আফগানিস্তানে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক সহায়তা করবে ইরান
পোস্ট হয়েছে: এপ্রিল ১৬, ২০১৭
![news-image](https://www.iranmirrorbd.com/wp-content/uploads/2017/04/4bk7c123279db7av37_800C450.jpg)
ইরানের এশিয়া ও আফ্রিকা বিষয়ক উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম রাহিম পুর আফগানিস্তানে বিরাজমান সংকট ও চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সব দেশেরই সদিচ্ছা থাকা জরুরি। তিনি মস্কোয় অনুষ্ঠিত আফগানিস্তান বিষয়ক শান্তি সম্মেলনে এ কথা বলেছেন।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রায় ৩০ লাখ আফগান শরণার্থীর আশ্রয় দেয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, মাদক চোরাকারবার রোধকরাসহ আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দেশটির সরকারকে সব রকম সহায়তা দিতে ইরান পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। মস্কো বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা বলেছেন, সামরিক উপায়ে আফগান সংকটের কোনো সমাধান নেই এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় তারা সবাই আফগান সরকারকে সহযোগিতা করবে। মস্কো বৈঠকে ইরান, আফগানিস্তান ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা ছাড়াও চীন, ভারত, তুর্কমেনিস্তান, কাজাকিস্তান, পাকিস্তান, কিরগিজিস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
আফগানিস্তান গত ৪০ বছর ধরে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বৃহৎ শক্তিগুলোর চাপিয়ে দেয়া আগ্রাসন, ধ্বংসযজ্ঞ ও হস্তক্ষেপের মোকাবেলা করে আসছে। এর ফলে শরণার্থী, দুঃখকষ্ট, বঞ্চনা ও সন্ত্রাসবাদের কবলে পড়া প্রভৃতি ছাড়া আফগান জনগণের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। যুদ্ধবিগ্রহে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক অবকাঠামোগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় দেশটি মাদক উৎপাদন ও চোরাচালানের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। গত ১৫ বছরের দখলদারিত্বের সময় আমেরিকা ও ব্রিটেন সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার পরিবর্তে কেবল মাদক চাষ ও এর বিস্তার ঘটানো এবং নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া, আমেরিকা সেদেশে নানা ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে যাতে রাশিয়ার কাছে নিজের শক্তিমত্তা তুলে ধরা যায়। এ অবস্থায় কেবল বোমা বর্ষণ করে, দেশ দখল করে কিংবা যুদ্ধের মাধ্যমে আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসীদের মূলোৎপাটন করা সম্ভব নয়।
বাস্তবতা হচ্ছে, সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে পাশ্চাত্যের অস্বচ্ছ ও দ্বিমুখী নীতি আফগানিস্তান ছাড়াও সমগ্র ওই অঞ্চলে সংকট ও নিরাপত্তাহীনতার প্রধান কারণ। অতীতের ঘটনাবলিতে প্রমাণিত হয়েছে, যুদ্ধ বন্ধ করা, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা না দেয়া এবং বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধের মাধ্যমেই কেবল আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের প্রচেষ্টার প্রতি ইরান সবসময়ই সহযোগিতা করে আসছে। জাতিসংঘও ইরানের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। আফগানিস্তান বিষয়ক জাতিসংঘের প্রতিনিধি তাদা মিচি ইয়ামামুতি সম্প্রতি তেহরান সফরকালে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আফগান শরণার্থীদের প্রতি ইরানের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান। আফগানিস্তান বিষয়ে মস্কোয় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইরানের প্রতিনিধিরাও তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন। সূত্র: পার্সটুডে।