আমেরিকা ইসলাম ও মানবতার দুশমন- রাহবার আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী
পোস্ট হয়েছে: জুলাই ২৫, ২০১৩
ইসলামী বিপ্লবের রাহবার আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী মহান ও বিপ্লবী ইরানী জাতিকে শয়তানী শক্তির মোকাবিলায় জেহাদের পতাকা সমুন্নত রাখতে সজাগ, ঐক্যবদ্ধ ও স্থিরসংকল্প হতে আহ্বান জানিয়েছেন। আহবান জানিয়েছেন আত্মশুদ্ধি অর্জনের।
ইরানের বিভিন্ন শহর থেকে আগত বিপুল সংখ্যক আল্লাহ-প্রেমিক লোকদের সাথে এক বৈঠকে (১৯৯১ সালের ডিসেম্বর বা ১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে) তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসলামের এক চতুর ও বিপদজনক শত্রু এবং চরম সীমা লঙ্ঘনকারী।
সাক্ষাৎকারীরা ‘খামেনেয়ী! আমরা সবাই আপনার সৈনিক, আপনার আদেশের অপেক্ষায়’ এবং ‘খামেনেয়ী রাহবার, নবীর উত্তরাধিকার’ স্লোগান দেন।
ইরানী জাতিকে একটি নমুনা হিসাবে আখ্যায়িত করে ইসলামী বিপ্লবের রাহবার বলেন, বেইনসাফী ও দুর্নীতির প্রাধান্যের যুগে যখন শয়তানি শক্তিসমূহ বিভিন্ন উপায়ে বিশ্বের মানুষের উপর অত্যাচার, নির্যাতন, উপনিবেশিকতা ও বিভ্রান্তি চাপিয়ে দিয়েছিল সেই সময় মহান, সম্মানিত ও গৌরবদীপ্ত ইরানী জাতি কুরআন ও খোদায়ী জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে আল্লাহর নামে রুখে দাঁড়িয়ে বিশ্বের সামনে এক আদর্শ নমুনা হিসাবে আবির্ভূত হয়।
ইসলামী বিপ্লবের রাহবার ধর্ম ও মানবীয় নীতিবোধ পুনরুজ্জীবন, জাতিসমূহকে সজাগ করে তোলা এবং মানবতার সেবার জন্য ইরানের মুসলিম জাতিকে আধ্যাত্মিকতার পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরার কথা উল্লেখ করে বলেন, ইসলামী বিপ্লব সাফল্য লাভের পরবর্তী দিনগুলোতে ইরানী জাতি যে দীর্ঘ সংগ্রাম চালিয়েছে, তার জন্য তাদেরকে মোবারকবাদ। আজকে বড় বড় শয়তানি শক্তি এ জাতির আধ্যাত্মিকতা ও ধর্মীয় মনোভাবকে ভয় পায়। কেননা, তারা মনে করে নিয়েছে যে, জাতিসমূহের আধ্যাত্মিক ও ইসলামী চেতনাই কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো আধিপত্যবাদী শক্তির মোকাবিলা করার অটুট শক্তি। ইরানী জাতি সে প্রতিরোধ প্রচেষ্টা চালিয়েও যাচ্ছে।
রাহবার আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ইরানী জাতির ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল ও সম্ভাবনাময় আখ্যায়িত করে বলেন, আমাদেরকে অবশ্যই আত্মপ্রবৃত্তি, ঔদ্ধত্য ও স্বার্থপরতা মোকাবিলা করার শক্তি ও সাহস রাখতে হবে। কেননা, যাদের অভ্যন্তরীণ শয়তানি স্বার্থপরতা ও বিলাসপ্রিয়তা মোকাবিলার শক্তি নেই তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এ যুগের তাগুতী শক্তির বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবে না। রাহবার খামেনেয়ী পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতি সম্পর্কে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় এই অঞ্চলটি দখল করতে চায়, এমনকি সে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গোটা বিশ্বের উপর তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে যখন মানবাধিকার রক্ষা, ইরান ও এ অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্ব এবং ইসলামের বিরোধিতা না করার ভান করছে তখনও মিথ্যা বলছে। তারা ইসলাম, ইরানী জাতি ও মানবাধিকারের বিপজ্জনক শত্রু। তিনি আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলের দেশগুলোকে বন্দিত্ব ও দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে চায় এবং সে মোতাবেক ইরানের উপর সর্বাগ্রে প্রাধান্য বিস্তার করতে চায়, কিন্তু এই জাতি ইসলাম দ্বারা জেগে উঠেছে এবং যখন ও যেখানেই প্রয়োজন হবে খোদায়ী শক্তির উপর নির্ভর করে শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
পরিশেষে আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী ফিলিস্তিনী জাতির বিরুদ্ধে চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সমর্থনের দাবিকে নির্মম উপহাস বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের সজাগ ও জাগ্রত শক্তিসমূহ শয়তানি শক্তির মোকাবিলায় সংগ্রামের পতাকাকে সমুন্নত দেখতে চায় এবং ইরানী জাতি রক্তপিপাসু শয়তানি শক্তি ও বিশ্ব গুণ্ডাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ইসলামী বিপ্লবের পথে বিপ্লবী পতাকা নিয়ে অটল ও অনড়ভাবে রুখে দাঁড়াবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
(নিউজলেটার, জানুয়ারি ১৯৯২)