণ নির্ধারণ পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর ইন্তিকালের পরপর বিভিন্ন দেশে ইরানের কূটনৈতিক দফতরে শোকবই খোলা হয়। তাতে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শোকবাণীতে স্বাক্ষর করে তাঁর মহান ব্যক্তিত্বের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

তুরস্ক
তুরস্কের প্রখ্যাত ইরানবিশেষজ্ঞ, ইতিহাসবেত্তা ও বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক আধ্যাপক ইলবার উরতায়ীলী ইরানের কালচারাল কাউন্সেলরের দফতরে উপস্থিত হয়ে আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির ইন্তিকাল উপলক্ষে খোলা শোকবইতে স্বাক্ষর করেন এবং এই বিশ^খ্যাত ব্যক্তিত্বের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তুরস্ক ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ইরান ঐতিহাসিকভাবেই এতদঞ্চলে উন্নততর অবস্থানে রয়েছে এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কারণে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে আসছে। একইভাবে ইস্তাম্বুল বিশ^বিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের সভাপতি আলী গুযাল ইউয ইস্তাম্বুলে ইরানি কনস্যুলেটে উপস্থিত হয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মুহাম্মদ আক এর পক্ষে শোকবইতে স্বাক্ষর করেন। তিনি আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানিকে ইরানের বিরাট মহীরুহ বলে আখ্যায়িত করেন, যিনি ইরান ও তুরস্কের মধ্যকার উন্নত সম্পর্ক স্থাপনে প্রচুর চেষ্টা চালান।
অপরদিকে ইস্তাম্বুলের শিয়া ওলামা সমিতির সভাপতি হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন হাসান কারাহ বুলুত ইস্তাম্বুলে ইরানি কনস্যুলেটে স্থাপিত শোকবইতে স্বাক্ষর করেন। তিনি বলেন, আয়াতুল্লাহ রাফসানজানি বিরাট ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইসলামি বিপ্লবের অন্যতম পুরোধা ছিলেন।
ইস্তাম্বুলের ওয়ালেদা খান মসজিদে এ উপলক্ষে এক শোকানুষ্ঠান পালিত হয় এবং তাতে ইরানি সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ও প্রবাসী ইরানিরা অংশগ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে ইরানি কনস্যুলেটের পতাকা তিন দিন অর্ধনমিত ছিল এবং স্থানীয় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা শোকবইতে স্বাক্ষর করেন।
শোক পালনের দ্বিতীয় দিনে তুরস্কের আলাভী সম্প্রদায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আহলে বাইত ওয়াক্ফ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফরমান আলতুন শোকবইতে স্বাক্ষর করেন এবং ইরানের বাইরে ও ভেতরে আয়াতুল্লাহ হাশেমীর ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য ও ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর উপস্থিতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, আহলে বাইতের চিন্তাধারা ও শিক্ষাসমূহ আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে এর মোকাবিলা করা সম্ভব।

বাংলাদেশ
আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির ইন্তিকালে বাংলাদেশে ইরান দূতাবাস ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৩ দিনব্যাপী ইরানের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় ও ইরান দূতাবাসে শোকবই খোলা হয়। বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতগণ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ ও আলেমগণ শোকবইতে স্বাক্ষর করেন। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষভাবে সংবাদ পরিবেশন এবং ইরানে ও বহির্বিশ্বে তাঁর বিশাল অবদানের কথা উল্লেখ করে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রধানগণ যথাক্রমে ড. আবদুস সবুর খান, ড. মোহাম্মদ আতাউল্লাহ ও ড. মো. নূরে আলম শোকবাণী প্রদান করেন।

জিম্বাবুয়ে
আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির ইন্তিকাল উপলক্ষে জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে শোক অনুষ্ঠান পালিত হয়। তাতে বিভিন্ন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনসহ মুসলিম কম্যুনিটির পক্ষ হতে শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। এসব সংস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, জিম্বাবুয়ে অ্যাপোস্টলিক খ্রিস্টান পরিষদ (এসিসিজেড), জিম্বাবুয়ে খ্রিস্টান পরিষদ (জেডসিসি) উঞ্জেলিক গির্জা, ফিলিস্তিন মুসলিম ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি, মুসলিম ইয়ুথ অর্গানাইজেশন আল-ইস্তাকামা, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, প্রবাসী ইরানী, লেবাননি ও পাকিস্তানি নাগরিক এবং হারারেস্থ ইরান দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ। হারারের আলে মুহাম্মাদ মসজিদের হলরুমে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইরানি কালচারাল কাউন্সেলর আয়াতুল্লাহ হাশেমীর বিশ^জনীন ব্যক্তিত্বের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, তাঁর নাম ইরানের ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে থাকবে। জিম্বাবুয়ের অ্যাপোস্টলিক গির্জা পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি ১৯৯৬ সালে আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির জিম্বাবুই সফরের স্মৃতিচারণ করেন। জিম্বাবুয়ের স্থানীয় নেতা কাম্বা মাকুনা তাঁর বক্তৃতায় আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তৃতা করেন।
মদীনা বিশ^বিদ্যালয় ফেরত ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি তাঁর বক্তৃতায় শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানি আজকের দুনিয়ার জন্য এক বিরাট উত্তরাধিকার, যার কথা কখনো ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আসমানি সংস্কৃতি ও বিশ^শান্তি পরিষদের প্রতিনিধি তাঁর বক্তৃতায় রাফসানজানিকে বিশ^জনীন ব্যক্তিত্ব, বিরাট সংস্কারক ও প্রভাবশালী নেতা বলে আখ্যায়িত করেন।
অনুষ্ঠানে জিম্বাবুয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হুজ্জাতুল ইসলাম জাহাঙ্গীরীও বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান শেষে ইরানি কালচারাল কাউন্সেলর জিম্বাবুই টিভির সাথে সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। উল্লেখ্য যে, জিম্বাবুইর প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাঁর পক্ষ হতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ফলকযলা আম্বাকু কতিপয় রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাসহ ইরান দূতাবাসে উপস্থিত হয়ে শোকবইতে স্বাক্ষর করেন। এ উপলক্ষে হারারের ইরানি দূতাবাসের পতাকা অর্ধনমিত ছিল।

সিরিয়া
লাযেকিয়ায় ইরানি কালচারাল কাউন্সিল ও রাসূলে আযম গ্রেট কমপ্লেক্সের উদ্যোগে কমপ্লেক্সে জুমআ নামায আদায়ের পর এক শোকানুষ্ঠান পালিত হয়। লাযেকিয়া কালচারাল কাউন্সিলের পরিচালক তাঁর বক্তৃতায় আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানি যেসব রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেন তার বিবরণ দেন। রাসূলে আযম কমপ্লেক্সের সহকারী কালচারাল কর্মকর্তাও এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এ উপলক্ষে লাযেকিয়া কালচারাল কাউন্সিলে শোকবইতে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষকসহ বহু ব্যক্তিত্ব স্বাক্ষর করেন এবং শোক ও সমবেদনা জানান।
সিরিয়ায় ইরানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ইমাম খোমেইনী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শোকানুষ্ঠানে সিরিয়ায় প্রসিদ্ধ আলেম শেখ নাবীল হালবায়ী, তেহরানে নিযুক্ত ইরানে সাবেক রাষ্ট্রদূত তুর্কী সাকার প্রমুখ বক্তৃতা করেন। সিরিয়ায় বসবাসরত ফিলিস্তিনি আলেম শেখ মুহাম্মাদ আল বাহিচী, শেখ মুহাম্মাদ আল উমরী, লাযেকিয়ার সাইয়্যেদ আইমান যায়তুন, আরব রাইটার্স ফোরামের প্রধান নেদাল আস সালেহ প্রমুখও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

চীন
আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির ইন্তিকালে পিকিং এ ইরানি দূতাবাসের পক্ষ হতে এক শোকানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাতে ইরানি রাষ্ট্রদূত আলী আসগর হাজী উপস্থিত ছিলেন। আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির ইন্তিকাল উপলক্ষে প্রদত্ত ইরানের মহামান্য রাহবরের শোকবাণী পাঠ করেন ইরানি কালচারাল কাউন্সেলর মুহাম্মাদ রাসূল আলমাসী। ইরানি রাষ্ট্রদূত ইসলামি বিপ্লবের আগে ও পরে আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির গৌরবময় ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেন।
চীনের সাংহাইতে শোকবই খোলা হয় এবং শোকসভায় ইসলামি বিপ্লবের প্রতিরক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির বলিষ্ঠ ভূমিকা ও অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলা হয় যে, তিনি রাষ্ট্র ও জাতির জন্য আশা ও আস্থার প্রতীক ছিলেন।

ফ্রান্স
আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির ইন্তিকাল উপলক্ষে প্যারিসে ইরানি দূতাবাস ও কালচারাল কাউন্সেলরের পক্ষ হতে বায়তুয যাহরায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ইরানি রাষ্ট্রদূত অহানী ও ইউনেস্কোতে ইরানের প্রতিনিধি জালালি এবং ফ্রান্স ইসলামিক সেন্টারের প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম মাক্কী বক্তৃতা করেন। এ উপলক্ষে প্যারিসে ইরান দূতাবাসে শোকবই খোলা রাখা হয়।

আলবেনিয়া
আলবেনিয়ার রাজধানী তিরানায় ইরানি দূতাবাসে শোকবই তিনদিনব্যাপী খোলা রাখা হয়। ৫০ জন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব শোকবইতে স্বাক্ষর করেন এবং ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। এ উপলক্ষে জনাব রাফসানজানির জানাযা অনুষ্ঠান সম্পর্কিত সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার করা হয়।

ভারত (নয়াদিল্লি)
আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির ইন্তিকালে আয়োজিত শোক অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লিতে ইরান দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রবাসী ইরানি ছাত্র ও নাগরিকবৃন্দ, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও তাঁদের পরিবার-পরিজন যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে ভারতে নিযুক্ত মহামান্য রাহবারের প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন মাহদাভীপুর তাঁর বক্তৃতায় আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানিকে ইরানের রাষ্ট্রব্যবস্থার অন্যতম স্তম্ভ এবং বিচক্ষণ ও দূরদর্শী ব্যক্তিত্ব বলে আখ্যায়িত করেন, যিনি বিপ্লবের আগে ও পরে বিভিন্ন পর্যায়ে স্মরণীয় অবদান রেখেছেন। অনুষ্ঠানে ইরানি রাষ্ট্রদূত গোলাম রেযা আনসারীও বক্তব্য রাখেন।

ওমান
ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ইরান দূতাবাসে শোকবই খোলা হয়। ইরানের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং একটি শোকানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তাতে শিয়া, সুন্নি ও আবাযী সম্প্রদায় নির্বিশেষে বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব উপস্থিত হয়ে এই নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া টেলিফোনযোগে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায়ও বিপুল সংখ্যক ওমানবাসী শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

ফিলিপাইন (ম্যানিলা)
ইরান দূতাবাস, ইরানি কালচারাল কাউন্সিল, জামেয়া আল-মুস্তফা ও ম্যানিলা ইসলামি ছাত্র সংস্থার উদ্যোগে শোকানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইরানি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মাদ তানহায়ী ও কালচারাল কাউন্সেলর জাফরী ও জামেয়া আল-মুস্তফার প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন আকবরী বক্তব্য রাখেন।
কাযাকিস্তান (আস্তানা)
কাযাকিস্তানের রাজধানী আস্তানায় আয়োজিত শোকানুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইরানি রাষ্ট্রদূত মুজতবা দামিরচি লু, কালচারাল কাউন্সেলর শেখ যায়ন উদ্দীন, ইরান কূটনৈতিক মিশনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দফতরের প্রধানগণ, এশিয়ান নিরাপত্তা ও সহযোগিতা পরিষদ সিকা’য় ইরানি প্রতিনিধি ও প্রবাসী ইরানিরা উপস্থিত ছিলেন।

ভেনিজুয়েলা
ভেনিজুয়েলায় ইরানি দফতরসমূহের উদ্যোগে আয়োজিত শোক অনুষ্ঠানে ভেনিজুয়েলায় জামেয়া আল-মুস্তফা আল আলামিয়ার প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম হুসাইনী নেযাদ বক্তব্য রাখেন। এ উপলক্ষে ইরান দূতাবাসে তিন দিনব্যাপী শোকবই খোলা রাখা হয়।

সুইডেন
স্টকহোমে সুইডেনের ইরান দূতাবাসে তিন দিনব্যাপী শোকবইতে সুইডেনের বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব ও রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দূতাবাস ও কূটনৈতিক দফতরের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়া সুইডেনের ইমাম আলী সেন্টারে ঐ দেশে অবস্থানরত ইরানি কর্মকর্তা, আফ্রিকান ও ইসলামি দেশসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ শোকসভায় যোগদান করেন।

থাইল্যান্ড
ব্যাংককে ইরানি দূতাবাসে তিন দিনব্যাপী শোকবই খোলা হয়। ইরানি পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং ইরানি দফতরসমূহের সদস্যদের অংশগ্রহণে শোকানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির রূহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

কিরগিজিস্তান
ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্টের ইন্তিকাল উপলক্ষে কিরগিজিস্তানের প্রেসিডেন্ট এক বাণীতে ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এ উপলক্ষে বিশকেকে স্থাপিত শোকবইতে কিরগিযিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক দফতরের প্রধান, সাবেক স্পিকার, উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিশকেকে নিযুক্ত পাকিস্তান, আফগানিস্তান, আজারবাইযান, ইউক্রেন, কাতার এর রাষ্ট্রদূতগণ এবং আরো কতিপয় কূটনীতিক স্বাক্ষর করেন। কিরগিজিস্তানের জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রধানও এ উপলক্ষে শোকবার্র্তা প্রেরণ করেন। এ ছাড়া বিশকেক ইমাম আলী মসজিদে একটি দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

লেবানন
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে আয়োজিত শোকানুষ্ঠানটি সরাসরি আল মানার চ্যানেল থেকে সম্প্রচার করা হয়। শোক অনুষ্ঠানে হিজবুল্লাহর যুগ্ম সেক্রেটারি জেনারেল, লেবাননে আয়াতুল্লাহ সিসতানীর প্রতিনিধি, সাবেক স্পিকার হুসাইন আল হুসাইনী এবং ব্রিটেন, জাপান, সিরিয়া ও ভ্যাটিকানসহ অন্তত বিশটি দেশের রাষ্ট্রদূতগণ উপস্থিত ছিলেন।

বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট সে দেশের তরফে ইরান দূতাবাসে উপস্থিত হয়ে শোকবইতে স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়া সে দেশের রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাবৃন্দ, বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক, সাংবাদিক নেতা, লেখক, অনুবাদক, ফারসি ভাষার ছাত্রবৃন্দ ব্যাপকভাবে স্বাক্ষর করেন এবং তাঁদের সমবেদনা জানান। বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র দফতরের পরিচালকও শোকবাণী প্রদান করেন এবং দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে জনাব রাফসানজানির বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

পাকিস্তান
এ উপলক্ষে শিয়া ও সুন্নি আলেম ও ব্যক্তিত্বদের অংশগ্রহণে রাওয়ালপিন্ডিতে শোকানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তাতে আহলে সুন্নাত ওলামা ঐক্যজোটের প্রধান আল্লামা সিরাজ উদ্দীন সিদ্দীকী, হুজ্জাতুল ইসলাম এজায মুসাভী ও আল্লামা হায়দার আলাভী বক্তব্য রাখেন। ইসলামাবাদে ইরানি কালচারাল কাউন্সেলর শাহাবউদ্দীন দারায়ী শোকানুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য রাওয়ালপিন্ডির জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জাফরী আন্দোলনের কেন্দ্রিয় সেক্রেটারি জেনারেল আল্লামা আরেফ ওয়াহেদী ইরান ও ইসলামি জাহানের জন্য আয়াতুল্লাহ হাশেমী রাফসানজানির নিরলস খেদমতের কথা স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা জানান।
পাকিস্তানের লাহোরেও এ উপলক্ষে ইরানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাকিস্তানি ওলামা দল নিয়াযী শাখার সেক্রেটারি জেনারেল ও জামেয়া আল মুন্তাযির বিশ^বিদ্যালয়ের প্রধান হুসাইন নাকাবী আয়াতুল্লাহ হাশেমীর ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিকের ওপর আলোচনা করেন।

তাজিকিস্তান
তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জনাব আলী এক শোকবাণীতে গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাজিকিস্তানের রাজধানীতে খোলা শোকবইতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে স্বাক্ষর করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব এতে স্বাক্ষর করেন। এ উপলক্ষে প্রবাসী ইরানিদের উদ্যোগে একটি শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।

তুর্কমেনিস্তান
তুর্কমেনিস্তানের ইশকাবাদে এ উপলক্ষে শোকসভার আয়োজন করা হয়। এতে আয়াতুল্লাহ রাফসানজানি ইরানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদে অধিষ্ঠিত থাকা এবং দুদেশের সম্পর্কোন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয়।

শ্রীলংকা
শ্রীলংকায় ইরানি দূতাবাসে শোকবই খোলা হয় এবং ইরানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে দোয়া ও কুরআন তেলাওয়াতের মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। শ্রীলংকা, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকারি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শোকবইতে স্বাক্ষর করেন। দোয়া মাহফিলে ইরানের রাষ্ট্রদূত এবং হাশেমী ফাউন্ডেশনের প্রধান বক্তব্য রাখেন।

উগান্ডা
উগান্ডায় খোজা শিয়া মসজিদে অনুষ্ঠিত শোকসভায় ইরানি রাষ্ট্রদূত মুরতাজাবী, কালচারাল কাউন্সেলর আলী বখতেয়ারী, আল মুস্তাফা কলেজের প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম বুকায়ী, স্থানীয় জনগণ ও প্রবাসী ইরানিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরমেনিয়া
আরমেনিয়ার রাজধানী ইরাভানায় ইরানি দূতাবাসে শোকবই খোলা হয় এবং কালচারাল কাউন্সেলরের দফতরের পক্ষ হতে স্থানীয় জামে কাবুদ মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

কাজাকিস্তান (আল মাতা)
কাজাকিস্তানের আল মাতায় অনুষ্ঠিত শোকসভায় ইরানি কালচারাল কাউন্সেলর জালালী কিয়াসরী ও ইরানবিষয়ক গবেষক সফর আব্দুল্লাহ আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

ঘানা
ঘানার আক্রায় ইরানি কালচারাল কাউন্সেলরের উদ্যোগে শোকসভা আয়োজন করা হয়। এতে কুরআন তেলাওয়াত শেষে বক্তাগণ আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

গ্রীস
গ্রীসের এথেন্সে অনুষ্ঠিত শোকসভায় ইরানি রাষ্ট্রদূত মজীদ মাতলবী শাবেস্তরীসহ ইরানি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দেশের মুসলিম প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। এতে ইসলামি বিপ্লবের প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন অঙ্গনে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।

মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ায় ইরান দূতাবাসের শোকবইতে স্বাক্ষর করেন সিঙ্গাপুর, ইউক্রেইন ও ঘানাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ। তাঁরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, বিশেষ করে ইসলামি জাহানে প্রভাবশালী ভূমিকার জন্য আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
কুয়ালালামপুরে ইরানি দূতাবাসে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে রাফসানজানির ভূমিকার প্রশংসা করে স্থানীয় পত্রিকায় সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
শোকসভায় ইরানি রাষ্ট্র্রদূত মারযিয়া আফখাম, কালচারাল কাউন্সেলর আলী মুহাম্মদ সাবেকী ও বিভিন্ন ব্যক্তি বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, বিপ্লবের পর আয়াতুল্লাহ রাফসানজানির মজলিশে স্পিকার হিসেবে ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকাকালে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে চড়াই-উৎরাই ছিল। তবে তিনি সবসময় দেশ ও জাতির খেদমতে ও বিপ্লবের প্রতিরক্ষায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রথম সারীতে লড়াই করে গেছেন।

অস্ট্রিয়া
ভিয়েনায় ইরানি দূতাবাস, জাতিসংঘে ইরানি প্রতিনিধি দফতর, ইমাম আলী (আ.) সেন্টার ও কালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ভিয়েনা প্রবাসী বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।