আয়াতুল্লাহ্ হাশেমি রাফসানজানির রচনাবলির ওপর এক নজর
পোস্ট হয়েছে: মার্চ ১৬, ২০১৭
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব মরহুম আয়াতুল্লাহ্ আলী আকবার হাশেমি রাফসানজানি (১৯৪৪-২০১৭ খ্রি.) বিপ্লবের বিজয়ের পরে দুই মেয়াদে আট বছর মজলিসে শূরায়ে ইসলামির স্পিকার ও এর পর দুই মেয়াদে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এ কারণে, তিনি যে বিপ্লবোত্তর ইরানের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বগণের অন্যতম এটা বিশ্বব্যাপী একটি সর্বজনবিদিত বিষয়। কিন্তু তিনি যে একজন উঁচু স্তরের মুজতাহিদ আলেম, ইসলামি চিন্তাবিদ, গবেষক ও বহু গ্রন্থ প্রণেতা তা খুব কম লোকেরই জানা আছে।
মরহুম আয়াতুল্লাহ্ হাশেমি রাফসানজানি একদিকে যেমন অনক মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন, অন্যদিকে তিনি ছিলেন একজন সুবক্তাÑ যিনি যে কোনো বিষয়ে আলোচনার সময় অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় ও সুবিন্যস্ত বক্তব্য রাখতেন। ফলে তাঁর বক্তৃতা ও ভাষণসমূহ পরে তেমন একটা সংশোধন বা সম্পাদনা ছাড়াই গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে; এগুলোর মধ্যে তাঁর লিখিত বক্তৃতা-ভাষণ যেমন ছিল যা গ্রন্থকার হিসেবে সরাসরি তাঁর নামেই প্রকাশিত হয়েছে, তেমনি তাঁর অলিখিত বক্তব্য ও ভাষণসমূহ অন্যদের দ্বারা সংকলিত হয়ে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। সব মিলিয়ে তাঁর রচনাবলির আয়তন বিরাট।
মরহুম হাশেমি রাফসানজানির গ্রন্থাবলির বিষয়বস্তুও ব্যাপক; এতে শামিল আছে রাজনীতি, অর্থনীতি, বিশ্ব পরিস্থিতি, সমকালীন সমাজচিন্তা, ইতিহাস এবং ইসলামের বিভিন্ন দিক-বিভাগ, বিশেষ করে কোরআন মজীদের তাফসীর। তবে তাঁর লেখনীর একটি ব্যতিক্রমী ফসল হচ্ছে এই যে, তিনি ‘র্কনমে ও খতেরত্’ (কর্মতৎপরতা ও স্মৃতিচারণ) শিরোনামে স্বীয় সুদীর্ঘ সংগ্রামী ও রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতিকথা পাঠক-পাঠিকাদেরকে উপহার দিয়েছেনÑ যা অনেকগুলো খ-ে প্রকাশিত হয়েছে; এগুলোর মধ্য থেকে কোনো কোনো খ- তিনি নিজেই সংকলন করেছেন, কোনো কোনো খ- অন্যদের দ্বারা সংকলিত হয়েছে।
আমরা এখানে অতি সংক্ষেপে আয়াতুল্লাহ্ হাশেমি রাফসানজানির রচনাবলির সাথে পরিচিত হবার চেষ্টা করব।
আলী আকবার হাশেমি রাফসানজানির প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ হচ্ছে ফিলিস্তিনবিষয়ক একটি অনুবাদ গ্রন্থ। তিনি ফিলিস্তিনি লেখক ও সাংবাদিক আকরাম যা‘ঈর্তা (১৯০৯-১৯৯০ খ্রি.)-এর লেখা মাস্আলাতু ফিলিস্তিন্ (ফিলিস্তিন সমস্যা) গ্রন্থটি র্সাগোযাস্তে ফেলেস্তিন (ফিলিস্তিনের অতীত) শিরোনামে ফারসি ভাষায় অনুবাদ করেন। রাফসানজানির এ অনুবাদ গ্রন্থটি ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয় যখন তাঁর বয়স মাত্র বিশ বছর। আর এটি ছিল এমন একটি সময় যখন ইরানের মার্কিন তাঁবেদার রাজতান্ত্রিক পাহ্লাভী সরকার ও ফিলিস্তিনের বুকে জবরদখলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত যায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলের মধ্যে খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং তা উত্তরোত্তর গভীরতর ও ব্যাপকতর হচ্ছিল। এ কারণে তৎকালে ইরানে যায়নবাদী ইসরাইলের প্রতিষ্ঠার বৈধতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা ও যায়নবাদীদের সমালোচনা করা ছিল পুরোপুরি একটি নিষিদ্ধ বিষয়। তাই এ গ্রন্থটি প্রকাশিত হবার পর একদিকে এটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে, অন্যদিকে তা শাহের সরকারকে ক্ষিপ্ত করে তোলে; শাহী সরকারের গুপ্ত পুলিশ সংস্থা ‘সাভাক্’ তাঁকে গ্রেফতার করে ও তাঁর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়।
পরবর্তীকালে তিনি এস্রাঈল্ ভা ফেলেস্তিন (ইসরাইল ও ফিলিস্তিন) এবং এস্রাঈল্ ভা ক্বোদ্সে আযীয্ (ইসরাইল ও প্রিয় ক্বুদ্স্) শিরোনামে আরো দু’টি গ্রন্থ রচনা করেন।
আলী আকবার হাশেমি রাফসানজানির দ্বিতীয় প্রকাশিত গ্রন্থটি ছিল আর্মী কার্বী ইয়া ক্বাহ্রামানে মোবারেযে ব এস্তে‘র্মা (আমীর কাবীর বা উপনিবেশবাদবিরোধী সংগ্রামের নায়ক)। প্রথমবার সাভাকের কারাগার থেকে মুক্তিলাভের কিছুদিনের মধ্যেই তিনি এ গ্রন্থটি রচনা করেন। এ গ্রন্থে তিনি ‘আর্মী কাবীর’ (মহান আমীর) নামে সমধিক পরিচিত মীর্যা তাক্বী খান ফারাহানীর (১৮০৭-১৮৫২) ঘটনাবহুল সংগ্রামী জীবনের ওপর আলোকপাত করেন।
উল্লেখ্য, আমীর কাবীর ইরানের তৎকালীন কাজার বংশীয় বাদশাহ্ নাসিরুদ্দীন শাহের (১৮৩১-১৮৯৬) প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে (১৮৪৮-১৮৫১) ইরানকে রুশ ও ব্রিটিশদের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করে আনার জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করেন এবং এ কারণে ব্রিটিশ সরকার ও তাদের পদলেহীদের ষড়যন্ত্রের ফলে বিভ্রান্ত হয়ে নাসিরুদ্দীন শাহ্ তাঁকে পদচ্যুত করেন এবং দুই মাসের মাথায় শাহের নির্দেশে তাঁকে হত্যা করা হয়।
বস্তুত আমীর কাবীর ছিলেন ইরানি জনগণের জন্য স্বাধীনতা ও স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে অভিযাত্রার পথে প্রেরণাস্বরূপ। এ কারণেই রাফসানজানি তাঁর নিজের যুগের ইরানি জনগণকে আমীর কাবীরের সংগ্রামী জীবনের সাথে ব্যাপকতর ও গভীরতরভাবে পরিচিত করানোর লক্ষ্যে এ গ্রন্থ রচনা করেন।
হাশেমি রাফসানজানি তাঁর রচিত যেসব গ্রন্থে সমকালীন সমাজ-পরিস্থিতি ও সমাজচিন্তার ওপরে আলোকপাত করেছেন সেসবের অন্যতম হচ্ছে অযাদ্ আন্দিশিয়ে এস্লামী ভা রাওশান্ফেক্রিয়ে দ্বীনী (ইসলামি মুক্তচিন্তা ও দ্বীনী বুদ্ধিবৃত্তিকতা)। এ গ্রন্থের শিরোনাম থেকেই গ্রন্থটির বিষয়বস্তু ও তার গুরুত্ব সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায়।
স্মর্তব্য যে, তৎকালে ‘প্রতিক্রিয়াশীলতা’ ও ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ ছিল বিশ্বের সর্বত্র, বিশেষ করে মুসলিম জাহানে দ্বীনী চিন্তাধারা ও দ্বীনদারদের বিরুদ্ধে ধর্মসম্পর্কহীনদের (সেক্যুলারদের) দ্বারা বহুল ব্যবহৃত দু’টি পরিভাষা। তাই তিনি এ সম্পর্কে লিখেন তাঁর গ্রন্থ র্এতেজা‘ চিস্ত্ ভা র্মোতাজে‘ কিস্ত্? (প্রতিক্রিয়াশীলতা কী এবং প্রতিক্রিয়াশীল কে?)।
তিনি ইসলামি বিপ্লব ও ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা করেন যেগুলোর মধ্যে সরাসরি গ্রন্থ হিসেবে লিখিত গ্রন্থ যেমন রয়েছে, তেমনি বিভিন্ন সভা-সেমিনারে প্রদত্ত তাঁর বক্তৃতা-ভাষণ ও তাঁর দেয়া জুমআ নামাযের খোত্বাকে গ্রন্থের রূপ দেয়া হয়েছে এমন গ্রন্থও রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে : এন্ক্বেলাব্ ইয়া বে‘ছাতে জাদীদ্ (বিপ্লব বা দ্বিতীয় উত্থান্), এন্কেলাব্ ভা দেফাএ মোক্বাদ্দাস্ (বিপ্লব ও পবিত্র প্রতিরক্ষা), ব করাভনে শাহাদাত্ (শাহাদাতের কাফেলার সাথে), তের্রো ভা গোসাস্তান্ আয্ র্মাদোম্ (সন্ত্রাসী হত্যাকা- ও জনবিচ্ছিন্নতা), হেরাসে দুনিয়ায়ে এস্তেক্বারী (বলদর্পী বিশ্বের আতঙ্ক), নাক্ব্শে রূহানীয়াত্ র্দা এন্ক্বেলাব্ (বিপ্লবে আলেমদের ভূমিকা), র্দা রবেতে ব এন্ক্বেলাবে এস্লামী (ইসলামি বিপ্লব প্রসঙ্গে) এবং আরবি ভাষায় ছাওরাতুল্ ইসলামীয়্যাহ্ : ‘উক্বুবাতু কুব্রা ওয়া ইন্তিছ¡ারু ‘আযীম্ (ইসলামি বিপ্লব : বিরাট পরিণাম ও মহান ঐশী সহায়তা), আস্-সিয়াসাতুল্ ইক্ব্তিছ¡াদীয়াতু ফীল্ হুকূমাতিল্ ইস্লামীয়্যাহ্ (ইসলামি রাষ্ট্রে অর্থনৈতিক নীতি), আল্-মাকাসিবুল্ ইক্ব্তিছ¡াদিয়াতু লিছ্-ছাওরাতিল্ ইসলামীয়্যাহ্ (ইসলামি বিপ্লবের অর্থনৈতিক অর্জনসমূহ) ও আরো কতক গ্রন্থ।
তিনি ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের দুই বছর পরে ভিজ্বেগীহয়ে দো জেব্হেহ্ হাক্ব্ ভা বতেল্ (হক্ব ও বাতিলÑ দুই জোটের বৈশিষ্ট্যসমূহ) শিরোনামে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণাত্মক বক্তৃতা করেনÑ যা পরে একই শিরোনামে তৎকালীন ‘হেয্বে জোম্হুরিয়ে এস্লামী’ (ইসলামিক রিপাবলিক পার্টি)-র দফতর থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
মরহুম রাফসানজানি তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপলক্ষে যেসব বক্তৃতা ও ভাষণ প্রদান করেন তাতে স্বাভাবিকভাবেই ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতা হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ.)-এর দ্বীনী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ওপরে আলোকপাত করেনÑ যাতে হযরত ইমাম সম্পর্কিত জ্ঞান-গবেষণার জন্য বহু মূল্যবান উপাদান নিহিত রয়েছে। আবর্দু রায্যাক্ব্ আহ্ভাযী সংকলিত এমম্ খোমেইনী বে রেভইয়াতে আয়াতোল্লাহ্ হশেমী রাফ্সান্জনী (আয়াতুল্লাহ্ হাশেমি রাফ্সান্জানির ভাষায় ইমাম খোমেইনী) গ্রন্থে তাঁর এসব পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা স্থানলাভ করেছে।
এ পর্যায়ে মরহুম রাফসানজানীর লেখা এবং তাঁর বক্তৃতা-ভাষণ থেকে সংকলিত ফারসি ও আরবি ভাষায় আরো অনেক গ্রন্থ রয়েছে।
হযরত আয়াতুল্লাহ্ রাফসানজানি সুদীর্ঘ ১৬ বছর যাবত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মজলিসে শূরায়ে ইসলামি (পার্লামেন্ট)-এর স্পিকার ও দেশের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে দেশের ও বিশ্বের পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে ও অপেক্ষাকৃত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন এবং ইরানকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে অনেক দূর এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ইসলামি উম্মাহ্র মধ্যে চৈন্তিক ও রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করেছেন। তাঁর এ পর্যবেক্ষণের অন্যতম ফসল এবং এ সমুন্নত লক্ষ্যে তাঁর প্রচেষ্টার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে তাঁর গ্রন্থ হাম্বাস্তেগীয়ে উম্মাতে এসলামী (ইসলামি উম্মাহ্র সংহতি)Ñ যা ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে তাঁর প্রদত্ত বিভিন্ন ভাষণের সংকলন।
এবার আমরা মরহুম রাফসানজানির লেখা ইসলামবিষয়ক গ্রন্থাবলির প্রতি সংক্ষিপ্ত দৃষ্টি দেব।
আয়াতুল্লাহ্ হাশেমি রাফসানজানি একজন গবেষক মুজতাহিদ আলেম হিসেবে ইসলামের বিভিন্ন দিকের ওপর প্রচুর লেখালেখি করেছেন। তাঁর ইসলামবিষয়ক একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে জয়গহে মাসাজেদ্ র্দা নেযামে এস্লামী আয্ মান্যারে র্কোআন্ (কোরআনের দৃষ্টিতে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থায় মসজিদসমূহের অবস্থান)।
নিঃসন্দেহে ইসলামি জ্ঞান-গবেষণার জন্য হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর ওপর ওহী নাযিলকালীন আরব ও বিশ্বের পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ধারণা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে আয়াতুল্লাহ্ হাশেমি রাফসানজানি জাহান্ র্দা আছ¡রে বে‘ছাত্ (নবুওয়াতে অভিষেকের যুগে বিশ্ব) শীর্ষক একটি গ্রন্থ প্রণয়ন করেন।
তাঁর ইসলামি গ্রন্থাবলির মধ্যে র্ফাহাঙ্গে কোরআন্ (কোরআনের অভিধান) অন্যতমÑ যা একটি অনবদ্য গ্রন্থ; এটি হচ্ছে কোরআন মজীদের তাৎপর্য ও বিষয়বস্তুসমূহ সহজে খুঁজে বের করার জন্য একটি সহায়ক গ্রন্থ। এছাড়া তিনি নতুন এক পদ্ধতিতে কোরআন মজীদের তাৎপর্য ও বিষয়বস্তু তুলে ধরার জন্য অপর কয়েক জন ইসলাম গবেষকের সহায়তায় তাফসীরে রাহ্নামা শীর্ষক কোরআন মজীদের একটি তাফসীর গ্রন্থ প্রণয়ন করেন।
ইসলামবিষয়ক তাঁর অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : তাহ্ক্বীকে কুতাহ্ পিরামুনে মো‘জেযে (মু‘জিযাহ্ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত গবেষণা), জাহান্বিনিয়ে এস্লামী ঃ বাহাছে মা‘আদ্ (ইসলামি বিশ্বদৃষ্টি : পরকালবিষয়ক আলোচনা), যান্ ভা এদালাতে এজ্তেমায়ী (নারী ও সামাজিক সুবিচার), এদালাতে এজ্তেমায়ী (সামাজিক সুবিচার), যাহ্রা (সালামুল্লাহি ‘আলাইহা) বোযোর্গ্ যানে জাহানে বাশারিয়াত্ [যাহ্রা (সালামুল্লাহি ‘আলাইহা) বিশ্ব মানবতার মহান নারী]। শেষোক্ত গ্রন্থ দু’টিতে তাঁর দু’টি জুমআর খোতবা স্থানলাভ করেছে। এ দু’টি গ্রন্থের মধ্যে এদালাতে এজ্তেমায়ী (সামাজিক সুবিচার) গ্রন্থে তিনি বর্ণবৈষম্যের ওপর বিস্তারিত তথ্যসমৃদ্ধ আলোচনা করেছেন, আর শেষোক্ত গ্রন্থটিতে নারীকুল শিরোমণি খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমা (সালামুল্লাহি ‘আলাইহা)-র জীবন ও মর্যাদা তুলে ধরেছেন।
বস্তুত হযরত আয়াতুল্লাহ্ রাফসানজানির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বহির্বিশ্বে তাঁর ‘ইল্মী ব্যক্তিত্বকে আড়াল করে রেখেছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন এমন একজন উঁচু স্তরের মুজতাহিদ আলেম ও ইসলামি চিন্তাবিদ যাঁর ‘ইল্মী ব্যক্তিত্বের পরিচয় এ সীমিত পরিসর নিবন্ধে তুলে ধরা সম্ভব নয়: তাঁর রচনাবলি ও তাঁর ‘ইল্মের সকল দিক-বিভাগ সম্পর্কে যথাযথ পরিচয় তুলে ধরতে হলে একটি বড় আকারের পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচনা করাই হবে বিধেয়।
তথ্যসূত্র : মাসিক একো অব্ ইসলাম, তেহ্রান, ফেব্রুয়ারি ২০১৭ এবং ইন্টারনেট।
সংকলনে : নূর হোসেন মজিদী