অসহায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষায় ইরানের জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা
পোস্ট হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মুসলমানদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ায় ও নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালানোয় প্রতিদিন শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। মিয়ানমার সরকার মনে করে রাখাইনে বসবাসকারী দশ লাখেরও বেশী রোহিঙ্গা মুসলমান বেআইনি অভিবাসি এবং তাদের কোনো নাগরিক অধিকার নেই। এ কারণে ২০১২ সাল থেকে সেখানে দেশটির সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা মুসলমানদের ওপর জুলুম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর হত্যা নির্যাতন বন্ধের বিষয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুস ওগ্লু, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিফা আমান ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেন্তো মারসুডির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেছেন। টেলিফোন সংলাপে তিনি যতদ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সমাজ কিংবা মুসলিম দেশগুলোর যে কোনো সিদ্ধান্ত কিংবা উদ্যোগের প্রতি তার দেশের সমর্থনের কথা জানান।
গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনা ও উগ্র বৌদ্ধদের হামলায় এ পর্যন্ত হাজার হাজার মুসলমান হতাহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা ঘোষণা করেছে, গত পাঁচ বছরে নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বাধার কারণে বহু শরণার্থী সীমান্তে আটকা পড়ে আছে। যারা পালাতে পারছে না কিংবা পালানোর ক্ষমতা নেই তারা দেশের ভেতরেই গণহত্যার শিকার হচ্ছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সম্প্রতি তার হজ-বাণীতে বর্তমান মুসলিম বিশ্বের নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মতো নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। এর আগে তিনি ৩০তম ইসলামি ঐক্যসপ্তাহ উপলক্ষে আগত মেহমানদের সমাবেশে পূর্ব এশিয়ার মিয়ানমার থেকে শুরু করে পশ্চিম আফ্রিকার নাইজেরিয়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
রোহিঙ্গা মুসলমানদের সাথে যে অন্যায় অবিচার করা হচ্ছে তা জাতিসংঘ এবং মানবাধিকারের সকল নীতিমালার লঙ্ঘন। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ রোহিঙ্গাদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে মজলুম জনগোষ্ঠী হিসেবে অভিহিত করেছে। কিন্তু চলমান হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে প্রয়োজন মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। এ ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলো শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। সূত্র: পার্সটুডে।