শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

English

আয়াতুল্লাহ মার’আশী নাজাফি গ্রন্থাগার: মুসলিম বিশ্বের গর্ব

পোস্ট হয়েছে: জানুয়ারি ৪, ২০১৭ 

news-image

সমগ্র মুসলিম বিশ্বের সমৃদ্ধতম গ্রন্থাগারগুলোর মধ্যে একটি ইরানের ধর্মীয় নগরী কোমে অবস্থিত। এর নাম ‘আয়াতুল্লাহ মার’আশী নাজাফী (রহ) গ্রন্থাগার’। ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম লাইব্রেরি এটি। আর হস্তলিখিত গ্রন্থাগারের দিক থেকে মুসলিম বিশ্বে এটির অবস্থান তৃতীয়।

4bkc238c51409fk5bp_800c450

দুর্লভ এই গ্রন্থাগারে রয়েছে ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) ও ইমাম রেযা (আ.)-এর হাতে লেখা কুরআন, পবিত্র কুরআনের বহু প্রাচীন তাফসিরসহ লক্ষাধিক পাণ্ডুলিপি, মুদ্রিত কুরআন এবং কুরআন সম্পর্কিত নানা গ্রন্থ। এছাড়া রয়েছে হাজার বছরে পুরোনো বাইবেল, আটশ বছরের পুরোনো যাবুর শরীফসহ বিভিন্ন ধর্মের প্রাচীন গ্রন্থ।

4bkc30b99a343ak5cm_800c450

লাইব্রেরিতে ষাট হাজারের মতো হাতে লেখা গ্রন্থের বাইরে রয়েছে ইসলামী জ্ঞানবিজ্ঞানসহ নানা বিষয়ের ওপর অন্তত ত্রিশটি ভাষার চার লক্ষাধিক মুদ্রিত বই।

বিশাল এই গ্রন্থাগারটির প্রতিষ্ঠাতা হযরত আয়াতুল্লাহ উজমা মার’আশি নাজাফী (রহ) ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে নাজাফের এক ধর্মীয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইরানি বংশোদ্ভুত এ আলেম ছিলেন মুসলিম ঐতিহ্যের একজন সংরক্ষক। তিনি একাধারে ছিলেন একজন ফকিহ, গবেষক, ইতিহাসবিদ ও বংশতত্ত্ববিদ। তিনি ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষকদের শতাধিক মূল্যবান গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।

4bkc4a1bae87eek5c1_800c450

এছাড়া ১২০টিরও বেশী সাহিত্য সংকলন ও গবেষণামূলক প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশ তাঁর গুরুত্বপূর্ণ সৃজনকর্মের অন্যতম উদাহরণ। তাঁর রচিত অধিকাংশ গ্রন্থই ‘কুরআনিক সায়েন্স’ বিষয়ক। এই মহান ইসলামী ব্যক্তিত্ব ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।

আয়াতুল্লাহ নাজাফির শখ বা অভ্যাস ছিল বই পড়া এবং প্রাচীন ও দুর্লভ বইগুলো সংগ্রহ করা। তাঁর ইচ্ছে ছিল একটা বড়সড় ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা। জ্ঞানের এই উৎসগুলোকে তিনি যত্ন করে সংরক্ষণ 4bkc49a21080b2k5by_800c450করতেন যাতে এসব গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন লুঠতরাজের হাত থেকে রক্ষা পায়, সেইসাথে বিশ্বের বিভিন্ন জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র বিশেষ করে বড় বড় গ্রন্থাগারের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে সেগুলোর বিস্তারও ঘটাতে চেয়েছিলেন তিনি। এই লক্ষ্যই তাঁকে ধীরে ধীরে একটা বড় গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে উৎসাহিত করে।

ইরানের ‘আয়াতুল্লাহ মার’আশী নাজাফি এই গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে। পরে ১৯৭৪ সালে এর উন্নয়ন ও সংস্কার করা হয়। মার’আশী নাজাফীর ছেলে ড. মাহমুদ নাফাজী বর্তমানে এ লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট।

4bkcd8bbe8f0dbk5d4_800c450

গ্রন্থাগারটিতে এখন পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিনসহ নতুন নতুন বইগুলো নিয়মিত রাখা হয়। এই গ্রন্থাগার এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি হাতে লেখা পাণ্ডুলিপীর একটা সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। তাই দেশি-বিদেশি গবেষকগণ অন্যান্য গ্রন্থাগারের তুলনায় এই গ্রন্থাগারটিকেই তাঁদের গবেষণা কাজের জন্যে বেশী উপযোগী মনে করেন। এসব পড়ার জন্যে এখানে যেমন চমৎকার পাঠকক্ষ রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনার সমৃদ্ধ আর্কাইভ। এ লাইব্রেরিতে অনলাইন বইয়ের সংখ্যা ২৫ হাজার। সূত্র: পার্সটুডে